আমি যখন লিখি তখন কোন রকম যোগাযোগ মাধ্যম আমার সাথে থাকেনা। এক মনে লিখি- তাই সাথে আমি মোবাইল ও রাখিনা। রাখলে ও সেটা থাকে সুইচ অফ। ইন্টারনেট - টেলিভিশন- সিনেমা দেখা- সব আমার বন্ধ হয়ে যায়। আমি কয়েকদিন স্নান- খাওয়া- ঘুম বাদ দিয়েই লিখতে থাকি। নেশাখোরের মত লিখি। আমার কোন দিকেই কোন খেয়াল থাকেনা। কারন আমি প্লট ভুলে যেতে থাকি। ভুলে যেতে থাকি যেটা হটাত মনে এসেছিল। তাই আমি কারো সাথেই যোগাযোগ করিনা। কারো দিকেই খেয়াল রাখিনা। এই সময় টা আমার স্ত্রী সোমার জন্য এক খারাপ সময়। ও এই সময় মন মরা থাকে। ওকে সময় দিতে পারিনা। কথা বলতে পারিনা আমার মেয়ে নীলার সাথে। খেলার সাথি আছি আমিই- আমার সাথেই সারাদিনের পর পড়া শেষ করে খেলে নীলা মনি। কিন্তু এই লেখালেখির সময় কেমন যেন মুখ গোমড়া করে ড্রইং রুমে বসে থাকে। সোমা ও মুখ গোমড়া করে বসে থাকে। কিন্তু আমার কিছু করার থাকেনা। আমি লিখি- লিখতেই থাকি। কারো দিকে তাকাবার সময় থাকেনা। আমি তখন হারিয়ে যাই আমার গল্পের চরিত্র গুলোর মাঝে।
আমি একজন লেখক- কিন্তু আমার খুব একটা বই বের হয়নি। হাতে গোনা মাত্র দশটা। সব গুলো রহস্য উপন্যাস। আমি আগে লিখতে পারতাম না। কিন্তু এক সময় খুব ভাল গল্প বানাতাম। এখন সেই গল্প গুলোকে উপন্যাসের রুপ দেই। এটার জন্য আমাকে পড়ে থাকতে হয় একা একা। আমার লেখার রুমে আমি লেখার সময় এই জন্যই কারো প্রবেশ নিষেধ। করলে ও আমাকে ডাকা নিষেধ। কারন আমার মনযোগ ব্যাহত হয়। আমি রেগে যাই। উল্টা পালটা কান্ড ঘটাই। সবার মনে হয় আমি পাগলামি করছি। কিন্তু আমি তো জানি আমি কেন করি। আমি পাগলামি করি- কারন আমি লিখতে ভালবাসি। আমি পাগলামি করি- কারন লেখাই আমার জীবন। আমি সারা মাস ঘরেই বসে কাটাই। কিন্তু মাসে দিন পাঁচেক আমি থাকি একদম একা। এই সময় আমার লেখাই হয় আমার জীবন।
কিন্তু সেইবার আমি পারিনি। কারন আমার বাসায় চলে এসেছে আমার ছোট বোন- বোনের জামাই এবং তাদের দুই বিচ্ছু। নীলা মনির জন্ম হয়নি তখনো- এই বিচ্ছু দুইটাই ছিল আমার জান। আমার খেলার সাথি। আমি বড়- কিন্তু মামার কাছে ভাগিনা ভাগিনী এক অন্য রকম আনন্দের উৎস। আমি ওদের সাথে এক সময় খেলতাম। নীলার জন্মের পর তাই ওরা আমার সাথে তেমন খেলতা পারেনা। আমি ও ওদের কে তেমন সময় দিতে পারিনা। এক জন এবার ক্লাস টেনে। কিন্তু এখন ও মামা বললেই পাগল হয়ে যায়। আমি ওদের কাছে এখন ও সেই ছোট মামাই রয়ে গেছি।
