সত্য ঘটনা অবলম্বনে যে সিনেমাগুলো হয়, তার কিছু অনন্য বৈশিষ্ট আছে । গল্প শক্তিশালী, অভিনয় দূর্দান্ত, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাউন্ডট্র্যাক এবং লোকেশন আশ্চর্য সুন্দর এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, বাস্তব জীবনেই যে কত সিনেম্যাটিক, নাটকীয় ঘটনা ঘটে তার একটা অভিজ্ঞতা পাওয়া যায় । এই লিস্টে সেই ধরনের ‘Based on a true story’ থাকবে যেগুলো একটু কম প্রচলিত ।
শুরু করি ।
১। Soul Surfer :
বেথেনি হ্যামিল্টন এর জন্ম হাওয়াই দ্বীপের এক ডাই-হার্ড সার্ফার দম্পতির ঘরে। সুতরাং তার রক্তে লোনা জল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। অন্যান্যদের বাড়ি ইট-কাঠ-কনক্রিটের হলেও বেথেনির জন্য বিশাল সমুদ্রটাই ছিল তার বাড়ি। সার্ফিং হচ্ছে তার জীবন। এবং একজন প্রফেশনাল সার্ফার হওয়া হচ্ছে তার লক্ষ্য। এরকম একটা মেয়ে মাত্র ১৩ বছর বয়সে সার্ফিং করতে গিয়ে হাঙরের কামড়ে বাম হাত হারালে কী নেমে আসে তার জীবনে?
অতি চমৎকার একটি অনুপ্রেরণামূলক সিনেমা। প্লট সার্ফিং হওয়ার কারনে অসাধারন সুন্দর সুন্দর সব দৃশ্য আছে। হাওয়াই এর সমুদ্র, নীল পানি, বিশাল ঢেউ-এ সার্ফিং, অবিশ্বাস্য সব সার্ফিং – সব মিলিয়ে দেখার মত একটি সিনেমা। তবে দেখলে একা দেখা উচিত।
২। October Sky :
হোমার হিকাম এক কয়লা খনির শ্রমিক/সুপারভাইজারের ছেলে। পড়াশোনায় মাঝারি। সে জানে যে বাবার মত সেও কয়লা খনিতেই কাজ করবে একদিন। কিন্তু সমস্ত হিসেব পালটে গেল যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৫৯ সালে মানব ইতিহাসের প্রথম কৃত্তিম উপগ্রহ ‘স্পুটনিক’ উৎক্ষেপণ করে। সেই উপগ্রহ হোমার দেখল পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে মাঠে দাঁড়িয়ে। মাথায় ঢুকল ভুত, রকেট পাঠাতে হবে আকাশে। প্রতাপশালী বাবা তার বিরুদ্ধে ছিল আগাগোড়াই। এর উপর বাবা খনির কাজে আহত হলে কলেজ বাদ দিয়ে খনিতে ঢুকতে হল। এত কিছু বাধার সম্মুখিন হয়েও হোমার কিন্তু রকেট পাঠিয়েই ছেড়েছিল। এমনকি সে নাসাতেও যোগ দিয়েছিল।
আরেকটি চমৎকার অনুপ্রেরণামূলক সিনেমা। সাউন্ডট্র্যাক খুব সুন্দর। এটাও একা দেখতে বলবো।
৩। Changeling :
১৯২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস। বিষাদ-জর্জরিত সিঙ্গেল মাদার ক্রিস্টিন কলিন্স তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে থাকে। হঠাত একদিন কাজ শেষে ঘরে ফিরে দেখে ছেলে ঘরে নেই। আসে-পাশে কোথাও খুঁজে না পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। বেশ কিছুদিন পর পুলিশ তাকে জানায়, ছেলেকে পাওয়া গিয়েছে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ উবে যায়, যখন পুলিশ স্টেশনে গিয়ে দেখে এটা তার ছেলে নয়। কাহিনী মোড় নেয় সম্পূর্ন ভিন্ন দিকে।
সিনেমার গল্প খুবই আশ্চর্য অন্যরকম। পরিচালক ক্লিন্ট ইস্টউড। যদিও সিনেমার শুরুতে দেখান হয় – A true story, কিন্তু IMDB-তে এটার ক্যাটাগোরি Drama / History / Mystery । ভাল লাগবে, যদি একা দেখেন।
৪। Finding Neverland :
