নিজস্ব প্রতিবেদক: গৃহ কর্মীদের জন্য ঢাকা অনিরাপদ শহর হয়ে উঠছে। কাফরুলে ন্যাম গার্ডেনে গৃহকর্মীকে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার গুলশানে খুন হলো আরেক গৃহকর্মী। পুলিশ যথারীতি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করছে। গৃহকর্মীদের হত্যার বিচার ক্ষমতাবান-ধনীদের হাতে আটকা।
রাজধানীর গুলশান থানা পুলিশ এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গুলশনার ১ নম্বর এর ৬ নম্বরের ৯/বি নম্বর বাড়ির একটি ফ্লাট থেকে এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন।
গুলশান থানায় ডিউটি অফিসার সোমবার রাত ১০ টার দিকে জানান, ঘটনাস্থলে সহকারী পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ূন কবির গিয়েছেন। তার মোবাইল নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলেন। এরপর হুমায়ূন কবিরের মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে, তিনি নিহতের নাম ঠিকানা না বলেই বলেন, গলায় ফাঁস দিয়ে একজন কাজের মেয়ে মারা গেছেন। নিহতের লাশ নিয়ে অন্য এক অফিসার মর্গে গেছেন।
এ ব্যাপারে গুলশান গুলশান থানা অপমৃত্যুর মামলা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তামিজি বলেন, গৃহকর্মীদের হত্যা এবং হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া খুব সহজ। পুলিশকে কিছু টাকা দিলেই হত্যা আত্নহত্যা হয়ে যায়। ময়না তদন্তে ডাক্তারের পিছনেও কিছু টাকা যায়। কিন্তু, এতে নিরাপদ হয়ে যায় গৃহকর্তা। সাধারণতঃ গৃহকর্তার ললুপ দৃষ্টি যায়, গৃহকর্মীর উপর। যারা তা মেনে নিতে পারে, তারা হয়তো হত্যার স্বীকার হয়না। অবশ্য, গৃহকর্তা কর্তৃক ধর্ষণের পর গর্ভ ধারণও মাঝে মাঝে হত্যার কারণ হিসেবে দেখা যায়। এক্ষেত্রে মূল দায়ী আমাদের দূর্ণিতিগ্রস্ত সমাজ ব্যবস্থা।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করলে জাস্টিস ফর হিউম্যান রাইটস'র চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল মজুমদার জানান, কিছুদিন পূর্বে জাতীয়দলের ক্রিকেটার শাহাদাতের বাসায় শিশু গৃহকর্মীকে কেমন নির্দয় নির্যাতন করা হয়েছে তা সবাই জানে। গত কিছুদিনের ঘটনা পর্যালোচনা করলেই বুঝা যায় অবস্থা কতটা ভয়াবহ।শুধুমাত্র এই মাসে লক্ষিপুরে একজন, ন্যাম গার্ডেনে একজন এবং গুলশানে একজনের লাশ উদ্ধারের সংবাদ আমরা সংবাদ মাধ্যমে পেয়েছি। আরো কতো সংবাদ পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্থান পায়নি, তা আমরা জানিনা। আজ মাসের ৭ তারিখ মাত্র। মাসের বাকী দিনে কি হবে বলা যায়না। শুধুমাত্র ৭ দিনে যদি ৩ মৃত্যু হয়, তবে বুঝতে হবে কতোটা ভয়াবহ পর্যয়ে গেছে গৃহকর্মী নির্যাতনের অবস্থা। এক্ষেত্রে দূর্ণিতিগ্রস্ত পুলিশ এবং ডাক্তারের ভূমিকাকে আমি সবচেয়ে বেশী বলব। শুধুমাত্র পুলিশ এবং ডাক্তার যদি সঠিক রিপোর্ট দিত, তবে গৃহকর্মী নির্যাতনের বিচার হতো। সেক্ষেত্রে অন্যরা গৃহকর্মী নির্যাতনের আর সাহস পেত না।
সূত্র: বিডিহটনিউজ