সেইবার আমাকে বাংলাবাজারের একাতন প্রকাশনীর সকাল মাহিন ভাই বললেন একটা সিরিয়াল গল্প লিখতে। এটা একটা উপন্যাস সিরিজ হিসেবে বের করতে চান উনি। আমার ও সেই সময় টাকার দরকার ছিল। বাজারে আমার বই কিন্তু দেদারসে চলে। কিন্তু নীলা মনি আবদার করেছে আমাকে একটা গাড়ি কিনতে হবে। প্রতিদিন রিক্সায় যেতে যেতে ওর হাটু ব্যাথা হয়ে গেছে। আমার এত টাকা ছিলনা গাড়ি কেনার মত। কিন্তু মেয়ের আবদার। তাই টানা দুই সপ্তাহের জন্য আমি বিদায় নিলাম নিজের বাসা থেকে। বিদায় নিলাম বললে ভুল হবে- কাউকেই কিছু না জানিয়ে একটা চিঠি লিখে বিদায় নিলাম । চিঠিতে ঠিকানা দেয়া ছিলনা। শুধু লেখা ছিল আমি যেখানেই আছি- ভাল আছি- এটুকুই। সাথে কিছু টাকা পয়সা ও ছিল। সোমা কে দিয়ে গিয়েছিলাম । এই সময় টুকু যেন বাচ্চা কাচ্চা গুলোকে সে সামলায়। আর এটা বলেই আমি উদাও।
কিন্তু উদাও হতে গেলেই কি উদাও হওয়া যায়?? আমি যেন পড়লাম অথই সাগরে। একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিলাম। কিন্তু সেটার পাশে চলছিল কন্সট্রাকশনের কাজ। আমাকে প্রথম দিনেই ভাগতে হয়েছে। আমি শব্দের মাঝে লিখতে পারিনা। লিখতে পারিনা কোন গোলমালের মাঝে। লেখার সময় নিঃশব্দ চাই- লেখার সময় চাই এক অন্য রকম পরিবেশ। তাই আমি প্রথম দিনের মাঝেই ভেগেছি। গিয়ে উঠলাম আমার এক বন্ধুর বাড়িতে। ছেলে মেয়ের চেচামেচি নেই সেখানে। বন্ধু থাকে একা। কিন্তু সেখানে ও আমার মন টিকল না। শেষে আমাকে বন্ধু রেগে গিয়ে বলল চলে যেতে কোন এক জংলে।কথাটা আমার খুব মনে ধরল। আমি খুঁজতে লাগলাম একটা জংগুলে পরিবেশ। তাতে ও আবার সমস্যা। আমি খুঁজে পেলাম না। আতঙ্কিত হলাম জেনে যে বাংলা দেশে আস্তে আস্তে বনজঙ্গল কমে যাচ্ছে। মানুষ গাছ কেটে ফেলছে। কিন্তু বান্দরবানের দিকে কিছু পাহাড়ি জংগুলে পরিবেশ আছে এখন ও। সেখানেই নাকি একটা কাঠের রেষ্ট হাউজ আছে- কিন্তু পরিত্যাক্ত। আগে মানুষ থাকত- এখন কেউ থাকেনা। আমি শুনেই চলে গেলাম সেখানে। আমার উদ্দেশ্য ছিল দিন সাতেক থাকতে পারলেই হবে। কিছু খাবার দাবার আর কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেলাম সেখানে। ঘটনার শুরু সেখানেই।
আমি সেই কাঠের রেষ্ট হাউজ টা দেখে অনেক পছন্দ করে ফেললাম। জায়গাটার চারপাশে নীলচে পাহাড় আর নিলচে পাতার বন। দূরে কিছু কিছু যায়গায় ঝরনা। মাঝে মাঝে ভেসে ভেসে আসে কলকল পানির শব্দ। কেমন যেন এক মায়াময় স্বর্গীয় পরিবেশ। আমাকে নিয়ে গেল যেন এক স্বপ্নের জগতে। আমি ঘরটার সব থেকে ছোট রুম টা বেছে নিয়ে পরিষ্কার করে ফেললাম। সেখানে একটা খাট ছিল - কাঠের চৌকি বলাই ভাল। আমি সেটাতে শুয়ে শুয়ে লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। মাঝে মাঝে আমি শুয়ে শুয়ে লিখি। শুয়ে শুয়ে লেখার মাঝে একটা আনন্দ আছে। অবশ্য বসে বসে লেখা উপন্যাস গুলোই আমার সবচাইতে সাড়া ফেলেছে বেশী। তার ভেতর একটা উপন্যাস থেকে নাটক ও হয়েছে। প্রায় সময় তাই এখন নাটক লেখার ফরমাইশ আসে। কিন্তু আমি পারিনা। আমি শুধু রহস্য গল্প লিখি।