পৃথিবী বিখ্যাত কিশোর-ক্লাসিক পিটার প্যান এর রচয়িতা হলেন জেমস ম্যাথিউ ব্যারি। আমরা শুনে থাকি গল্পকাররা চারপাশের উপাদান থেকেই তাদের সাহিত্য কর্মের অনুপ্রেরণা খুঁজে পান। এই সিনেমার গল্প হল কীভাবে জেমস ব্যারি তার বিখ্যাত পিটার প্যান এর অনুপ্রেরণা খুঁজে পেলেন এক পরিবার থেকে, মা আর চার ছেলে; বাবা নেই। সেজো ছেলে পিটার ডেভিস, যে অন্য ভাইদের থেকে আলাদা। যেন অন্য জগতে হারিয়ে থাকে সব সময়। এই পিটার ডেভিস হয়ে ওঠে জেমস ব্যারির পিটার প্যান, যে চায় না বড় হতে।
গল্পটা একটু ধীর গতির হলেও, এক বসাতে দেখে ফেলা যায়। অন্য রকম সিনেমা।
৫। Remember the Titans :
সত্তর এর দশকের ভার্জিনিয়ার এক মফস্বল কলেজ। মাত্র কিছুদিন আগে কাল-সাদা এক হওয়ার ফেডারেল ম্যান্ডেট পাস হয়েছে। কলেজের বাস্কেটবল টিমে প্রথম বারের মত কাল-সাদা এক হয়েছে, সরকারি আদেশ তো ! এই অবস্থায় টিমের হেড কোচ হয়ে আসে এক কালা আদমি, হারম্যান বুন। অথচ কলেজের সফল সাদা কোচ যদিও ছিল, সরকারি আদেশ বলে কথা ! মূলত কাল-সাদা দ্বন্দ্ব, কালদের হীনমন্যতা, সাদাদের উন্নাসিকতা এসব বেশ ভাল ভাবেই উঠে এসেছে । শেষ পর্যন্ত টিমের একতা বজায় থাকে, সেটা কোচিং প্যানেল আর টিম মেম্বার – এই দুই পক্ষের সহনশীলতায়। টিম জাতীয় পর্যায়ে কাপ জিতে নেয়।
ভালই লেগেছে। ভুলও হতে পারে, তবে ধারনা করছি শাহরুখের চাকদে ইন্ডিয়া এই সিনেমা থেকে ‘অনুপ্রাণিত’। গল্পে অনেক মিল কি না !
৬। A Beautiful Mind :
গণিত জিনিয়াস জন ন্যাশ এর গল্প। একজন নোবেল জয়ীর গল্প। কিভাবে দীর্ঘ দিবস-দীর্ঘ রজনী স্কিজোফ্রেনিয়া নামক ব্যাধির সাথে লড়াই করতে হয়েছে তার গল্প। কাল্পনিক চরিত্রের আরোপিত কাল্পনিক ভয়, আতঙ্ককে জয় করার গল্প। বেশি লিখলাম না, দেখার আগ্রহ থাকুক।
জন ন্যাশের স্ত্রী অ্যালিসিয়া এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। দেখার মত সিনেমা।
৭। Erin Brockovich :
এরিন নামের এক সিঙ্গেল মাদার, তিন বাচ্চা তার। চাকরি নেই, শিক্ষাগত যোগ্যতাও তথৈবচ। চাকরির জন্য তার মরিয়াপনায় এক মাঝারি ল ফার্মে চাকরি পায়। আইনের উপর ডিগ্রি না থাকলেও খুবই পরিশ্রম করতে থাকে । পরিশ্রম আর নিষ্ঠার মাধ্যমে এরিন প্রায় একাই, এক হাতে ক্যালিফোর্নিয়ার এক জায়ান্ট পাওয়ার কোম্পানির পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত লুকিয়ে ফেলা প্রমান খুঁজে বের করে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশাল এক ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সক্ষম হয়। প্রথম দিকে তার বস রাজি ছিল না, কারন কোম্পানির সম্পদের পরিমান ২৮ বিলিয়ন ডলার। ক্ষতিপূরণ আদায় হয় ৩৩৩ মিলিয়ন ডলার, যা আমেরিকার আইনি ইতিহাসে সরাসরি মামলার মাধ্যমে অর্জন করা সর্বকালের সর্বোচ্চ।
বেশ মজার মুভি। এরিনের চরিত্রটা খুবই মজার। মানুষ যে কতটা ডেসপারেট হয়…
৮। Invictus :
