somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসুখের সুখ !!!

০৬ ই জুলাই, ২০১২ সকাল ৯:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ নাকি তার স্মৃতিশক্তিও হারাতে থাকে। আবার কোন স্মৃতিই নাকি পুরোপুরি হারিয়েও যায়না। এমনিতে ভূলে যাওয়া অনেক স্মৃতিই বিশেষ পরিস্থিতিতে ফিরেও আসে আবার অনেক ক্ষেত্রে। তেমনই একটা ভুলে থাকা স্মৃতি হঠাৎ করেই ফিরে এল রতনের কাছে। মেয়ের হাত থেকে কেকের টুকরোটা নিতে গিয়ে প্রায় ত্রিশ বছর আগের ছোট্ট একটা স্মৃতিতে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে রতন।

জন্মদিন পালন নিয়ে একধরণের নেতিবাচক চেতনা লালন করার জন্যই হোক অথবা জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজের চাপে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে থাকার জন্যই হোক, কারো জন্মদিন নিয়ে বিশেষভাবে ভাবা হয়না রতনের। জন্মদিন নিয়ে অনীহার পেছনে এর বাইরেও যে তার নিজের জীবনেই ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার প্রভাবও থাকতে পারে সেটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে হঠাৎ করে ফিরে আসা স্মৃতিটা।

তখন ওর বয়স চার কি পাঁচ। বড় ভাই মানিকের বয়সও সাত/আটের বেশি হবেনা। বাবা নাফিজ সাহেব কাশপুর গ্রামে সদ্য চালু হওয়া বিদ্যুৎ অফিসের দ্বিতীয় প্রধান কর্মকর্তা। পেশাগত অবস্থান বিবেচনায় দ্বিতীয় হলেও নিজ ব্যাক্তিত্ব, যোগ্যতা ও সিনিয়রিটি বিবেচনায় অধিকাংশের কাছে তিনিই বড় স্যার। এমনকি সিনিয়র হওয়ার সুবাদে বেতনের হিসেবেও তার বেতন প্রধান কর্মকর্তার চেয়ে একটু বেশি। তবে সেই বেতনও তখন সর্বসাকুল্যে দুই/আড়াই হাজারের বেশি হবেনা । এখনকার তুলনায় বেশ কম হলেও ত্রিশ বছর আগের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় একেবারে খারাপ না। আর নাফিজ সাহেবের পরিবারে বিলাসিতা বলেও তেমন কিছু ছিলনা। শুধু রতনের জন্যই এক আধটু বেশি খরচাপাতি করতে হয় মাঝে মধ্যে। তাও এমন কিছু না। বিস্কুট, চানাচুর ধরণের তখনকার সহজলভ্য জলখাবার আর মিষ্টি।

রতনটা একটু পেটুক স্বভাবের। একটু পরই শুধু খাই খাই করে। শুধু ভাত খাবার বেলাতেই যত অনীহা। অবস্থা এমন যে, বিস্কুট, চানাচুর বা ঘরে তৈরী অন্যান্য জলখাবার বা মিষ্টি এসবই রতনের প্রধান খাবার। আর ভাত খেতে হয় তাই কোন মতে একটু খায় অনেকটা এমন। অথচ দই-মিষ্টি এসব ছাড়া রতনের যেন চলেইনা।মূলতঃ রতনের জন্যই প্রতি শুক্রবার স্থানীয় একমাত্র মিষ্টির দোকান থেকে এক হাঁড়ি দই, এক সের রসগোল্লা আর এক সের চমচম আনানো হয়। মিষ্টির দোকানের মালিকের ছোটভাই রাম রতনদের বাসায় মিষ্টি দিয়ে যায়। রতনের কাছে রামকেই পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল মানুষ মনে হয়। ও রাম উচ্চারণ করতে পারেনা। বলে “লাম চাচ্চু” ।

রতনের কাছে ভাল মানুষের তালিকায় “লাম চাচ্চুর” পরেই আছে ওর মেঝ চাচ্চু। সে রামের মত প্রতি সপ্তাহে না হলেও প্রায় প্রতি মাসেই একবার ওদের বাসায় আসে। আর আসার সময় অনেক কিছুর সাথে আম,কাঁঠাল কলা এসব ফলও নিয়ে আসে অনেক অনেক। তাই রতনের মেঝ চাচাও ওর কাছে অনেক অনেক ভাল মানুষ। আর খারাপ মানুষের তালিকায় রতনের কাছে সবার উপরে আছে ওর মা। কারণ সেই তাকে এটা ওটা খেতে বেশি বেশি নিষেধ করে আর জোর করে ভাত খাওয়ায়। অবশ্য ওর মাও যখন বাসায় সেমাই-ফিরনি এসব রান্না করে তখন মাকেও রতনের কাছে অনেক অনেক ভাল মানুষ মনে হয়।

