somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বাগান বিলাস
আমি হয়তো মানুষ নই, মানুষগুলো অন্যরকম, হাঁটতে পারে, বসতে পারে, এ-ঘর থেকে ও-ঘরে যায়, মানুষগুলো অন্যরকম, সাপে কাটলে দৌড়ে পালায়। আমি হয়তো মানুষ নই, সারাটা দিন দাঁড়িয়ে থাকি, গাছের মতো দাঁড়িয়ে থাকি।

আনন্দ

২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আনন্দ সারাটা জীবন দুঃখ-কষ্টে তেলেভাজা পিঠার মতো
এফোঁড় ওফোঁড় হয়েছে। দুবছর বয়সে ওর মা মরল।
পাঁচে হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেল বাবা।
এতিম আনন্দকে দেখার মতো ইহধামে আর কেউ থাকল না।
স্রোতে গড়ানো নামপত্তনহীন পাথরের মতো গড়াতে গড়াতে
শেষমেশ ওর ঠাঁই হলো চন্দন নগরে, রামদয়ালের আশ্রমে।
সেই সাধুও দু’হাজার আট সালে ভারতের কুম্ভ মেলায় গেল,
আর ফিরে এল না।
আনন্দ যেন জীবনে যে ডাল ধরেছে সে ডালই ভেঙ্গে পড়েছে।
ডাল ভাঙতে ভাঙতে আনন্দ’র অভিশপ্ত পৃথিবী
মরুভূমির নিষ্পত্র বৃক্ষে পরিণত হয়েছে।


আঠাশ বছর অশ্রুর অববাহিকায় বসবাস করতে করতে
আনন্দ এখন পরীক্ষিত নিরানন্দের উপত্যকা। এখন সে জীবনের
মর্ম খুঁজতে বাউলের বেশ ধরেছে। সাধক ফকিরের মতো কাঁধ
বরাবর জটা চুল, লম্বা দাড়ি, গায়ে কাটা থানের সফেদ বসন,
গলায় রুদ্রাক্ষমালা। নিমকাঠের দোতারা বাজিয়ে পথে পথে
গান করে। কেউ তাকে বলে সাধু, কেউ বলে ভিখারি।
আনন্দ’র তাতে ন্যূনতম ভ্রূক্ষেপ নেই।


আনন্দ এখন যে কোনো নারীকে দেখলে ডাকে-মা।
আর পুরুষকে বলে-বাবা। সবাই ভাবে, এটা সাধুর বোল।
আদতে কাদামাটিতে বেড়ে ওঠা আনন্দ যেন মৃত্তিকার কাছেই
চূড়ান্ত অর্বাচীন। আনন্দ তাই মাটি দেখলেই খামচে ধরে,
ওখানে ওর অপাংক্তেয় শেকড়টাকে হন্যে হয়ে খোঁজে।
আনন্দকে কেউ আনন্দ নামে ডাকলে তার দিকে পুকুরের
শান্ত জলের মতো অপলক তাকিয়ে থাকে, জবাব দেয় না।
আনন্দকে কেউ আনন্দ নামে ডাকলে আনন্দ’র চোখের কোণে
ভেসে ওঠে সার্বভৌমহীন মেঘের মতো এক পরাজিত ঈশ্বর।

ছবি ঋণ: গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০২০ রাত ৮:১৪
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×