আশসালামুআলাইকুম
একজন অমুসলিম ভাই আমাকে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন আমি তার জবাব দেয়ার চেষ্টা করলাম
কতিপয় প্রশ্নের জবাবঃ
প্রশ্নঃ ইসলাম যদি জীবন যাপননের একমাত্র বিধান হয়েই থাকে তাহলে পৃথিবীর একটি দেশেও ইসলামী জীবন বিধান নেই কেন?
জ্ঞান/বিজ্ঞান/আবিস্কারে বলিয়ান অন্যধর্মের চীন, জাপান, ভারত, ব্রাজিল, আমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্স, জামার্নী, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, কানাডা’র …..প্যারালাল একটি মাত্র ইসলামিক রাষ্ট্র আছে কি।
আজকের সুইডেন, জাপান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, বৃটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানী, ভারত, ব্রাজিলের মত জবাবদিহি মুলক আদর্শ ওয়েলফেয়ার রাষ্ট্রের তালিকায় একটি মুসলিম দেশ আছে কি?? আছে, তবে জ্ঞান/বিজ্ঞান/প্রযুক্তি বিহিন রাজা/বাদশা/খলিফা/আমির/স্বৈরাচারের মধ্যপ্রাচ্য?
আজকের মানচিত্রে এত প্রতিকুলতা সত্বেও ভারতের যে অবস্হান, সে অবস্হানে একটি মুসলিম দেশ আছে কি??
উত্তর আপনি বলেছেন যে : ইসলাম যদি জীবন যাপননের একমাত্র বিধান হয়েই থাকে তালে পৃথিবীর একটি দেশেও ইসলামী জীবন বিধান নেই কেন?
হ্যাঁ ইসলাম যে জীবন যাপননের একমাত্র বিধান তা পবিত্র কোরআনেই বলা হয়েছে ‘একমাত্র দীন এক মাত্র জীবন যাপননের বিধান হল ইসলাম। পৃথিবীর কিছু দেশে ইসলামের আইন রয়েছে তারপরও ইসলামিক রাষ্ট্র যেভাবে থাকতে হবে সেভাবে নেই এর কারন হল মোসলমান আজ কোরআন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে আমরা কোরআন বুঝে পড়ছি না তাই এ অবস্থা ।
প্রত্যেক ধর্মে কিছু কুলাঙ্গার থাকে তাই আপনি যদি কোন ধর্ম সম্পর্কে কে জানতে চান তবে সেই ধর্মের গ্রন্থসমূহ পড়ুন সে ধর্মের লোক কে দেখবেননা। যেমন আপনি একটা গাড়ি কিনবেন তাই গাড়ির সম্পর্কে জানার জন্য একজন ড্রাইভার কে ড্রাইভ করতে দিলেন এবং সে গাড়ির এক্সিডেন্ট করলো এখন আপনি দোষ কাকে দেবেন গাড়িকে না ড্রাইভার কে? ঠিক ধর্ম সম্পর্কে কে জানতে চাইলে সেই ধর্মের গ্রন্থসমূহ দেখুন সে ধর্মের লোক কে দেখবেননা। ইসলাম ধর্ম জানার জন্য কোন মুসলিম কে দেখবেন না কোরআন পড়ুন আর যদি দেখতেও হয় তবে হযরত মুহাম্মদ (সা) কে দেখুন। অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রেও তাই।
আপনি বললেন জ্ঞান/বিজ্ঞান/আবিস্কারে বলিয়ান অন্যধর্মের চীন, জাপান, ভারত, ব্রাজিল, এমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্স, জামার্নী, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, কানাডা’র …..প্যারালাল একটি মাত্র ইসলামিক রাষ্ট্র আছে কি।
আপনি তাদের ধর্ম গ্রন্থ দেখুন তারা তা কতটা মানে। বাইবেল তাদের সুবিধা অনুযায়ী সবসময় পরিবর্তন করা হয়। আর হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ থেকে হিন্দুরা কত দূরে তা জানতে আমার পূর্বের পোস্ট দেখুন ‘’হিন্দু ধর্মগ্রন্থানুসারে ঈশ্বরের ধারনা, যা পবিত্র কুরআনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।‘’
