somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিউইয়র্কে গোয়েন্দা ফাঁদে বাংলাদেশি যুবক, অপরাধে প্ররোচনা দেয় এফবিআই!

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৮:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস হামলার উদ্যোগ নেওয়ার আগে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যরা তাঁকে দেশে আসার আগেই হামলা করতে উদ্বুদ্ধ করেন। রেজওয়ানুলের জন্য বিস্ফোরকও সরবরাহ করেন তাঁরাই।
আল-কায়েদার কারও সঙ্গে রেজওয়ানুলের সম্পৃক্ততাও দেখাতে পারেনি মার্কিন গোয়েন্দা ব্যুরো এফবিআই। বরং আল-কায়েদার সদস্য হিসেবে গোয়েন্দারা যাঁকে রেজওয়ানুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন, তিনিও একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা। আল-কায়েদার সদস্য সেজে ওই গোয়েন্দাই হামলার অনুমোদন দেন রেজওয়ানুলকে। আবার হামলার আগে এ নিয়ে একটি লেখা তৈরির ধারণাও দেন ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দা। আর এভাবেই গোয়েন্দাদের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েন রেজওয়ানুল।
রেজওয়ানুলের বিরুদ্ধে আদালতে গোয়েন্দাদের দাখিল করা প্রাথমিক অভিযোগপত্রে তাঁর কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ আছে। ১৭ অক্টোবর রেজওয়ানুলকে গ্রেপ্তার করে এফবিআই। এর পরই নিউইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট জন নিস। নিউইয়র্ক থেকে এই অভিযোগপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন। এফবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রেই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে রেজওয়ানুলকে গোয়েন্দা ফাঁদে ফেলার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেই যে গোয়েন্দারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ এবং সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিলেন, তা-ও অভিযোগপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। যোগাযোগের প্রথম দিন থেকে ধরা পড়ার দিন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দাদের যেসব আলাপ-আলোচনা হয়, পর্যায়ক্রমে সে বর্ণনাও আছে অভিযোগপত্রে। গোয়েন্দারা রেজওয়ানুলের প্রতিটি কথাও রেকর্ড করে রাখেন।
তবে ‘স্টিং অপারেশন’ নামের এভাবে ফাঁদে ফেলার কার্যক্রম নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। এভাবে ফাঁদে ফেলাকে ‘সন্ত্রাসী বানানোর কারখানা’ বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। গ্লোবাল রিসার্চ নিউজ-এ মার্কিন অধ্যাপক মাইকেল এস রোজেফ লিখেছেন, এটি হচ্ছে এমন একটি সন্ত্রাসী কাজ, যেখানে এফবিআইয়ের দেখানো পদ্ধতি ধরে খেলতে হয়, গোলপোস্ট তারাই ঠিক করে দেয়, এমনকি গোল করার ফুটবলটিও তাদেরই সরবরাহ করা।
দেখা গেছে, রেজওয়ানুলের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। গোয়েন্দাদের সরবরাহ করা বিস্ফোরকসহই ধরা পড়েন রেজওয়ানুল। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে কোনো এক দিন রেজওয়ানুলের সঙ্গে এফবিআইয়ের এক সূত্রের প্রথম যোগাযোগ হয়। যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর জন্য ওই দিনই রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে একটি জিহাদি সংগঠনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর একই মাসের ৫ তারিখ বা তার আগে-পরে কোনো এক দিন রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে ফোন দেন। রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে বলেন, জিহাদ পরিচালনার জন্যই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। একই সঙ্গে তিনি আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের প্রশংসা করেন। এ ছাড়া রেজওয়ানুল একটি সাময়িকীর নামও করেন, যেটি জিহাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করে।
এফবিআইয়ের ওই সূত্রের মনে হয়, রেজওয়ানুল যে সাময়িকীটির উল্লেখ করেছেন, সেটির নাম ইন্সপায়ার। এটি আসলে আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকাশনা।
ওই আলাপেই রেজওয়ানুল বলেন, তিনি দুটি কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। ইসলামের প্রচার এবং জিহাদ। এ কাজের জন্য একজন আমেরিকান নাগরিক (সহ-ষড়যন্ত্রকারী, তিনি সরকারি এজেন্ট নন তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ) এবং একজন বাংলাদেশির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে।
