পরের পর্ব
কলকাতা এয়ারপোর্ট
ওদের ৪ জনের মধ্যে একজন ছিল যে নিজেকে খুব পন্ডিত মনে করতো। সাথের ৩ জনও উনাকেই বস মানতো। আমি চুপ করে বসে আছি একে নতুন দুইয়ে একা বলার কিছু নাই। পন্ডিত সাহেব দেখি ট্যাক্সি ড্রাইভারকে একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছে ( উনি নাকি এর আগে কলকাতা ভ্রমন করেছেন) তাহলে এতো কথা জিজ্ঞেস করতে হয় কেন বুঝলাম না। ট্যাক্সি ড্রাইভার মার্কুইস স্ট্রেট এ নামিয়ে দিলেন।
মার্কুইস স্ট্রেট
ভাড়াটা আমি দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পন্ডিত সাহেবই দিয়ে দিলেন। আমি বললাম আগে আমরা সিম নিয়ে নেই, তারপর আপনাদের ট্যুর প্লানটা আমার কাছে একটু শেয়ার করেন, যদি মিলে যায় তাহলে আপনাদের সাথেই যাবো...উনাদের মধ্যে একজন বললো আমরা তো ঢাকা থেকে দিল্লীর ট্রেনের টিকেট কনফার্ম করে এসেছি আগে আমাদের টিকেট গুলো নিয়ে নেই তারপর দেখা যাক কি হয়, আমাদের সাথে যেতে হলে আপনারও তো টিকেত লাগবে...আমি বললাম ঠিক আছে আপনারা যেভাবে বলেন সেভাবেই হউক। উনাদের টিকেটের জন্য গ্রীন লাইনের কাউন্টারে গেলাম সেখানে উনারা টিকেটের জন্য আগেই ফোন করে রেখেছেন
টিকেট নেয়া হল, গ্রীন লাইনের কাউন্টারের পাশেই একটা মোবাইলের দোকান আছে "মেঘনা" ওই যে একটা দোকান দেখা যাচ্ছে আমাদের সিম কিনে দেশে ফোন করা দরকার, পন্ডিত সাহেব আবার গ্রীন লাইনের এক লোককে জিজ্ঞেস করেলেন কি সিম কিনলে ভাল হয়, কোথা থেকে কিনবো (এখানেই তো বাশটা খেয়ে গেলাম...আগেই জেনেছিলাম ওখানে দালালদের উতপাত খুব বেশি, কারো সাহায্য না নিয়ে নিজের কাজ নিজে করাই ভাল) ওই লোকটা আমাদের পাশের মোবাইলের দোকানটাতে নিয়ে গেলেন আর বললেন দাদা এদেরকে সিম দেন এয়ারটেল... ৪ জন এয়ারটেল নিলাম আর পন্ডিত সাহেব ভোডাফোন নিলেন থ্রিজি ইউস করার জন্য। একেকটা সিম নিল ৩৫০ রুপী করে ভেতরে টক টাইম ছিল ২৫০ রুপী
এবার ডলার ভাঙ্গানোর পালা... ৩-৪ দোকান ঘুড়ে একটাতে একটু ভাল দাম পাওয়া গেল (ডলার নেয়া মানেই লস তার চেয়ে বাংলা টাকা নেয়া অনেক ভাল ছিল) যার যতটুকু দরকার ডলার ভাঙ্গিয়ে নেয়া হল। আমি ২০০ ডলার নিয়েছিলাম সবটা একেবারেই কনভার্ট করে নিলাম।
আমরা ৩জন ডলার ভাঙ্গাতে গিয়েছিলাম এর মধ্যে অন্য ২জন খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়েছে। পেটে অনেক ক্ষিধা তখন প্রায় বিকেল ৪ বাজে।
দাওয়াতে ঢুকলাম খাওয়ার জন্য
যেটা খেতে চাই সেটাই নাই... শেষে ওয়েটার এর পছন্দ মত
চিকেন বিরিয়ানি অর্ডার দেয়া হল।
বিরিয়ানি এমন হয় আমি লাইফে প্রথম দেখলাম।
আমিতো ক্ষেইপা গেলাম এসব কি দিছেন অর্ডার দিলাম বিরিয়ানি নুডুলস দিছেন কেন??
