গ্রাভিটি বা অভিকর্ষ বল হচ্ছে ম্যাটার বা যে কোন বস্তুর( যার ভর আছে) নিজস্ব বৈশিষ্ট। এই বস্তুর মধ্যে আছে মঙ্গল গ্রহ, চাদ, পৃথিবী, সুর্য এমনকি আপনি নিজেও। আপনার নিজের শরিরেও একটা নির্দিস্ট পরিমান নিজিস্ব গ্রাভিটি বা অভিকর্ষ বল আছে। উদাহরন স্বরুন মনে করুন আপনি কাউকে খুবই পছন্দ করেন তাই তাকে জরিয়ে ধরলেন। এখন আপনার শরিরে প্রত্যেকটা অনু যাকে জরিয়ে ধরেছেন তার প্রত্যেকটা অনুকে একটা নির্দিস্ট বলে আকর্ষন করবে। ঠিক যেই বলে সুর্য আপনাকে আকর্ষন করে। এটা সত্যি যে পৃথিবী ছারাও সুর্যও একটা নির্দিস্ট বলে আপনাকে সবসময় আকর্ষন করছে। আপনি টের পাচ্ছেন না কারন এক. এর পরিমানটা খুবই ছোট। দুই. পৃথিবীর যে একটা শাক্তিশালি গ্রাভিটেশনাল ফোর্স বা অভিকর্ষিয় বল কাজ করেতেছে আপনার উপরে সেটার কারনে সুর্যের টানের এই ক্ষুদ্র বলটা অনুভুত হয় না।
এই কারনে আপনি যার সাথে কোলাকুলি করছেন তার আর আপনার মধ্যে যে আকর্ষন হচ্ছে সেটা টের পাচ্ছেন না। অথবা সুর্য যে শক্তিতে আপনাকে টানছে সেটাও টের পাচ্ছেন না। এর মানে আপনার শরির বুঝতেই পাচ্ছেনা সুর্যের মতন বিশাল কিছু একটা আছে। কারন এটি পৃথিবী থেকে ১৪.৬৯ কোটি কিলোমিটার দুরে অবস্থিত। এখন এই পোস্টের মুল প্রশ্ন হচ্ছে যদি সুর্য না থাকতো তাহলে কি হত??
প্রশ্নটা আর একটু সহজ করছি "যদি হঠাৎ করে সুর্য আমাদের চোখের সামনে থেকে বিলিন হয়ে যেত বা নাই হয়ে যেত তবে কি হত??" কখনো ছোট বেলায় এই প্রশ্ন কি করেছেন কখনো আপনার বাবা মা অথাব শিক্ষককে?? হয়ত কখনোই সঠিক উত্তরটা পাননি। চলুন আজকে জানি ঠিক কি হত যদি এরকম কিছু ঘটতো।
আচ্ছা প্রথম বিষয় হচ্ছে তাত্বিক ভাবে বা বৈজ্ঞানিক ভাবে কোনভাবেই এটা সম্ভবপর না। এটা হাস্যকর একটা কথা। কারন হিসেব মতে সুর্য আরো একশ কোটি বছর বাচবে এবং আস্তে আস্তে এটি বড় হতে হতে নিজস্ব জ্বালানি সংকটে পরবে। একসময় এটি আমাদের সমুদ্রকে শুকিয়ে ফেলবে এবং পৃথিবীকে আগুনের মত উত্তপ্ত করতে করতে ধংস্ব করে ফেলবে এবং নিজেই বিশাল একটা বিস্ফোরনের মাধ্যমে মহাকাশে বিলিন হয়ে যাবে। সাধারনত তারাগুলোর যা হয় আরকি। কিন্তু আমরা মজার কিছু শেখার জন্য অসম্ভব এই বিষয়টা মেনে নিলাম বা ধরে নিলাম যে হঠাৎ করে সুর্য গায়েব হয়ে গেল। তাহলে একেবারে একা হয়ে যাওয়া এই পৃথিবীটার ভাগ্যে কি ঘটবে??
