somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভৌতিক গল্প: মধ্যরাতের অতিথি

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভৌতিক অভিজ্ঞতা বা অপ্রাকৃত ঘটনা আমার জীবনে খুব বেশি ঘটেনি। তবে তরুণ বয়েসে আমি একটি অস্বাভাবিক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম, যে ঘটনাটির ব্যাখ্যা আজও আমি পাইনি ...
তখন আমি একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয়-প্রতিনিধির কাজ নিয়ে সদ্য নাজিরপুর এসেছি। নির্জন, ছিমছাম মফস্বল শহর। শহরের নিরিবিলি এলাকায় একটি মেসে থাকি। সকালবেলায় খেয়েদেয়ে কাজে বের হই। রাতে ফিরি। শুক্রবার ছুটি। তবে সেদিন আমি বাড়িওয়ালার অনুরোধে তার ছোট মেয়েটিকে পড়াই। বাড়িওয়ালা জয়নাল হাজি বেশ ধনী এবং গম্ভীর ধরনের মানুষ। পরিবার-পরিজন নিয়ে দোতলায় থাকেন। তাঁরই ছোট মেয়ে মুক্তি, ক্লাস এইটে পড়ে। ভারি ফুটফুটে আর হাসিখুশি মেয়ে। তবে মুক্তির পড়ায় একেবারে মন নেই, পড়ার চেয়ে গল্প করার ঝোঁকই বেশি। তবে মুক্তির গল্প বলার স্টাইলটি কিন্তু ভারি চমৎকার। আর ওর ঝুলিতে কত যে গল্প রয়েছে! ওর এক মামা ছিল। সেই মামাটি ছিলেন আজব চরিত্রের এক মানুষ। তার গল্পই মুক্তি বেশি শোনায়। মুক্তির ছোটমামা ছিলেন অনেকটা ছন্নছাড়া ভবঘুরে ধরনের। ম্যাজিক-ট্যাজিক জানতেন। আবার সার্কাসেও নাকি মোটরসাইকেলের খেলা দেখাতেন। নীল রঙের একটা ইয়ামাহা হানড্রেড চালাতেন। মুক্তি ওর ছোটমামার ফ্যান। ছোটমামার গল্পই মুক্তি বেশি করে। অনেক বছর হল ভদ্রলোক নাকি নিখোঁজ ...
তো, মুক্তিকে পড়িয়ে আর ওর মুখে মজার মজার গল্প শুনে আমার মফস্বলের নিঃসঙ্গ দিনগুলি বেশ কেটে যাচ্ছিল ...

তো, অদ্ভূত সেই ঘটনাটা ঘটল এক রাতে ...
আমি সতীরহাট থেকে ফিরছিলাম। রেললাইনে কী সমস্যা ছিল, ট্রেন লেট ছিল। নাজিরপুর স্টেশনে ফিরতে- ফিরতে রাত দশটা বেজে গেল। কার্তিক মাস বলে চারধার নিঝুম হয়ে ছিল । আর বেশ শীতও পড়েছিল।
স্টেশনটা ছিল নাজিরপুর শহর থেকে আধ-কিলোমিটার দূরে। ওটুকু পথ হেঁটেই যাই। রিকশা নিই না। বাবা মারা যাওয়ার পর ঘাড়ের ওপর পুরো সংসার। প্রতিটি পাইপয়সা হিসেব কষে চলি।
সে রাতেও হাঁটছিলাম। অবশ্য রাস্তায় আমি একা নই। অন্য লোকজনও ছিল। বেশির ভাগই স্থানীয় হাটুরে লোকজন। গায়ে কাঁথামুড়ি দিয়ে কথা বলতে- বলতে বিড়ি- সিগারেট টানতে- টানতে তারা হাঁটছিল।
আকাশ থেকে ফুটফুটে জ্যোস্না ঝরে ঝরে পড়ছিল। সরু এবড়োখেবড়ো পিচ রাস্তায় ঘন কুয়াশা । দু’পাশে জ্বোনাক-জ্বলা বাঁশঝাড় । মাঝে-মাঝে একটি-দুটি রিকশা চলে যায় টুংটাং শব্দে বেল বাজিয়ে।
