somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কচুরীপানার সাথে ফুলেরা কথা কয়

২৩ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভেসে থাকা কচুরীপানার ফোটে বাহারী ফুল
কখনো থাকে বদ্ধ কখনো বা চলমান জলে
ভাসমান কচুরীপানার সাথে ফুলেদের কথা
হয় জলে স্থলে ও উড়ন্ত আকাশ পথে।

কচুরী পানার ফুল ফুটে পাথরেরও বুকে


কখনো বা কচুরীপানা ফুলের জিহবা
সাপের ফনার মত লক লকিয়ে উঠে ।


কত প্রিয় যে ফুলটি বুঝা যায়
কচুরী ধামে দেখে বালকটিকে
ফুল গুলিও শুন্যে তুলে দুটি হাত
ছেলেটিকে একান্তে কাছে ডাকে।


দেখে তাই ধান গাছের আড়ে লুকিয়ে থাকা
কচুরী পানা ফুল গুলিও মিটি মিটি হাসে ।


বালু নদীর জলে ভাসা সাদা কচুপানা ফুলটি ভাবে
আহা সে যদি এসে ধরত আমায় একান্ত ভালবেসে ।


দুরে একা একা ভেসে থাকা ছাতিম ফুলটি ভাবে
কি দোষ করেছি আমি বাতাসের তোরে দল ছোট হয়ে
সেই ভালো লুকাব গিয়ে আমি কচুরীপানার বুকে।


শুনে দ:খ্যের কথা জোড়া কচুপানা ফুল দুটি কয়
আয় মোদের কাছে আদর করে টেনে নিব বুকে


একলা থাকা গুচ্ছ কচুরীপানাফুল সহাস্যে বলে
ফুলেরা কভু থাকেনা একেলা ফুলের বুকে ফুল
এমনিতেই থাকে ফুলের বোটায় শত ফুল ফুটে ।


মোরগ ফুলগুলি লাল হাসি দিয়ে বলে
আমার কাছে এসে থাকছনা কিছুক্ষন
যাছনা একটু দুজনে এক্কা দুক্কা খেলে ।


আকাশ হতে বাগান বিলিয়া ইশারায় কথা বলে
আমার কাছে এলে দেখাব তোকে জগত কাকে বলে।


কামরাংগা ফুল গাল ফুলিয়ে গম্ভীরভাবে বলে
রংগীন না হওয়ায় জানি ভাল লাগেনা মোরে
তবে মিঠা টক রসে দিব যে তোকে ভরিয়ে
নীল ডানা মেলে ত্বরায় আস যদি মোর পাশে ।


ঝুলন্ত রাশনা ফুল সুর করে বলে মালা করে
গলায় ঝুলিয়ে রাখব তোরে অনন্তকাল ধরে
রংগীন প্রজাপতির পাখনা দুটিতে ভর করে
চপলা বেগে চলে আয় কোন লজ্জা না করে ।


জোড়ায় জোড়ায় ফুটে থাকা লজ্জাবতি জানায়
লাজুকবালার অভিযাগ মোর যাবেই যে কেটে
বেগুনী রং কচুরীপানা ফুল তোকে পেলে পাশে ।


লাল মোজেন্ডির বুকে ফুটে থাকা সাদা
পাপরিগুলি, ছড়িয়ে দিয়ে রঙগীন হাসি
বলে খানিক দৈর্য্য ধর বোন কচুরীপানা,
স্বর্গ হতে আনা সুখরেণু দিয়ে দিব তোকে।


গাদা ফুল বলে কচুপানা ভেবোনা তুমি
গায়ে হলুদের দিনের মত তোমার কপালে
তিলক হয়ে রহিব বাধা চিরকালের তরে
রচিব মধুর বাসর তোমার নীলাম্বরা ঘরে।