একবারতো রতন ওদের বাসায় একসাথে অনেকগুলো ভাল মানুষের দেখা পেয়েছিল। তখন নাকি ওর বাবা নাফিজ সাহেব সারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রকৌশলীদের মধ্যে থেকে মনোনীত চার জনের এক জন হিসেবে অ্যামেরিকায় উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। তখন তাকে অভিনন্দন না কি জানি বলে সেটা জানাতে ওরা যেখানে থাকত সেখানে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল। সেখানে রতনকে ওরা অনেক মিষ্টি খাইয়েছিল। পরে ওদের বাসাতেও তারা অনেক মিষ্টি নিয়ে এসেছিল।

পরে অবশ্য ওর বাবার আর তখন অ্যামেরিকায় যাওয়া হয়নি। ওর বাবার বদলে কিভাবে যেন ফরহাদ আংকেল ( প্রধান কর্মকর্তা ) অ্যামেরিকা চলে গেল। তাতে অবশ্য রতনের কোন সমস্যা হয়নি। তার খাওয়া মিষ্টিগুলোতো কেউ আর ফেরত চায়নি তার কাছে! এভাবে ভালই কাটছিল রতনের দিন কাল। কিছুদিন পর ফরহাদ আংকেলও ফিরে এল। সব কিছু আবার আগের মতই চলছিল।

হঠাৎ কী হয়ে গেল কে জানে? কোথায় যেন আগের চেয়ে কেমন একটা পরিবর্তনের আভাষ পাচ্ছিল রতন। আগে ওদের বাসায় কত লোকজন আসত। এখন আর তেমন কেউ আসেনা। ওরাও এখন আর বিকেলে কোথাও বেড়াতে বের হয়না। কারো বাসায় যায়না। শুধু শুধু বেড়াতে অবশ্য রতনের বিশেষ আগ্রহ ছিলনা। কিন্তু বাসায় কেউ এলে বা ওরাও কোথাও বেড়াতে গেলে রতনের ভাগে অনেক খাবার দাবার জুটতো এটাতো বলাই বাহুল্য। সেটা হঠাৎ কমে যাওয়াতেই হয়তো রতন একদিন ওর মাকে বলেই বসল,আম্মু, আমরা আর এখন কোথাও বেড়াতে যাইনা কেন?
মা আঁচলে চোখ মুছে বলে, আমাদের অসুখ হয়েছে বাবা, তাই।

এমনিতে রতনের সাথে সবসময় একটু ধমকের সুরে কথা বলা মাকে এমন কোমল সুরে কথা বলতে দেখে একটু চমকে যায় রতন। স্বভাবসুলভ ক্রমাগত প্রশ্ন করতে অভ্যস্ত রতন মায়ের এমন নরম উত্তরে সামান্য একটু থমকে যায়। তার পরই আবার দ্বিতীয় প্রশ্ন, অছুখ কী?
মাঃ শরীরে কোথাও ব্যাথা বা কষ্ট হলে তাকে অসুখ বলে।
এবারকার উত্তর আর আগের মত কোমল মনে না হলেও অনেক আগের মত সরাসরি ধমকও মনে হলনা। আর এবারও সে দেখে মাকে আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে। পুরোপুরি না বুঝলেও পরিবর্তনটা টের পায় রতন। তবু সাহস নিয়ে পরের প্রশ্নটা করেই ফেলে, তুমি বারবার চোখ ডলছ কেন?
মা এবার আগের চেয়েও বেশি চড়া সুরে বলে ওঠে, বললামনা আমাদের অসুখ হয়েছে, আমার চোখে ব্যাথা।
রতনের এমন প্রশ্নের তোড়ে একটু যেন হেসেও ওঠে মা। পরক্ষণেই আবার ধমকের সুরে বলে ওঠে, অসুখ হলে বেশি কথা বলতে হয়না। যা চুপ করে শুয়ে থাক।

মায়ের এমন ধমকে আগে খারাপ লাগলেও এবার কেমন যেন একটু আশ্বস্ত হয় রতন। ভাবে, সব ঠিকই আছে তাহলে। সবার একটু অসুখ হয়েছে, এই যা!

