ছবি দেখতে বসার পরেই যে কথা টা মনের মধ্যে আসলো তা হল “বাংলা ছবির ক্যামেরাম্যান গুলা বিশাল বদ,খালি নায়িকার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় ক্যামেরা ধরে।পরে খিয়াল করলাম নায়িকার সারা গায়েই চর্বি ।যে জায়গায়ই ক্যামেরা ধরে,ওই জায়গারেই স্পর্শকাতর মনে হয়। ছোট বেলায় পড়ছিলাম “সারা অঙ্গে ব্যাথা,ওষুধ দেব কোথা?আর এখন ক্যামেরাম্যান রা বলে,
“সারা গায়ে চর্বি,
যেথা খুশি ক্যাম্রা ধরি।
এবার ছবির প্রসঙ্গে আসা যাক।যারা বাংলাদেশের দুর্নীতি দেখতে দেখতে ক্লান্ত তাদের অবশ্যই বাংলা ছবি দেখা উচিৎ।কেননা সব বাংলা ছবিতে নায়কের বাবা সৎ থাকবেন ইহা নিপাতনে সিদ্ধ।( যাদের সততার অভাব তারা অতি সত্তর এফ ডি সি তে যোগাযোগ করেন। কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে) এখানেও তাই।তিনি বিরোধী দলের ভয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলে বাধ সাধে তার স্ত্রী(যে কিনা আবার শহরের জাঁদরেল উকিল এবং পুরা ছবিতে তাকে একবারের জন্য ও আদালতে দেখা যায় নাই) এবং মেয়ে।তারা বলে অবশ্যই তোমাকে নির্বাচন করতে হবে কেননা দেশে সৎ লোকের বড় অভাব। পরিনামে খুন হন। হালায় এজন্যই মানুষ বলে, মাইয়া মানুষের বুদ্ধি নিতে নাই।
ছবিতে বাবা একজন আদর্শবান রাজনৈতিক,তার স্ত্রী জাঁদরেল উকিল,ছেলে নিতিবান পুলিশ,ছোটছেলে প্রতিবাদী তরুন।ভাগ্য ভালো যে আর ছেলেমেয়ে নেয় নাই তাইলে দেখা যাইত একজন কিংঅ্যালেকজান্ডার,আরেক জন স্টিভ ওয়াহ আরেক জন লায়লা আলী।ভালো জিনিষ অল্পই ভাল।
এরপর শুরু হল নাম দেখানোর পালা।চরম একটা ক্লাইম্যাক্স দেখার আশায় নড়েচড়ে বসলাম।কিন্তু কিসের কি???নাম শেষ হওয়ার পরেই দেখলাম এক জন নিজের ইজ্জত বাঁচাইতে দৌড়াচ্ছে।এক জোড়া বক্ষ আমার স্ক্রীন ঢেকে ফেলল!!!আরে এ তো মহা মুসিবত।উপরে নিচে ডানে- বামে এক ইঞ্চি জায়গা ও খালি নাই!!কোন সে নায়িকা যার এত বড়...।তখন আমার আর ওইদিকে খেয়াল নাই।আমি আশায় আছি তার চেহারা দেখার।কিন্তু ক্যামেরাম্যান কম যায় না। উস্টা খাইয়া পড়ার পর ক্যামেরা ঐ জায়গা থেকে সরায় না!যাক শেষ পর্যন্ত চেহারা দেখিয়া আনন্দে চিৎকার দিয়া উঠলাম।এযে আমার মত লক্ষ যুবকের হৃদয় হরণকারী আমরার “মুনমুন”!!!!
