সীমান্ত হত্যার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বললেও তা উদ্বেগজনক নয় বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বিডিনিউজ জানায়: মঙ্গলবার বৈঠকের পর কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের পদক্ষেপে সন্তোষও প্রকাশ করা হয়। তবে কমিটিতে বিরোধীদলীয় সদস্য মাহবুবউদ্দিন খোকন সীমান্তে হত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংসদ ভবনে বৈঠকের পর স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এ বিষয়ে (সীমান্ত হত্যা) আমরা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করিনি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে কোনো সুপারিশও করিনি।”এক্ষেত্রে সরকার গৃহীত পদক্ষেপ কমিটি যথাযথ মনে করে বলে জানান তিনি। সীমান্ত হত্যা নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কয়েকদিন আগের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মাহমুদ আলী বলেন, “তার (সৈয়দ আশরাফ) মন্তব্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান সাংঘর্ষিক বলে আমি মনে করি না।”সীমান্তে হত্যাকান্ড নিয়ে বিএনপির প্রতিবাদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফ শনিবার বলেন, “প্রতিনিয়ত ঘটনাগুলো ঘটছে। এসব অতীতে ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। এ নিয়ে রাষ্ট্র খুব একটা চিন্তিত নয়।” তবে সীমান্ত হত্যাকান্ডসহ অন্যান্য অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দিল্লিকে দুই দফা চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংসদীয় কমিটির সদস্যরা একটি সংবাদ সম্মেলন করলেও কমিটির বিরোধীদলীয় সদস্য খোকন আলাদা সংবাদ সম্মেলন করে সীমান্তে হত্যাকান্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, তার পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বৈঠকে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা বৈঠকের রেকর্ডে রয়েছে। খোকন বলেন, “সরকার যদি সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদ করে এবং এর বিরুদ্ধে সাহসী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বিএনপি সরকারকে সমর্থন করবে।”“বিএসএফ জওয়ানদের বরখাস্ত করার পর সরকার (বাংলাদেশ) প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। কীসের ভয়ে সরকার শুরুতেই প্রতিক্রিয়া জানায়নি?” প্রশ্ন রাখেন বিএনপির এই সংসদ সদস্য। গত সপ্তাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বাংলাদেশি এক যুবককে নির্যাতনের খবর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হলে আট বিএসএফ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে বলেও দাবি করেন খোকন। তার বক্তব্য সম্পর্কে সংসদীয় কমিটির সভাপতি মাহমুদ আলী বলেন, “তারা (বিরোধী দল) যা খুশি তা বলতে পারেন, তবে সরকার দুর্বল পররাষ্ট্র নীতিকে লালন করছে না।” বর্তমান সরকারের তিন বছরে সীমান্তে ১৪১ জন নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৫০। “এ সরকারের (মহাজোট) সময় সীমান্তে হত্যা কমে এসেছে,” বলেন তিনি। সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ছাড়াও ছিলেন কমিটির সদস্য মো. ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক, ইমরান আহমদ, মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ ও নাজমা আকতার।
সূত্রঃ http://www.purbanchal.com/