সেদিন রাতে খাবার সময় পরিবর্তনটা আবারও টের পেল রতন। আগে সব সময় ওর বাবা একটা বেত সাথে নিয়ে মানিককে পড়াতে বসত। পড়ানো শেষ হলে রতনকে অনেক আদর করে ডেকেডুকে খেতে বসাতো। তাতেও কাজ না হলে ওর মা মানিককে পেটানোর বেতটা দিয়ে আগেই রতনের পিঠে দু-এক ঘা বসিয়ে দিয়ে বলতো, “দশ গোনার আগে খাবার টেবিলে আসবি”। আগে মায়ের কাছে যথেষ্ট রামধোলাই খাবার পূর্বঅভিজ্ঞতা থাকায় মাকে আর দশ পর্যন্ত গুনতে হয়না এখন বরং মা বেত নিয়ে চলে আসার আগেই বাবার সাথে খাবার টেবিলে চলে আসত রতন। কিন্তু কিছুদিন হল বাবা আর আদর করে খেতে ডাকেনা। আর সেদিনতো বাবা চড়া গলায় একবার খেতে ডেকেই চলে গেল। রতন অপেক্ষায় ছিল বাবা আবার এসে আরেকটু আদর করে খেতে ডাকবে।

একটু পর বাবা এলো ঠিকই তবে বেতটা সাথে নিয়ে। এসেই সপাং সপাং চালিয়ে দিল রতনের পিঠ বরাবর। অপ্রস্তুত রতন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবার মুখে গোঙানির মত শুনতে পেল, হাবিজাবি সব খেতে পারে,ভাত খেতে যত টালবাহানা।
বাবার হাতে পিটুনি খেতে অভ্যস্ত মানিকও বাবা কর্তৃক রতনকে এভাবে পেটাতে দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। ততক্ষণে অবশ্য মা এসে বাবার হাত থেকে বেতটা কেড়ে নিয়ে বাবাকে উলটো শাসাতে লাগল, বাইরের রাগ ঘরে এসে ঝাড়ছ কেন? রতন এইটুকু ছেলে। ও কী বোঝে? ...
তারপর রতনকে অনেক আদরের সুরে বলল, তোর বাবার অফিসে একটু কাজের চাপ বেশি,তাই মেজাজ ভাল না। আয় তোকে আজ দুধভাত মেখে খাইয়ে দিচ্ছি।

রতন তখনো তেমন কিছু না বুঝলেও পরিবর্তন যে একটা হয়েছে সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারে।

এমনিতে ভাত খেতে না চাইলেও মায়ের হাতে বেশি করে চিনি দিয়ে মাখানো দুধভাত খেতে মন্দ লাগেনা রতনের। তাই তখন আর তেমন কিছু না বলেই মায়ের সাথে খেতে চলে এল। কিন্তু এবারকার দুধভাতটা কেমন যেন পানসে লাগছে রতনের কাছে। মা হয়তো চিনি দিতে ভূলে গেছে আজকে। পরিবর্তনটা আবারও টের পায় রতন কিন্তু একটু আগে তার উপর হঠাৎ করে বয়ে যাওয়া ঝড়ের বিষ্ময়ের ঘোর তখনো কাটেনি। তাই এবারও তেমন কিছু না বলে চুপচাপ খেয়ে নিল। তারপর সাময়িক ধকলের বিষ্ময়ের ঘোর নিয়েই ঘুমাতে চলে গেল।

সকালে ঘুম থেকে উঠতে কাল রাতের ঝড়ের তেমন কোন প্রভাবই পায়না রতন। আগের মতই ওর বাবা অনেক আদর করে বাবা,বাব্বু,বাবুসোনা এমন কতশত ডাকে কী গভীর মমতায় তাকে ডাকছে। আর সদ্য ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই কি আর সবকিছু মনে পড়ে?

তারপর সবাই যখন একসাথে খেতে বসল তখন একটু একটু করে রতনের কাছে মনে পড়তে লাগল কিছু কিছু। আজকে সবাই শুধু কাঁচামরিচ আর লবণ দিয়ে পান্তাভাত খাচ্ছে। সকালে অবশ্য এর আগেও ওরা পান্তাভাতই বেশি খেত। তবে তখন কাঁচামরিচ এর সাথে ভাজা মাছ, ডিম ও অন্যান্য ভাজি ধরনের তরকারীও থাকত। আজ সবাই শুধু কাঁচামরিচ দিয়েই খাচ্ছে। রতন আবার ঝাল খেতে পারেনা। তাই ওকে ওর মা একটু পিঁয়াজের সাথে অল্প একটু হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে ভাতের সাথে মাখিয়ে খেতে দিল। তখনই রতন সহজাতভাবে প্রশ্ন করে ওঠে, আজকে আমলা ছবাই খালি খালি পান্তাভাত খাচ্ছি কেন? সবাই কেমন যেন একটু থ মেরে যায়। ওর মা একটু সামলে উঠে বলে, কালকে বলেছিনা বাবা,আমাদের সবার অসুখ হয়েছে। তাই শুধু ভাত খেতে হবে। অন্যকিছু খাওয়া যাবেনা।

