মানুষের উৎসবশেষে স্তব্ধ মহাকাল আর নি:সঙ্গ পৃথিবীর এক কোনে
রাত্রির গাঢ় নৈ:শব্দ্যের মাঝে বসে তুমি...
হলদেটে চাঁদের দিকে তাকিয়ে একদিন পাবে টের
আমিও পার করেছি এভাবে কত রাত্রি নির্ঘুম।
***
বৃষ্টি শেষ হয়ে এলে অন্য কিছুই না,
থাকে শুধু একরাশ স্তব্ধতা, আর স্মৃতি।
ব্যথিত মেঘেরা জানে-
একদিন আমি ছিলাম না, আজ আমি আছি,
একদিন আমি থাকবো না-এমনতো নয়
আমি ছিলাম, আছি ও থাকবো।
চেতনজুড়ে অবচেতনের অন্ধকারে,
কালের যাত্রায় মহাকালের পথিক হয়ে;
আমি ছিলাম প্রথম সূর্যের মায়াবী আলোয়
শিমুলের রুক্ষ ডালে-ওঠা সরসর শব্দে,
কিংবা ব্যস্ত সড়কের জমাটবাঁধা অস্বস্তির মাঝে
কৃষ্ণচূড়ার লালের স্বস্তি নিয়ে।
তারপর জানোইতো, হেমন্ত এসে বহু বসন্ত গিয়েছে,
ধুলোর স্তর গাড় হয়েছে পুরনো পথের ওপরে;
সহস্র সত্তায় বিভাজিত হয়ে তাদেরই মাঝে ছিলাম।
আমি আছি আমার ভালোলাগা সমস্ত কবিতায়,
পুরনো শেলফে হাতের স্পর্শ লেগে-থাকা বইগুলোর পাতায়,
ছেলেবেলার পরিত্যক্ত ফুটবলটাতে।
থাকবো গ্রীষ্মের দুপুরের তপ্ততায় বিষণ্ন স্তব্ধতাজুড়ে,
অস্তাচলে পরাস্ত সূর্যের শেষ আলোয়,
এমনকি গোধূলিশেষে রাত্রির স্তব্ধতার মাঝেও।
সে ক্ষণগুলো তুমি বুঝে নিও তোমার চেতনায়,
প্রত্নতাত্ত্বিক হয়ে খুঁজে নিও
প্রয়োজনে মৃত্তিকার গহীনে খুঁড়ে
আমার পুরনো ডায়েরির ধ্বংসাবশেষ।
দেখবে আছি আজো বেঁচে বহুদিনের রোদে-পোড়া
বিস্তীর্ণ মাঠের ওপর মধ্যরাত্রির প্রতিটা বৃষ্টির ফোটার শব্দে,
অথবা মেঘের গর্জনে তোমার শরীরে-ওঠা স্পন্দনে।
তোমার উপলব্ধির চোখে ফুটিয়ে নিও
আমার বসন্তের প্রথম রাত্রি,
উদ্দাম বাতাসে তোমার উন্মুক্ত দু'হাত,
উড়ে যাবে সমস্ত আবরণ বুভূক্ষ আঁধারে,
মানুষের উৎসবশেষে স্তব্ধ মহাকাল আর নি:সঙ্গ ছাঁদের এক কোনে
রাত্রির গাঢ় নৈ:শব্দ্যের মাঝে বসে তুমি...
হলদেটে চাঁদের দিকে তাকিয়ে পাবে টের
আমিও পার করেছি এভাবে কত রাত্রি নির্ঘুম।
একদিন আমি ছিলাম না,
আজ আমি আছি,
একদিন আমি থাকবো না- এমনতো নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৩৬