বিডিহটনিউজ এক্সক্লুইসিভ: মিরপুর পল্লবী থানাধীন কালসী রোড। এই রোডটি আবাসিক এলাকার ভিতর দিয়ে মহাসড়কটি গড়ে উঠেছে। সকাল-সন্ধা জ্যাম। রাস্তা পার হওয়ার আগে ইন্সু্রেন্স করিয়ে নেওয়া বাধ্যতা মূলক। কারণ এখানে কোন নিয়মের বালাই নেই। কে কার আগে ছুটতে পারবে। চলে অবৈধ হিউম্যান হলার। যারা প্রশাসনে নিয়োমিত টাকা দিয়ে রাজনৈতিক ছত্র-ছায়ায় তাদের বাগন চালায়। তাই দুই-একজন মারা গেলে তাদের কিছু যায় আসে না। ইন্স্যুরেন্স করান থাকলে পরিবার অন্তত নিশ্চিত হতে পারে।
গাড়ি দের এখানে অপরিসীম ক্ষমতা । বড় বড় হাইড্রোলিক হর্ন লাগানো বাসের প্রচন্ড ক্ষমতা। এক হর্নে রিকশা সাইড হয়ে যায়, মাঝে মধ্যে ভয়ে যাত্রীও নেমে যায়। বাসের ভেতরে প্রচন্ড গম্ভীর মুখে বসে থাকে যাত্রী। এটা ক্ষনিকের ক্ষমতা। বাস থেকে নামলেই ক্ষমতা শেষ। গন্তব্য ধরতে তখন ডাক দিতে হয় গম্ভীর যাত্রী কে, এই রিকশা!
এই এলাকার বাসিন্দারা পেশাগত কারণে সারা রাত জাগলেও দিনে ঘুমানোর কোন উপায় নেই।কারণ প্রচন্ড শব্দে বাজানো হাইড্রোলিক হর্ন শুনে লাফিয়ে ঘুম থেকে উঠতে হয়। এই হর্নের শব্দে কুম্ভ কর্ণেরও ঘুম ভেঙ্গে যেত। সাধারণ মানুষের এই হর্ণের শব্দে ঘুমানোর প্রশ্নই উঠেনা। রাতেও শান্তি নেই। রাত তিনটার সময় কোন কারণ ছাড়াই হঠাৎ হাইড্রোলিক হর্ন বাজানোর ইচ্ছে হয় চালকদের। কার কিছু বলারই সাহস নেই।
যারা ভাড়া ছিল খুব দ্রুতই তারা এই হর্ণের শব্দে বাড়ী ছেড়েছে। আবাসিক বাসা ভাড়ার চিন্তা ছেড়ে বাড়ীর মালিকরা অফিস ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা শুরু করল। যদিও অফিস পাড়া হিসেবে যেহেতু কোন সুনাম নেই,তাই সেক্ষেত্রেও সাফল্য খুব বেশী আশাবাঞ্চক নয়।
যারা ফ্ল্যাট কিনেছে আগে, তাদের আর বাসা ছাড়ার উপায় নেই। বাড়ীর মালিকদেরও নিজের বাড়ী ছেড়ে বাসা ভাড়া করে থাকার সাহস নেই। তাই তারা ধরনা দেওয়া শুরু করল পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কাছে। শব্দ দূষন রোধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান শুরু করল। কিন্তু, প্রতিটা বাস মালিক ট্রাফিক বিভাগকে নিয়োমিত বড় অংকের টাকা দেয়। বাস মালিকরা ওয়ে বিল নামে প্রতিদিন শুধু ট্রফিক পুলিশের বড় কর্তাদের দেওয়ার জন্য বাস প্রতি নেয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে।
ফলে ট্রাফিকরা বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না, এটাই স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। ফলে এক সময় স্থানীয় বাসিন্দারা এইটুকু উপলব্ধী করতে পারল,আল্লাহ্ -এর খাস নেয়ামত ব্যতিত হাইড্রোলিক হর্ন থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। সেই চিন্তা থেকে কালসীতে ফ্ল্যাট বাড়ীর সামনে ব্যানার টানান শুরু করল এই বলে: হে আল্লাহ্ হাইড্রোলিক হর্ন এর নির্যাতন থেকে মুক্তি চাই- আমিন বলে!
সূত্র: বিডিহটনিউজ