সুর্য ভ্যানিশ হয়ে যাওয়ার ঠিক পরবর্তি সেকেন্টএর পর থেকে ৮ মিনিট ২৪ সেকেন্ট পর্যন্ত আমরা পৃথিবীর মানুষ কিছুই টের পাবো না। কেন?? কারন সুর্য থেকে আলো পৃথিবী পর্যন্ত পৌছতে ৮ মিনিট ২৪ সেকেন্ট সময় নেয়। তাই সুর্যের কোন কিছু ঘটলে সেটা আমাদের টের পেতে এই সময়টুকুন অপেক্ষা করতেই হবে। এছারাও পৃথিবীকে সুর্য যে আকর্ষন করে ধরে আছে সেটাও ৮ মিনিট ২৪ সেকেন্ট ধরে চলতে থাকবে। কারন একই গ্রাভিটি বা অভিকর্ষ বলও আলোর গতিতে চলে। ফলে সুর্য গায়েব হয়ে যাওয়ার পরও ৮ মিনিট ২৪ সেকেন্ট ধরে পৃথিবী সুর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকবে।
সুতারং এই আট মিনিটের পরেই বেশ কয়েকটা মজার ঘটনা ঘটবে। প্রথমত যখনই আমাদের চোখের সামনে থেকে সুর্য উধাও হয়ে যাবে সাথে সাথে পৃথিবী তার কক্ষপথ থেকে সরে যাবে। আমরা তখন প্রচন্ড ভয় পেয়ে যাবো এবং আমাদের মধ্যে প্যানিক বা ভয় কাজ করা শুরু করবে। এই সময়ে আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আরো ভয় পাবো কারন যে তারা গুলো আমরা সাধারনত দেখি (আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলো) তারা ঠিকই জ্বলতে থাকবে। কারন হচ্ছে ওই গ্রহগুলোতে আলো পৌছতে আরো অনেক বেশি সময় নেয়। ফলে তারা তখনও তাদের আলো পেতে থাকবে আর আমরা তাদের আকাশে তারার মতন জ্বল জ্বল করে দেখতে পাবো।
কি বুঝলেন না?? উদাহরন দিচ্ছি। যেমন জুপিটার বা বৃহস্পতি গ্রহ প্রায় ৩০ মিনিট পরে জানতে পারবে যে সুর্য নাই যখন আমরা জানবো। তার মানে বৃস্পতি গ্রহকে আমরা আকাশে পরিস্কার ভাবে ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেখতে পারবো। এবং আরো মজার বিষয় হচ্ছে আমাাদের আকাশে জুপিটার গ্রহের আলো নিভতে আরো প্রায় ৩০ মিনিট বা ১ ঘন্টা লাগবে সেটা উক্ত গ্রহের অবস্থানের উপর ভিত্তিকরে। মানে পৃথিবীর ঠিক কোন দিকে সে আছে সেটার উপর ভিত্তি করে।
আকাশে কোন সুর্যের আলো এবং কোন চন্দ্রের আলো না থাকাতে আমাদের উপরে পুরো মহাবিশ্বের সহস্রকোটি তারার ঝলকানি দেখা যাবে। মানে তখনও আলো থাকবে। এই আলোটা আসবে লক্ষাধিক আলোকবর্ষ দুরে থাকা তারাগুলো থেকে। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে জোতির্বিজ্ঞানি আব্দুল আহাদ একটা সুত্র আবিস্কার করেন। সেই সুত্রতে তিনি দেখিয়ে দেন যে আমরা পুর্নিমার সময়ে চাদের যে আলো পাই তার ১/৩০০ হচ্ছে আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের আলো। মানে কিছু আলো আমরা তখনও পাবো।( আব্দুল আহাদ লন্ডন প্রবাসি বাংলাদেশি জোতির্বজ্ঞানি। তার আবিস্কৃত সুত্র এখন পুরো বিশ্বের জোতির্বিজ্ঞানিদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অথচ আমরা অনেকেই তার নামই শুনিনি কখনো) আব্দুল আহাদের ওই সুত্রকে বলা হয় আহাদস কন্সট্যান্ট। তবে আমরা পুরোপুরি অন্ধকারে যাবো না কারন আমাদের প্রচুর পরিমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে যেগুলোর জিবাশ্ম জালানি দিয়ে চলে। সুতরং আমাদের শহর এবং গ্রামগুলো অন্ধকার হবে না কিন্তু সেই বাতি কখনো আমরা নেভাতে পারবো না কারন সুর্য না থাকায় আর দিন হবে না।