আমার মাথায় ক্যাপ, গলায় মাফলার প্যাঁচানো, পরনে ফুলহাতা সোয়েটারের ওপর জিন্সের জ্যাকেট আর জিন্সের প্যান্ট; পায়ে কেডস। তবু বাঁশঝাড়ের ওপাশেই গ্রাম আর দিগন্ত অবধি ধূ ধূ পাথার বলেই কনকনে শীত জেঁকে ধরছিল ।
ঘন কুয়াশা সত্ত্বেও চারধার পরিস্কার চাঁদের আলোয় ঝকঝক করছিল। হঠাৎ লক্ষ করলাম রাস্তায় লোকজন নেই। যেন বাতাসে মিলিয়ে গেছে। পরক্ষণেই মনে হল বাঁশঝাড়ের ভিতর দিয়ে সরু পথ চলে গিয়েছে গ্রামের দিকে । লোকগুলোর বাড়ি হয়তো সেই সব গ্রামে।
হঠাৎ দেখতে পেলাম রাস্তার পাশে একটা মোটর সাইকেল থেমে আছে। একজন লোক চাকার কাছে উবু হয়ে ঝুঁকে কী যেন দেখছে। মোটর সাইকেলটা বিগড়ে গেছে মনে হল । উবু হয়ে বসে থাকা লোকটা মধ্যবয়েসি। পরনে সাদা রঙের সোয়েটার ও কালো রঙের কর্ডের প্যান্ট। পাশে একজন মহিলা দাঁড়িয়ে ছিলেন। বৃদ্ধা বলে মনে হল। বৃদ্ধার পরনে সাদা শাড়ি, গায়ে কালো রঙের দামি চাদর, চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা।
আমি আবার মোটরসাইকেলের পাগল। ওই দুই চাকার যান্ত্রিক বাহনটার প্রতি আশৈশব আমি ভীষণ দূর্বল। আমার নীল রঙের একটা ইয়ামাহা হানড্রেড ছিল। সেকেন্ড হ্যান্ড অবশ্য। ওটা বছর দুয়েক চালিয়েছি। বাবা মারা যাবার পর বেচে দিতেই হল।
আমি মোটরসাইকেলের পাশে এসে দাঁড়ালাম। ঠিক তখনই কেমন আঁশটে গন্ধ পেলাম। বৃদ্ধার মুখটি কেমন ফ্যাকাশে, হলদে রঙের, যাকে বলে পেইল। পায়ের শব্দে মাঝবয়েসি লোকটি মুখ তুলে আমার দিকে তাকালেন। মাথায় ব্যাক ব্রাশ করা চুল। মুখটি ভীষণ কালো। মুখভরতি বসন্তের দাগ। চোখে নীল রঙের সানগ্লাস। ভদ্রলোক এত রাতে সানগ্লাস পরে আছেন কেন? ব্যাপারটা আমার কাছে কেমন যেন বেখাপ্পা ঠেকল। আর সেই আঁশটে গন্ধটা তীব্র হয়ে উঠল মনে হল।
কি সমস্যা? মৃদু হেসে আমি জিজ্ঞেস করলাম।
লোকটা বিরক্ত হয়ে বলল, আর বলবেন না ভাই। এই সেদিন ক্লোজ এক আত্মীয়র কাছ থেকে কিনলাম।
আমি বললাম, দেখি তো, আমি একবার ট্রাই করি। বলে হাতের ব্যাগটা মাটির ওপর রেখে চাকার সামনে ঝুঁকে বসলাম। মিনিট দশেক পর এটাওটা নেড়েচেড়ে ভারি অবাক হলাম। সবই তো ঠিকই আছে। গিয়ার -ক্লাচ-ব্রেক সব। তাহলে চলছে না কেন?
বৃদ্ধা বলল, তখন অত করে মানা করলাম কিনিস না। লোকমান লোকটা সুবিধা না।
আহ্ মা! কী শুরু করলা। অখন চুপ করো তো।
ছেলের ধমক খেয়ে বৃদ্ধা কেমন মিইয়ের গেল।
লোকটা আমাকে জিগ্যেস করল, আপনার নাম?