(আফসুস,শেষ পর্যন্ত দৃশ্য টা কমপ্লিট হয় নাই,নায়ক চইলা আসছে)
দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত মুনমুন বেবিট্যাক্সি চালক।যার গায়ে থাকে দামী জিন্স-টিশার্ট এবং জ্যকেট।কড়া লিপিস্টিক এবং মেকাপ।আচ্ছা এগুলা বাদ দিলাম পরিচালক এর মাথায় এইটা ঢুকল না যে ও যদি বেবিট্যাক্সির ভিতরে ঢুকে তাহলে বেবিট্যাক্সি ১ ইঞ্চিও নড়ব না।ওরে ক্যামনে এই চরিত্র দেই??!!ট্রাক,বুল্ডজার চালাইতে দিলেও একটা কথা ছিল।
নায়ক সৎ পুলিশ অফিসার,যার বোনকে রেপ করার জন্য গুন্ডা বাহিনী যায় কিন্তু তাকে বাচায় মুনমুন(নিজের ইজ্জতের উপর হামলা হইলে দৌড় দেয় আর আরেক জনের জন্য মারপিট করে!!!)
বোন কে বাঁচানোর পুরস্কার হিসেবে চায় আমীন খান(পুলিশ অফিসার)যেন তাকে কিস করে!!!!(বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে,ভাবতে ভালই লাগে)।এখন এই জুটির মিলন তো দেখাতে হবে। নায়ক নায়িকার মিলন করাতে পরিচালক দুর্দান্ত আইডিয়া নিছে।গরিব বেবিট্যাক্সি ড্রাইভার!!!!শোরুম থেকে ড্রেস কিনে ট্রায়াল রুমে যায় ট্রায়াল দিতে তখন আমীন খান ও ঢুকে পড়ে।তখন মুনমুন কে দেখে মনে হইল এত খুশি জীবনে ও আরেক বার ই হইছিল,যখন বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ারে হারায়।ও তখন বলে,”আপনি আমার যা কিছু দেখেছেন আপন কেউ ছাড়া আর কারো দেখার অধিকার নেই!!!!ক্ষমা করতে পারি যদি আপনি আমার জামার চেইন টা লাগিয়ে দেন।!!!!! ওর ক্ষমার এরকম দৃষ্টান্ত দেইখা আমাগো রাষ্ট্রপতির কথা মনে পইরা গেল। তারপর থিকা খালি কান্তেই আছি, কান্তেই আছি।
এবার ২য় নায়িকা।সে একই দোষে দুষ্ট।(বিস্তারিত বইলা ব্যান খাইতে চাইনা)।কলেজে আইসাই শুনল এমন এক ছেলে আছে যে কিনা মেয়েদের পাত্তাই দেয় না।
সেই নায়ক আমাদের সকলের নয়নের মনি,মাথার চুল(হিন্দি ভার্সন)সাকিব খান।
তো সেই অতি ভদ্র নায়ক টিটি খেলার সময় বল গিয়ে পরে নায়িকার জামার ভিতরে।ক্যামনে ঢুকল সেইটা বিরাট রহস্য।কেননা যেই টাইট জামা পড়ছে সেখানে যা আছে তাই সামাল দিতে পারছে না জামা ব্যাচারা,মনে হচ্ছে ছিঁড়া বের হয়ে যাচ্ছে সেখানে টিটি বল ক্যামনে ঢুকে?!!!
এখন বল যেভাবেই হোক বের করতে হবে।কিন্তু ঐ জায়গায় তো আর হাত দেয়া যায় না।(নায়ক লুইচ্চা হলেও একটা সম্ভ্রান্ত ঘরের ছেলে।ওখানে হাত দিলে লোকে কি বলবে)।তাই সে মুখ দিয়ে ওখান থেকে বল বের করে।(ক্যামনে করে তা আবার আমারে জিগায়েন না।স্বয়ং নিউটন থাকলে ও এই সূত্রের ব্যাখ্যা দিতে পারতেন না।আর আমি কনহাঙ্কার কোন াল-াল।
নায়ক যতই ইতর হোক প্রেম তার সাথেই হবে।হলও তাই। প্রেম হইছে আর গান হইব না তা কি করে হয়।নাচের একটা স্ট্যাপ ছিল পিছন দিকে ঘুইরা নাচতে হইব।এই দৃশে দেখা গেল নায়িকার পশ্চাৎদেশ ছাড়া আর কিছু দেখা যায়না।তখন ক্যামেরাম্যান লংশট নিলেন কিন্তু তখন শুধু নায়িকার বিশাল বপু খানাই দেখলাম।এর আশেপাশে ১০০ হাতের মধ্যে শাকিবরে হারিকেন দিয়াও খুইজা পাইলাম না।
অনেক হিন্টস দিছি,পারলে বলেন তো ২য় জন কে??