তখনই কালকের প্রায় সবকিছুই মনে পড়ে যায় রতনের। তাইতো! আসলে সবার অসুখ হয়েছে। তাই সবকিছু একটু অন্যরকম হয়ে গেছে। মা বলেছে অসুখ সেরে গেলেই সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যাবে আগের মত। এসব মনে পড়তেই পরের প্রশ্নটার কথা ভূলে যায় রতন। তাড়াতাড়ি খেতে শুরু করে। আজকে হলুদ মাখা পান্তাভাত খেতে ভালই লাগছে ওর কাছে। অথচ আগে সে ভাতই খেতে চাইতনা ।

দুপুরে আজকে মানিক,রতনকে আগে ভাগেই খেতে ডেকেছে মা। অন্যরা নাকি দুপুরে কেউ খাবেনা এখন। এখন অবশ্য গরম ভাতই দেয়া হয়েছে তবে তরকারী কিছুই নাই। মানিকের জন্য একটা কাঁচামরিচ আর রতনের জন্য হলুদ গুঁড়োর সাথে অল্প একটু ঘী। ঘী’র বয়াম দেখতেই রতনের “লাম চাচ্চুর’ কথা মনে পড়ে যায়। কারণ ওর “লাম চাচ্চু” প্রতি সপ্তাহে দই-মিষ্টির পাশাপাশি মাসের শুরুতে ছোট্ট এক বয়াম ঘীও দিয়ে যেত। “লাম চাচ্চুর” কথা মনে পড়তেই রতন বলে ওঠে, আম্মু, আমাদের অছুখ হয়েছে বলেই কি লাম চাচ্চু আর আসে না?”
রতনের এমন সগোতোক্তিতে ভরসা পায় মা। বলে, হ্যাঁ বাবা, এইতো তুমি সব কিছু বুঝতে পারছ। তুমি এখন অনেক বড় হয়ে গেছ। সব কিছু বুঝতে হবে। বড়দের সব কথা মেনে চলতে হবে।কোন জেদ করা চলবেনা ।
অন্য সময় হলে মায়ের এমন উপদেশের প্রতিটার পেছনে একটা করে “কেন” জুড়ে দিত। আজ আর কিছুই বললনা রতন। সে তো এখন অনেক বড় হয়ে গেছে!

রতনের পাতে ঘী তুলে দেবার সময় মানিকও একটু ঘী চায় মা’র কাছে। প্রায় তলানীর দিকে চলে যাওয়া ঘীর বয়ামটার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে মা। তারপর মানিককেও অল্প একটু ঘী তুলে দিতে দিতে ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে ওঠে, এই টুকু ঘী দিয়ে সারা বছর চলতে হবে। আজই শুধু তোকেও একটু দিলাম। এরপর থেকে শুধু রতনকেই একটু করে ঘী দেওয়া হবে।
বলতে বলতে আঁচল দিয়ে চোখ মোছে মা। রতনের মনে পড়ে ওর মায়ের চোখে ব্যাথা। যদিও অসুখের সাথে সারা বছর এইটুকু ঘী দিয়ে চলবার সম্পর্কটা এখনো সে বুঝে উঠতে পারেনি তবে এটা বুঝেছে যে, তাকে এখন থেকে সবকিছু বুঝতে হবে। সেতো নাকি এখন বড় হয়ে গেছে!!

এভাবেই চলছিল রতনের দিনকাল। এখন আর সে আগের মত সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন করেনা। নিজে নিজে বুঝে নেবার চেষ্টা করে। যেমন সে কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারল তাদের অসুখটা আগের চেয়ে একটু ভাল এখন। কারণ এখন দুপুরে মানিক রতনের সাথে সাথে ওদের বাবা মাও ভাত খায়। এখন আগের মত মাছ-গোশত না হলেও শাক-সব্জী ধরণের কিছু একটা তরকারীও থাকে ভাতের সাথে। কিন্তু এখনো ওরা বাইরে কোথাও বেড়াতে যায়না। আর ওদের বাসায়ও তেমন কেউ আসেনা এখনো। কারো আসার কথা মনে হতেই রতনের আবার ওর “লাম চাচ্চুর” কথা মনে পড়ে যায়। কবে যে ওদের অসুখ পুরোপুরি ভাল হবে আর “লাম চাচ্চুও” আসবে!

একদিন তো বাবাকে বলেই বসল, বাবা “লাম চাচ্চু” এখন আর আসেনা কেন? আমাদের অসুখ এখনো ভাল হয়নি?
বাবাতো জানেনা ওদের অসুখের কথা। তবে একটু বুঝে নিয়ে বলল, আমাদের অসুখটা এখন অনেকটা সেরে গেলেও রামের নিজেরই এখন অসুখ হয়েছে।তাই এখন আর আসতে পারেনা সে।
এবারো অতীতের মত আরো প্রশ্ন না করে নিজে নিজেই ব্যাপারটা আরেকটু ভাল করে বোঝার চেষ্টা করে রতন। এখন যে সে বড় হয়ে গেছে আগের চেয়ে!

