somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভিয়েতনাম_ডেনাং

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডেনাং এ পৌছালাম সন্ধেয়। হোটেল বুকিং নেই যথারীতি। মহা সমস্যায় পড়লাম কারন কোন হোটেল খালি পাচ্ছিলাম না আমাদের বাজেটের ভেতর।

বাচ্চারা ক্লান্ত। আমারাও ২০ ঘন্টা জার্নির পর আর পারছিলাম না।

অবশেষে সাগড় পাড়ে একটা হোটেল পেলাম। খুব মন্দ নয় বরং বেশ বড় রুম খোলা মেলা, বেলকনি আছে। তবে হাইডির মন খারাপ কারন হোটেল রিসেপশনিস্ট এর ব্যবহার খুবই খারাপ। আমি আর পারলামনা হাইডিকে চুপ থাকতে বলে রিসেপশনিস্টকে কয়েকটা ঝাড়ি দিয়ে সোজা বানিয়ে আমাদের লাগেজ উপরে পাঠেনোর ব্যবস্থা করতে বলে গট গট করে বাচ্চা আর হাইডিকে নিয়ে লিফ্টের দিকে এগোলাম। কাজ হলো তাতে।:D

চেন্জ করে নিচে গেলাম ডিনার করতে আর শহরটা দেখতে। শহর সাগড় পাড় থেকে দশ মিনিটের ড্রাইভ। চমৎকার আলোক সজ্যা সারা শহরে। না কোন উৎসব নয় এটা ওদের নরমাল প্রতিদিনের রাতের সজ্যা।

সেরাতে আর বেশি ঘুরা ফেরা না করে চমৎকার এক রেসট্যুরেন্টে ডিনার করলাম কলার মোচার সালাদ দিয়ে (ওটা আমার খুবই প্রিয় ডিশ)।

পর দিন সকালে ব্রেকফাস্ট করেই বীচে। অসাধারন বীচ। আমি অনেক বীচে গেছি এক একটা বীচের সৌন্দর্য একেক রকম।

এটা খুব রঙিন টাইপের চমৎকার পরিস্কার বীচ। প্রচন্ড গরম। চামরা পুরে যায় রোদে। জ্যমা আর গ্রেস খুবই মজা পেল।

ওদের নিয়ে স্যান্ড কাসেল বানালাম আর সব ভিয়েতনামি বাচ্চাদের নিয়ে।



দুপুরে গেলাম খেতে বীচের রেস্টুরেন্টে। মেনু চাইতেই দেখিয়ে দিল কিছু গামলা ভর্তি সি ফিশ।

ওটাই ওদের মেনু। তাজা সি ফিশ গুলো গামলার পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে ওখান থেকে পছন্দ করে দিলে ওরা ওজন করে রান্না করে দেবে ওখানে।

ভাষা নিয়ে মহা ঝামেলায় পরলাম। কিছুতেই বোঝাতে পারিনা আমরা কি ভাবে রান্না চাই বা কি চাই, এদিকে খিদেয় মরছি। শেষে এক আধা ইংরেজি জানা ভিয়েতনামি কে পেলাম। উনি আমাদের সাহায্য করলেন অর্ডার করতে।

আহ চমৎকার সব খাবার। সি ক্রাব, মাসল্স, স্কালোপ, প্রন আর কলমি শাক!!!

এখনো মুখে লেগে আছে। অসাধারন। আমি সি ফুড ভালবাসি তাই আমার কাছে স্বর্গীয় মনে হলো। :DB-)B-)

তবে সব কিছুর সাথে সেই পাতা চিবানোর ব্যপারটা আছে। সব খাবারের সাথে ওরা পাতা দেয় চেবানোর জন্য :P। ছগল আরকি ;)

ওখানকার মানুষ গুলো সাদামাটা সরল, ব্যবহার ভাল। পরের দিন আমরা গেলাম পাহাড়ের চুড়ায় এক বুড্ডিস্ট টেম্পলে।

অসাধারন দৃশ্য!


সাগড়ের কোল ঘেসে পাহাড় আর তার চুড়ায় বিশাল বুড্ডা মুর্তি।














ওখানে গেলাম মটর বাইকে চড়ে।

একটাতে আমি আর জ্যামা অন্যটাতে হাইডি আর গ্রেস চালকের পেছনে। ওখান সেরে ঠিক করলাম আমারা মারবেল পাহাড় দেখে হোয়য়ান এ যাবো। হোয়য়ান ২৫ মিনিটের ড্রাইভ ডেনাং থেকে। মাঝ পথে মার্বেল পাহাড়।

অসাধারন মার্বেলের কাজ করা জিনিস পত্র দেখলাম। পাহাড়টা পুরোটা মার্বেলের।

পাহাড় কেটে কেটে মার্বেলে চমৎকার সব জিনিস বানানো দেখলাম।

এর পর গেলাম হোয়য়ান। এক শান্ত শিস্ট শহর। আর্ট আর হ্যান্ডি ক্রাফটের জন্য বিখ্যাত। টেইলারিং এর জন্য খুব নাম করা। কাপড় কিনে জামা বানান খুব সস্তা। বলা চলে একেবারে ট্যুরিস্টি শহর। চমৎকার হ্যাট পাওয়া যায় ওখানে। শপিং করে দিন কাটিয়ে সন্ধায় ফিরে এলাম ডেনাংএ। পরের দিন টা শহর ঘুড়ে বীচে কাটিয়ে রেস্ট নিয়ে জায়গা আর পরিবেশটা উপোভোগ করলাম। এর মাঝে আমার বেটী মাহমুদির "নট উইদ্যাউট মাই ডটার" টাও শেষ।

ফেরার পালা এবার। সন্ধের ফ্লাইটে ফিরে এলাম হো চি মিন সিটি। রাতে হটেল পেতে তেমন কষ্ট হলো না। পরের দিনটা আমারা শপিং করে কাটালাম লাল মার্কেটে। সন্ধেয় গেলাম ডিনার করতে চমৎকার এক ৫ তারা হটেলে, আমাদের ফেয়ারওয়েল ডিনার বলা চলে।

পরেরদিন সকালে আমদের ফ্লাইট ব্যাক হোম।


চমৎকার খাবার আর পরিবেশ। সময়টা ভাল কাটল আমদের চারজনের।


তবে এ সবের মাঝে জ্যামা আর গ্রেসের ঘন ঘন টয়লেট যাওয়া কিন্তু অবিরাম চলছে।;)

পরেরদিন সকালে এয়ার পোর্টে পৌছে আমারা যার যার গেটে চলে গেলাম আলাদা হয়ে। আমি এস আই এ সিংগাপুরে আর হাইডি জেট স্টার এ অস্ট্রেলিয়া। মন খারাপ সবারই গত ১৫ দিনের দুঃখ শুখ আর ভাল লাগার সময় গুলো আমাদের সবার মনে দোলা দিচ্ছিলো। বাড়ি ফিরে এলাম আমারা যার যার মতন কিন্তু সাথে নিয়ে এলাম অজস্র স্মৃতি যার অনকটাই এখানে লেখা হলোনা।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৫
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×