ফটোসিনথেসিস সম্পর্কে তো সবার জানা আছে তাই না?? আমরা কম বেশি সবাই এটি সম্পর্কে ক্লাস এইটের বিজ্ঞান বইতে পরেছি। এটি এমন প্রক্রিয়া যাতে সুর্যের আলোর সাহায্যে গাছের পাতাগুলো তার শরিরে শর্করা শক্তি উৎপাদন করে যে শক্তি কাজে লাগিয়ে সে ফুল এবং ফল পায় এবং গাছ বেচে থাকে। মানে হচ্ছে এই প্রক্রিয়া না থাকলে গাছগুলো আস্তে আস্তে মারা যাবে। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন যে পুরো পৃথিবীর প্রাকৃতিক উৎপাদনের ৯৯ শতাংশই হয় এই ফটোসিনথেসিস এর মাধ্যমে। আমরা যা খাই, আপনি যে কাপর পরেন , আমরা যে কাগজে লিখি সবকিছু এই জিনিষের উপরে নির্ভর করে। আর একটা মারাত্মক ব্যাপার হচ্ছে এই ফটোসিনথেসিস না থাকলে গাছ আর কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষন করবেন না এবং আমাদের জীবন ধারনের জন্য গুরুত্বপুর্ন অক্সিজেন বাতাসে ছারবে না।
কি দুশ্চিন্তায় পরে গেলেন?? নাহ দুশ্চিন্তার কিছু নাই। আমরা পৃথিবীতে যে ৭০০ কোটির মতন মানুষ আছি আমরা বাৎসরিক ৬ লক্ষকোটি কেজি অক্সিজেন গ্রহন করি। কিন্তু আমাদের পৃথিবী এর চেয়ে ঢের বেশি অক্সিজেন আমাদের জন্য তার বায়ুমন্ডলে জমা করে রেখেছে। বিজ্ঞানিরা হিসেব করে দেখেছেন যে যদি পৃথিবীর কোন গাছ অক্সিজেন নাও দেয় তাতে আমরা পৃথিবীর মানুষ আরো ১ হাজার বছর বায়ুমন্ডলের জমানো অক্সিজেন দিয়ে বাচতে পারবো।
কিন্তু গাছগুলোর অবস্থা খারাপ হতে হতে করুন হবে। ছোট গাছগুলো মরে যাবে কয়েক দিন থেকে শুরু করে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে। কিন্তু বড় গাছগুলো বেচে থাকবে বছরখানেকের মতন। কারন বড় গাছগুলো তাদের দেহের মধ্যে এত পরিমান সুগার বা শক্তি সঞ্চয় করে রাখে যে তার বেচে থাকার জন্য ফটোসিনথেসিস এর প্রয়োজন পরবে না কমপক্ষে এক বছর পর্যন্ত। তবে তারপরও তারা মারা যাবে কারন ঠান্ডা। ঠান্ডা এত বেশি হবে যে তারা যে পানি গ্রহন করবে তা জমে বরফ হয়ে যাবে। তাদের শরিরে কোষগুলো পর্যন্ত জমে যাবে ফলে তারা আর ঠিক পর্যন্ত কাজ করতে পারবে না।
এবার আসি ঠান্ডা সম্পর্কে। সাধারনত সুর্য থাকা অবস্থায় আমাদের পৃথিবীতে বর্তমানে অন এভারেজ তাপমাত্র থাকে ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি। এটা কোথাও কম আবার কোথও বেশি। কিন্তু যদি সুর্য চলে যায় তবে আমাদের কি হবে?? প্রথম এক সপ্তাহে আমাদের পৃথিবীর তাপমাত্র নেমে যাবে বরফে। মানে শুন্যের নিচে। এটা খুবই সাধারন আমাদের জন্য। প্রায় মাসখানেক পৃথিবীতে এই তাপমাত্রায় থাকবে। কিন্তু সুর্য ছারা এক বছর পার করার পরেই ঘটতে শুরু করবে ভয়ানক ঘটনা। প্রথম বছরের মাথায় তাপমাত্র নামতে নামতে গিয়ে ঠেকবে মাইনাস ৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময়ে পৃথবীতে বাস করার সবচেয়ে নিরাপদ যায়গা হতে পারে আইসল্যান্ড এর মতন যায়গা গুলো যেখানে মাটির নিচের গরম তাপমাত্রা উপরে উঠে আসে। অথবা বড় বড় ড্রিল মেশিন ব্যাবহার করে মাটির অনেক অনেক নিচে চয়ে যাওয়া যেখানে তাপমাত্রা বেশি।
