কিছুকিছু সংবাদ মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে, যা রীতিমতো কষ্টের চূড়ায় পৌঁছে দেয়। আবার লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকা ছাড়া কিছুই বলার থাকে না। সবচেয়ে জঘন্যতম ঘৃণিত কাজ আমার কাছে মনে হয় বলৎকারকেই। এই বলৎকারের শিকার যদি কোন ছোট বাচ্চা হয় তো তাহলে ক্ষোভ আর দুঃখে মাথাটাই নষ্ট হয়ে যায়। তখন আর মাথায় কোন কাজ করে না। ধিক্কার দেওয়ার ভাষাও হারিয়ে যায়। জঘন্যতম গালি দিতে ইচ্ছে করে গলা ফাঁটিয়ে। আজ তেমনি একটি সংবাদ দেখলাম 'দৈনিক ইত্তেফাক'-এর অনলাইন পোর্টালে। এরকম সংবাদ প্রায় দেখা যায়।
এমন জঘন্যতম অপরাধ যদি কোন মূর্খ লোকের দ্বারা হয়ে তাহলে হয়তো অপরাধকারীর অজ্ঞতা মনে করে একটু হাল্কা করে নেওয়া যায়। বা কোন শিক্ষিত মানুষই করুক তবুও বলা যায় সে বেটা ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানেনা, তারপক্ষে এমন জঘন্য কাজ হতেই পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমি এযাবৎ যতো গুলি বলৎকারের সংবাদ দেখেছি সবগুলোই হয় মসজিদের ইমাম দ্বারা বলৎকারের শিকার ছোট বাচ্চা, যারা কিনা সেই ইমামের কাছে পবিত্র কোরান শিক্ষা নেওয়ার জন্য শিক্ষারত। আবার না হয় কোন মাদ্রাসা, যেখানে ছোট বাচ্চাদের পবিত্র কোরান শিক্ষার পাশাপাশি ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়। এইসব ইমাম বা মাদ্রাসা শিক্ষকরা অবশ্যই কোরান সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানের অধিকারী, বা ইসলাম সম্পর্কে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত, বা মাওলানা, আমি তাদেরকে সবসময় সম্মানের সহিত হুজুর বলেই সম্বোধন করে থাকি। এইসব সুশিক্ষায় শিক্ষিত হুজুরদের দ্বারা কেন এমন জঘন্য অপরাধ সংগঠিত হবে!? তারা তো ইসলাম শিক্ষায় শিক্ষিত। তাহলে কী ইসলামে বলৎকার ভালো কোন কাজ?!! যদি খারাপ হয় তো, হুজুরদের দ্বারা কেন জঘন্যতম বলৎকার হবে? আর যদি ভালো কাজ হয় তবে কেনই বা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করবে, আদালতই কেন বলৎকার করা হুজুরদের জেলখানায় পাঠাবে?
অনেকেই এই পোষ্ট দেখে আমাকে গালি দিবেন, দোষবেন। দোষেন, তাতে আমার কি করার আছে! আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে যখন এমন সংবাদ পড়ে ইসলামের দিকে আঙুল তুলে, হুজুরদের দিকে আঙ্গুল তুলে। এমন অপরাধ খবরে যখন আসে তখন আমি মনে করি, এমন জঘন্য অপরাধ আরো অনেক হয়, যার সবগুলো খবরে আসে না। একটা মানুষ যখন অপরাধ করতে করতে অতিমাত্রায় অপরাধ করতে থাকে, তখনই তার কু-কর্ম ফাঁস হতে থাকে। আমার মনে হয় এমন অপরাধ আরো অনেক হয়, যা আমাদের নজরে পড়ে না বা সংবাদে প্রকাশ হয় না। আজকের খবরটা নিচে দিয়ে গেলাম, যদিও এর চেয়েও জঘন্যভাবে বলৎকারের সংবাদ ইতিপূর্বে দেখেছি। বলৎকার করে ছোট বাচ্চাকে মেরে পুকুরে ফেলে রাখার সংবাদও দেখেছিলাম। এইসব অপরাধের উপযুক্ত কঠিন শাস্তির অভাবেই এমন জঘন্যতা মাঝেমধ্যে আমাদের দেখতে হয়। আমি এমন জঘন্যতম অপরাধের জন্য ফাঁসির দাবী করি।
দৈনিক ইত্তেফাকের আজকের খবরটা-
"মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকার, হেফাজত ইসলামের সভাপতি গ্রেফতার
এক মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকার করার অভিযোগে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা হেফাজতি ইসলামের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাও. মুফতি মতিউর রহমান (৫০)কে পুলিশ আটক করেছে। ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিমান কুমার দাশ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বুধবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ওসি জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তাকে আটক করা হয়। তিনি দারুল তালিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল ও কাচারী পাড়া জামে মসজিদের ইমাম। দলীয় ভাবে তিনি ঈশ্বরদী উপজেলা হেফাজতি ইসলামের সভাপতি বলে জানা গেছে।
থানা সূত্র জানায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে দারুল তালিম মাদ্রাসার ছাত্র কাচারীপাড়া মহল্লার মজিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজুকে বলাৎকার করেন। পরদিন মঙ্গলবার সকালে শিশুটি অসুস্থ্য হয় এবং ঘটনাটি পরিবারসহ স্থানীয়দের জানায়। বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য দিনভর নানা দেন-দরবার শেষে অবশেষে তাকে স্থানীয়রা আটক করে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।
পুলিশ তাকে আটক করে আজ বুধবার জেল হাজতে পাঠিয়েছে। আটককৃত মুফতি মতিউর ঈশ্বরদী পৌর এলাকার পশ্চিম টেংরী মহল্লার মৃত বাদল মোল্লার ছেলে। এর আগে তার বিরুদ্ধে একাধিক বলাৎকারের অভিযোগ রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০১৭ইং, দৈনিক ইত্তেফাক"
মাদ্রাসা ছাত্রকে বলৎকার.... সংবাদটি এখানে ক্লিক করে দেখতে পারেন
এইসব জঘন্যতম অপরাধ চলতে থাকলে আমাদের সমাজের বাবারা তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পড়াতে অনাগ্রহী হয়ে পড়বে। কারণ, কোন বাবাই চাইবেন না তার আদরের ছোট বাচ্চাটি বলৎকারের শিকার হোক। যদি এমনটা হয় তো আগামী প্রজন্ম ইসলাম শিক্ষায় পিছিয়ে পড়বে। তাছাড়া গুটিকয় বদমাইশ হুজুরের জন্য সব হুজুরদের এমন অপবাদ সহ্য করতেই হবে। তাই, এমন জঘন্য কু-কর্মের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিৎ, যাতে ভবিষ্যৎকালে এমন অপরাধ কেউ করার সাহস না পায়।
(সবার কাছে ক্ষমা চাই যদি কষ্ট দিয়ে থাকি)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:০৫