প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নোবেল পুরস্কার দেয়ার জন্য নরওয়ের নোবেল কমিটি বরাবর দেশের আমজনতার পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে।
গতকাল ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের শুক্রবারের ম্যাগাজিন ‘দ্য স্টার’-এর ১১ পৃষ্ঠায় আর্জি আকারে প্রকাশিত আবেদনে দেশবাসীর পক্ষে জনৈক আনতাকি রাইসা নরওয়ের নোবেল কমিটিকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণ, আওয়ামী লীগের আইনপ্রণেতা এবং সংসদ সদস্যদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য কারণে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করার বিনীত আবেদন জানাচ্ছি। বেশির ভাগ এমপিই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটাতে ব্যর্থ হলেও গত দুই বছর ধরে তারা প্রশংসা এবং তোষামোদির মাধ্যমে তাকে (প্রধানমন্ত্রী) খুশি করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে থাকায় সংসদের সামপ্রতিক এক অধিবেশনে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। ওই অধিবেশনে এমপিরা দেশে-বিদেশে তার শান্তি উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন দীর্ঘ ৯০ মিনিট। তাদের আশা পূরণের লক্ষ্যে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছেও প্রার্থনা করেছেন। আপনি জানেন, আমাদের মতো সাধারণ জনগণকে এসব এমপির দয়াতেই বেঁচে থাকতে হয়। তাদের আনন্দই আমাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। দলের ক্ষমতায় আসার দুই বছর পেরিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই মন্ত্রী এবং এমপিদের তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখানোর ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তাই এমপিরা এবার প্রধানমন্ত্রীকে তুষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তবে এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসরণ করছেন না। বেছে নিয়েছেন সেই চিরায়ত তৈল মর্দনের কাজ। আমরা আশা করি, আপনি তাদের সদিচ্ছার তীব্রতা অনুধাবন করতে পারছেন। লক্ষ্য করুন, সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীদের দেশ ও জনতার অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করার কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করা তাদের কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল যেন তিনি আগামী নোবেল পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকে নোবেল পুরস্কার দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেই তারা সংসদের ৯০ মিনিট এবং সরকারে ৪৫,০০,০০০ টাকা ব্যয় করেছেন (সামপ্রতিক জরিপের তথ্যানুযায়ী দেখা যাচ্ছে সংসদের অধিবেশন চালাতে প্রতি মিনিটে খরচ হয় ৫০,০০০ টাকা)।
আমাদের এমপিরা আসলেই হতভাগা। তাদেরকে সব সময়ই শুল্কবিহীন গাড়ি আমদানি, করদাতাদের অর্থে বিলাসবহুল জীবন-যাপনের জন্য সমালোচনা করা হয়। কিন্তু বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় তাদেরকে মার খেতে হয়, নির্যাতন সইতে হয় এবং ক্ষমতাসীন দলের হুমকিও সহ্য করতে হয়। আর ক্ষমতায় গেলে তাদেরকে মিডিয়া এবং জনতার সমালোচনা সইতে হয়। তাদের দুঃখ-কষ্ট উপেক্ষা করাটা হৃদয়হীনের কাজ হবে। আর তাদের ছোট্ট স্বপ্ন পূরণ হবে। তাদের কাছে পক্ষান্তরে আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। তাদের বেশির ভাগ সাধ পূরণ হলেও তারা এখনও পার্বত্য এলাকাতে শান্তি আনতে পারেননি। এমনকি তাদের অবস্থান অনুযায়ী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এবং উপযুক্ত সম্মান দেয়ার পরেও তারা আমাদের মতো সাধারণ জনগণকে মৌলিক নাগরিক সেবা স্বল্প মূল্যের স্বাস্থ্যসেবাও নিশ্চিত করতে পারেননি। তাই অনুগ্রহ করে বোঝার চেষ্টা করুন, তাদের প্রার্থনা যদি না শোনা হয় এবং তাদের সাধ যদি পূরণ না করা হয় তাহলে এর পরিণাম কি হতে পারে। আমরা, এই সাধারণ জনগণকেই এর চরম মূল্য দিতে হবে। এখানে উল্লিখিত সব কিছু বিবেচনা করে আমরা আপনার কাছে বিনীত আবেদনের মাধ্যমে আশা করছি, শেখ হাসিনাকে নোবেল পুরস্কার দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার আমাদের আবেদন বিবেচনা করবেন। আপনার সদয় অনুগ্রহে বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞ থাকবে। বিনীত বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আনতাকি রাইসা।