নেলসন ম্যান্ডেলার প্রথম টার্মের প্রেসিডেন্সির সময়ের কথা। ম্যান্ডেলা জানেন যে তিনি নির্বাচিত হলেও দেশ অর্থনৈতিক এবং জাতিগতভাবে বর্ণবাদের বিষে বিভক্ত হয়ে আছে। এই অবস্থায় দেশের মানুষকে একতাবদ্ধ করার জন্য তিনি একটি সাহসি পদক্ষেপ নেন। রাগবি বিশ্বকাপের জন্য তিনি কাল-সাদা মিলিয়ে দল করান এবং অধিনায়ক করেন এক শ্বেতাঙ্গকে। সাউথ আফ্রিকার জনপ্রিয় খেলা রাগবির জন্য সবে অধিকার পাওয়া কালরা জাতীয় দলে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে ভাবলেও এর মাধ্যমে ম্যান্ডেলা সাদাদের সমর্থনও আদায় করেন। দলের এবং দেশের মানুষের কাল-সাদা সমর্থনে সাউথ আফ্রিকা রাগবি বিশ্বকাপ জিতে নেয়।
ক্লিন্ট ইস্টউডের সিনেমা। ম্যান্ডেলার চরিত্রে মরগান ফ্রিম্যান সুন্দর মানিয়েছেন।
৯। The Aviator :
কিংবদন্তী বিমান চালক হাওয়ার্ড হিউজ এর জীবনী অবলম্বনে সিনেমা। ১৯২০ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত তিনি আমেরিকার অ্যাভিয়েশন শিল্পে একের পর এক ইতিহাস তৈরী করে গিয়েছেন। কিছুদিন মানসিক সমস্যাতেও ভুগেছিলেন। আভা গার্ডনার এবং ক্যাথরিন হেপবার্ন এর মত স্টারদের সাথে রোমান্স চালিয়ে গেছেন। বেশ উত্থান-পতনওয়ালা জীবন।
হাওয়ার্ড হিউজ চরিত্রে লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিও, সুন্দর সিনেমা।
১০। Downfall :
বার্লিনে হিটলারের শেষ দিনগুলিতে সেক্রেটারি ছিলেন Traudl Junge। হিটলারের সেক্রেটারি হিসেবে তার অভিজ্ঞতাই এই সিনেমার গল্প। খুব পছন্দের একটা সিনেমা। হিটলারের ভূমিকায় Bruno Ganz-এর অভিনয় একেবারে দূর্দান্ত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকের একটি সিনেমা।
১১। Public Enemies :
কুখ্যাত ব্যাঙ্ক ডাকাত জন ডিলিঞ্জারের জীবনের শেষ দিন গুলো নিয়ে এই সিনেমা। ১৯৩০ এর দশকের অপরাধ-জর্জরিত শিকাগো শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ডিলিঞ্জার। তবে FBI-ও বসে থাকার জিনিস নয়। তারা ডিলিঞ্জারের পেছনে লাগায় মেলভিস পারভিস-কে। শুরু হয় এক বাস্তবের ক্যাটস অ্যান্ড ডগস, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ধরা পড়া, জেল থেকে পালানো। শেষ পর্যন্ত ডিলিঞ্জার FBI-এর গুলিতেই মারা যায়।
আজব সিনেমা। এমন ভাবে বানানো, শেষ পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ডাকাত ডিলিঞ্জারের মৃত্যুতে দর্শকের খারাপ লাগতে বাধ্য। FBI-কে মনে হবে ভিলেন।
১২। Into the Wild :
এই লিস্টের সবচেয়ে অসাধারণ সিনেমা। ফার্স্ট বয় হিসেবে ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে ক্রিস্টোফার ম্যাকেনডেলস তার সব সম্পদ ছেড়ে দিয়ে, ২৪,০০০ ডলারের সঞ্চয় দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করে অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। তার গন্তব্যস্থল হল জন-মানবহীন আলাস্কা। কেন সে বাবা, মা, বোনকে ছেড়ে চলে যায় ? পথে কত রকম মানুষের সাথে তার দেখা হয় ! তাদের মাধ্যমে জীবনের অন্য অর্থ খুঁজে পায় ক্রিস্টোফার। এই পথের মানুষগুলোর ভালবাসাও তাকে আলাস্কার যাত্রা থেকে ফেরাতে পারে না। অবশেষে আলাস্কা পৌঁছে যায় ক্রিস্টোফার। কি হয় তারপর ? আলাস্কার নির্জনতায় জীবনের কী মানে সে বুঝতে চায় ?