শুনে কথা তাই অপরাজিতা কয় চলে আয় মোর পরে
তোকে দিব আমি অবিনশ্বরতা চিরকালের তরে
কচুরীপানা সহাস্যে বলে এত সুখ সইবেনা আমার
জানকি তুমি মোর পরে সোয়ার হলে লোকে বলে
কচুপাতার পানি টোকা দিলেই যাবে যে পরে এক্ষুনি।


পরগাছায় বেড়ে উঠা মালতিরা ডেকে কয় হেসে
নেই তফাৎ তোর সাথে তুই থাকিস জলে ভেসে
হাসি দিয়ে কচুপানা বলে এবার যে আসতেই হয়
নীল ডানা মেলে নিয়ে যাব তোকে শুকানো পদ্মাচরে
দেখবে কচুরীপানা ফুল সেখানে ফুটে কেমন করে।


কথা যায় ধরে যখন দেখি একটি ফুল উচ্চে তুলে শীর
বিধাতার তরে করে মোনাজাত যেন ফুলহীন কচুরীদল
ভরে উঠে হাজার হাজার রংগীন প্রজাপতিসম ফুলে ।


এ সময় ঘরের টবে ফোটা একটি কচুফুল আক্ষেপে কয়
সৌখিন কিছু লোকের লোভাতুর কামনা বাসনা নিয়ে
হয়েছি মোরা ফুল শুন্য, থাকছি তাদের টবে বন্দি হয়ে ।


গাছের ডালে ঝুলে থাকা চম্পাকলি ফুলের হাসি হেসে
স্নেহের পাখায় ভর করে ফুল ফুটানোর বার্তা দেয় এসে।


পার্কের মাঝে পায়ে চলা পথের ধারে ফুটা ধানশিরি ফুল বলে
কভু আসিস না আমার কাছে নিঠুর মানুষেরা যাবে পায়ে দলে ।


ফুলের মত দেখতে গাছে ফুটে থাকা কাঠালেরা চোখ তুলে বলে
দিব যে তোকে ভরিয়ে মধুর জলে যদি ভেসে আসিস আষাঢ়কালে।


উড়ন্ত কচুরীপানা বলে ছোটে আয় চলে
সবুজ ঘণ ছাতার মত তোর পাখনা মেলে
নিয়ে যাব সেখানেই যেখানে রাজ হংসীরা
জল কেলিতে নিত্য ভালবাসার খেলা খেলে।


ধানগাছের ফাকে চুপটি করে থাকা
ফুলের মত ছোট্ট বক ছানাটি বলে
কচুরীপানা যাছনে চলে আমায় ফেলে
পুটি যে আর পাবনা তুই গেলে চলে ।


এলোমেলো শিউলিগুলি বলে ভাবিছনা তুই
ফুলের কদর থাকে গেলেও অকালে ঝড়ে
সবুজ পাতার ফাকে একটির পরে আরেকটি
রাখলেও তাতে উচ্চ মার্গের শিল্প উপচে পরে।


হাওয়ায় ভেসে থাকা হাজার জ্যোতির ফানুষফুল
ছড়িয়ে দিয়ে তার বর্ণালী আলোক রোশনাই
দিচ্ছে জানান ভাবিছনা তুই হাওয়ায় মিলে গিয়ে
বাতাশে ভেসে ভেসে তোর বুকে এখনিই নিব ঠাই ।


শুনে কথা তাই কদমের বুকে ফোটা ছোট ছোট
ফানুশ পাপরিরা সকাতরে বলে যাছনে চলে
আমার ছায়া ছেড়ে সোহাগে আদরে দিব ঢেকে
কোন ঝড় বাদল দু:খ করবেনা স্পর্শ তোকে ।


ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ানো মৌমাছিরা বলে তোর
নীচে জমা শীতল জল ছাড়া হয়না রেনু মধু
ভাবিছনা তুই ফুলেদের দুত আমি আসছি ছোটে
বুঝাব তোকে ফুলেদের মধুরেণ কিভাবে ঘটে ।