একদিন মানিক এসে মাকে বলছে, আম্মু রোহেলের জন্মদিন আজকে, সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান করবে, আমরা কি যাব ওখানে? রোহেল হল নাফিজ সাহেবের অফিসের নীচের দিকের একজন কর্মকর্তা "শওকত সাহেবের" ছেলে। বয়সে রতনের চেয়েও ছোট। তবে ওর বাবার আয় নাকি পুরো বিদ্যুৎ অফিসের সবার চেয়ে বেশি। ওর বাবাকে নাকি সরকার ছাড়াও অন্য মানুষেরাও বেতন দেয়। সরকারের বেতন একটু কম পেলেও অন্য মানুষদের কাছ থেকে পাওয়া বেতন মিলিয়ে শওকত সাহেবের আয় নাকি অনেক বেশি। যাই হোক, জন্মদিন শব্দটা এই প্রথম শুনল রতন। মাকে জিজ্ঞেস করে , জন্মদিন কি আম্মু?
মাঃ বছরের যে তারিখে একজন জন্মগ্রহণ করে প্রতিবছরের সেই তারিখ হল তার জন্মদিন।

রতন জন্মগ্রহণ কী জিনিস আর বছরের তারিখ কী জিনিস এসব এখনও জানেনা। তবু কিছু একটা বুঝে নেয়ার চেষ্টা করে। এবার আর কুলোতে না পেরে দ্বিতীয় প্রশ্নটা করে ফেলে, জন্মদিন হলে কী হয়?
মাঃ কিছুই হয়না।তবে অনেকে সেই দিনে অনুষ্ঠান করে। কেক কাটে। ভাল খাওয়া দাওয়া করে।

এবারও রতন কতটা বুঝল কে জানে? তবে কেক আর ভাল খাবার দাবারের কথা শুনে রতনের চোখ চকচক করে ওঠে। বলে,আমাদের না অসুখ ভাল হয়ে গেছে, আমরা এখন কেক খেতে পারবনা?

রতনের মা আবারো দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। তারপর বলে, পুরোপুরি ভাল হয়নি এখনো। তবে অল্প একটু খেতে পারবে। বেশি খাওয়া যাবেনা। তারপর মানিককে বলে, ঠিক আছে সন্ধ্যার পর রতনকে নিয়ে ঘুরে আসিস রোহেলদের বাসা থেকে।

এরপর থেকে রতনের যেন আর সময়ই কাটতে চায়না। কখন সন্ধ্যা হবে, আর কখন ওরা জন্মদিনে যাবে। যাওয়ার চেয়েও বেশি হল কখন ও অল্প একটু কেক খেতে পারবে। এই ভাবতে ভাবতেই এক সময় সন্ধ্যাও হয়ে এল। ও তাড়াতাড়ি মানিককে ডাকে, ভাইয়া, জন্মদিনে যাবানা?
মানিক ফুঁসে ওঠে, তোকে নিয়ে যেতে পারি যদি তুই ওখানে গিয়ে খাই খাই না করিস। কেউ যদি কিছু খেতে দেয়তো খাবি। না হলে শুধু শুধুই ঘুরে চলে আসব। কারও কাছে কিছু খেতে চাওয়া যাবেনা।

শুধু শুধুই ঘুরে চলে আসার কথা শুনে একটু দমে যায় রতন। তবু বলে , ঠিক আছে,চলো। ওর মনে তখনও একটু আশা যে, ওরা হয়তো যেচেই ওকে অনেক কিছু খেতে দেবে।

রোহেলদের বাসায় গিয়েতো রতন অবাক। ইয়া বড় সবুজ রঙের একটা কেক। তার চারিদিকে লাল রঙের মোমবাতি জ্বালানো অনেক গুলো। উপরে ছাদে লাল-নীল কত রঙের বেলুন। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে রতনের চোখ বারবার সবুজ রঙের কেকটার উপর গিয়ে পড়ছে। রতন কেকটার দিকে আরো একটু এগিয়ে যেতে গিয়ে হাতে টান পড়ে ওর। পেছন থেকে মানিক ওর হাত ধরে আছে। তাই সে আর সামনে যেতে পারছেনা। এক কোনায় ওরা দু ভাই দাঁড়িয়ে আছে। অনেকেই ওদের দেখছেও। কিন্তু কেউ কথা বলছেনা ওদের সাথে। কী যে হল সবার!

