somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাশিয়ার লোককাহিনী: লোভী বুড়ির গল্প

০৫ ই জুলাই, ২০১১ দুপুর ১২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক অনেক দিন আগের কথা ...রাশিয়ার এক অজ গাঁয়ের একটি ভাঙা কুঁড়েতে বাস করত এক বুড়ো আর এক বুড়ি । সংসারে অভাব-অনটন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। কুঁড়ের পিছনে বনপাহাড়। সেই বনপাহাড় পেরুলেই অথই নীল সাগর। বুড়ো প্রতিদিনই জাল নিয়ে নীল সাগরে মাছ ধরতে যেত। মাছ ধরে হাটে বিক্রি করত। এভাবে বুড়োবুড়ি কোনওমতে টিকে ছিল।
একদিন।
ভোরবেলায় বুড়ো সৈকতে দাঁড়িয়ে নীল সাগরে জাল ফেলেছে। কিছুক্ষণ পর জাল বেশ ভারি মনে হল। আশ্চর্য! এরকম তো এর আগে কখনও হয়নি! জালে বড়সরো মাছ আটকালো নাকি। বুড়ো আপনমনে বলল। জাল এত ভারি যে টেনে তোলাই যাচ্ছে না । যাহোক। বহু কষ্টে সৈকতে জাল টেনে তুলল বুড়ো। জালে একটি সোনালি রঙের ছোট মাছ ছটফট করছে। আর কোনও মাছ নেই। বুড়ো দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
বুড়োকে অবাক করে দিয়ে মাছটি কথা বলে উঠল!
বলল, ও বুড়ো, ও বুড়ো। আমায় তুমি ধরো না, ধরো না। আমায় তুমি নীল সাগরে ফেলে দাও। আমি তোমার সব ইচ্ছে পূরণ করব। সত্যি করে বলছি।
জেলে বুড়োটা ছিল ভারী ভালোমানুষ। এই একটু বোকাসোকা আর কী। সে বলল: আমি আমার কিছু চাইনে বাপু। তোমায় আমি ছেড়ে দিলাম। তুমি মনের সুখে নীল সাগরে সাঁতার কাটো গে যাও।
এই বলে বুড়ো ছোট্ট সোনালি মাছটিকে নীল সাগরে ছেড়ে দিল।
তারপর জাল গুটিয়ে বাড়ি ফিরে এল।
বুড়োকে দেখেই খেঁকিয়ে উঠল বুড়ি, আজ ক’টা মাছ পেলে শুনি?
বুড়ো বলল, না রে বুড়ি। আজ মাছ-টাস তেমন পাইনি।
পাওনি! সে কী! বলে বুড়ি চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। হায়, ঈশ্বর। আজ না-খেয়ে থাকতে হবে । ঘরে যে আজ রুটিও নেই।
বুড়িকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যই হয়তো বুড়ো বলল, আজ জালে একখানি ছোট সোনালি মাছ উঠেছিল । ছেড়ে দিয়েছি।
ছেড়ে দিয়েছ!
হ্যাঁ ছেড়ে দিলাম। ওইটুকুন মাছ। বেচে ক’টাকাই বা পাব।
বুড়ি এবার কান্না থামিয়ে বুড়োর দিকে তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। যেন পুড়িয়ে ছাই করে দেবে।
বুড়ো বলল, আজ কি কান্ড হয়েছে জান? সোনালি মাছটি মানুষের ভাষা জানে। আমাকে বলল, আমায় ধরো না ধরো না। আমায় নীল সাগরে যেতে দাও। আমি তোমায় সাহায্য করব। তোমার ইচ্ছে পূরণ করব।
বুড়োর কথা শুনে বুড়ি রেগে উঠল। চেঁচিয়ে বলতে লাগল, মাছ তোমার ইচ্ছে পূরণ করবে বলল। তারপরও মাছের কাছে কিছু চাইলে না। ঘরে রুটি নেই। তুমি রুটি অন্তত চাইতে পারতে।
বুড়ি গজগজ করতেই লাগল।
বুড়ির গজগজানি বুড়োর সহ্য হয় না।
সে নীল সাগরের দিকে যেতে লাগল। সোনালি মাছের কাছে রুটি চাইবে।
সৈকতে পৌঁছে চিৎকার করে বুড়ো বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল।
তারপর জিজ্ঞেস করল, কি হল বুড়ো? তুমি আমায় ডাকছ কেন?
বুড়ো বলল, তুমি তখন আমায় বললে না যে তুমি আমার ইচ্ছে পূরণ করবে?
হ্যাঁ। বলেছি তো। তা, এখন তোমার কি ইচ্ছে হচ্ছে শুনি?
