সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শেখ বলেছেন, মৃত্যুতে মানুষের হাত নেই। মৃত্যু মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ কারণে মিনা ট্র্যাজেডির জন্য হজ কমিটির প্রধানকে দোষারোপ করা যাবে না।
গত বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ পালনকালে মিনায় পদদলিত হয়ে সাত শতাধিক হাজির মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে গ্র্যান্ড মুফতি এ কথা বলেন।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসপিএ জানিয়েছে, উপ প্রধানমন্ত্রী ও সুপ্রিম হজ কমিটির চেয়ারম্যান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ গতকাল শুক্রবার রাতে গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শেখের সঙ্গে দেখা করেন। তখন গ্র্যান্ড মুফতি তাঁকে বলেন, যেহেতু মৃত্যুর ওপর মানুষের হাত নেই; সে জন্য আপনাকে (এই ঘটনার জন্য) দোষারোপ করা যাবে না। নিয়তি বা ত্বকদির অমোঘ, অলংঘেয়।
কতটা ভন্ড হলে সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি এমন কথা বলতে পারে? যখন বাংলাদেশের নাগরিককে গলা কেটে হত্যার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সৌদি আদালত, তখন নানা মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সরকারও এই কঠোর আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছিল সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু, তখন বলা হয়েছিল, শরীয়া আইন অনুসারে হত্যার বদলে হত্যাই একমাত্র আইন।
এখন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি বলছে, যেহেতু মৃত্যুর ওপর মানুষের হাত নেই; সে জন্য আপনাকে (এই ঘটনার জন্য) দোষারোপ করা যাবে না। নিয়তি বা ত্বকদির অমোঘ, অলংঘেয়!
তাহলে কোন মৃত্যুর জন্য কাউকে দোষ দেওয়া যাবে না। কারণ এটা তো অলংঘেয়!আর যদি শরীয়া আইন অনুসারে হত্যার বদলে হত্যা হয়, তবে এবার দুই দফা যেই দুর্ঘটনার কথা বলা হয়েছে, তা মোটেও দূর্ঘটনা নয়, বরং হত্যা কান্ড বলতে হবে।
কেননা, প্রচির ধসে যখন কার মৃত্যু হয়, তবে সেটা অবশ্যই নেতায়েৎ দুর্ঘটনা বলা চলে না।এটা যারা তদারকী করছে, তাদের কারণেই এই হত্যাকান্ড হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।
পায়ের তলায় পৃষ্ট হয়ে যখন কেউ মারা যায়, তখনও সেটাকে কোন ভাবেই দূর্ঘটনা বলা যাবে না। এটাকে অবশ্যই হত্যাকান্ড বলতে হবে। অভিযোগ রয়েছে সৌদি যুবরাজ বাদশার সাথে দেখা করতে যাওয়ার সময়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই এই হত্যাকান্ড হয়েছে। কিন্তু, ভন্ড সৌদি কর্তৃপক্ষ সাথে সাথে এই অভিযোগ প্রত্যাশিত হবেই অস্বীকার করেছে।
সারা বিশ্বে যখন এই বিষয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তখন বাদশার দালাল গ্র্যান্ড মুফতিকে দিয়ে এই হত্যাকান্ডকে হালাল করছে সৌদি সরকার।
এখনই সময় সারা বিশ্বকে এই বিষয়ে স্বোচ্ছার হওয়ার। সৌদি অযোগ্য বাদশার পরিবারের হাত থেকে আমাদের পবিত্র ইসলাম ধর্মকে রক্ষা করা প্রতিটি মুসলামের দায়িত্ব হয়ে পরেছে। সেই সাথে যে সব বাংলাদেশীকে গলা কেটে নির্মম মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে, সেই সব বাংলাদেশীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। সরকার এখন যুক্তি দিতে পারবে, যেহেতু সৌদি গ্রান্ড মুফতি বলেছে, মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করা যাবে না, সেহেতু, সেই সব হতভাগ্য বাংলাদেশীদের দায়ী করে, সৌদি সরকার এবং আদালত চরম অন্যায় করেছে। এখন ক্ষতিপূরণ এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সেই অন্যায়ের প্রতিকার করতে হবে।