আকন্দ ফুল বলে জানিছনা তুই ফুল ফুটার আগেই
আমাকে নিয়ে কতজনে কতভাবে টিপাটিপি খেলে
তাবলে কি আমি অভিমানে চলে যাই নীজকে ফেলে ,
কামনা বাসনা করি তাই দু:খ ভুলেই থাক অবহেলে।


কন্ঠলতিকা লাল ফুলগুলি দুলে দুলে দেখায় বারে বারে
পেলে রংগীন কচুরীপানা কেমন করে রাখবে কর্ণে পরে
দেখে তাই কচুপানা ফুলগুলো হাসতে হাসতে লুটু পুটি খেয়ে
জড়িয়ে ধরে নীল শাড়ি পরা কিশুরী কচুপানায় রক্তিম হয়ে ।


বৃক্ষশীর্ষে বসা তালফুল গুলো ডেকে বলে
তিষ্ট ক্ষনকাল কচুপানা আসছি তোর কাছে
মানুষের চুষে খা ওয়া শাশের জোটা খোলসে
ভেসে আসা মোর তরী ভিরবে তোর কূলে এসে।


রংগন ফুলের ঝোপ বলছে ডেকে আয় চলে
রাখব লুকিয়ে তোকে আমার ঘন ঝোপের তলে
মিট মিট করে দেখবে তাকিয়ে আমার ঝোপের
আড়ালে তরুন তরুনীরা কেমনতর খেলা খেলে।


কচুরীপানা হেসে বলে আমিও আছি সুখে বদ্ধ জলাশয়ে
থোকায় থোকায় ফোটা মোর পদতলে ব্যাঙগ ব্যঙগমী,
আর নাগ নাগিনীরা মনির আলোয় ফনা তুলে নৃত্য তালে
পাতাল পুরীর বীণা বাজিয়ে শত শত প্রেমের খেলা খেলে ।


লাল ভেরেন্ডা ফুল বলে আমিই বা কম যাই কিসে আমার তেলে বাতি জ্বেলে কত কবিতা লিখে
তোকে নিয়ে লিখবে কবিতা রাখবে অমর করে, তাই চলে আয় আমার কাছে অতি ত্বরা করে ।


কচুরীপানা ফুল বলে দেখে যাও কত শত কবিতা
আছে পরে আমার বুকে গজানো স্তবক জোড়ে
কবিকে বল বিনয়ে কিছু তার নিতে পারে তুলে
হব খুশী যদি সে আমাকে নিয়েও অমর কাব্য রচে।


কৃষ্ণচুরা বলে দেখ আকাশে আমি ফাগুন ছড়াই
তোমাকেও উড়াব আমি লাল বাসন্তির পাখনায়
দৃষ্টি দিয়ে দেখুক নীচে বিলের স্বচ্ছ জলের ছায়ায়
কচুপানা কেমন করে ভেসে আকাশে উড়ে বেড়ায় ।


ধানফুল গুলি বলে অতি অভিমান সুরে
আমাকে নিয়ে মানুষ নিত্যদিন উদর ভরে
আমার সবুজ পাতাকে নিয়ে কবিতা লিখে,
দেখতে সুন্দর নই বলে সদা যায় অবহেলে
দুখের ভাগী হতে তাই কচুরী পানা ভাই
এখনই এসোনা বিলে ডোবা ধানের আচলে ।


কাশবনে ফোটা ফুল মৃদু হাওয়ায় মাথা নেরে বলে
ভেবনা ধানফুল আছি তব পাশে বিপদের কালে
আমাকে নিয়ে তোমার পাশে কবি গুরু সহ সকলেই
কবিতা রচে মনের আশে তুমি আছ তাই সবলয়েই ।


বিলের ধারে অযতনে ফোটা কস্তুরী ফুল গুলি বলে
নিয়ে তোর মনোরম শোভা আর মোর স্নিগ্ধ সুভাস
জায়গা করে নিব মোরা সৌখীন বুবুদের ফুলভাসে
অবাক নয়নে দেখবে সৌন্দর্য কোথায় গিয়ে মিশে ।