বুড়ো বলল, আমার বুড়ি আমার উপর ভয়ানক ক্ষেপেছে। আমি তোমার সাহায্য নিইনি বলে আমার ওপর খুব ঝাল ঝারছে।
আহা। তুমি আমার কাছে কি চাও তাই বল না কেন?
বুড়ো তাড়াতাড়ি বলল, আমার ঘরে রুটি নেই। তুমি কি আমায় একখানা রুটি দিতে পার?
সোনালি মাছ বলল, ও, এই কথা। তা তুমি এখন ঘরে যাও বুড়ো। তারপর প্রার্থনা কর। দেখবে যে ঘরে রুটি আছে।
বুড়ো ঘরে এল।
বুড়িকে জিজ্ঞেস করল, ঘরে কি রুটি আছে?
বুড়ি বলল, হ্যাঁ, ঘরে অনেক রুটি আছে। কিন্তু,-
কিন্তু, কি? বুড়ো অবাক।
আমাদের কাপড় ধোয়ার পাত্র আছে না?
হ্যাঁ।
সেটি ভেঙে গেছে। তুমি আবার মাছের কাছে যাও। একখানি নতুন কাপড় ধোয়ার পাত্র নিয়ে এসো।
কি আর করা। কাপড় ধোয়ার পাত্র চাইতে বুড়ো আবার নীল সাগরের পাড়ে এল।
সৈকতে চিৎকার করে বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল। তারপর জিজ্ঞেস করল, আবার কি হল বুড়ো?
তোমার কাছে সাহায্য চাইতে এসেছি।
বেশ। বল এবার তুমি কি চাও?
আমাদের কাপড় ধোয়ার পাত্রটি ভেঙে গেছে। বুড়ি এখন নতুন এটি কাপড় ধোয়ার পাত্র চাইছে।
সোনালি মাছ বলল, কাপড় ধোয়ার পাত্র পাবে। তার আগে ঘরে যাও। তারপর প্রার্থনা করো।
বুড়ো ঘরে ফিরে এল।
ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই বুড়ি চেঁচিয়ে বলল, এরকম ভাঙা ঘরে কি মানুষ থাকে! তুমি এখুনি মাছের কাছে যাও। নতুন বাড়ি চাও। নতুন বাড়ি না দিলে আমার যে দিকে দু’চোখ যায় আমি চলে যাব।
বুড়ির চিল্লচিল্লি বুড়োর সহ্য হচ্ছিল না।
নতুন বাড়ি চাইতে নীল সাগরের পাড়ে এল বুড়ো ।
এসে চিৎকার করে বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল। তারপর জিজ্ঞেস করল, এবার কি হল বুড়ো?
বুড়ো বলল, আমার বুড়ি একখানি নতুন বাড়ির আব্দার করেছে। নতুন বাড়ি না পেলে যে দিকে দু’চোখ যায় চলে যাবে বলল।
সোনালি মাছ বলল, ঠিক আছে। তুমি এখন ঘরে ফিরে যাও। তারপর প্রার্থনা কর। একটি নতুন বাড়ি পাবে।
বাড়ির দিকে যেতে লাগল বুড়ো।
বাড়ি কাছাকাছি এসে থমকে দাঁড়ালো বুড়ো । ভাঙা কুঁড়ের জায়গার সুন্দর একখানি বাড়ি। একেবারে নতুন। পুরোটাই ওক কাঠের তৈরি। বাদামি রঙের দরজা। সবুজ রঙের জানালা। জানালার ওপরে সবুজ আঙুর লতা ছড়ানো। ছাদে একখানি টিনের তৈরি লাল রঙের মোরগ। বাতাসে ঘুরছে। টিনের মোরগ ছাড়াও ছাদের ওপর একটি কালো রঙের চিমনি।
বুড়োকে দেখেই বুড়ি দৌড়ে এল। বলল, শুধু ভালো বাড়ি হলেই কি সুখ হয় গো? গাঁয়ের লোকেরা আমায় পাত্তা দেবে ভেবেছ? কাতিউসারাও তো একখানা নতুন বাড়ি তুলল। তাহলে?
তাহলে তুমি কি চাও শুনি? বুড়ো মিনমিন করে বলল।
বুড়ি বলল, আমি কি চাই সেটা কি তোমায় মুখে বলে দিতে হবে?
আহা বলই না। না-বললে বুঝব কেমন করে? লোভী বুড়ির ওপর বুড়োর ভয়ানক বিরক্তি ধরে যাচ্ছিল।
বুড়ি বলল, আমি একজন সুশীল রমনী (মূল ইংরেজি সংস্করনে রয়েছে ‘ফাইন লেডি’:P) ... আমি একজন সুশীল রমনী হতে চাই! শোন, তুমি এখুনি সাগরপাড়ে যাও! আমার মনের ইচ্ছের কথা তোমার মাছসাধুকে বলগে যাও!
