somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অমর্যাদাকর বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধ করা উচিত, ভাল বিজ্ঞাপনগুলোকে পুরস্কার দেয়া উচিত

১৭ ই আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিজ্ঞাপন হচ্ছে কোন পণ্যের প্রসার ও প্রচারের জন্য একটি অনন্য মাধ্যম। বিজ্ঞাপন একটি পদ্ধতি হলেও এটা যে কোন একটি প্রচার মাধ্যমকে অবলম্বন করে চলে। ইলেক্ট্রনিক্স গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ভিডিও চিত্র ও শব্দের সমন্বয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে পন্যের প্রচারে মানুষের অন্তরকে দ্রুত প্রভাবান্বিত করা যায়। যেহেতু এটি একটি গণমাধ্যম এবং সমাজের সকল বয়সের মানুষ একসাথে বসে এই মাধ্যমের অনুষ্ঠান দেখেন সেহেতু এখানে প্রচারিত বিজ্ঞাপনের নির্দিষ্ট মানদন্ড রক্ষা করা জরুরী।

ইদানিং টেলিভিশনে কিছু কিছু বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে যা খুবই আপত্তিকর এবং মানুষের মানবিক মর্যাদার পরিপন্থি। 'প্রাণ' গ্রুপের একটি পণ্য 'প্রাণ জ্যুস'-এর বিজ্ঞাপনে চৌকিদার থেকে দারোয়ানে পদোন্নতি পেয়ে অন্যের স্ত্রী কে পাহারা দেয় কিন্তু নিজের কোন বউ না থাকায় অভিনেতার আফসোস দেখানো হয় আপত্তিকরভাবে এবং অবশেষে প্রাণ জ্যুস খেয়ে বউ পেয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখানো হয়। বিজ্ঞাপনটি পন্যের বাণিজ্যিকিকরণের পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধকেও টাকার মানদন্ডে নির্ধারণ করছে, নারীর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে। বিয়ে একটি সামাজিক সম্পর্ক যার মাধ্যমে একটি যুগলের ভালবাসার সম্পর্ক তৈরী হয়। পারস্পরিক মর্যাদা, ভালবাসা, কর্তব্য ও দায়িত্ববোধের অঙ্গীকারের মাধ্যমেই স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক তৈরী হয় এবং এগিয়ে চলে। অথচ প্রাণ জ্যুসের বিজ্ঞাপনে মানবিক এই মূল্যবোধকে অবজ্ঞা করা হয়েছে, নারীকে প্রাণ জ্যুসের মত একটি সস্তা পন্যের সমতূল্য মানে প্রকাশ করা হয়েছে। একজন ভাঁড়ের মাধ্যমে ভাঁড়ামিপূর্ণ এই বিজ্ঞাপন বন্ধ করা প্রয়োজন।

আরো একটি বিজ্ঞাপন হচ্ছে বিল্ডট্রেড বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপনে ভাগ্য দেখার নামে সমস্ত মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে। যারা এই টিন ব্যবহার করেননা তারা 'ব' ও কার 'বো' এবং 'ক' আকার 'কা' -বোকা এই ডায়লগ দিয়ে সমগ্র দেশের দর্শক শ্রোতাকে বোকা বানানো হচ্ছে। আমরা কি আমাদের মর্যাদাবোধকে হারিয়ে ফেলেছি? তা না হলে প্রকাশ্যে সমগ্র দেশবাসীকে বোকা বলে অভিহিতকারী এই বিজ্ঞাপন প্রচারের পর কেন কোন প্রতিবাদ হচ্ছে না? কেন টিভি চ্যানলের কমার্শিয়াল বিভাগগুলো এগুলো বোঝেন না?

নতুন আরেকটি বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে 'নাকে তেল দিয়ে ঘুমা' খ্যাত প্রবীণ অভিনেতা জামালউদ্দিনন অভিনীত একটি বিজ্ঞাপনে। তিনি কার্জন হলের পাশে কদম ফুল নিয়ে এক তরুনীর পিছে নিয়েছেন। এধরনের অযৌক্তিক ও ভাঁড়ামিপূর্ণ বিজ্ঞাপনে একজন প্রবীণ ও শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি হয়েও কিভাবে তিনি অভিনয় করেন সেটাই বিস্ময় লাগে।

কিছুদিন আগেও বিভিন্ন নারী সংগঠন ফেয়ার এন্ড লাভলীর বর্ণবাদী বিজ্ঞাপনগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। বাংলালিংকের একটি বিজ্ঞাপনে অশ্লীল নাচানাচি নিয়েও বিরোধীতা হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞাপন এজেন্সী বা পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাতে কর্ণপাত করেননি।

টিভি চ্যানেলের অনেক বিজ্ঞাপন আমাদের হৃদয় স্পর্শ করে। বাংলালিংকের বিজ্ঞাপন 'দিন বদলানোর পালা' আর্ন্তর্জাতিক এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। শর্মীলী আহমেদের মুক্তিযুদ্ব নিয়ে প্রচারিত বিজ্ঞাপন আমাদের চোখে পানি এনে দেয়। আজম খানের বিজ্ঞাপনটিও অনন্য। কিংবা 'তিন মিনিটে তৈরী হয় টিফিনকারী ফ্লেভারে'-জিঙ্গেলের সাথে অথবা ছোট দুই ভাইয়ের কার্টুন দেখার আকুতি নিয়ে একটি টিভি প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন অবশ্যই সকলের প্রশংসার দাবী রাখে। এই বিজ্ঞাপনগুলোও আমাদের দেশেই তৈরী হচ্ছে। তাহলে আমাদের কেন অশ্লীলতার ইঙ্গিতকারী, মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী, অমর্যাদাকর, নারীর প্রতি অবজ্ঞাসূচক এই বিজ্ঞাপনগুলো দেখতে হবে। এগুলো অবিলম্বে বন্ধ করা উচিৎ এবং এসবের বিরুদ্ধে আইনগত বিধি বিধানও প্রণয়ন করা উচিৎ যাতে মানবিক মুল্যবোধগুলো ভবিষ্যতে আর অপমানিত না হয়।

ব্লগারদের প্রতি আবেদন আপনারা টিভি চ্যানেলগুলোতে ফোন করে, মেইল করে, চিঠি লিখে এর প্রতিবাদ করতে পারেন।

সবাইকে ধন্যবাদ।




১৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×