আর পবিত্র কোরআনের মধ্যে প্রায় ১০০০ এর চেয়েও বেশি আয়াত রয়েছে যা বিজ্ঞানের কথা বলে। মানুষ এখন যা আবিষ্কার করেছে যার অনেক কিছুই কোরআনে ১৪০০ বছর আগে বলা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক মুসলিম বিজ্ঞানি ছিলেন যারা বিজ্ঞানে অনেক অবদান রেখে গেছেন। আরও জানতে হলে দেখুন Science and Islam – a BBC documentary ও Quran & Bible in the light of modern science by Dr Zakir Naik।
আপনি বললেন জ্ঞান/বিজ্ঞান/আবিস্কারে বলিয়ান অন্যধর্মের চীন, জাপান, ভারত, ব্রাজিল, এমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্স, জামার্নী, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, কানাডা’র হ্যাঁ কিন্তু এটা ঠিক এদের মধ্যে কোনটা ইসলামিক রাষ্ট্র নেই এর কারন হল মোসলমান আজ কোরআন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে যা আমি আগেই বলেছি।
আর মিডিয়াও একটি বিরাট কারন তারা সব সময় ইসলামের নিন্দা করছে। তারা সন্ত্রাস ও ইসলাম একসাথে যুক্ত করতেছে। মুসোলমান রা কতজন কে মেরেছে যে মিডিয়া ইসলামের উপর ওঠে পরে লেগেছে? হিটলার তো ৬০ লক্ষ ইহুদিকে মেরেছিল। আমেরিকা লক্ষ লক্ষ মুসলমান কে মেরেছে সন্ত্রাসের নামে আফগানিস্তানে, ইরাকে, ফিলিস্তিনে আজ পাকিস্তানে একটি বম্ব ব্লাস্ট হলে তা শিরোনামে আসে আর ভারতে মাওবাদিদের কারনে প্রতেকবছর কত মানুষ মরছে তার কেউ খবর রাখেনা। আজ মেক্সসিকতে মাদক পাচার কারনে কত রক্ত ঝরছে তা কেউ জানে না। কেন ভুলে গেলেন মেনায়েল বেগানের কথা তার চেয়ে বড় সন্ত্রাসি কে হতে পারে। কেন ভুলে গেলেন শ্রীলঙ্কার এলইইটি বাহিনির কথা।ভুলে গেলেন প্রথম বিশ্ব ও দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের কথা কোন মুসলিম দেশ ছিল সেখানে, সেখানে সেই দেশ ছিল যারা আজ নিজেদেরকে সভ্য দেশ বলে দাবি করে যেখানে সভ্যতার নামে নারিদেরকে পণ্য হিসেবে তুলে ধরা হয় কেন আজ পশ্চিমারা ইসলাম গ্রহন করছে? প্রত্যেক ধর্মে কিছু কুলাঙ্গার থাকে তাই বলে ধর্ম কে দোষ দেয়া যাই না। আমি কি বলব হিটলার এর কারনে সমগ্র খ্রিষ্টান জাতি হল সন্ত্রাসী।
প্রশ্ন: I exactly know what real Islam is. During the so called golden era of Kholafa-e-Rasheedin three of the four Khaliphas were brutally killed by their muslim opponents. Shahabis fought against Shahabis, Ali fought against Muhammed’s widow Aisha, Ali fought against Muhammed’s senior most Shahabi Amir Muabia. More over chaos, conspiracy, greediness, battle, secret killing, blood shade were all over. And finally every thing collapsed by the historic KARABALA TRAGEDY. That’s all about Islam. Thanks.