সেই রুমে সন্ধ্যার মধ্যেই লেখার পরিবেশ তৈরি করে ফেললাম। কারেন্ট নেই সেখানে। তাই অনেক গুলো মোমবাতি জোগার করলাম। সাথে লাইটার- ম্যাচ- আরো অনেক কিছু। রান্না বান্না করে ফেললাম একটা স্টোভ নিয়ে এসেছিলাম- তাতে। তারপর লেখা শুরু করলাম।
আমার নতুন গল্পটার প্লট ছিল একটা মানুষ কে নিয়ে- যে ছিল একজন লেখক।ঠিক আমার মতই। আসলে লেখক তার লেখার মাঝে নিজের চরিত্রকে সব চাইতে বেশী ফুটিয়ে তুলতে পারে। তাই আমার নিজের চরিত্রকে নিয়েই লিখব ভেবেছিলাম। যেই ভাবা সেই কাজ। আমার গল্পের লেখক চরিত্র তার গল্প লেখার জন্য এসেছে বান্দর বানে। সেখানে সে লিখতে বসেছে। এগিয়ে যেতে শুরু করে আমার গল্প। গল্পে কৌশলে এই রেষ্ট হাউজ টাকে ও ঢুকিয়ে দিলাম। লেখকের কি যে ক্ষমতা সেটা লেখক ই জানে।
উপন্যাসের মোড় ঘুরছে। লেখক লিখে চলেছে একটা উপন্যাস। উপন্যাসে কিভাবে ভুতুরে ব্যাপার ঢুকানো যায় সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে লিখে চলেছি। হটাত মনে হল- যদি এই লেখকের একটা ডুব্লিকেট হটাত করে ভুতুরে ভাবে তৈরি করা যায়- তাহলে মন্দ হবে না। যেই ভাবা সেই কাজ। সাথে সাথে লেখার ভেতর লেখকের পাশে উপস্থিত করালাম লেখকের মত দেখতে আরেকজন মানুষ কে। ঠিক মানুষ না- মানুষের মত কেউ একজন। লেখকের মত বেশ ধারন করেছে। উদ্দেশ্য খারাপ না- লেখকের একাকীত্বে বিঘ্ন ঘটানোই এর কাজ। এ এসে লেখকের মনযোগ বিঘ্নিত করবে। এবং লেখকের লেখার বারোটা বাজাবে। ভাবতে ভাবতে লিখে চলেছি। লেখার মাঝে মাঝেই সিগারেট খাবার অভ্যেস আমার। মোমবাতির আলোয় লেখার মাঝে সিগারেটে টান- ফুসফুস ভর্তি নিকোটিন- এবং এগিয়ে চলেছে লিখে যাওয়া।
কিন্তু এমন সময় কেউ একজন যেন আমার পাশ থেকে বলে উঠল-
"এখন কি সিগারেট টা না ধরালেই নয়?"
আমি লিখতে লিখতেই হটাত করে যেন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। ঘরে আমি ছাড়া কেউ নেই। কেউ থাকার কথা ও না। কিন্তু কেউ একজন বিরক্ত হয়ে আমাকে সিগারেট খেতে না করল। আমি খানিকটা বিরক্ত ই হলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে রুমটা দেখে নিলাম- কেউ নেই। থাকার কথা ও নয়। মনের ভুল মনে করে আমি আবার সিগারেটে একটা সুখটান দিলাম। এবং সাথে সাথে আমার পেছন থেকেই কেউ একজন পুরুষ কন্ঠে আবার বলে উঠল-
"আপনাকে না সিগারেট না খেতে বলেছি?"