বুড়ো চিন্তিত মনে নীলসগারের পাড়ে এল। বুড়ির যে আরও ইচ্ছে পূরণ করতে হবে, তা বোঝাই যাচ্ছে। সোনালি মাছের কাছে আর কিছু চাইতে লজ্জ্বা করছে বুড়োর । কিন্তু, কি আর করা। বুড়িকে কোনওমতেই রাগানো চলবে না। তাহলে বুড়োর জীবন নরক হয়ে উঠবে। আর সত্যি বলতে কি - বুড়িকে খুশি করতে ভালোই লাগছে। চল্লিশ বছর হল একসঙ্গে ঘর-সংসার করেছে। বলতে গেলে তেমন কিছুই দিতে পারেনি বুড়িকে।
নীল সাগর পাড়ে এসে চিৎকার করে বুড়ো বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল।
তারপর জিজ্ঞেস করল, কি হল বুড়ো? আমায় ডাকছ কেন?
বুড়ো বেশ কুন্ঠিত হয়ে বলল, আমি সমস্যায় পড়েছি।
কি সমস্যা?
আমার বুড়ি সুশীল রমনী হতে চায়।
ঠিক আছে। বাড়ি ফিরে প্রার্থনা কর। দেখবে যে তোমার স্ত্রীটি সুশীল রমনীতে পরিনত হয়েছে।
বুড়ো বাড়ি ফিরে অবাক। আগের সেই ওক কাঠের তৈরি নতুন বাড়ি নেই। তার জায়গায় একটি পাথরের তৈরি বাড়ি। বড় । তিনতলা । বাড়ির সামনে বড় উঠান। একপাশে আস্তাবল। গৃহভৃত্যরা সব ব্যস্ত হয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। রান্নাঘরে বাবুর্চি হরেক রকম রান্না করছে। আর বুড়ি বসে আছে একটা উঁচু চেয়ারে । পরনে ঝলমলে ব্রোকেডের পোশাক । ভৃত্যদের এটা-ওটা নির্দেশ দিচ্ছে।
বুড়ির চেয়ারের পিছনে কালো চামড়ার পোশাক পরা একটি শক্তপোক্ত ডাকাবুকো চেহারার মুশকো ধরনের ন্যাড়ামাথা যুবক দাঁড়িয়ে আছে। সেটিকে বুড়ি দেহরক্ষী বলে মনে হল।
বুড়ো এবার ক্ষেপে উঠে বলল, এখানে এসব কী হচ্ছে শুনি!
বুড়ি চেঁচিয়ে বলল, কি! তোর এত সাহস। আমাকে ধমক দিচ্ছিস। গুস্তাফ!
সেই ন্যাড়া মাথা মুশকো ডাকাবুকো যুবকটি এগিয়ে এল।
বুড়ো ঢোঁক গিলল। কি ব্যাপার? একে দিয়ে আমাকে মার খাওয়াবে নাকি। লোভী রমনীর পক্ষে সবই সম্ভব।
বুড়ি হাত তুলে কর্কসকন্ঠে বলল, যা! এই বুড়োকে আস্তাবলে নিয়ে যা। তারপর আচ্ছামতন চাবকা!
গুস্তাফ বুড়োর গলায় লোহার শিকল বেঁধে টানতে টানতে আস্তাবলে নিয়ে গেল । তারপর শপাং শপাং চাবুক কশাতে লাগল। গুনে গুনে চল্লিশবার চাবুক মারল। বুড়োর অচেতন রক্তাক্ত শরীর আস্তাবলের খড়ের ওপর পড়ে রইল।
জ্ঞান ফিরে এলে বুড়োকে ভৃত্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হল। প্রতিদিন তিনবেলা ঝাঁটা হাতে উঠান সাফ করতে হবে । খেতে হবে রান্নাঘরের মেঝেতে বসে । কাজে ভুলভাল হলেই আস্তাবলে নিয়ে গুস্থাফ চাবুক মারবে।
উঠান ঝাঁট দিতে দিতে মনে মনে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায় বুড়ো। আপনমনে বিড়বিড় করে বলে: ডাইনি বুড়ি! আমি ওকে সুখের জীবন দিলাম আর এখন আমাকে স্বামীর মর্যাদা দেয় না।
এদিকে সুশীল রমনী হয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্তি ধরে গেছে বুড়ির । মেজাজ খিটিমিটি হয়ে উঠেছে। আজ ওকে মারে তো কাল ওকে মারে। একদিন গালিগালাজ করে গুস্তাফকে তাড়িয়ে দিল।
বুড়ি একদিন বুড়োকে ডেকে বলল, অ্যাই বুড়ো, তুই এখনি সোনালি মাছের কাছে যা। গিয়ে বল যে আমার আর গর্ভনরের বউ হয়ে থাকতে ভাল লাগছে না । তোর মাছবাবাকে বলো গে আমি রানী হতে চাই।
বুড়ো ক্লান্ত পা ফেলে ফেলে নীল সাগরের পাড়ে এল।
মার খেয়ে খেয়ে শরীর দূর্বল হয়ে গেছে।
সৈকতে দাঁড়িয়ে ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠে চিৎকার করে বুড়ো বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল।
তারপর জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে বুড়ো? এবার তুমি কি চাও?