ওয়েটার বলছে এটা বিরিয়ানি... আমার সাথের দুজনও বুঝতে পারছেনা এটা কি ধরনের বিরিয়ানি। আমি প্রশ্ন করলাম দেখতে এমন নুডুলস মত কেন? ওয়েটারের জবাব "স্যার এ বাসমতি চাওয়াল, ইসলিয়ে এয়ছা লাগরাহা হে"
যা বাবা দেশের তেহারী তো এর চেয়ে ভাল ছিল
আর কিছু না বলে চুপচাপ খেয়ে ফেললাম
এই ছিল বাসমতি চালের বিরিয়ানি
বিল কত হয়েছিল মনে নাই তবে "সালাদ" এর জন্য ১৫ রুপী চার্জ করা হয়েছিল। যেটা শুনে আমার পন্ডিত সাহেব ক্ষেপে গেল... এই ধরনের তথ্য ব্লগ থেকে অনেক আগেই নিয়ে নিয়েছি, আমি পন্ডিত সাহেবকে বোঝালাম এটাই এখানকার নিয়ম।
তাদের ট্যুর প্লানের সাথে মিলিয়ে দেখলাম আমার হবেনা। কারন তাড়া দেশে ফিরবে ২৫ তারিখ আর আমার ফ্লাইট ছিল ২৪ তারিখ। যাই হউক তাদেরকে বিদায় দিয়ে হোটেল খোজার জন্য ওই মোবাইল দোকানদারের সাহায্য নিলাম উনি আমাকে বললেন আসে পাশে খুজলে ভাল রুম আপনি ৪০০ রুপীর মধ্যে পেয়ে যাবেন (কলকাতা থাকাকালীন উনি আমাকে অনেক হেল্প করেছে) একটা দালালকে সাথে দিয়ে বলল উনার সাথে যান কয়েকটা ঘুড়িয়ে দেখাবে যেটা ভাল লাগবে উঠে যাবেন। ১টাতে নিয়ে গেল ৫৫০ রুপীতে মোটামুটি পছন্দ হল... তখন আমি খুব ক্লান্ত এতো ঘুরতে ভাল লাগছিল না। উনাকে ২০ বকশিস রুপী দিয়ে বিদায় করলাম। সন্ধ্যা পর্যন্ত রুমে শুয়ে বিশ্রাম নিলাম। সন্ধ্যায় আবার ওই দাদার কাছে গেলাম.. আসে পাশে ঘুড়ে দেখার মত কি আছে? উনি বললো হাটতে হাটতে ভিক্টোরিয়া পার্কটা ঘুড়ে আসতে পারেন.........রাস্তা জিজ্ঞেস করতে করতে ভিক্টোরিয়া পার্ক খুজে পেলাম...কিন্তু তখন একটা কুকুর, দারোয়ান আর আমি ছাড়া কিছুই সেখানে ছিল না।
ফেরার পথে
বিরলা প্লাটিনিয়াম
আবারো হাটা শুরু ...পথের ধারে দেখলাম চিকেন পরোটা বিক্রি হচ্ছে খাবারের সাদ কেমন টেস্ট করার জন্য নিলাম একটা... ভাল লাগে নাই ভেতরে পেয়াজ এ ভরা
হোটেলে ফিরে ভাবছি একা একা কোথায় যাবো কি করবো....
রাতের খাবার ও পরেরদিন আগ্রা যাওয়ার ঘটনা পরের পর্বে লিখবো
আমার এই পোস্টে ইন্ডিয়া ভিসার জন্য যে কোন ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন
ভিসার জন্য যা যা লাগে-
প্রথমে আপনাকে Appointment Date এর জন্য অনলাইনে এপ্লাই করতে হবে ( নিজে না পারলে এইসব ব্যাপারে অভিজ্ঞদের হেল্প নেয়াই ভাল) Date পেয়ে গেলে... আপ্লিকেশন ফর্মটি ডাউনলোড করুন
২*২ সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ১ কপি ছবি আপনার অনলাইন আপ্লিকেশন ফর্মে আঠা দিয়ে লাগাতে হবে।
চাকরি করলে অফিস থেকে ছুটির একটা লেটার। ব্যবসা করলে ট্রেড লাইসেন্স।
রিসেন্ট বিদ্যুত বিলের কপি
রিসেন্ট ৬মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট ( কমপক্ষে ২০,০০০ টাকা জমা থাকতে হবে ) অথবা পাসপোর্টে ২০০ ডলার এন্ডোসমেন্ট করতে হবে। যে ব্যাংক থেকে এন্ডোস করবেন তারা একটা এন্ডোস সার্টিফিকেট দিবে সেটা নিয়ে যেতে হবে।
পাসপোর্টের ফটোকপি
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে যেদিন দিবেন তার পরের দিনই ভিসা পেয়ে যাবেন।
ভ্রমন করার অনেক ইচ্ছা কিন্তু সময়ের কারনে পারিনা।
ভ্রমন নিয়ে লেখা গুলো পড়তে অনেক ভাল লাগে
সামুর ব্লগে মোটামুটি ভ্রমন নিয়ে যত লেখা আছে খুজে খুজে বের করে পড়ার চেষ্টা করি।
গতমাসে মালেশিয়ার ভিসা নিয়েছি কিন্তু যেতে পারলাম না
সামনের মাসে আবার ইন্ডিয়া যাবো তারপর মালেশিয়া
এই প্রথম আমি এতো বড় একটা পোস্ট করলাম তাও আবার ছবি সহ
আমি জানি পোস্টে অনেক ভূল আছে আশা করি আমার ভূল গুলো ধরিয়ে দিবেন এবং ক্ষমার চোখে দেখবেন।
সবাই ভাল থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:২৯