একটু পর শওকত সাহেব আর রোহেলের মা রোহেলকে নিয়ে কেকটার সামনে এসে দাঁড়াল। সবাই যেন গানের সুরে কি কি বলছে। রোহেলের মা একটা চাকু রোহেলের হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজেও রোহেলের হাতটা ধরে থেকে কেকটা একটু কাটল। সাথে সাথে ফুঁ দিয়ে মোমবাতি গুলো নেভাতে লাগল।রোহেল কিছুতেই মোমবাতিগুলো নেভাতে পারছেনা। একসময় রোহেলের বাবাও রোহেলের সাথে সাথে ফুঁ দিয়ে সব মোমবাতিগুলো নিভিয়ে ফেলল। তারপর রোহেলকে এক টুকরো কেক মুখে তুলে দিল। তারপর একে একে সবাইকে কেক খাওয়ানো শুরু হল। রতন ভাবছে কখন ওদেরকে খাওয়াতে আসবে। কিন্তু সবার খাওয়া শেষ হলেও ওদেরকে কেউ ডাকছেনা। অনেক আশা নিয়ে কেক খেতে আসা রতনের তখন শুধুই শুধুই ঘুরে চলে যাবার কথা মনে হতে থাকে আর চোখটা কেমন যেন ব্যাথা করতে থাকে।

এরই মধ্যে সবাইকে প্লেটে দই,মিষ্টি, সিংগাড়া এসব দিতে দেখে আবার একটু চমকে ওঠে রতন। ও ভেবেছিল শুধু কেকই খাওয়ানো হবে। কিন্তু রতনের কাছে কেক এর চেয়েও বেশি লোভনীয় চমচমগুলো দেখে এখন আর কেক খেতে ইচ্ছে করছেনা। কিন্তু রতনের দই-মিষ্টি খাওয়ার আশাও অল্পতেই বাধা পড়ে। ও ভাবে, কেকই যখন খেতে দিলনা, দই-মিষ্টি কী আর দেবে!

তবে চমচমগুলো দেখে রতন যতটা চমকে গিয়েছিল তার চেয়েও বেশি চমকে গেল হঠাৎ সেখানে ওর “লাম চাচ্চুকে’ দেখে। বাবা যে বলেছিল “লাম চাচ্চুর” অসুখ তাই সে আর ওদের বাড়িতে যায়না। তাহলে সে রোহেলদের বাড়িতে এল কিভাবে? মনে এখনো ক্ষীন একটা আশা নিয়ে রতন দাঁড়িয়ে আছে, অন্য কেউ না হলেও ওর “লাম চাচ্চু” ওদের দেখবে, তারপর সে ওদেরকে চমচম খেতে দেবে। অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নাই ওদের দিকে। এত মানুষের ভীড়ে “লাম চাচ্চুও” ওদের এখনো দেখতে পেলনা। সে অবশ্য সবাইকে মিষ্টি দেয়ার কাজেই ব্যাস্ত।

মানিক ততক্ষণে রতনের হাত ধরে টানতে শুরু করেছে চলে যাবার জন্য। রতনও মানিকের দেয়া শর্ত মোতাবেক কারও কাছে কিছু চাইতে পারছেনা। শুধু বলল, “ভাইয়া, আরেকটু থাকি”।
মানিকের মনেও হয়তো কিছু একটা আশা ছিল। তাই মুখে না বললেও রতনের হাতটা ছেড়ে দিল এবার। ওদিকে রামও সবাইকে মিষ্টি দেয়া শেষ করে পেছনের দিকে আসছে।

আরেকটু কাছে চলে আসতেই রতন অনেকটা প্রায় দৌড়ে গিয়ে রামের সামনে চলে আসল আর ফিসফিস করে বলে উঠলো, লাম চাচ্চু, তোমার অছুখ ভাল হয়ে গেছে!
হঠাৎ করে রতনকে দেখে আর ওর কাছে এমন করে নিজের অসুস্থতার কথা শুনে একটু যেন ভড়কে যায় রাম। তারপর সামলে নিয়ে বলে, হামারতো অছুখ করেনিরে বেটা।
রতনঃ বাবা যে বলল, তোমার অছুখ।তাই তুমি আর মিষ্টি নিয়ে আসনা আমাদের বাসায়।

রাম যা বোঝার বুঝে যায় আর সাথে সাথেই বলে, অল্প একটু অছুখ হোয়েছিল বেটা, এখোন ভাল হোয়ে গেছে।
তারপরই মানিককে দেখে বলে, তুমরা এখানে কিছু খেয়েছ বেটা

রতন আসলে এই প্রশ্নটার জন্যই অপেক্ষা করছিল। কিন্তু ও "না" বলে উঠবার আগেই মানিক ঝটপট বলে দিল, হ্যাঁ খেয়েছি। রতনও ততক্ষণে বলে ফেলেছে, না। কিছুই খাইনি।

রতনের মনটা হঠাৎ খান খান হয়ে ভেঙে পড়তে থাকে। এ কী করল ভাইয়া! জলজ্যান্ত একটা মিথ্যা বলে দিল!! তাও যখন সত্যিটা বললেই কিছু একটা লাভ হলেও হতে পারত তখনই এমন করে মিথ্যে বলে দিল!!!