একটা মজার বিষয় জেনে রাখবেন পৃথিবীর কিন্তু বাইরের কোন তাপমাত্রা বা আলো প্রয়োজন হয় না। পৃথিবী নিজের যা আছে তা দিয়েই চলতে পারে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরা যারা আছি পৃথিবীর উপরে ঘুরে বেরাই আমাদের বাইরের তাপমাত্রা এবং আলোর প্রয়োজন হয়। এটার কারন হচ্ছে পৃথিবী যখন সৃস্টি হয় তখন এর কেন্দ্রের তাপমাত্র এবং চাপ এত বেশি ছিল যে লোহার মতন ধাতু গলে সেখানে তার ঘনত্ব বৃদ্ধি পেতে পেতে একটা মারাত্মক পর্যায়ে পৌছে। পুরো পৃথিবীর সমস্ত তাপের ২০ ভাগ আছে এখান থেকে। আর বাকি ৮০ ভাগ আসে পৃথিবীর অভ্যন্তরে থাকা বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় মৌলিক পদার্থের প্রচন্ড তেজস্ক্রিয়তার কারনে। যেমন ইউরেনিয়াম যেটা দিয়ে আমরা পারমানবিক বোমা বানাই। এই ভয়ানক মৌলটি বিশাল আকারে জমা আছে পৃবির কেন্দ্রে। ফলে পৃথিবীর নিজের জ্বালানির কোন শেষ হবে না। এবং এর কারনেই পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্র ৫০০০ ডিগ্রি সেলসিয়া যেটা সাধারনত সুর্যের হয়ে থাকে। সুতরং সে ঠান্ডাও হবে না। ঠান্ডা হয়ে যাবো আমরা যারা পৃথিবীর উপরে বাস করছি। সুতারং যারা এই তাপমাত্র কাজে লাগাতে পারবে তারাই বেচে থাকবে আর যারা পারবে না তারা মারা পরবে।
পরের ১০ থেে ২০ বছরে বিষয়টা আরো একটু ডিফারেন্ট হবে। পৃথিবীর মধ্যে এক ধরনের কুয়াশার সৃস্টি হবে। কিন্তু সেই কুয়াশাতে কোন পানি থাকবে না। পানির বদলে সেখানে থাকবে বরফ। এটার কারন হচ্ছে আমাদের বায়ুমন্ডল তখন এতটাই ভয়ানক ঠান্ডা হবে যে সে নিজেই জম জমে উপর থেকে পরতে শুরু করবে। Fritz Leiber তার সাইন্সফিকশন গল্প A Pail of Air তে খুব সুন্দর করে এই জিনিষটা ব্যাখ্যা করেছেন। গল্পটা পরে নিতে পারেন খুবই অসাধারন লাগবে নিশ্চিৎ করে বলতে পারি। গল্পের মুল বিষয় হচ্ছে পৃথিবী সুর্য থেকে সরে গিয়েছে। তাই বায়ুমন্ডল জমে বরফ হয়ে পরছে। তো বাচার জন্য একটা পরিবারের সদস্যাদের একটা বিশেষ স্যুট পরে ঘরের বাইরে গিয়ে জমা বরফের মধ্যে থেকে শুধু মাত্র অক্সিজেন এর বরফগুলো নিয়ে আসতে হবে। এই অক্সিজেন এর বরফ তারা আগুনে গলিয়ে তাদের জন্য প্রয়োজনিয় বাতাসের ব্যাবস্থা করবে। গল্পটা মারাত্মক বলতে পারেন। আপনার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে পরার সময়।
এবার আসি সমুদ্রের বেলায় কি হবে। মোটামুটি এক বছর বা দুই-তিন বছরের মধ্যে পুরো সমুদ্রর উপরিভাগের পানি জমে বরফ হয়ে যাবে। কিন্তু মজার বিষয়টা হচ্ছে নিচের পানি খুব সুন্দর ভাবে থেকে যাবে এবং সেখানে মাছগুলো থাকবে এমনকি সেই পানি বেশ ভালো ভাবেই গরম থাকবে কারন সমুদ্রে নিচে থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন ফাটল এর মধ্যে থেকে গরম লাভা বের হওয়াতে। এর মানে হচ্ছে সুর্য চলে যাওয়ার কয়েক হাজার বছর পরেও যদি পৃথিবীতে কোন এলিয়েন বা ভিনগ্রবাসি ঘুরতে আসে তারা সমুদ্রের উপরিভাগের বরফ কেটে ভিতরে ঢুকে সু্ন্দর পরিস্কার পানি দেখতে পারে যেখানে কিছু মাছ তখনও ঘোরাঘুরি করতে থাকবে।