কি?? পারলেন না?
ওনাকে বলা হয় কুইন অফ ঢলিউড... পপিইইইইইই
এইদিকে ভিলেন রা জানতে পারে ঐ নেতার পোলা আমীন-শাকিব খান।এ কারনে দুই ভিলেন ভাই ডিপজল-মিশা প্রতিশোধ নিতে নায়কের বোন-শাকিবের প্রেমিকার ইজ্জতের উপ্রে হামলা করে।(িস্ক্রপ্ট রাইটার বিশাল ক্রিয়েটিভ-প্রতিশোধ নেয়ার এর চাইতে ভালো কোন উপয়ই হইতে পারেনা)।কিন্তু আফসুস এইবার ও কিছু দেখতে পারলাম না।যথাক্রমে মুনমুন এবং সাকিব খান তাদের বাচায়।
এরপর আমীন খান সন্ত্রসীরে গুলি করলে লাগে পপির বাবার গায়ে এবং সে মারা যায়। এখানেই শেষ না...পুলিশ কমিশনার রে খুনের দায়েও আমীন খানরে ফাসায় এবং চাকরীচ্যুত করে।(ইয়া মাবুদ রক্ষা কর।এই রকম দেখলে তো ভবিষ্যতে কেউ সৎ পুলিশ অফিসার হইব না)।
পপির বাবারে গুলি করার কারনে আমীন-শাকিব এর যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয় তা মিটে যায়।তাই দেখে ভিলেন রা আবার পপি এবং নায়িকার বোন কে তুলে নিয়ে আসে।
(আর কত?? এইবার এই মাইয়া ২টারে একটু ক্ষেমা দেনা... পারছ নাতো কিছু করতে হুদাই দর্শকরে আশা দিয়া নিরাশ করতাছস)।
শেষে মারামারি।তবে মারামারিতে এই জিনিষ ক্যম্নে করে??!!! ভিলেন রা নায়ক রে গুলি করলে গাছের পাতায় লাগে,আর নায়কের কিছুই হয় না!!! এই রকম কিছু গাছ যোগাড় করতে হইব এফ ডি সি থেকে।
(ছুডু কালে শেষ মারামারির দৃশ্য টা আমার জোস লাগত আর খালি দোয়া করতাম... ।“আল্লাহ নায়ক যেন না মরে আল্লাহ নায়ক যেন না মরে”
সবশেষে আমীন কে চাকরীতে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়।(পুরা ছবিতে একবারের জন্য ও দেখিনাই নায়ক পুলিশের ইউনিফর্ম পড়ছে)
আর পপির সাথে তার ভাগিনার মিলন হয়।পপিরে এই ছবিতে শাকিবের খালার বয়সী মনে হয়।কিসমত কানেকশন এ যেমন শাহীদ-বিদ্যা বালান।
শেষ কথা হইল----
পরিচালকের রুচি আছে।বাইছা বাইছা ঢাকা শহরের সব গোডাউন খুঁজে শ্রেষ্ঠ ২টা আটার বস্তা নির্বাচন করছে।এটা কিন্তু যাতা কথা না।কখনো যদি দেশে আটার সংকট দেখা দেয়,ওনাকে ধরতে হবে।কেনোনা গোডাউনের ঠিকানা ওনার চেয়ে ভাল আর কে জানে??