৬ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন রেজওয়ানুল, সহ-ষড়যন্ত্রকারী এবং এফবিআইয়ের ওই সূত্র। রেজওয়ানুল জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা তিনি চালিয়ে যাবেন। ১১ জুলাইয়ের দিকে এফবিআইয়ের ওই সূত্রের সঙ্গে সহ-ষড়যন্ত্রকারীর কথা হয়। এ সময় তিনি জানান, রেজওয়ানুল এর আগে তাঁকে বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালিয়ে বড় কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যা করতে চান। এর কয়েক ঘণ্টা পরই সম্ভবত ১২ জুলাই সকালের দিকে রেজওয়ানুল, সহ-ষড়যন্ত্রকারী এবং এফবিআইয়ের ওই সূত্রের মধ্যে আবার কথা হয়।
এরপর ১৪ জুলাই এফবিআই সূত্রকে রেজওয়ানুল জানান, আল-কায়েদার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আগামী ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পারেন। তখন তাঁকে এফবিআই সূত্র জানায়, আল-কায়েদার এক সদস্যের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আছে। এ কথা শুনে রেজওয়ানুল আল-কায়েদার ওই সদস্যের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর তিন দিন পর রেজওয়ানুলের সঙ্গে আল-কায়েদার ওই সদস্যের (যিনি আসলে একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা) কথা হয়। এ সময় রেজওয়ানুল যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য আল-কায়েদার সহযোগিতা চান। তখন ওই ছদ্মবেশী গোয়েন্দা জানান, আল-কায়েদার অপর এক সদস্যের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তিনিই রেজওয়ানুলের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
১৯ জুলাই আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আল-কায়েদা সদস্য সেজে রেজওয়ানুলের সঙ্গে কথা বলেন। ঠিক হয়, ২৪ জুলাই নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কে তাঁরা দেখা করবেন। এ সময় মধ্যস্থতাকারী সেজে সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেক ছদ্মবেশী সদস্য। এ সময় রেজওয়ানুল যুক্তরাষ্ট্রে হামলার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং জানান, তাঁর আরও দুজন সহযোগী আছেন, যাঁরা হামলায় অংশ নিতে রাজি আছেন। যাঁদের একজনের নাম ইয়াকিন (সহ-ষড়যন্ত্রকারী)। রেজওয়ানুল বলেন, ‘কাজের জন্য আমরা প্রস্তুত। ছোটখাটো হামলা নয়, আমরা ব্যাপক বড় কোনো হামলা চালাতে চাই, যা পুরো যুক্তরাষ্ট্রকে নাড়া দেবে।’
৫ আগস্ট রেজওয়ানুল আল-কায়েদা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যকে জানান, তিনি নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা চালাতে চান। এরপর ৯ আগস্ট তাঁকে স্টক এক্সচেঞ্জ এলাকায় ঘুরতে এবং কাগজে কিছু টুকে নিতে দেখেন গোয়েন্দারা। ১১ আগস্ট নগরের কুইন্স এলাকার একটি হোটেলে ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের সাক্ষাৎ হয়। তিনি আত্মঘাতী হামলা পরিকল্পনার কথা জানান এবং বলেন, এ জন্য শক্তিশালী মাত্রার ব্যাপক বিস্ফোরক প্রয়োজন হবে। বিষয়টি নিয়ে আল-কায়েদা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার এবং তাঁর পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়ে আনার জন্য ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে বলেন। তিনিও এ ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
২৩ আগস্ট কুইন্সের একটি হোটেলে আল-কায়েদা ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দার সঙ্গে আবার দেখা করেন রেজওয়ানুল। এ সময় তিনি জানতে চান, তিনি যা করতে চলেছেন, তা কি আল-কায়েদার তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে? ছদ্মবেশী গোয়েন্দা এতে হ্যাঁ-সূচক সায় দেন। তখন রেজওয়ানুল জানান, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ পুরো উড়িয়ে দিতে পুরো এক ট্রাক বিস্ফোরক প্রয়োজন হবে, যা ঢাকা থাকবে ফল ও শাকসবজি দিয়ে। একপর্যায়ে তিনি ওই ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে বলেন, তিনি নিজেও কেন এই হামলায় অংশ নিচ্ছেন না, কেন ট্রাকটি নিজেই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন না। তখন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা বলেন, এটা তাঁর কাজ নয়। তাঁর কাজ শুধু রেজওয়ানুলকে সহযোগিতা করা। যাওয়ার আগে তিনি জানিয়ে যান, হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আল-কায়েদা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি শিগগির বিদেশে যাবেন।
২৭ আগস্টের দিকে এফবিআইয়ের সেই সূত্রের সঙ্গে রেজওয়ানুলের যোগাযোগ হয়। তখন তিনি ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনার বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর কুইন্সের একটি হোটেলে ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ হয় রেজওয়ানুলের। এ সময় তিনি পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ওই হামলা চালানো হবে। জানান, তিনি নিজেও শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত। হামলার জন্য কোথা থেকে কীভাবে বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হবে, এ নিয়েও দুজনের মধ্যে আলোচনা হয়।