বললাম। কী করি তাও বললাম। আরও বললাম যে নাজিরপুরে আমি নতুন এসেছি।
কথায় কথায় জানতে পারলাম। ভদ্রলোকের নাম আমিনুল ইসলাম সিকদার। বাড়ি ধুরুলিয়ার সিকদার বাড়ি। ধুরুলিয়া জায়গাটা নাজিরপুর ছাড়িয়ে আরও অন্তত সতেরো-আঠারো কিলোমিটার। বাইকটা এখন অচল হয়ে গেলে মুশকিল।
আমার কপালেও চিন্তার রেখা ফুটে উঠল।আমারও ফেরা দরকার । খিদে পেয়েছে। ট্রেনে সন্দেশ আর ঝালমুড়ি খেয়েছি আটটার দিকে। মেসে খাবার ঢাকা আছে। আজ বুধবার। সিরাজগঞ্জের আফজাল-এর আজ বিরিয়ানি রাঁধার কথা ।
পিচ রাস্তার ওপর কার যেন দীর্ঘ ছায়া পড়ল। চমকে উঠলাম। তাকিয়ে দেখি কুয়াশার ভিতর কে যেন এদিকেই এগিয়ে আসছে। ভালো করে ঠাওর হতে বুঝলাম বুড়োমতন একটা লোক। মাথায় মাঙ্কিটুপি,গায়ে চাদরমুড়ি দেওয়া । কাছে এসে দাঁড়াতেই ভালো করে চেয়ে দেখলাম। বুড়োর ফরসা মতন চেহারা, টিকালো নাক। তবে চোখ দুটি ভীষণ প্রাণহীন, ঘোলা। মুখে খোঁচা খোঁচা পাকা দাড়ি। তবে বেশ শক্ত সমর্থ শরীর।
বুড়ো বলল, সার, গাড়ি নষ্ট হইছে নাকি?
হ্যাঁ। আমি মাথা নেড়ে বললাম।
বুঝছি। তয় এত রাইতে মেকানিক কই পাইবেন। আইজ রাতটা আমার বাড়িত থাকেন। গরম গরম চাইট্টা ডাইল-ভাত খান। কাল বিহানে একটা যাহা হউক ব্যবস্থা কইরা দিমুনে।
আমিনুল ইসলাম জিগ্যেস করলেন, তোমার নাম কি?
বুড়ো হাত কচলে বলল, এই দীনদরিদ্রের নাম হইল গিয়া নায়েব আলী সার। খেয়াল করলাম বুড়োর হাতে লেদারের গ্লাভস পরা।
থাক কোথায়? এবার আমি জিগ্যেস করলাম।
কাছেই। ঐ পাইকার তলা। বলে হাত তুলে বাঁশঝাড়ের দিকে দেখাল বুড়ো।
বৃদ্ধা বলল, ও ফজলু, চল বাবা। এর সঙ্গেই চল। ঠান্ডায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসতেছে। তখন কত কইরা বললাম রাতটা আফরোজাদের বাড়ি থাকি, তুই রাজি হইলি না তখন।
আমিনুল ইসলাম বললেন, আইচ্ছা। থাকুম। অখন তুমি চুপ কইরা থাক।
আমি বললাম, আমি তাহলে যাই।
আমিনুল ইসলাম আমার দিকে তাকালেন। হাসলেন। তারপর বললেন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। বলে চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে ফেললেন। দেখি লোকটার একটা চোখ পাথরের আর ... আর অন্য চোখে কিছু নেই। গর্ত!