কিভাবে?? কারন বিজ্ঞানিরা সমুদ্রে একেবারে গভির তলদেশে কিছু শেবাল পেয়েছেন যেগুলো সুর্যের আলো ছারাই বাচে। তারা ফাটোসিথেসিস এর বদলে কেমোসিনথেসিস এর মাধ্যমে বাচে। মানে তারা সুম্রদ্রের তলদেশের সালফার, মিথেন গ্যাস এবং লাভার আগুনকে কনভার্ট করে নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করে বাচে। এদের আবার কিছু ছোট মাছ খায়। সেই ছোট মাছগুলোকে আবার কিছু বড় মাছ খেয়ে বাচে। মোদ্দা কথা এখানে একটা পুরো খাদ্যচক্র চলতে থাকবে হাজার বছর ধরে যেখানে পুরো পৃথিবীর উপরিভাগ অন্ধকার আর ঠান্ডায় জমে যাবে।
এবার আসি প্রথম প্রশ্নে। আসলে কি মানুষ ধংস্ব হয়ে যাবে এমন পরিস্থিতে। মোটেই না। কারন পৃথিবী হাজার বছর ধরে চলতে থাকবে কারন সে কখনাই সুর্যের উপর নির্ভর করে চলেনি। ফলে জীবন ধরন হয়ত কঠিন হয়ে যাবে কিন্তু পৃথিবীর কিছুতেই ধংস্ব হবে না। এর পরিবর্তে পৃথিবী আসলে একটা উরন্ত মহাকাশ যানে পরিনত হবে। যেটি কোন বাধা ছারাই মহাকাশে আমার মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে উরতে থাকবে লক্ষ কোটি বছর ধরে। এই উরার গতি হবে প্রতি সেকেন্টে ৩২ কিলোমিটার। এবং মজার বিষয় হচ্ছে পৃথিবী একেবারে সোজা উরাতে শুরু করবে। উরতে উরতে এক সময় এটি হয়ত গ্যালাক্সিতে থাকা লক্ষাধিক তারা মধ্যে সুর্যের মতন অন্য একটি তারার মহকর্ষির শক্তি অভ্যন্তরে পরে গিয়ে তাকে কেন্দ্র করে ঘুরতে শুরু করবে। হয়ত সেখানে একটার বদলে দুইটি তারা থাকবে। ফলে তখন পৃথিবরি পৃানিরা একটা বদলে দুইটা সুর্য দেখবে এবং একটা চাদের বদলে অনেকগুলো। কেন?? কারন পৃথিবীর এই ভ্রমনের সময় দেখা যাবে সুর্যের মতন অনেক ছোট ছোট গ্রহ বা গ্রহানুকে সে টেনে নিজের মহাকশ্য বলয়ের মধ্যে নিয়ে এসেছে। ফলে পৃথিবীর এই বিশাল জার্নি শেষে অনেকগুলো চাদ পৃথিবী পেয়ে যাবে। যেটা সে প্রথম সৃস্টির সময় পায়নি।
লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাওয়ার জন্য অনেক দুঃখিত। নিচে তথ্যসুত্র গুলো উল্লেখ করলাম। দয়া করে ওগুলো ঘুরে আসবেন। আপনার অনেক অনেক গুরুত্বপুর্ন প্রশ্নে জবাব পেয়ে যাবেন।
তথ্য সুত্রঃ
প্রথম ধন্যবাদ পাবে ইউটিউব এর ভি-সস চ্যানেলের সঞ্চালক মাইকেল। এই লেখার মুল ভিডিওর লিংক
https://www.youtube.com/watch?v=rltpH6ck2Kc
গ্রাভিটেশনাল ফোর্স হিসেব করার জন্য নিচের ক্যালকুলেটরটি ব্যাবহার করতে পারেন। এটা খুবই মজার একটা কাজ বাচ্চাদেরকে খুব সহজে ফিজিক্স শেখাতে পারেন এটা দিয়ে।
http://www.wsanford.com/~wsanford/calculators/gravity-calculator.html
সৌরজগতে ব্যাপ্তি সম্পর্কে জানতে এখানে যান। এত সুন্দর করে সৌজগতকে কোন ওয়েবসাইটা আজ পর্যন্ত বোঝাতে পেরেছে কিনা আমার জানা নেই। প্রত্যেকটা গ্রহকে ধরে ধরে তার নিজিস্ব অরবিটে ঘোরান আর মজা দেখুন।
http://www.solarsystemscope.com/