২০ সেপ্টেম্বর দুজনের মধ্যে আবার সাক্ষাৎ হয়। এদিন রেজওয়ানুল জানান, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের পরিবর্তে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে হামলা চালাতে চান। বিস্ফোরক নিয়ে আবার বিভিন্ন আলোচনা হয়। সবশেষে রেজওয়ানুল পরিবারের সদস্যদের শেষবারের মতো দেখার জন্য দেশে ফেরার আগ্রহ জানান। আল-কায়েদা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা তখন জানান, তিনি যদি সত্যিই আল-কায়েদার সহযোগিতায় হামলা চালাতে চান, তা হলে পরিকল্পনার এ পর্যায়ে দেশে বা দেশের বাইরে চলাফেরা করা তাঁর উচিত হবে না। কারণ, যেকোনো সময় তিনি মার্কিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে পারেন।
এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের আবার সাক্ষাৎ হয়। ওই সাক্ষাতে গোয়েন্দারা জানান, হামলা পরিকল্পনার বিষয়টি নিয়ে তিনি আল-কায়েদার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। আল-কায়েদা চায় না, রেজওয়ানুলের দেশে ফেরার কারণে হামলা চালাতে দেরি হোক। আল-কায়েদা বলেছে, আত্মঘাতী হামলার পরিবর্তে দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা দিয়ে হামলা চালাতে। তা হলে হামলা চালিয়ে পরে তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। হামলার কৌশল পরিবর্তিত হওয়ায় রেজওয়ানুল খুশি হন। কেননা, এতে পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আরও হামলা চালাতে পারবেন।
ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের পরবর্তী সাক্ষাৎ হয় ৪ অক্টোবর। ওই দিন তাঁরা দুজন মিলে শহরের পূর্বাঞ্চলে একটি গুদাম পরিদর্শন করেন। ঠিক হয়, সেখানেই বিস্ফোরকদ্রব্য মজুদ করা হবে। বিস্ফোরক তৈরির জন্য সেদিন তাঁরা বাজার থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামও কেনেন। ১২ অক্টোবর তাঁদের দুজনের আবার সাক্ষাৎ হয়। এদিন গুদামে বিস্ফোরকদ্রব্য (যা আসলে ছিল নিষ্ক্রিয় বিস্ফোরক) পৌঁছে দেওয়া হয়। ছদ্মবেশী গোয়েন্দা রেজওয়ানুলকে বলেন, হামলার আগে নিজের বক্তব্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে একটি নিবন্ধ লিখে ফেলা তাঁর উচিত। রেজওয়ানুলও এ ধারণা লুফে নেন। তিনি মনে করেন, এ রকম একটি নিবন্ধ লিখলে তা ইন্সপায়ার সাময়িকীতে ছাপা হবে। তিনি বেশ উৎসাহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলার পরিকল্পনা কীভাবে তাঁর মাথায় এল সে বর্ণনা দেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে হলে তার অর্থনীতি ধ্বংস করাই সবচেয়ে ভালো পথ। এ জন্যই তিনি সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে হামলা করতে চলেছেন।
ওই দিনের বৈঠকের কিছুক্ষণ পর ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে ফোন করে রেজওয়ানুল জানান, তিনি আরেকটি মুঠোফোন কিনেছেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য দূরনিয়ন্ত্রক হিসেবে তিনি এটি ব্যবহার করবেন। ১৫ অক্টোবর রেজওয়ানুলকে ফোন করে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা জানান, সবকিছু প্রস্তুত। ১৭ অক্টোবর হামলা চালানো যায়। রেজওয়ানুলও এতে সায় দেন এবং জানিয়ে দেন, তিনিও প্রস্তুত।
১৭ অক্টোবর খুব সকালে একটি ভ্যানগাড়িতে চড়ে বিস্ফোরকের গুদামে পৌঁছান রেজওয়ানুল ও ওই গোয়েন্দা। গুদামে পৌঁছার পর রেজওয়ানুল নিজেই এক হাজার পাউন্ড বিস্ফোরক নির্দিষ্ট খোলসের মধ্যে ঢোকান এবং এর সঙ্গে ডেটোনেটর যুক্ত করেন। পরে সেগুলো ভ্যানগাড়িতে তুলে ফেলেন। এরপর গাড়িটি নিয়ে দুজন চূড়ান্ত লক্ষ্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের উদ্দেশে রওনা হন। পথে রেজওয়ানুল বলেন, আল-কায়েদার প্রয়াত তাত্ত্বিক আনোয়ার আল-আওলাকির ভিডিও টেপ দেখেই তিনি জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে তিনি নিজেও একটি ভিডিও ধারণ করতে চান। অবশেষে তাঁরা পৌঁছে যান গন্তব্যস্থলে। ফেডারেল রিজার্ভ ভবনের সামনে গাড়িটি রাখেন। এরপর দুজনে ঢুকে পড়েন পাশের একটি হোটেলে। সেখানে রেজওয়ানুলের ভিডিও বক্তব্য ধারণ করেন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা। ভিডিওতে মার্কিন জনগণকে উদ্দেশ করে রেজওয়ানুল বলেন, ‘চূড়ান্ত বিজয় অথবা শহীদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।’
ভিডিও ধারণ শেষ হওয়ার পরই রেজওয়ানুল মুঠোফোনের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করেন। বিস্ফোরকের সঙ্গে যুক্ত ডেটোনেটর সক্রিয় করতে তিনি যে মুঠোফোন জুড়ে দিয়েছিলেন সেই নম্বরে একের পর এক ফোন দিতে থাকেন, কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটেনি। তাঁর এ কর্মকাণ্ড ধারণ করা হয় গোপন ক্যামেরায়। এর পরই গ্রেপ্তার করা হয় রেজওয়ানুলকে।
তথ্যসূত্র











৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×