আমি কোনওমতে বললাম, না, না ঠিক আছে। বলে ব্যাগটা তুলে দ্রতপায়ে হাঁটতে থাকি। আমার বুক কাঁপছিল। আমিনুল ইসলাম- এর এক চোখে গর্ত কেন? ভাবছিলাম। একবার মুখ ফিরিয়ে দেখলাম আমিনুল ইসলাম আর নায়েব আলী মিলে মোটরসাইকেলটা ঠেলছে। কিন্তু মোটরসাইকেলটা এক চুলও নড়ছে না। আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম। আমার কি ওদের সাহায্য করা উচিত। দ্রুত ভাবছি। তারপর কখন যে আমি মোটরসাইকেলটার কাছে চলে এলাম, কীভাবে এলাম, বুঝতে পারলাম না। আমি বললাম, কি ব্যাপার? নড়ছে না। দেখি তো । বলে আমিও ধাক্কা দিলাম।
মোটরসাইকেলটা এবার চলতে শুরু করল।
সরু একটা রাস্তা বাঁ পাশের বাঁশঝাঁড়ের ভিতর দিয়ে চলে গেছে। বাঁশগাছের ফাঁকেফোঁকড়ে জ্যো¯œার আলো পড়ে আছে। শুকনো পাতায় ভরতি একটা পুকুর দেখা দেখতে পেলাম। আর কলাঝোপ, খড়ের স্তূপ। কী নির্জন রাত! বাতাসে বাঁশপাতা-মাখা শিশিরের গন্ধ ভাসছিল। নির্জনতা ভেঙে হঠাৎ গরুর হাম্বা ডাক ভেসে এল।
মোটরসাইকেল ঠেলতে- ঠেলতে আমিনুল ইসলাম আমাকে বললেন, মাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলাম, বুঝলেন। দাওয়াত ছিল। আমার বোর আবার বাচ্চা হবে। আমার শ্বশুরবাড়ি হৈল সিদ্দিকগঞ্জ ।
সিদ্দিকগঞ্জ কোথায় সার? নায়েব আলী জিগ্যেস করে।
আতাইখোলা।
চিনছি সার। আমার আব্বার মামার বাড়ি হইল আতাইখোলা মন্ডলবাড়ি। আপনি মোনাফ মন্ডলরে চিনেন ছার?
না। রাতে থাকবার জন্য আফরোজার বাবায় মানে আমার শ্বশুরে জোরজবস্তি করছিলেন। এইদিকে ঘরবাড়ি খোলা। ভাইদের সঙ্গে আবার আমার পৈত্রিক সম্পত্তি লইয়া মামলা-মোকদ্দমা চলতাছে, বুঝলেন না।
কথাবার্তায় আমিনুল ইসলাম কে ভীষণ আন্তরিক মনে হল।তবে তখন আমার বুক কাঁপছিল। আমিনুল ইসলাম- এর এক চোখে গর্ত কেন? ভাবছিলাম।
বৃদ্ধা হাঁটতে হাঁটতে পিছিয়ে পড়েছিলেন। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। পায়ের কোনও ধরণের সমস্যা আছে বলে মনে হল।
ঠেলাঠেলি করে আমা মোটর সাইকেলটা বিশাল একটা খড়-ছড়ানো উঠানে তুলে আনলাম। উঠানের চারপাশে টিনের চৌচালা ঘর। একপাশে গোহাল ঘর। বাড়ির চারধারেই ঘন বাঁশঝাড়। এটা কি নায়েব আলীর বাড়ি? তাহলে তো তাকে বেশ অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ বলতেই হয়।
আমি বললাম, আমি তাহলে যাই।
নায়েব আলী বলল, যাবেন কী ছার। আপনি হইলেন আমার অতিথি। আমাগো লগে অখন গরম গরম চাইট্টা ভাত খান। ঘরে গাওয়া ঘি আছে। মনোয়ারায় গরম গরম বেগুন ভাইজা দিবনি।
আমিনুল ইসলাম অত্যন্ত আন্তরিক কন্ঠে বললেন, আরে! আপনি আসুন তো আমাদের সঙ্গে। আসুন, আরাম করুন। আপনি হৈলেন গিয়া বিদেশি মানুষ। মেহমান। এই অঞ্চলের মানুষ কেমন অতিথিপ্রবন হয় সেইটা স্বচক্ষে দেইখে যান। মাইঝরাতের অতিথি গো আমরা কী রকম যতœআত্তি সম্মান করি দেখবেন না?
