somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে দেখা পেলাম চাইনিজ ডিমের, তাও ইফতারিতে...এইডা কিছু হইলো?

২৮ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সারাদিন রোজা রেখে ইফতারি করতে বসার সময় মাথা আউলায়া যায় খিদায়। হাতের কাছে যা পাই তা তো খেতে ইচ্ছা করেই যা না পাই তাও খেতে ইচ্ছা করে। গোগ্রাসে গিলি সব তখন। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় যা পাই মোটামোটি অনেক খাবারই কিনে নিয়ে আসি। একটা এড এর কথা মনে পড়ে গেলো, নো উমার ফর লালাচ। হে হে হে।

যাই হোক। ব্যাচেলর লাইফে ডিমের বিকল্প বুঝি নেই বললেই চলে। ঘরে তো আর বউ নেই যে সপ্তপদী রান্না হবে। খাবারে আলু তো থাকবেই সেই সাথে ডিমের একটা না একটা কিছু উপাদান থাকেই। মেসের খালারা আবার বেশীরভাগই ডিম এক্সপার্ট হয়ে থাকে।
খিচুড়ি ছিলো সেদিন, সেই সাথে একটু আগেই কিনে আনা ডিম। খালাকে বললাম ভাজি করে দিতে। উনি আমাদের ৪ জনের জন্য ৪ টা ডিম ভাজলো। ভেজে এনে বললো ৪ নম্বর ডিমটা খাইয়েন না। এইটা জানি কিরাম কিরাম লাগলো আমার কাছে। আমিও তাকায়া দেখলাম আসলেই তাই। ৪ নম্বর ডিমটার রঙ, শেপ, এমনকি পূরা অবয়বটাই একটু আলাদা। পুরাটাতে সমমিশ্রিত রঙ (ইউনিফর্ম কালার)। আমি অবাক হলাম। এরকম রঙের ডিমতো প্রায়ই খাই সকালের নাস্তায়, যেকোন হোটেলেই। কিন্তু এই ডিমটা একটু আলাদা। অনেক বেশী ফুলছে, সেই সাথে অনেক ভালো ভাজি হয়েছে। কিন্তু ভিতরটা একদম গলে যাওয়া মোমের মত নরম। হঠাত করেই চাইনিজ ডিমের কথা মনে পড়লো। আগের দিন পড়েছিলাম একটা ব্লগে, সেই সাথে কিছু ভিডিও দেখেছিলাম। বুকটা ছাঁৎ করে উঠলো। চাইনিজ ডিম না তো? খালাকে জিজ্ঞেস করলাম।
ডিমটা কেমন ছিলো ?
- ডিমের কুসুমটা ছেড়ে দেয়ার পরই মিশে গেছিলো সাদা অংশটার সাথে।
খোসা কেমন ছিলো?
-একদম আসল ডিমের মতই, কোন পার্থক্য নাই, তবে কেমন যেন একটু নরম।


উনি আবার এই ডিমটাকেও পেঁয়াজ-মরিচ দিয়ে সুন্দর করে ভেজে এনেছিলো। আমি আর আমার এক ফ্রেন্ড বসলাম এটার পোস্টমর্টেম করতে। গন্ধ শুঁকলাম। দেখি ডিমের কোন গন্ধ নাই। এমনকি কোন বাজে গন্ধও নাই। তবে ফার্মেসীর ছাত্র হবার সুবাদে অনেক অনেক গন্ধই ল্যাবে নিতে হয়েছে। দেখি কেমন যেন একটা ক্যামিকেল টাইপ গন্ধ। প্রাথমিক পরীক্ষায় এটা নিশ্চিত হলাম যে ডিমটা নরমাল না। তারপর দেখলাম পুরা ডিমে একই ধরণের রঙ। আমরা সাধারণত যে ডিম খাই তাতে ছোপ ছোপ রঙ থাকে। এটা একদম সাদাটে ধরণের, হলদেটেই বলা যায়।
ব্লগে লেখা ছিলো এই ডিমটা বানাতে কিছু পলিমার ব্যবহার করা হয়। বাস্তবেও দেখলাম তাই। বাইরে একটা সুন্দর পলিমারের খোলস, কেউ দেখলে ভাববে বাহ। কি সুন্দর ভাজি হয়েছে। ভেতরের পদার্থটা অনেক নরম। গলে যাওয়া মোমের মত। কিন্তু এতো সুন্দর হয়েছে ডিমের শেপটা যে কি আর বলবো। আসল মুরগির ডিমও ফেল।

ব্লগে আবার লেখা ছিলো যে সিদ্ধ করলে তেমন একটা বোঝার উপায় নেই যে এটা আসল ডিম না। শুধু বাইরের খোলসটা একটু বড়। এটা আসলে কোন চোখে পড়ার মত পার্থক্যও না। কারণ অনেক ডিমেরই খোলস বড় থাকে।

ইফতারি খেতে বসে এই পোস্টমর্টেম করার পরে হাতটাও কেমন যেন গন্ধ গন্ধ লাগছিলো। আসল গন্ধই হোক কিংবা শুঁচিবায়ু, সেরাতে আর কিছুই খেতে পারলাম না। জঘন্য লাগলো। প্রতিজ্ঞা করলাম ডিম খাবো না আর কোনদিন।

পরিশিষ্ট, পোলট্রি শিল্প মনে হচ্ছে ধংস হয়ে যাবে। একটা ডিমের দাম ৭ টাকা কিংবা ৮ টাকা। এটাও যদি ক্যামিকেল দিয়া নকল বানায়ে বাজারে ছাড়া হয় তবে আসলে কিছুই বলার থাকেনা। এই ডিমের উৎপাদন খরচ নাকি ৩ টাকার মত। কিচ্ছু বলার নাই। ইউটিউব এর সেই ভিডিওতে একটা কমেন্ট দেখলাম, "YOU CHINESE FAKE THE FUKIN EGGS, WHEN YOU WILL FAKE THE MOON??"
এতো হতাশার মাঝেও হাসি পেলো।
আর একটা ব্যাপার, ১৬ টা ডিমের মাঝে ২ টা ছিলো চাইনিজ ডিম। কেউ বুঝতে পারারই কথা না যদি না সে আগে থেকে না জেনে থাকে এ ব্যাপারে। এভাবে ১৬টাতে ২ টা, কদিন পরে হয়তো ১৬ টাতে ৮ টা, একদিন ১৬ টা ডিমই খেতে হবে আমাদের চাইনিজ ডিম। রাগে ক্ষোভে মুরগি হয়তো কচুগাছে ফাঁস দিয়ে আত্ম হত্যা করতে চাইবে। সে দিন যেন আমাকে না দেখতে হয়।

আমি যেখান থেকে জেনেছিলামঃ
নকল ডিম হইতে সাবধান!

বাজারে ডিমের ভেজাল চলছে :p তাই আসল নকল ডিম চিনে নিন!!

অবিশ্বাস্য ও যুগান্তকারী আবিস্কার : কৃত্রিম ডিম, ‘চায়নার বিষাক্ত কৃত্রিম ডিম থেকে সাবধান’

ইউ টিউব ভিডিও দেখুন

জুলভার্ণ ভাইয়ের লেখা কিছু কথা...এবং এই পোস্ট পড়ে কিছুটা ভরসাও পেতে পারেন..শুরু করতে পারেন আবার ডিম খাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১:৫১
৭৬টি মন্তব্য ৫৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×