কথাটা বলেই মানিক আবার রতনের হাত ধরে টানতে শুরু করেছে চলে যাবার জন্য। এবার আর রতন কিছুই বলতে পারছেনা। একটু আগের চোখ ব্যাথার সাথে সাথে ওর মাথাটাও ব্যাথা করতে শুরু করলো। গলাটা তীব্র ব্যাথায় ধরে আসছে। মানিককে রতনকে আর বেশিক্ষণ টানাটানির দরকার পড়লনা। রতন এবার নিজ থেকেই মানিকের চেয়েও জোরে হাঁটতে শুরু করেছে। রোহেলদের বাসার করিডোর ধরে বেরিয়ে যাবার দরজার প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে ওরা। এমন সময় পেছন থেকে রামের ডাক শুনতে পেল রতন।

রাম হাতে ঠোঙার মত কি একটা নিয়ে আসছে। এসে রতনে হাতে ঠোঙাটা দিয়ে বলল, বেটা, এটা বাছায় নিয়ে যাও। আর বাছায় গিয়ে বাপুকে বোলো যে হামার অছুখ ভাল হয়ে গেছে।আমি কাল তোমাদের বাসায় মিষ্টি নিয়ে আসব। বলেই ঠোঙাটা রতনের হাতে কোনমতে গছিয়ে দিয়ে আবার করিডোর দিয়ে হনহন করে হেঁটে ভেতরের দিকে চলে গেল।

রতন পেছন থেকে রামের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। পেছন থেকে দেখল রামের একটা হাত তাঁর চোখ বরাবর উঠছে। তারপর সেখানে একটু নাড়াচাড়া করছে। সামনে থেকে দেখতে না পেলেও বুঝলো, ওর লাম চাচ্চুরও রতনের মায়ের মত চোখ ব্যাথার অসুখ হয়েছে। রতনের চোখও একটু আগে ভীষন ব্যাথা করছিল। এখন কমে গিয়েছে। এরপর ঠোঙাটা একটু খুলে ভেতরের দিকে তাকাতেই একটু আগে খান খান হয়ে ভেঙে পড়া মনটা আবার যেন জোড়া লেগে গেল আচানক। ঠোঙার ভেতরে সবুজ কেকটার একটা ভাঙা টুকরো দেখা যাচ্ছে। দু-একটা ভাঙা চমচমও দেখা যাচ্ছে। ভাল করে খুলে দেখলে হয়তো এখানকার সব খাবারগুলোই কিছু কিছু পাওয়া যাবে ওখানে।

ততক্ষণে মানিক আবার পেছন থেকে রতনকে টানতে শুরু করে দিয়েছে। এবার আর মানিককে আরো একটু থাকার কথা বললনা রতন। বরং খুশীমনে বাসার দিকে হাঁটতে লাগল। কিন্তু মানিক এখনো ওর হাতটা ছাঁড়ছেনা। আগের চেয়েও বেশি শক্তি নিয়ে রতনকে টেনে হিঁচড়ে বাসায় নিয়ে এল। এসেই মায়ের কাছে নালিশ, আম্মু, রতনকে নিয়ে এরপর আর কোথাও যাওয়া যাবেনা। এত হ্যাংলা হয়েছে সে। ঠোঙায় করে যত্তসব ভাঙা খাবার নিয়ে আসছে।

রতন বলে ওঠে,আম্মু, আমিতো কারো কাছে চাইনি। লাম চাচ্চু নিজে এসে ঠোঙাটা আমাল হাতে ধলিয়ে দিয়ে গেছে। আর জান! লাম চাচ্চুর না অছুখ ভাল হয়ে গেছে। সে কাল সকালে আবার মিষ্টি নিয়ে আসবে বলেছে।

মা আবার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মানিককে বলে, হয়েছে। রতনতো আর নিজে থেকে চায়নি। আর রতনতো তোর চেয়ে ছোট।ও কী বোঝে! এবার দু’জন মিলে ভাগযোগ করে খা।

আর রতনকে বলল, তোমার অসুখ পুরোপুরি সারেনি এখনো বাবা। তাই একসাথে সব কিছু খাওয়া যাবেনা। অল্প একটু একটু করে খেও। বলতে বলতে আবার চোখ মোছে মা।

রতন ভাবে, কী যে এক অসুখ হল সবার।খালি চোখ ব্যাথা করে। লাম চাচ্চুকেও দেখেছে চোখ ডলতে। ওর নিজেরো কিছুক্ষণ আগে একবার চোখটা ব্যাথা করছিল খুব। এখন যদিও নাই।
তবে ওর ভয়, লাম চাচ্চুরও যদি আবার চোখ ব্যাথার অসুখটা বেড়ে যায় তাহলে কাল সে আবার মিষ্টি নিয়ে আসবে কিভাবে!