এবার বৃদ্ধা বললেন, তুমি আমাদের সাথে থাক না বাবা। তুমি এত ভালো মানুষ। আমাদের কত সাহায্য করলা। এই রকম কেউ করে।
আমি চুপ করে থাকি। আমি প্রচন্ড খিদে টের পাচ্ছিলাম। ওপাশের একটা ঘরে সাদা আলো দেখা যাচ্ছিল। চুড়ির রিনরিন শব্দ শোনা গেল। ছ্যাঁত ছ্যাঁত শব্দ শুনতে পেলাম। চুলায় ডাল বাগার দেবার সময় যে রকম শব্দ হয়, ঠিক তেমন। মনোয়ারা? নায়ের আলীর বউ না মেয়ে?
বৃদ্ধা সাবলীল ভঙ্গিতে দাওয়ায় উঠে সেই ঘরের ভিতরে চলে গেলেন। যেন পরিচিত ঘরদোর। আমার কেমন খটকা লাগল।
নায়েব আলী আমাকে আর আমিনুল ইসলামকে বাঁ পাশের বড় একটা ঘরে নিয়ে এল। কাচারিঘরই মনে হল। মেঝের ওপর একটা হ্যাজাকবাতি। সাদা আলো ছড়িয়ে ছিল। ঘরে চৌকি কিংবা খাট-পালঙ্ক কিছু নেই। মেঝেতেও খড় বিছানো। তবে একটি বড় পাটি বিছানো। ভিতরে ঢুকে টের পেলাম ঘরটা বেশ গরম। আরামই লাগছিল। ঠান্ডায় হাত পা জমে আছে। ব্যাগ রেখে বসলাম হাত-পা ছড়িয়ে।
নায়েব আলী বেড়িয়ে গেছে। সম্ভবত খাবার আনতে। বাড়িঘর শুনশান করছে।
এ বাড়িতে কারা থাকে? আর কারও সাড়াশব্দ পাচ্ছি না কেন?
নায়েব আলীর সঙ্গে দেখা না হইলে কী যে মুশকিলে পড়তাম। বলে আমিনুল ইসলাম চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে ফেললেন। গর্তের ওপর আমার চোখ আটকে গেল। এরই মধ্যে আমার অনেক ঘনিষ্ট হয়েছি। তবে আমি কিছুটা অর্ন্তমুখি বলেই চোখ নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলাম না।
নায়েব আলী বড় একটি গামলা নিয়ে পাটির ওপর রাখল। গামলায় গরম পানি । পকেট থেকে কসকো সাবান বের করল সে। তার কাঁধের ওপর একটি গামছা। গামছাটা নতুন মনে হল। আমার খটকা লাগল। যেন সব তৈরিই ছিল। কিন্তু, তা কি করে সম্ভব?
হাত মুখ ধুয়ে আমি জুত করে বসলাম।
একটু পর নায়েব আলী গামলা ভর্তি ধোঁওয়া ওঠা গরম ভাত নিয়ে এল। আর একটা থালায় বেগুন ভর্তা, বাটিতে মাসকলাইয়ের ডাল। ভাত মুখে দিয়ে দেখি কাঁকর, ভর্তায় ভীষণ ঝাল আর লবণ বেশি, ডালে লবণই হয়নি। মুখ ফুটে কিছু বললাম না। হাজার হলেও আমি অতিথি। আড়চোখে দেখি আমিনুল ইসলাম নিশ্চিন্তে খেয়ে চলেছেন।
খেতে খেতেই আমার ভয়ানক ঘুম পেল ...

কীসের যেন আবছা ডাক শুনতে পাচ্ছিলাম। একটু পাখিদের ডাক। আর মুখের ওপর গরম লাগছিল। বুঝলাম রোদের তাত। ঘাড়ের নীচে ভেজা ভেজা।শিশির ভেজা ঘাসের ওপর শুয়ে আছি বুঝতেই ধড়ফড় করে জেগে উঠলাম। মাথা ভীষণ ভার ভার ঠেকল। কপালের দু’পাশের রগ টনটন করছে। আমি এখানে কেন? চারিদিকে চেয়ে দেখি ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে সব মনে পড়ে গেল। নায়েব আলীর বাড়িঘর গেল কোথায়? চারিদিকে বাঁশঝাড়। আর কিছু নেই। পিচরাস্তা চোখে পড়ে। একটা মোটরসাইকেল চলে যাচ্ছে। দূরে আমার ব্যাগটা পড়ে আছে। পকেট হাতড়ে ব্যাগ খুলে দেখলাম টাকাপয়সা কিছুই খোয়া যায়নি। তাহলে অজ্ঞান পার্টি নয়? তাহলে আমি কী স্বপ্ন দেখছিলাম? কিন্তু, কিন্তু স্বপ্ন এত বাস্তব হয়?

ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে ধীরে ধীরে শহরে ফিরে এলাম।
আমি ইনট্রোভার্ট গোছের মানুষ।
সেই রাতের অস্বাভাবিক ঘটনাটি সর্ম্পকে কাউকে কিছু বললাম না ...

শুক্রবার। সিপাহি পাড়ার দারুল ইহসান জামে মসজিদে জুম্মার নামজ পড়তে গেলাম। আমার সঙ্গে বাড়িওয়ালা জয়নাল হাজি । প্রতি শুক্রবার আমি আর জয়নাল হাজি একসঙ্গে নামাজ পড়তে যাই। জামে মসজিদটা কাছেই। আমরা হেঁটেই যাই।
আজ মসজিদে যাওয়ার সময় জয়নাল হাজি সরাসরি তার ছোটকন্যা মুক্তির সঙ্গে আমার বিয়ের প্রস্তাব দিলেন।মুক্তি এইটে পড়ে। আমি খানিকটা হকচকিয়ে গেলাম। ধাক্কা সামলে নিয়ে বললাম, মুক্তি আগে এইচ এস সি পাস করুক চাচা। তারপরে আপনি আমার মাকে বলবেন।
হাজি সাহেবের প্রতিক্রিয়া বোঝা গেল না। মুক্তিকে পড়ানোর সুবাদে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর আমি জয়নাল হাজির বাড়িতেই খাওয়াদাওয়া করি। হাজি সাহেব এলাহি আয়োজন করেন। জয়নাল হাজি আমার সঙ্গে খেতে বসেন। গল্পটল্প করেন। জয়নাল হাজি জিন-পরি, পির-আউলিয়ার মনোরম জগতে বাস করেন। সেসব গল্পই বেশি হয়। শুনতে আমার ভালো লাগে।
খাওয়ার আগে ড্রইংরুমে বসে আছি। আড়চোখে দেখলাম মুক্তি গোলাপি রঙের সালোয়ার কামিজ পরে পরির মতন উড়ছে। হাতে মুঠোফোন। একবার বারান্দায় যাচ্ছে তো একবার ঘরে। মুক্তি জয়নাল হাজির তৃতীয় পক্ষের মেয়ে। অনেক আদরের। ভারি ফুটফুটে মেয়ে। সারাক্ষণ মুখে হাসি লেগেই আছে। এত চটপটে আর হাসিখুশি মেয়ে। ওকে আমার দুপুরবেলা পড়াতে হয়। বিকেলে একেবারে চা আর সাত পদের নাশতা খেয়েই ঘরে ফিরি। তবে পড়ার চেয়ে মুক্তির গল্প করার ধাতই বেশি। আর ওর গল্প বলার ধরনটা দারুন। প্রাণবন্ত বর্ণনা আর সংলাপ থাকে। মুক্তি কে আমার বর্ন স্টোরি টেলার বলে মনে হয়।
খাবার পরিবেশন করেন মুক্তির মা । জয়নাল হাজির তৃতীয়পক্ষের এই স্ত্রীটির বয়স তিরিশের বেশি না। অসম্ভব সুন্দরী। তবে কথাবার্তা বলেন খুবই কম । রান্নার হাতও চমৎকার। ভাবলে অবাক লাগে এই সুন্দরী ভদ্রমহিলার অস্থিরচিত্ত ভবঘুরে ছোট ভাইয়ের গল্পই মুক্তি প্রায়ই আমাকে বলে ... অনেক বছর হল ভদ্রলোক নাকি নিখোঁজ ... ছন্নছাড়া ছোটভাইয়ের কথা ভেবে চোখের পানি ফেলেন ...
আজ খেতে বসে হাজি সাহেবকে বললাম, আচ্ছা চাচা, আপনি কি ধুরুলিয়ার সিকদার বাড়ির কাউকে চিনেন?