সম্পূর্ণ নিজের জন্য এই সিনেমা, অবশ্যই একা দেখতে হবে। আশ্চর্য মন খারাপ করে দেয়।
১৩। Fair Game :
ইরাক আক্রমনের প্রস্তুতি চলছে, চলছে অজুহাত খোঁজার পালা। ভ্যালেরি প্লাম CIA এজেন্ট। তার হাজব্যান্ড জোসেফ উইলসন একজন পেশাদার কূটনীতিক, বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছে। CIA এবং ভ্যালেরির অনুরোধে জোসেফ নাইজার-এর কাছ থেকে ইরাকের এক সাম্প্রতিক ক্রয় সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে কাজ করে। রিপোর্ট জমা দেয়, রিপোর্ট পরিস্কার। গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র বা অস্ত্রের কোন উপকরণের কেনা-বেচা হয়নি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বুশ এই রিপোর্টকে সাজিয়ে দেশ এবং বিশ্বের কাছে এই বলে উপস্থাপন করে যে, তাদের কাছে ‘তথ্য’ আছে, ইরাক গণ-বিধ্বংসী অস্ত্র বানাচ্ছে। জোসেফ একটা কড়া করে বিস্তারিত প্রতিবেদন লেখে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায়, যে তার রিপোর্টে কোন অস্ত্রের কথাই ছিল না, বুশ মিথ্যাবাদী। জোসেফের এই আচরনের শাস্তি হিসেবে হোয়াইট হাউজের-ই এক কর্মকর্তা ফাঁস করে দেয় যে ভ্যালেরি CIA এজেন্ট। ভ্যালেরির চাকরি যায়, তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, মিডিয়া পিছনে লাগে। এক কথায় জীবন অতিষ্ঠ। ঘটতে থাকে ঘটনার ঘনঘটা।
অবিশ্বাস্য, কিন্তু সম্পূর্ন সত্যি ঘটনা। দারুন সিনেমা।
১৪। Braveheart :
উইলিয়াম ওয়ালেস স্কটল্যান্ডের এক বিদ্রোহী, নিষ্ঠুর ইংরেজ শাসক এডওয়ার্ড দা লংশ্যাঙ্কস এর স্কটল্যান্ডের সিংহাসন দখলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতা। ছোট থাকতেই ওয়ালেসের বাবা এবং ভাই, আরও অনেকের সাথে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য প্রান দেয়। এডওয়ার্ড দা লংশ্যাঙ্কস-এর 'Prima Nocta' আইনের কারনে ওয়ালেসের গোপনে বিয়ে করা স্ত্রী এক ইংরেজ সেনার ধর্ষন থকে বাঁচতে তাকে হত্যা করে। এক পর্যায়ে ওয়ালেস তার স্ত্রীকে হারানোর পর, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য এক দীর্ঘ লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেয়। এই মুক্তিযুদ্ধে তার সাথে থাকে ইতিহাস বিখ্যাত রবার্ট ব্রুস। স্কটিশরা যদিও স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত, কিন্তু নেতৃত্বের অভাবে তারা পাল্টা আঘাত করতে পারছিল না। ওয়ালেসের নেতৃত্বে তারা শুধু প্রতিরক্ষা নয়, পাল্টা আক্রমনের মাধ্যমে ইংরেজদের হটিয়ে দিতে থাকে। ওয়ালেস স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য প্রান দেয়। অনেক মধ্যযুগীয় অত্যাচার করেও তার মুখ থেকে ইংল্যান্ডের আনুগত্য-শপথ বের হয় নি। এভাবেই ওয়ালেস হয়ে ওঠে এক কিংবদন্তি।
খুব ভাল সিনেমা। স্কটল্যান্ড আর আয়ারল্যান্ড কিন্তু এখনও ইংরেজদের দেখতে পারে না।
১৫। Catch Me If You Can :
ফ্রাঙ্ক অ্যাবাগনেল, তার ১৯-তম জন্মদিনের আগেই সফলভাবে প্রতারনার মাধ্যমে আড়াই মিলিয়ন ডলারের-ও বেশি টাকা হাতিয়ে নেয় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে। এই কাজে সে কমার্শিয়াল প্লেনের পাইলট, ডাক্তার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের পরিচয় ব্যবহার করে। FBI তার পিছনে লাগে, কিন্তু প্রতি বারই ফ্রাঙ্কের কৌশলের কাছে হেরে যায়। এক পর্যায়ে FBI তার খোঁজ পায় এবং তাকে FBI-তে যোগ দিতে বলে। সে সফলভাবে বেশ কিছু অর্থ আত্মসাৎ এর কেস সমাধান করে।
কোথায় লাগে বানানো গল্পের সিনেমা !
