বিছানায় শুয়ে শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি শুধু ,বুকের ভেতরে অসীম শূন্যতা অনুভূত হচ্ছে। এতো গরমের মধ্যেও তীব্র কনকনে বাতাসের ছুরি যেন হৃদপিন্ডটিকে এফোড় ওফোড় করে দিচ্ছে।একটি তুলতুলে মাংশ পিন্ডকে জড়িয়ে ধরতে, নিষ্পেশিত করতে মনটা আকুলি বিকুলি করছে।আমার ভেতরের লোমশ শুয়োরগুলো প্রচন্ড জৈবিক ক্ষুধায় ,ক্রোধোন্মত্ত হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে আর দৌড়াচ্ছে। শুয়োরগুলো আমাকে স্থির থাকতে দিচ্ছেনা, হিংস্র করে ফেলছে। আমার যে একটু স্থির হওয়া বড়ই প্রয়োজন, এত অস্থিরতার মধ্যে কোন কাজই করা সম্ভব হবেনা । না- আর পেরে উঠছিনা ,কালকে আমাকে পতিতালয়ে যেতেই হবে ।তারপর বেছে বেছে খুঁজে বের করতে হবে চৌদ্দ-পনের বছরের একটি কচি মেয়ে ।
কতদিন হয়ে গেল ,আমি নারী মাংসের স্বাদ পাই না, কতদিন যৌনপল্লীতে যাইনা, অনেক আগে একবার গিয়ে শরীরের ক্ষুধা মিটিয়ে এসেছিলাম। মেয়েগুলো কত সস্তায় যে তাদের দেহ বিক্রি করে ! ৫০ টাকা, ১০০ টাকা,২০০ টাকা, ৩০০ টাকা। এত অল্প দামে এমন লোভনীয় জিনিস পৃথিবীর আর কোথায় পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ! আমি অভাগা এমন সুযোগ নাকের ডগায় পেয়েও সামান্য কটি টাকার অভাবে, দেহের লালসা নিয়মিত নিবৃত্ত করতে পারিনা।
মেয়েগুলো কত যে ভালো! কোন আবদার নেই, বিশেষ বাহানা নেই, চটুলতা নেই , ছেনালীপনার ছিটেফোটা নেই , কত সহজ সরল! যা কিছু করে,ব্যাবসার খাতিরে। খদ্দেরদের সামনে কাঁচা মাংশের পসরা সাজিয়ে বসে থাকে, মানিব্যাগ খুলে কয়েকটা নোট বের করে দিলেই, সুবোধ বালিকাদের মত নিম্নাঙ্গ উন্মুক্ত করে বিছানায় শুয়ে পড়ে।
আর এ যুগের ভদ্র ঘরের সামাজিক মেয়েরা ,যারা সমাজ সংসার থেকে লুকিয়ে ছেলেদের সাথে প্রেম প্রেম খেলে, তাদের কত যে তাল বাহানা, ছেবলামো, ছেনালীপনা, ধূর্ততা তা বলে শেষ করা যাবে না ! ওদের মনের মধ্যে যেন গুবরে পোকা সবসময় কিলবিল করে। থ্রি-পিছ , শাড়ী , চুড়ি, কানের দুল, সাবান ,শ্যাম্পু ,সুগন্ধি তেল, পারফিউম কিনে দাও, ফোনে ব্যালান্স ভরে দাও। আর কত কি!। মিসড কল মেরে ফোনে ভালাবাসার চটুল কথাবার্তা বলতে বলতে সমস্ত রাত্রি পার। মানি ব্যাগের সব টাকা শেষ ।এত কিছুর পরেও কাজের কাজ কিছুই হবেনা, যে কাজের জন্য এতকিছু তার ধারে কাছ দিয়ে ঘেঁষা যাবে না ।
হাতটা একটু ধরতে গেলেই মুখের মধ্যে একটা তিক্ত ভাব ফুটিয়ে ঝটকা মেরে সরিয়ে দেবে।বলবে, তুমি আমাকে একটুও ভালবাসনা, শুধু আমার দেহ পেতে চাও, তোমার চোখ শুধু আমার দেহের দিকেই নিবিষ্ট থাকে, একটু অন্ধকার পেলেই শুধু জড়িয়ে ধরতে চাও, তুমি নষ্ট হয়ে গেছো। শুনেছি মফস্বলের এই মেয়েগুলো নাকি বড় শহরে গিয়ে ঝোপের আড়ালে, চাইনিজ রেস্টুরেন্টের খোপের ভেতরে , সাইবার ক্যাফেতে হাত ধরতে দেয় ,মাঝে মাঝে চুমুও নাকি খেতে দেয় । তাও ভালো...!
তার চেয়ে পল্লীর মেয়েগুলান কত ভালো , দুই-শ টাকা দিলেই কচি ডাবের মত সেঁধিয়ে দেয়া যায় । মাঝে মাঝে শুধু একটু দর কষা-কষি করতে হয় এই যা ।ওদের অধ্যবসায় দেখলে অবাক হতে হয়, ধৈর্যের কোন ঘাটতি নেই , চেষ্টার নেই কোন ত্রুটি ,উদ্যমের শেষ নেই যেন , সফলকাম তাদেরকে হতেই হবে । কারন এই দেহ বিক্রি করেই যে , ওদের দেহ ভরতে হয় ।
অনেকেই দেখতে সুন্দর ও আবেদনময়ী , ওদের প্রয়োজন হয়না কাউকে ডাকতে , ক্রেতারাই ওদের খুঁজে খুঁজে বের করে ঘরে নিয়ে খিল মারে । কিন্তু যারা সুন্দর না কিংবা যাদের আবেদনময়তা কালের পরিক্রমায় ইতিমধ্যেই শুন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে । তারা ঘন্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বুক উন্মূলিত করে চিৎকার করেও কোন খদ্দেরকে আকৃষ্ট করতে পারে না । সেদিন শুনেছি ষোড়ষী রোজিনার মুখে তার জীবনের গল্প। দুর সর্ম্পকের দুলাভাই শহরে বড় লোকের বাসায় কাম দিবার কথা বলে ধর্ষণ করে বিক্রি করে দেয় এই পতিতালয়ে। তারপর থেকে এই বদ্ধপল্লীটাই রোজিনার শেষ আবাসস্থল।
জীবন আসলে এমনই, কেউ জীবন যাপনের স্বচ্ছলতা, আভিজাত্যের পরও স্বেচ্ছায় কারো কাছে লুন্ঠিত হয় স্বপ্ন পুরণের নেশায়, নিতান্ত কামনার বসে, কেউবা জীবিকার তাগিদে, দুমুঠো খাবারের আশায়……!!!!!!!!