হাজি সাহেব জিগ্যেস করলেন, ধরুলিয়ার আপনে কার কথা কন? (মুক্তির মা স্বামীর প্লেটে কাবাব তুলে দিলেন।)
আমিনুল ইসলাম সিকদার? (মুক্তির মা আমার প্লেটে সালাদ তুলে দিলেন।)
নাহ্ । বলে মাথা নাড়লেন হাজি সাহেব। কাচ্ছি বিরিয়ানি চিবুচ্ছেন। একটু পর বললেন, বুঝলেন, আমরা হইলাম গিয়া এই অঞ্চলের লোক। ধুরুলিয়ায় আমার ছুটফুপুর শ্বশুরবাড়ি। গত পঞ্চাশ বৎসর ধইরা আমার অত্র এলাকায় যাতায়াত। আর আমার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী মোছাম্মৎ গুলবদন খানমের মামার বাড়িও হইল ধুরুলিয়ার। নাহ্, আমি সিকদার বাড়ির নাম কখনও শুনি নাই। বলে বোরহানির গ্লাসে চুমুক দিলেন।
ওহ্ ।
আজ খাওয়া-দাওয়ার পর মুক্তিকে পড়াতে বসলাম।
দোতলার দক্ষিণের ঘরটা মুক্তির। সাদা চুনকাম করা দেয়ালে শাহরুখ খানের ছোটবড় মিলিয়ে ৬/৭টি পোস্টার। বইয়ের তাকে বইয়ের চেয়ে ডিভিডির সংখ্যাই বেশি। বিছানার ওপর ৬/৭টি সেলফোন। (বেশির ভাগই নকিয়া।) আর একটি ডেল ল্যাপটপ।
আজ পড়তে বসে মুক্তি বলল, জানেন স্যার, আমার ছুটমামার সঙ্গে না একবার কার্তিক মাসে রাইতের বেলা নীল রঙের গগলস পরা একটা লোকের দেখা হইছিল। লোকটা একটা চোখ আছিল পাথরের আর অন্য চোখে গর্ত। তারা মাইঝরাতে এক বুড়ার বাড়িত দাওয়াত খাইছিলো।
মুক্তিকে ধমক দিতে যাব, পারলাম না। আমার শরীর ভীষণ অবশ- অবশ ঠেকছিল।কিছু বলতে চাইলাম। ঠিকমতো স্বর ফুটল না।
দশ বছর আগের কথা। আমি তখন ছুট। আমার ছুটমামায় নাজিরপুর স্টিশন থেইকা আমাগো বাড়ি ফিরতেছিল। মামা কী কামে জানি সতীরহাট গেছিল। টেরেনের লাইনে কী সমস্যা ছিল, টেরেন লেইট করছিল। রাইত তখন দশটা। কার্তিক মাসের রাত। ভালো ঠান্ডা পড়ছিল। তয় রাস্তা খালি আছিল না। গেরামের লোকজন ছিল। তারা গায়ে কাঁথা জড়াইয়া জোরে জোরে কথা বলতে- বলতে বিড়ি- সিগারেট টানতে- টানতে হাঁটতেছিল।
আমি অভিভূত হয়ে শুনছি .. টের পাচ্ছি কপালে ঘাম ফুটেছে।
আকাশে ফুটফুইটা পূর্ণিমার আলো ছিল। রাস্তার দুই পাশে আছিল বাঁশগাছ। বাঁশগাছ কুয়াশায় ঢাইকা ছিল। রাস্তার পাড়ে গেরাম আর মাঠ। স্যার আপনি দেখছেন না পাইকার তলা?
হু। বলে আমি মাথা নাড়লাম। ভীষণ অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছিলাম। সিলকের পাঞ্জাবির ওপর সোয়েটার পরে ছিলাম। তারপরও আমার শীত করছিল ...হাতের তালু ঘেমে যাচ্ছিল । মাথার ভিতরে কুয়াশা ছড়িয়ে পড়ছিল ...