হাতিশুর কচুরীপানা বলে জানাই তোকে অতি সযতনে
ধীরে ধীরে অপরূপ সাজে মুখরোচক সুবচনা নামে, নীড়
বাধব বোতলসম কারুকর্যময় ফু লদানির ছোট্ট অবয়বে
হারিয়ে যেতে যেতে বাচব গিয়ে বাগান কোণে ফুলের টবে ।


গাছের ডালায় ঝুলে থাকা লিচুর মুকুল গুলি বলে
আসিস না কেন ভাই আমার ছোট ঝড়ো জীবনে
যাছনা দেখে ফুল ফোটারপর দিন কয়েকের মাঝে
পাকতে না পাকতেই মানুষেরা মোর শাঁশ খায় চুষে ।


নিলাজী ( ল্যাংরা) ফুলটি ও অভিমানে বলে দু:খ করুনা বন্ধু
ঘৃণায় মারিয়ে গেলেও জড়িয়ে ধরে আমায় নিয়ে যায় তুলে
যুবকের লুংগীর খোচায় আর তম্বী তরুনীর শাড়ির আচলে
কোমল স্পর্শে একটি একটি করে তুলে ডাস্টবীনে ফেলে
দু:খ মোটেই পাইনা জানেনা সে আমি আসবই ফিরে
পরদিন জড়িয়ে ধরবে আমায় ঘাস মারিয়ে চলার কালে ।


বকুল বলে ঝড়ে গেলেও যত্ন করে
একটি একটি করে মালা গেথে
রাখে কেশ বতীর খোপায় পুরে।
কাঁদিছনা সোনা বোনটি আমার,
অচিরেই দেখবে কেমন করে
দাপাদাপি হয় তোকে নিয়ে।
ফুল বেপারীদের জানাব তোর
যতকথা দেখবি তখন তোকে
নিয়ে কেমন তেজারতি করে
খুলবে লাভের খাতা কৌশলে
তোকে নিয়ে হবে শত রচনা
ভরে যাবে পোষ্টারে পোষ্টারে।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৯
৪৫৬ বার পঠিত
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবশেষে রিক্সালীগ সফল!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২২


অবশেষে আবারো সরকার হার মানলো। হার মানলো রিক্সালীগের কাছে। এটা শুরু মাত্র। এখন সবকিছুতেই হার দিয়েই চলতে হবে হয়তো। যেটা কারোরই কাম্য ছিলনা। কাম্য ছিল তাদেরই যারা অন্যায়ভাবে শত শত... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুবোধ বালক

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫১

এক যে ছিল সুবোধ বালক
জমিদারের নাতি
শ্বশুর বাড়ি আসতে-যেতে
তার ছিল এক হাতি

হাতির পিঠে চড়তো নাতি
দাদুর কোলে বসে
দুলকি তালে যেতে যেতে
ঘুম দিত খুব কষে

শ্বশুর বাড়ি গিয়ে নাতি
কী খেতো তা জানো?
ঝালমুড়ি আর মাঠা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেগা মানডে: সংঘর্ষ, বিক্ষোভ ও অহিংস প্রতিবিপ্লবের ভূত চেপে বসেছে ঢাকাবাসীর ঘাড়ে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬



ঢাকায় নৈরাজ্য বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। আজকে তার সাথে ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো অহিংস অভ্যুত্থান কর্মসূচীর! বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হল কোন উদ্দেশ্যে?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৯

আমার ধারণা চিন্ময় ব্রহ্মচারী প্রভুকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য। ভালো উদ্দেশ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয় নাই। চিন্ময় ব্রহ্মচারীর কথা বার্তা আমার ভালো লাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অসমাপিকা, ২২শ অধ্যায়

লিখেছেন মেহবুবা, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৬


২১ অধ্যায়: Click This Link

তোমাকে বলেছিলাম
----নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
"তোমাকে বলেছিলাম, যত দেরীই হোক,
আবার আমি ফিরে আসব।
ফিরে আসব তল-আঁধারি অশথগাছটাকে বাঁয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×