সচেতনভাবে কবে থেকে বই পড়া শুরু করেছি মনে করতে পারছিনা। এতটুকু মনে পড়ে ছোটবেলায় প্রাণের কমিকস আর টিনটিন পড়ার জন্য সবসময় মুখিয়ে থাকতাম। কত বয়স হবে তখন? মনে হয় ক্লাস ৫/৬ এ পড়তাম। তখন থেকেই টেক্সট বই এর বাইরের অন্য কোন বইয়ের প্রতি যে টান অনুভব করতাম মনে হয়না এখনও তার চাইতে কিছু কম অনুভব করি।
মাসিক নতুন ঢাকা ডাইজেস্ট এর কথা মনে পড়ছে। আমার বাবার সংগ্রহে এই পত্রিকার বিশাল এক সংগ্রহ ছিল। আমার জন্মের আগের কপিও একটা সময় আমার পড়া হয়েছে। স্কুলের বইয়ের বাইরের যে কোন বই্ আমার কাছে সবসময় আনন্দদায়ক। হাতের কাছে কোন কিছু পড়ার মত না পেয়ে ঢাকা ডাইজেস্ট এর একটা কপি উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখছিলাম। দু’পাতা কার্টুন ছাপতো ওরা। ওটা সবসময় আগে পড়তাম। ’উত্তরদা বলে একটা বিভাগ ছিলো। বিভাগগটা অনেকটাই আলপিনের আমার ইয়ে সব জানে’র মতো তবে ওটা মনে হয় আরও হিউমারাস ছিলো। মনে পড়ে ও বয়সেই অনেক মজা পেতাম।
আরেকটু বড় হওয়ার পর খেয়াল করলাম ওরা প্রতিমাসে একটা সায়েন্স ফিকশনও ছাপায়। সায়েন্স ফিকশন যে কী মজার জিনিস তা এই নতুন ঢাকা ডাইজেস্ট পড়েই জেনেছি। একট গল্পের কথা মনে পড়ছে,”এক নতুন লেখক,সে বহু খাটা খাটনি করে একটা সৃষ্টিশীল কোন কিছু দাড় করাচ্ছে, কিন্তু' প্রতিবারই দেখা যাচ্ছে তারঐ লেখা বহু আগেই কোন এক বিখ্যাত লেখক লিখে ফেলেছেন এবং তার প্রতিটা লেখার ক্ষেত্রেই এমনটা হচ্ছে। সে এক বিচ্ছিরি অবস্থা!
সায়েন্স ফিকশনের পাশাপাশি নিয়মিত রহস্য গল্প, অনুবাদ গল্প, বিচিত্র তথ্য, সত্য ঘটনা, লোমহর্ষক ঘটনা ইত্যাদি নিয়মিত ছাপতো। অনেকটা রহস্য পত্রিকার মত ব্যাপার স্যাপার। তবে রাজনৈতিক কলামও ওখানে দেখেছিলাম। কিছুদিন আগে জানতে পারলাম সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মন্জ্ঞু ঢাকা ডাইজেস্টের সম্পাদক ছিলেন। একটা সময় নতুন ঢাকা ডাইজেস্ট এর রাজনৈতিক কলাম গুলো বাদ দিয়ে সবই পড়েছি। এখন যদি ওই পুরোনো কপি গুলো হাতে পাই তবে ওগুলোও পড়বো। কাগজে ভর করে অতীতের দিকে টাইম ট্রাভেল করা সবসময়ই আনন্দদায়ক।