এই পেইজটি আপনার কাল্পনিক সিম্যুলেশনের মাধ্যমে মধ্যকর্ষন বা গ্রাভিটি সম্পর্কে ধারনা দেবে। এখান থেকে্ মুলত বুঝতে পারবেন সুর্য না থাকবে পৃথিবী কিভাবে ছিটকে পরবে এর কক্ষপথ থেকে। এই ওয়েবসাইটটা যে কি মজার তা আপনি বোঝার পরে আমাকে জানাবেন কমেন্টেসএ
http://www.nowykurier.com/toys/gravity/gravity.html
এটা থ্রিডি স্পেস সিমুলেটর এর সফ্টওয়ার ডাউনলোডের সাইট। দারুন মজা পাবেন এবং শিখতে পারবেন।
http://www.shatters.net/celestia/
এখানে দুইটা মানুষের মধ্যে অনুভুত অভিকর্ষ বলের ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। খুবই মজা করে।
https://www.reddit.com/r/askscience/comments/15q9tx/which_has_more_gravitational_pull_on_me_girl/
সত্যিকার অর্থে এবং বৈজ্ঞানিক ভাবে সুর্য কিভাবে ধংস্ব হবে সেটা বুঝতে এই ভিডিওটা দেকে আসতে পারেন
https://www.youtube.com/watch?v=21RkSui1cG8
আমার লেখার বিষয়টা নিয়ে আরো অসাধারন কিছু আর্টিক্যাল সম্পর্কে পরতে নিচের সাইটগুলোতে ভিজিট করতে পারেন:
http://www.popsci.com/node/204957
http://scienceblogs.com/startswithabang/2010/07/12/q-a-how-long-would-we-have-if/
https://unitedcats.wordpress.com/2008/07/24/what-would-happen-if-the-sun-disappeared/
https://www.newscientist.com/blog/lastword/2004/05/put-that-light-out.html
https://www.physicsforums.com/threads/what-cosmological-event-could-snuff-out-the-sun-without-destroying-earth.625503/page-4#post-4079676
আলোর ঠিক কত সময় লাগে আমারেদ গ্রহগুলোর কাছে পৌছতে এটা জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
http://www.pbs.org/seeinginthedark/astronomy-topics/light-as-a-cosmic-time-machine.html
আমাদের বাংলাদেশে গর্ব আব্দুল আহাদ সাহেবের থিউরিটা পরতে এখানে ক্লিক করুন
http://images2.wikia.nocookie.net/__cb20090709115119/firstarktoalphacentauri/images/7/76/Ahads_constant_refereed_paper.pdf
A Pail of Air গল্পটা পরতে এখানে ক্লিক করুন। অসাধারন একটা গল্প। আশা করি পরে ফেলবেন।
http://www.baenebooks.com/chapters/0743498747/0743498747___6.htm
সমুদ্রের বিশাল জলরাশির নিচে থাকা ফাটলগুলো যেখান থেকে পৃথিবীর অভ্যন্তরের জিনিষ পত্র বের হয়ে আসে
https://www.youtube.com/watch?v=RaUcJ3CdTSE
Extremophiles বা বিরুপ আবহওয়াও জিবিত থাকতে পারা প্রানিদের সম্পর্কে জানতে এখান থেকে ঘুরে আসুন
https://www.youtube.com/watch?v=rltpH6ck2Kc
আরো আরো বেশি যদি কেউ জানতে চান তবে নিচের এই বইটা কিনে পরতে পারেন। Neil Degrasse Tyson এর এই বইটাতে তিনি আমার ব্যাখ্যা করা পুরো বিষয়টা আরো সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন।
http://www.amazon.co.uk/Death-Black-Hole-Cosmic-Quandaries/dp/0393330168
আবারো ধন্যবাদ সবাইকে এতক্ষন কস্ট করে এত বিশাল তথ্য সুত্র পরার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২১