উত্তরঃ প্রত্যেক ধর্মে যুদ্ধের কথা আছে কেন আপনি মহাভারত সম্পর্কে জানেন না তার চেয়ে অধিক যুদ্ধের কথা কোন বইে আছে।
প্রশ্ন: আজকের পৃথিবীর জ্ঞান, বিজ্ঞান, আবিস্কারে বলিয়ান সভ্য মানুষ কি এতোই বোকা যে সবাই ইসলামের নাম শুনলে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আপনি কোরআনের চ্যলেঞ্জ এর কথা বলছেন! কিন্তু চীন, জাপান, ভারত, ইউরোপ বা আমেরিকান বিজ্ঞানীদের বিবি তালাকের ফতোয়া নিয়ে গবেষোনা করার সনয় নেই। তারা সবাই ব্যাস্ত কি ভাবে মহাশুন্যের অন্য গ্রহে মানুষের বসতি স্হাপন করা যায়, কি ভাবে দুরাগ্য ব্যাধি ক্যানসার মিরাময় করা যায়, কি ভাবে নিউক্লিয়ার টেকনোলজী উন্নত করে মানুষের জন্য নতুন যুগের সূচনা করা যায়। সুতরাং আপনি কোরআনের যে চ্যালেঞ্জ এর কথা বলছেন তার দৌড় মসজিদ পযন্তই।
উত্তরঃ কে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে আজ পশ্চিমা বিশ্বে যে ধর্ম সবচেয়ে অধিক গ্রহন করা হচ্ছে সেটা হল ইসলাম। তাদের সময় আছে তাই তো বিগ ব্যাং থিওরি আবিষ্কার করতে হাজার হাজার বছর লেগেছে যা পবিত্র কোরআনে ১৪০০ বছর আগে বলা হয়েছে
أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا ۖ وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ ۖ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ [٢١:٣٠]
কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন কি ভাবে নিউক্লিয়ার টেকনোলজী উন্নত করে মানুষ সভ্যতা কে ধ্বংস করে দেয়া যাই।
খাওয়া, পরা, ঘুমানো, ঘুম থেকে উঠা এই কিছুটা বিধান দেখেই Yusuf Estes মুসলিম হয়েছেন। এটা তো অন্য কোন ধর্ম নয় যা শুধু মন্দির, গির্জা কিংবা বই এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। মোসলমানেরা ইসলাম প্রচার করেই যাবে কারন সত্য ধর্মের তো প্রচার হবেই।এটা তো অন্য কোন বই নয় যা সময়ে সময়ে বদলে যাবে ।
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَٰذَا مِنْ عِندِ اللَّهِ لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۖ فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا يَكْسِبُونَ [٢:٧٩]
অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।
وَإِن كُنتُمْ فِي رَيْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلَىٰ عَبْدِنَا فَأْتُوا بِسُورَةٍ مِّن مِّثْلِهِ وَادْعُوا شُهَدَاءَكُم مِّن دُونِ اللَّهِ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ [٢:٢٣]
এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।
لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةً لِّلَّذِينَ آمَنُوا الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا ۖ وَلَتَجِدَنَّ أَقْرَبَهُم مَّوَدَّةً لِّلَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ قَالُوا إِنَّا نَصَارَىٰ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّ مِنْهُمْ قِسِّيسِينَ وَرُهْبَانًا وَأَنَّهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ [٥:٨٢]
আপনি সব মানুষের চাইতে মুসলমানদের অধিক শত্রু ইহুদী ও মুশরেকদেরকে পাবেন এবং আপনি সবার চাইতে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বে অধিক নিকটবর্তী তাদেরকে পাবেন, যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্টান বলে। এর কারণ এই যে, খ্রীষ্টানদের মধ্যে আলেম রয়েছে, দরবেশ রয়েছে এবং তারা অহঙ্কার করে না।
যদি আপনি খ্রিষ্টান হন তবে গস্পেল অফ মেথও অধ্যায় ১৯ অনুচ্ছেদ
১৬-২০ বলা হয়েছে (”আমি প্রভুর নির্দেশ মানি তুমিও চিরস্থায়ী জীবন লাভ করতে হলে প্রভুর নির্দেশ মানো”)
আর যদি আপনি হিন্দু হন তবে (ভাগবাত গিতা অধ্যায় ৭ অনুচ্ছেদ ২০ ”সেসব লোক যাদের বিচার বুদ্ধি কেড়ে নিয়েছে জাগতিক আকাঙ্খা, তারাই মূর্তি পূজা করে।”)
(সমাপ্ত)
পূর্বে প্রকাশিতঃ এখানে এখানে
এবং এখানে