তারপরে কী হইল শুনেন। চারিদিকে ঘন কুয়াশা। তার মইধ্যে পরিস্কার চাঁন্দের আলোয় ছুটমামায় দেখল কুনও লোকজন নাই। যেন গায়েব হইয়া গেছে। পরক্ষণেই মনে হইল বাঁশঝাড়ের ভিতর দিয়া রাস্তা চইলা গেছে গ্রামের দিকে । লোকগুলার বাড়ি মনে হয় সেই গ্রামে। তারপরে কী হইল শুনেন। আমার ছুটমামায় দেখল রাস্তার পাশে একখান মোটরসাইকেল থাইমা আছে। একটা লোক উবু হইয়া ঝুঁইকা কী যেন দেখতাছে। মোটরসাইকেল মনে হইল নষ্ট। পাশে সাদা শাড়ি পরা এক বুড়ি খাঁড়ায় আছিল। চশমা পরা বুড়ির গায়ের রং ধবধবে ফরসা । বুড়ির গায়ে চাদর ছিল। আর লোকটা সোয়েরটার আর কালো প্যান্ট পইরা ছিল।
আমি অভিভূত হয়ে শুনছি ...
আমার ছুটমামায় মিনার্ভা সার্কাসে মোটরসাইকেলের খেলা দেখাইত। আমার ছুটমামায় তো মোটরসাইকেল মেরামত করতে পারেই।আর ছুটমামার মন ছিল অনেক বড়। আপনেরে বলছি না স্যার ... আমার ছুটমামার একটা নীল রঙের ইয়ামাহা হানড্রেড ছিল। ঐ মোটরসাইকেলে চইড়া কত ঘুরছি। হায়, আমার ছুটমামায় কোথায় যে হারাইয়া গেল! বলে মুক্তি চুপ করে রইল। দু’হাতে মুখ ঢাকে। ওর লালচে চুলের ওপর গোলাপি ওড়না। ফরসা কপাল। নীল রঙের টিপ। কাঁদছে বলে মনে হল।
আমি ছোট্ট শ্বাস ফেলে মুখ ফিরিয়ে দেয়ালের দিকে তাকালাম। কালো রঙের জ্যাকেট পরা শাহরুখ খান-এর পোস্টার। দৃশ্যটা বাস্তব না অবাস্তব ঠিক বুঝতে পারলাম না। জানালার ওপাশে কার্তিক দুপুরের ধূসর আকাশ ছড়িয়ে আছে। ছেঁড়া -ছেঁড়া শুভ্র মেঘ ভাসছিল। সারা বাড়ি কী রকম শুনশান করছিল। এ ঘরের দরজা খোলা। আমি যেখানে বসে আছি সেখান থেকে খাওয়ার ঘরের তোশিবা ফ্রিজটা চোখে পড়ে। ফ্রিজের সামনে মুক্তির মা দাঁড়িয়ে। টল ফিগার। কালো রঙের সালোয়ার কামিজে শরীরের দুধে আলতা রঙ চমৎকার ফুটেছে। মুক্তির মা একবার এদিকে তাকালেন। মুখে হাসির রেখা। হাজি সাহেব কি করছেন? ঘুমাচ্ছেন মনে হল।
মুক্তি ওড়না দিয়ে চোখ মুছছে-মুছতে একবার নাক টানল। তারপর বলল, তারপরে কী হইল শুনেন। (এখন আমি জানি ও কী বলবে) ... আমার ছুটমামায় লোকগুলার কাছে গিয়া দাঁড়াইল। ঠিক তখনই আমার ছুটমামায় কেমন জানি পচা গন্ধ পাইল । জানেন স্যার, বুড়ির মুখটা না কেমন হলুদ রঙের। মরা-মরা। আর লোকটা যেই না মুখ তুইলা তাকাইল ...আমার ছুটমামায় পাতিলের তলার মতন কালা মুখ দেখল। মুখ ভরতি বসন্তের দাগ, চুল পিছন দিকে আঁচড়ানো। চোখে নীল রঙের গগলস । লোকটা রাইতের বেলায় গগলস পড়ছে দেইখা আমার ছুটমামার কেমন সন্ধ হইল ...
আমি অভিভূত হয়ে শুনছি ...

উৎসর্গ: সোহামনি আর তার মাকে ...
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×