পরিবর্তন
নিচু তলার উকিল
-মাছ কিনছেন উল্টে পালটে টিপে টিপে দেখছেন তাই নয় কী?
-জ্বী।
-পার্কে বসে বাদাম কিনছেন,কেনার আগে একটা নিয়ে টিপেটুপে খুলে ফিগার দেখে শুনে খেয়ে টেস্ট অবধি পরীক্ষা করে নিয়েছেন।
-জ্বী।
-শপিং করতে গ্যাছেন,এটা না ওটা ওটা না সেটা একদম কাপড়ের ইজ্জতের ভাঁজ খুলে খুলে দেখছেন।
-জ্বী কথা সত্য।
-চাল কিনতে গ্যাছেন,চাল হাতে নিয়ে কচলে কচলে দেখছেন।
-জ্বী।
-জাইঙ্গা কিনতে গ্যাছেন,,জাইঙ্গার রাবার ধরে টেনেটুনে দেখছেন।
-জ্বী
-সব কিছুতেই যদি জ্বী উত্তর হয় মাতব্বর সাহেব তাহলে পঁচা আর মুন্নীর দোষটা কোথায়?
উকিলবাবুর প্রশ্ন শুনে মাতব্বর গরীবুল্লাহ সাহেব থ মেরে রইলেন।
গরীবুল্লাহ সাহেব ঘামছেন প্রচুর ঘামছেন।কেউ একজন একটা টিস্যু এগিয়ে দিলে তা দিয়ে ঘাম গুলো মুছে স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করলেন।
বহুক্ষণ বাদে উপস্থিত জনতার অতি উৎসাহী দৃষ্টি পঁচা আর মুন্নীর উপর থেকে সরানো গেল।
উপস্থিত জনতার দৃষ্টি একবার উকিলবাবুর উপর আর একবার মাতব্বর সাহেবের উপর ঘুরাঘুরি করতে লাগলো।
মাতব্বর সাহেব কিছুক্ষণ বাদে বেশ কর্কশ গলায় বলে উঠলেন-
-কী নাকি বলতে চাও উকিলবাবু খোলাসা করে বল?
-জ্বী এটাই বলতে চাই পঁচা আর মুন্নী একে অপরকে ভালবাসে আর বিয়ের আগে তারা নিজেদের দৈহিক শক্তিমত্তার একটু না হয় পরখ করেই নিয়েছে তাতে কী এমনটা ক্ষতি হইছে? সমাজে সবাইতো উৎকৃষ্ট জিনিস পাবার জন্য পরীক্ষা নীরিক্ষা করেই নেয় এরাও তাই করেছে এতে দোষের কিছু দেখছিনা।
-এটার সাথে ওগুলোর যুক্তি চলে না বাবু।
-জ্বী এইতো এইবার লাইনে আসছেন।
-মানে?
-যুক্তি চলেনা তাহলে এই ভরা মজলিশে এই দুটো নাদান মেয়ে ছেলেদের এভাবে হেনস্তা করার মানে কী? এই যুক্তি আর অধিকার পাইছেন কই?
এভাবে এদের হেনস্তা না করে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেই তো পারতেন।
অতঃপর উকিলবাবু মজলিশ থেকে চলে গেলেন,যেতে যেতে উকিলবাবু বিড়বিড় করে কী যেন বলছে?
একটু অস্পষ্ট হলেও যতদূর শুনলাম তা হল ''এই সমাজটার পরিবর্তন আর হল না"!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৫