মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
পিলখানার নৃশংস হত্যাকান্ডের পরবর্তী কয়েকটি বিষয়ে কিছু প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে খোলাসা করার জন্য আপনার প্রতি আহবান জানাচ্ছি ও কিছু পরামর্শ দিচ্ছি।
প্রশ্নঃ
১ । সামরিক বাহিনীতে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে বা করা হচ্ছে কেন?
২। এই প্রথম দেখলাম রাজনৈতিক সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার পরেও সামরিক বাহিনীর সদর দফতরে প্রেস ব্রিফিং করে বিচার দাবী করা হচ্ছে। এভাবে দাবী উত্থাপন এবং সামরিক বাহিনীতে ক্ষোভ আছে তা প্রকাশ্যে বলার কারন কি?
৩। শুক্রবার বিকালে জানাযার সময়ে অর্থমন্ত্রী মুহিত, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক এবং বিএনপি নেতা হান্নান শাহ লাঞ্চিত হন বলে লোকমুখে প্রচারিত হচ্ছে। এটা কিভাবে ও কেন ঘটল? এর পরিনতি কি?
৪। শুক্রবার বিকালে পল্লবীতে প্রচুর সংখ্যক লোক জড়ো হয়ে রাস্তা আটকিয়ে রেখেছিল কেন? শুনেছি তারা বিডিআর জওয়ানদের চোখ বেঁধে নেয়ায় বাধা দিতে চেয়েছিল। ঐ বিডিআর জওয়ানদের অবস্থা কি? অথবা এ কথা বলে কারা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল?
৫। জানাযার নামাযে মন্ত্রীদের লাঞ্চিত হওয়ার কথা শুনে অন্য কয়েক মন্ত্রী লুঙ্গি পড়ে প্রায় এক ঘন্টার জন্য নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন। তারা কি আশঙ্কা করছিলেন?
৬। কেন ঐদিনই রাতে মার্কিন রাষ্টদূতকে আপনার সরকারের উপর পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করতে হল? আপনার নির্বাচিত সরকারতো দেড়মাস আগেই গঠন করা হয়েছিল।
৭। ব্যাপক সংখ্যক সেনা কর্মকর্তা পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন কেন? কথাটা সত্য কিনা?
৮। সেনা কর্তৃপক্ষ এই প্রথম সরকারী উদ্যোগের আগেই ৫ লক্ষ টাকা প্রদানের ঘোষণা দিলেন। সরকার কেন আগে ঘোষণা দিলেন না?
৯। এটিএন বালার সংবাদদাতা মুন্নি সাহা কি পদত্যাগ করেছেন বা তাকে বাধ্য করা হয়েছে? তিনি কি ক্যামেরার সামনে বিডিআর জওয়ানদেরকে উস্কানিমূলক কিছু করতে উৎসাহিত করেছিলেন? বিশেষ করে গতকাল তাকে কোন রিপোর্ট করতে দেখা যায়নি (রাতে অন্তৎত দেখিনি)।
১০। বেগম জিয়ার দাবীর মুখে সাহারা খাতুনের তদন্ত কমিটির বাইরে ভিন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার ঘোষণা দেয়া হল। দু'টি তদন্ত কমিটি কি একই বিষয়ে পাশাপাশি তদন্ত করবে?
১১। আর্মি ষ্টেডিয়ামে সেনা কর্মকর্তাদের নামাযে জানাযা বাদ দেয়া হল কেন?
১২। ক্ষমতার কেন্ত্র এখন কয়টি? সুগন্ধ্যায় আপনার উপদেষ্টাগণ অথবা সেনাসদর আপনার সচিবালয়ের উপর কোন প্রভাব রাখছে কিনা? বিশেষ করে ানেক সিদ্ধান্ত এখন হয় সেনাসদর অথবা আপনার উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে আসে। সচিবালয় এখন গৌন হল কেন? মনে রাখবেন বিএনপির সময়ে হাওয়া ভবনকেও ক্ষমতার কেন্দ্র বানানো হয়েছিল।
পরামর্শঃ
১। সাধারন জনতার আস্থা ও বিশ্বাস সামরিক বাহিনীর উপর এখনও অটুট রয়েছে। এজন্য শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের নামাযে জানাযা মানিক মিয়া এভিনিউ অথবা সংসদের মাঠে আয়োজন করুন। দেখবেন জনতা সামরিক বাহিনীর শহীদদের কিভাবে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।
২। তদন্ত কমিটিতে সর্বদলীয় প্রতিনিধি অন্তূর্ভক্ত করুন।
৩। কিছু জনগনের মনের আশঙ্কা দুর করতে বিডিআর জওয়ানদের মধ্যে যারা আত্মসমর্পন করেছে তাদেরকে কোথায়, কিভাবে রাখা হয়েছে তা জানান।
৪। আপনার মন্ত্রীদেরকে আরো সাহসী হতে বলুন। গুজবেই যেন নিরুদ্দেশ না হতে হয়।
৫। জাতীয় ঐক্যের ডাকের সাথে সাথে সর্বদলীয় শোকসভার আয়োজন করুন।
৬। জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে ভিন্ন আলোচনা করুন। ঐদিন অন্যান্য সমস্ত আলোচনা বন্ধ করুন। শহীদ সৈনিকদের জন্য ভিন্ন কোন উপাধি প্রদান করুন।
৭। দ্রুত ট্রাইবুনাল গঠন করে অপরাধীদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তি দিন।
জাতীয় ঐক্য ও সংহতির স্বার্থে এ পরামর্শগুলো দেয়া হল। ব্লগারদের কারো কোন পরামর্শ থাকলে দিতে পারেন।