ভয়ে ভয়েই মানিকের হাত থেকে সবুজ কেকটার ছোট্ট ভাঙা টুকরোটার ছোট্ট একটা অংশ হাতে নেয় রতন। ...

... কেকটা তখনো হাতেই ধরে ছিল রতন। হঠাৎ মেয়ের ডাকে সম্বিৎ ফিরে পায়।বাবা, এখনও তুমি কেকটা ধরেই বসে আছ! খাচ্ছনা কেন?

প্রায় ত্রিশ বছর আগের অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে আসে রতন । জন্মদিন নিয়ে ওর এত অনীহার পেছনে আরো একটা কারণ খূঁজে পেল সে!


দ্রষ্টব্যঃ গল্পটির প্রায় সমস্ত ঘটনাই লেখকের জীবন থেকে নেয়া, তবে নাম গুলো ঈষৎ পরিবর্তিত। আর মেয়ের অংশটুকু পুরোপুরিই কল্পিত। তবে পূর্বপরিকল্পিত নয়। গল্পের প্রয়োজনে হঠাৎ করেই পাওয়া।


রতনের বাবা নাফিজ সাহেব ত্রিশ বছর আগে না পারলেও এখন বড় ছেলে মানিকের সুবাদে যুক্তরাষ্ট্রেই বসবাস করছেন। তখন শুধু নাফিজ সাহেবের একাই যুক্তরাষ্ট্রে যাবার কথা থাকলেও এখন সে তাঁর স্ত্রী , বড়ছেলে, ছেলের বৌ আর ছোট্ট ফুটফুটে একটা নাতি নিয়ে মোটামুটি সুখেই আছেন সেখানে। শুধু রতনের জন্য মনটা একটু পোড়ে মাঝে মধ্যে। আর রতন পুড়ছে পুরনো স্মৃতির তোড়ে। ওর “লাম চাচ্চু” (শ্রী রামচন্দ্র চাকী) অনেক বছর আগে ভারতে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান বলে রতন শুনেছে তাঁর বড় ভাইয়ের কাছে। সবাই রতনের “লাম চাচ্চুর” জন্য দোয়া করবেন।


পরিমার্জনঃ নতুন কিছু লিখবার সুযোগ বা ইচ্ছা হয়নি। তাই পুরনো পানীয় পুরনো বোতলেই নতুন ছিপি এঁটে পরিবেশন করলাম। মানে লেখার শিরোনাম বদলে দিলাম একটু।;)
নামের ব্যাপারে পরামর্শের জন্য স্বদেশ হাসনাইন ভাইয়ের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৫০
৭৬টি মন্তব্য ৭৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চলছে শোঅফ ব্যাবসা ........ ;)

লিখেছেন সোহানী, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:০৮



হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে মানব মনের ছয়টি সহজাত দোষ বা ষড়রিপু হলো কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য। বা সহজ ভাবে বলা যায়, কাম (lust) হলো লালসা, ক্রোধ (anger)... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনার অপসারণ কি সমাধান ছিল, নাকি আরও বিপর্যয়ের শুরু?

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৫৪

শেখ হাসিনার অপসারণ কি সমাধান ছিল, নাকি আরও বিপর্যয়ের শুরু?
দেশজুড়ে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল, তখন অনেকেই বিশ্বাস করেছিলেন শেখ হাসিনার সরকারই সমস্ত সমস্যার মূল। বলা হয়েছিল, তিনি জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির পিতাকে অস্বীকার করে, স্বাধীনতার সংগ্রাম কে অস্বীকার করে রাজাকার রা আমাদের আওয়ামী লীগ সমর্থন করাতে বাধ্য করে বারং বার।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৩


আমরা যারা কোন দলের পদ পদবি তে নাই। এমনকি আমার কলেজের রাজনীতি জড়িত বন্ধুর সাথেও মেশা বন্ধ করেছিলাম আমরা চার জনের সার্কেল। দলীয় রাজনীতি বড়ই খারাপ জিনিস। মাইর খাওয়া মাইর... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভিন্‌গ্রহে মিলল প্রাণের অস্তিত্ব! ১২৪ আলোকবর্ষ দূরের গ্রহে কি প্রাণের স্পন্দন?

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২



জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে, তাঁরা পৃথিবীর বাইরে কে২-১৮ বি গ্রহে জীবনের সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন। ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে দু’টি রাসায়নিকের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ : দেশের উন্নয়নের জন্য আসন বাড়ানোর বিকল্প নেই

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:০৮


নারী অধিকার নিয়ে কথা উঠলেই কিছু ভদ্রলোকের ঘুম ভেঙে যায়। রাষ্ট্র নড়েচড়ে বসে—একটু যেন ‘স্মার্ট’ ভাব ধরে। সেই ভাবেই নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সুপারিশ করলো, সংসদের আসন সংখ্যা ৬০০ করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×