এতে কোন সন্দেহ নেই, প্রথম আলো দেশের এক নাম্বার পত্রিকা। দরিদ্র পাঠকদের প্রথম পছন্দ বাংলাদেশ প্রতিদিন আর যাদের কিনা সামর্থ আছে, তাদের অবশ্যই প্রথম পছন্দ প্রথম আলো। প্রথম আলোর বিরুদ্ধে অভিযোগে যাওয়ার আগে, একটু প্রসংসা না করলেই নয়। প্রথম আলো পত্রিকাকে এক কথায় স্বয়ং সম্পূর্ণ পত্রিকা বলা যায়। যাদের খেলার খবর পছন্দ, তারা নিশ্চিত প্রথম আলোকে এক নাম্বার পছন্দ হিসেবে নিবে। যারা বিজ্ঞাপনের জন্য পত্রিকা কিনেন, তাদেরও প্রথম পছন্দ প্রথম আলোই হবে। যারা কলাম পড়তে পত্রিকা কিনেন, তাদের বেশীর ভাগেরই প্রথম আলোই হবে প্রথম পছন্দ।দৈনিক পত্রিকা হিসেবে বিনোদনেও প্রথম আলো ফেলনা নয়। যারা তৈরী করা খবর পড়তে পছন্দ করেন, তাদেরও প্রথম পছন্দ প্রথম আলো। সব মিলিয়ে প্রথম আলো সেরার কাতারেই আছে।
প্রথম আলোর সাংবাদিকরাও খুব বেশী খারাপ হওয়ার সুযোগ কম।কেননা, তাদের চেক এন্ড ব্যালেন্স বেশ শক্ত। যেখানে, অন্য সব পত্রিকার সাংবাদিকরাই প্রকাশ্যে অনৈতিকতায় জড়িয়ে পরে, সেখানে প্রথম আলোর সাংবাদিকদের মাঝে এটা বেশ সীমিত।
কিন্তু, কর্পোরেট এই পত্রিকা সত্যি কি দেশ সেরা?
তাদের নৈতিক অবস্থান কি সরল?
তারা কি সত্যি দেশ প্রেমিক?
তারা কি সত্যি নীতিতে অটল?
বেশী দূরে যেতে হবে না, নিকট অতীত এবং বর্তমানের দিকে যদি নজর দেই, প্রথম আলো বেশ রক্ষনশীর ভূমিকায় রয়েছে। এর পিছনে রয়েছে, টেলিকম বিজ্ঞাপন বন্ধ এবং সরকারী রোষানলে পরে, বিজ্ঞাপনের বাজার হারানোর হুমকীর প্রেক্ষিতে প্রথম আলো, বেশ সরকারী পত্রিকা সূলভ আচরণ করছে। অর্থাৎ কড়া সরকার বিরোধী যেসব সংবাদ তারা প্রকাশ করত, তার উপর সেলফ সেন্সরশীপ আরোপ করেছে। এটা শুধু বর্তমান বলে নয়, প্রথম আলো যখনই বিপদে পরেছে, ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যেতে এক মিনিটও সময় নেয়নি।
বাইতুল মোকারাম মসজিদে গিয়ে তোওবা পড়ার ঘটনাও বেশী পুরোনো নয়।
নীতিগতভাবে প্রথম আলো যে কোন সরকার বিরোধী সংবাদই প্রকাশ করে। সে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন। কিন্তু, বর্তমানে চাপের কাছে তাদের নীতি মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে।
প্রথম আলোকে বলা যায়,১/১১-এর কুশিলব।সেটা দেশ প্রেম থেকে করেছে না আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ, তা আজও প্রশ্ন হয়ে রয়েছে।
প্রথম আলো নিজের স্বার্থে যে কোন কিছু করতে পারে, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ, খতিবের কাছে গিয়ে তওবা পাঠ ও তাদের কর্মীকে চাকরী চ্যুত করা।একজন সম্পাদক তার সম্পাদিত পত্রিকার দায়িত্ব অস্বীকার করে তার কর্মীকেই চাকরীচ্যুত করার মাধ্যমে সুবিধাবাদের চরম নজীর স্থাপন করেছেন।
এতো কিছুর পরও প্রথম আলো এখনও দেশ সেরা।এর পিছনে কিছু কারণের মাঝে অন্যতম, অন্য কোন পত্রিকা প্রথম আলোর মতো পেশাদারিত্ব এবং সংবাদপত্রের মান বজায় রাখেনি। প্রথম আলো ছাড়া প্রথম সারীর প্রত্যেকটি পত্রিকা, কোন না কোন শিল্প গোষ্টির স্বার্থ উদ্যারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে।যদিও প্রথম আলোর সাথে ট্রান্সকমের স্বার্থের কথা অনেকে বলে। কিন্তু, প্রথম আলোকে অন্য পত্রিকার মতো ট্রন্সকমের স্বার্থ দেখতে দেখা যায়নি।
তাই, বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রথম আলোর কাছ থেকে আশা করা না গেলেও, অন্য পত্রিকার মতো ব্যক্তি স্বার্থ উদ্যোরে তৎপর হতেও দেখা যায়নি।
তাই, এখনও প্রথম আলোই বাংলাদেশের সেরা পত্রিকা।
১. ২৮ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৯ ০