ঈদ মানে হাসি, ঈদ মানে খুশি। ঈদ এলেই এই কথা গুলি বিভিন্ন কার্ড বা টিভির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শুনে থাকি। মুসলিম প্রধান দেশগুলোর সবচেয়ে বড় এবং মুল উৎসব-ই হল ঈদ। কিন্তু হাসি বা খাশি হওয়ার সময় কোথায় আমাদের দেশের চাকরীজিবীদের?
হাসি ও খুশি না হওয়ার কারণ গুলোঃ
১) বাড়ী যাওয়ার টিকেট পাওয়া যাইতেছে না
২) এখনো বোনাস পাই নাই ( প্রাইভেট কোম্পানী গুলোর ক্ষেত্রে)
৩) অনেক কম্পানী আছে যাদের কর্মচারীদের বেতন পর্যন্ত হয় নাই
৪) এখনো গরু কিনা হয় নাই
৫) এখনো কসাই ঠিক করা হয় নাই
৬) বাড়ি যাওয়ার টিকেট পাইলে ও রিটার্ন টিকেট পাওয়া যায় নাই
৭) সর্বপোরি রাস্তার জ্যাম ও দুর্ঘটনায় শঙ্কা তো থাকছেই
৮) ইত্যাদি, ইত্যাদি....
তাহলে কি " ঈদ মানে হাসি, ঈদ মানে খুশি" এই ব্যাকের সাথে বাস্তবের কোন মিল থাকল ? বরং উল্টাটাই বলা যায় ঈদ মানেই পেরেশানী। যাই হোক আমি মুল বিষয় থেকে দুরে সরে যাচ্ছি। আমার বিষয় ছিল ঈদের ছুটি।
প্রথমে রোজার ঈদের ছুটি নিয়ে কিছু বলি। মুলত দুই ঈদই চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু রোজার ঈদে চাঁদ দেখার পরের দিন-ই ঈদ হয়। তাহলে আপনি আগে থেকে কিভাবে বুঝবেন চাঁদ কবে উঠবে। হয় একদিন আগে নতুবা একদিন পরে উঠবে। কিন্তু আপনার ছুটি তো ৩ দিন ফিক্সড।
এবার বলি কোরবানী ঈদের ছুটি নিয়ে, যেখানে কুরবানি ঈদের কুরবানী-ই করা যায় ৩ দিন। ঢাকার অনেকে তো প্রথম দিন কুরবানী-ই দিতে পারে না কসাইয়ের অভাবে। আবার যারা গ্রামে যায় ঈদ করতে ৪০০ কি.মি দুরে বাসা। তাদের তো যাইতে একদিন, আসতে একদিন চলে যায় এমন ও দেখা গেছে যে জ্যামে পরে ২০ থেকে ২৫ ঘন্টা চলে যায় পর্যন্ত তাহলে ৩ দিনের ছুটি কি তার জন্য যথেষ্ট হইল? এখানেও আছে চাঁদ দেখার ব্যাপার। ঈদের টিকেট কাটতে হয় ১৫ দিন আগে । যেখানে চাঁদ উঠে দশ দিন আগে। তাহলে আমি কোন তারিখের টিকেট কাটব?
সর্বপরি বলা যায় এমন একটা ছুটির মডেল আমাদের দেশের জন্য হওয়া উচিৎ যা আমাদের জন্য হবে আরামদায়ক। অন্যদেশগুলো কিভাবে ছুটি দিচ্ছে বা কয়দিন দিচ্ছে সেটা এখানে দেখার বিষয় নয় যেহেতু আমাদের উৎসবের ধরণ, যোগাযোগ ব্যাবস্থা সহ অন্য সব রকম ব্যবস্থাগুলো ভিন্ন। কাজেই আমাদের ছুটি ২-৩ দিন বাড়িয়ে দিলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে বলে আমার মনে হয় না।
চাঁদ দেখা, টিকেট পাওয়া, রাস্তায় অতিরিক্ত গাড়ির ফলে জ্যাম তৈরী হওয়া, অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকার কোরবানীর বর্জ্য পরিস্কার না হওয়া এই সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে হলেও ছুটি বর্ধিত করা উচিৎ বলে আমার মনে হয়।
এই ৩ দিনে কি একজন মানুষের দ্বারা সম্ভব তার অত্বীয়স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করা। যদি এইভাবেই চলতে থাকে,হয়তবা খুব বেশীদিন লাগবে না যখন ছেলে বাবাকে বলবে
ছেলে: ঐ লোকটা যে মা কে বুবু বলে ডাকে, উনে কে বাবা?
বাবা: ঐ টা তোর মামা। তোকে না বলেছিলাম তোর মামা লম্বা।
ছেলে: হু, এই বার মনে পরেছে, গত দশ বছর যার বর্ণনা আমাকে দিছো কিন্তু তোমার ছুটির কারণে দেখা হয় নি।
যাই হোক, লেখাতো শেষ হতে চায় না। অারো অনেক বিষয় ছিল লেখার। আজ এইখানেই লেখার মুলতবি টানছি। আশা করি, কতৃপক্ষ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে যথা ব্যবস্থা নিবেন। না হয় কবির মত আমাদের ও বলতে হবে, এমন ঈদের ছুটি লইয়া আমরা কি করিব?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:০৬