আমি সেই রকম ভয় পেয়ে গেলাম কথাটা শুনে। আমার পেছনেই কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু আমি জানি এই ঘরে কেউ নেই। একটু আগেও কাউকেই দেখিনি। আমি ভয়ে ভয়ে ঘাড় ঘুরালাম। যা দেখলাম তাতে আমার মাথা ঘুরে গেল। আমার পেছনে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার ই মত একজন। আমার মত পোষাকে। হটাত যেন হার্ট বিট বন্ধ হয়ে গেল আমার। ভয়ে হাত পা জড়বস্তুর মত হয়ে গেল।
মনে মনে বললাম- আমি যা দেখছি- সব হ্যালুসিনেশন- সব মিথ্যা। কথাটা পাঁচবার বলে আবার তাকালাম- ভেবেছিলাম- দেখবনা নিজের চেহারার সেই মানুষ্টাকে- কিন্ত্ মানূষ্টা দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে আমার পেছনে। আস্তে আস্তে হেটে হেটে এসে আমার বিছানায় বসল। আমার ঠিক পাশেই। আমি লিখতে লিখতে শোয়া থেকে কখন যে উঠে বসেছি- খেয়াল ছিলনা। আমি সেই বসা থেকেই যেন পড়ে যাব খাটের উপর- এমন মনে হল। ঘাড় ব্যাথা শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। আমি সব আনলে ও প্রেশারের ঔষধ আনতে ভুলে গেছি। আমি তো জানতাম না আমার লেখার ভেতর থেকে একটা চরিত্র সামনে এসে দাঁড়াবে। জানলে আমি এখানেই আসতাম না।
" কি ভয় পেলে??" কেমন যেন ভয়ানক গলায় বলল সে।
আমি আসলেই অনেক ভয় পেয়ে গেছি। জীবনে কোনদিন ভুত দেখিনি। এই প্রথম। তা ও যদি সিনেমা টীভিতে দেখা ভুত গুলোর মত হত। এই ভুত অনেকটা - না না ঠিক আমার মত দেখতে।
" ভয় পাবো না তো কি নাচবো??" রেগে গেলাম আমি।
" না না রাগবেন না। আমাকে দেখে ভয় পাবার কিছু ই নেই। আমি আপনার লেখার ঐ ভুত চরিত্রটা। আপনাকে ভড়কে দেব বলে আপনার মাথা থেকে বের হয়েছি"- বলেই পেত্নি মার্কা একটা খিল খিল হাসি দিল সে।
এদিকে আমার মাথার ভেতর চিন্তার ঝর। এখন কি হবে? একে কি আমার মত ই দেখা যাবে? তার মানে আমি এখন দুই জন? ভাবতে ভাবতেই সে বলে উঠল-
"হ্যাঁ আপনি এখন একা নন- আপনার কোন ভয় ও নেই- আপনি এখন দুই সত্ত্বা। এখন আমি ও আপনি- আপনি ও আমি। হে হে হে ' সে কি বাজখাই হাসি। এভাবেই আমি হাসি ভাবতেই রাগ ঊঠে গেল। এই হাসি ৯ বছর ধরে সোমা সহ্য করেছে কি করে? কিন্তু সেই উত্তর দিল-
" কারন সোমা আপনাকে অনেক ভালবাসে। আপনার মেয়ে ও অনেক অনেক ভালবাসে।" বলে কেমন যেন চোখে তাকাল ও আমার দিকে। হায় হায় কি হবে এখন- ও যে আমার সব কথা চিন্তা করার আগেই বুঝতে পারছে। তার মানে আমি আর সে একজন। কিন্তু দুইটা শরীর। ভাবতে ভাবতে সে আমার দিকে একটা হাত বাড়িয়ে দিল। আমি কি মনে করে ছুঁতে গিয়ে একটা শক খেলাম যেন। ওর শরীর ভয়ানক গরম। যেন জ্বর ১০৬ ডিগ্রি। আমি ওকে বললাম-
" তোমার শরীর এত গরম কেন?"