১৬। The Devil's Double :
ধনীদের বাগদাদ, কুখ্যাতদের বাগদাদ। সাদ্দাম হোসেনের বড় ছেলে উদয় হোসেনের বাগদাদ। উদয় হোসেনের বিকৃত কামলালসা পূরণের বাগদাদ। এমন পরিস্থিতে আর্মি লেফটেন্যান্ট লতিফ ইয়াহিয়াকে সাদ্দামের প্রাসাদে ডেকে আনা হয়। লতিফকে দেয়া হয় এক অসম্ভব প্রস্তাব, উদয় হোসেনের বডি ডাবল হতে হবে। নয়তো তার বাবা,মা,বোন এদের পরিণতি হবে মারাত্মক। এমনই এক জগতে লতিফ প্রবেশ করতে যাচ্ছে যা বিশ্বাসঘাতকতা আর দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত। কাকে বিশ্বাস করা যায়-তার উপরেই নির্ভর করে আছে জীবন অথবা মৃত্যু। এত কিছু জেনেও, বুঝেও লতিফ সব সময় চেয়েছিল এই জগত থেকে পালাতে। পেরেছিল কী ?
বিশ্বাস না হওয়ার মত সিনেমা।
১৭। The Odessa File :
এক বৃদ্ধ ইহুদির আত্মহত্যার পর ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক পিটার মিলার তার ডায়রি খুঁজে পায়। ডায়রি থেকে মিলার জানতে পারে এই ইহুদি এমন একজন SS অফিসারকে সম্প্রতি বার্লিনে দেখেছে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এক কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের কমান্ডার ছিল। মিলার দ্রুতই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত নাৎসি বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের গোপন সংগঠন ওডেসা নেটওয়ার্ক এবং ইজরাইলি সিক্রেট সার্ভিসের সাথে জড়িয়ে যায়। মিলার ঘটনার আরও গভীরে যায় এবং ওই SS অফিসার, অডেসা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার নিহত বাবার মধ্যে এক যোগসূত্র খুঁজে পায়।
ফ্রেডেরিক ফোরসাইথের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমা। উপন্যাসটা পড়েছি। সেখানে ফোরসাইথ লিখেছেন যে তার এই বই-এর প্লট কাল্পনিক হতে পারে, কিন্তু উল্লেখিত সমস্ত সংগঠন, চরিত্র, তথ্য বাস্তব। এই কারনে এই সিনেমা Biography ক্যাটাগোরিতে পড়েছে।
১৮। The Whistleblower :
ক্যাথরিন বল্কোভাক নেব্রাস্কার এক পুলিশ । শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে যুদ্ধ-বিদ্ধস্ত বসনিয়াতে যায়। ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশটার পুনর্গঠনে অংশ নেয়াই ছিল তার উদ্দেশ্য। তার এই ইচ্ছা একটা বিরাট ধাক্কা খায় দূর্নীতি, চক্রান্ত আর ষড়যন্ত্রের এক বিপদজনক জগত উন্মোচন করে। নারী পাচারকারী এক চক্রের সন্ধান পায় যারা ছিল কূটনীতিক জগতের মানুষ। ক্যাথরিন বুঝে পায় না কাকে বিশ্বাস করবে , কার কাছে যাবে…
১৯। The Desert Fox: The Story of Rommel :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সর্বজন শ্রদ্ধেয় জার্মান ফিল্ড মার্শাল রোমেলের ক্যারিয়ার এবং জীবনের গল্প। আফ্রিকা কোর থেকে শুরু করে হিটলার হত্যাচেষ্টাতে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া, অতঃপর আত্মহত্যা - সবই আছে ।
২০। Schindler's List :
অস্কার শিন্ডলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার এক উদ্ধত এবং লোভী জার্মান ব্যবসায়ী। নাৎসি বর্বরতার মধ্যে হঠাৎ করেই হয়ে ওঠে এক মানবতাবাদী। কুখ্যাত অউশউইটজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের ১১০০ ইহুদিকে নিজের কারখানায় কাজ দেবার মাধ্যমে তাদের জীবন বাঁচায়।
দর্শকের সচেতনতা কাম্য। এই সিনেমা দেখার সময় ইহুদিদের প্রতি সমবেদনা তৈরী হবে।
* সবগুলো সিনেমাই টরেন্টে সহজলভ্য, এজন্য লিঙ্ক দেওয়া হল না।
** এটি রিভিউ ধরনের পোস্ট নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৬