বুড়ো বলল, আমার বুড়ির আর সুশীল রমনী হয়ে থাকতে ভালো লাগছে না।
কেন? তোমার স্ত্রী এখন কি চায়?
আমার বুড়ি এবার রানী হতে চায়। আমার ইচ্ছে তুমি পূরণ কর।
আচ্ছা করব। সোনালি মাছ বলল। তার আগে বাড়ি ফিরে যাও। প্রার্থনা কর। তোমার স্ত্রী রানী হয়ে যাবে।
বুড়ো গাঁয়ে ফিরে এল। এসে তাজ্জব বনে গেল। পুরনো বাড়ির জায়গায় বিশাল একটি আকাশচুম্বি প্রাসাদ। চূড়াটি সোনার তৈরি। প্রাসাদের সামনে লোহার তৈরি ফটক। সশস্ত্র সৈন্যরা ফটকের সামনে কাঁধে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে। প্রাসাদের পিছনে একটি মনোরম বাগান। প্রাসাদের সামনে বিশাল চারণভূমি। সেই চারণভূমিতে সৈন্যরা সারিবদ্ধ হয়ে কুচকাওয়াজ করছে। বুড়ির পরনে রানীর পোশাক। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সৈন্যদের অভিবাদন গ্রহন করছে। বুড়ির পাশে সেনাপতি এবং গর্ভনর দাঁড়িয়ে। ড্রামস বাজছে। উর্দিপরা লোকজন রণসঙ্গীত। সৈন্যরা সমস্বরে চিৎকার করে উঠল ‘হুররা’!
যা হোক। কিছুকাল এভাবে কাটল। তারপর রানীর জীবনে ক্লান্তি এসে যায় বুড়ি । বুড়ি সেনাপতিকে নির্দেশ দিল, যাও, বুড়োটাকে খুঁজে আন।
কোন্ বুড়ো? সেনাপতি হতভম্ব।
যা হোক। শেষে সৈন্যরা বুড়ো কে প্রাসাদের পিছন থেকে ধরে আনল।
বুড়ি বলল, ও বুড়ো শয়তান। শোন। রানীর জীবন আমার ভাল লাগছে না। আমি নীল সাগরের কর্ত্রী হতে চাই । যাতে মাছেরা আমার কথা শোনে। যাঃ, এখনি এ কথা তোর মাছকে গিয়ে বল।
বুড়ো প্রতিবাদ করার চেষ্টা করল। অবশ্যি কোনও লাভ হল না। এখনই নীল সাগরপাড়ে না-গেলে বুড়ির নির্দেশে সৈন্যরা মাথা কেটে নেবে।
বুড়ো নীল সাগর পাড়ে এল।
সৈকতে চিৎকার করে বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
কিন্তু, সোনালি মাছটি আর এল না।
বুড়ো বেশ কয়েকার বলল. ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
কিন্তু সোনালি মাছটি এল না।
হঠাৎ যেন সাগরের পানি কাঁপতে লাগল। উপচে পড়তে লাগল পানি । আগে যেখানে ছিল স্বচ্ছ নীল জল, এখন ঘোর কৃষ্ণবর্ণ হয়ে উঠতে লাগল।
যা হোক। সোনালি মাছ সাঁতরে এল। এসে বলল, এবার কি চাও বল?
বুড়ো কাঁপতে কাঁপতে বলল, আমার বুড়ি মনে হয় পাগল হয়ে গেছে । সে এখন সাগরের কর্ত্রী হতে চায়। যাতে মাছেরা ...
বুড়োর কথা না ফুরোতেই সোনালি মাছটি লেজ ঘুরিয়ে নীল সাগরের অতলে তলিয়ে গেল।
বুড়ো বিষন্ন মনে গাঁয়ে ফিরে এল।
ফিরে এসে এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখল বুড়ো। সেই আকাশচুম্বি প্রাসাদটি শূন্যে মিলিয়ে গেছে। সেই সবুজ চারণ ক্ষেত্রটিও নেই। নেই সৈন্যসামন্তে তাঁবু। তার বদলে সেই পুরনো ভাঙা কুঁড়ে। কুঁড়ের ভিতরে বুড়ি । পরনে পুরনো শতছিন্ন পোশাক ...
যে লিঙ্ক থেকে অনুবাদ করেছি ...
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১২ ভোর ৬:৪১
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×