" কারন তোমার শরীর এখন অনেক ঠান্ডা" বলে হাসি হাসি মুখে তাকাল আমার দিকে। আমি নিজের শরীরে হাত দিলাম। গলায়- ঘাড়ে হাত দিয়েই বুঝলাম আমার শরীর অনেক ঠান্ডা- অনেক। যেন মরে গেছি আমি।
ভয় পেয়ে গেলাম আরো। আমি কি মারা গেছি? নাকি আমি মারা যাচ্ছি? আমার নিজের মত একজন আমার শরীরের তাপ শুষে যাচ্ছে- আমি কিছু করতে পারছিনা। কি এক আজব। আমি লেখা ফেলে উঠে দাড়ালাম- হটাত এক বিশ্রী গালি দিয়ে বললাম-
" তুই এখন বের হ- এখনি বের হ। আমি তোকে দেখতে চাইনা। তোর কোন অস্তিত্ব নেই। "
কথা শুনে সে হাস্তেই থাকল- হাস্তেই থাকল। আমি ও নিরুপায় হয়ে আলো নিভিয়ে দিলাম। খাতা পত্র মাটিতে ছুড়ে ফেলে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু কি ঘুমাব? এই আমার কপি পেষ্ট লোকটা আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি- আমি ই আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছি। কেমন যেন পাগল পাগল ভাব হয়ে গেল আমার।
পরদিন সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গল অনেক বেলা করে। ঘুম থেকে উঠে আমি কাঊকেই দেখলাম না আমার সামনে। নিশ্চিন্ত হলাম। কিন্তু এই রেষ্ট হাঊজে আর থাকবোনা ডিসিশনন নিয়েই চলে আসলাম ঢাকায়- আমার নিজের বাসায়।
কিন্তু সেখানে আমার জন্য চুড়ান্ত বিস্ময় অপেক্ষা করছিল। আমি আসার পরেই দেখলাম আমার ঘরে এসে সেই কপি পেষ্ট মানূষ টা বসে আছে। কেউ দেখছেনা। শুধু আমি দেখছি। আমার ই মত একজন আমার রুমে বসে আছে।
সেই দিন থেকে আমার দিনগুলো বিষাক্ত হতে শুরু করেছে। আমি যেখানে যাই- সেই লোকটা আমার পিছে পিছে যায়। কয়েক হাত দূরে থাকে। একবার রিক্সায় করে বাসায় যেতে আমাকে ছিনতাই কারী ধরল। আমি ভেবেছিলাম সব গেছে। কিন্ত্ কেন যেন হটাত ছিনতাই কারী নিজেই ভয় পেয়ে গেল। ভয়েই কিছু না নিয়ে পালাল। আমি ভাবলাম কি সমস্যা? হটাত রিক্সায় দেখলাম আমার পাশেই আমার মত সেই লোক বসে আছে। সেদিন অনেক মজা পেলাম। কিন্তু সমস্যা হল- আমি সোমাকে নিয়ে একটু ও একাকী থাকতে পারিনা। আমার সামনে বসে থাকে সে। প্রথম প্রথম অস্বস্তি লাগত। এখন লাগেনা। এইত- আমার পেছনে এখন ও বসে আছে সে। আমার ই মত দেখতে। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন??
না দেখবেন কিভাবে? আপনি তো আমার লেখা গল্প পড়ছেন। কিন্তু সে আমাকে কথায় কথায় বলেছে- সে নাকি যে কারো মাথায় প্রবেশ করতে পারে। তাই ভাবছি- ওকে আপনার হেপাজতে দিয়ে দেব। কি নিবেন নাকি ? আপনার মত একজন? ঠিক আপনার মত। সব কিছু একই থাকবে। সে হবে আপনার একান্ত সঙ্গী। পরম বন্ধু। যদি চান তবে এই গল্প টা আবার পড়েন। তাহলেই মজা টের পাবেন ...........
(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:২৭