বাংলাদেশে প্রেমিক-প্রেমিকা একে
অন্যকে ধোঁকা দেয়ার কারণে প্রেম
ভাঙ্গার চেয়েও হাজারগুণ বেশি প্রেম
ভেঙ্গেছে মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং এ।
মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং বলার কারণটা
সহজ.... মেয়েটির বাসায় বিয়ের প্রস্তাব
এসেছে। মেয়েটি দিশেহারা হয়ে
প্রেমিককে বলএছে, "কিছুএকটাকরো...
নয়তো আমার বিয়ে হয়ে যাবে।" প্রেমিকের
তখনও নিজের জিন্স প্যান্টটা মা'কে খুঁজে
বের করে দিতে হয়.... এই অবস্থায় বাসায়
বিয়ের কথাবলাটা নিরর্থকপাকামো ছাড়া
আর কিছুহতে পারে না।
একদিন মেয়েটার বিয়ে হিয়ে যায়...
ছেলেটা কোন বন্ধুর ছাদে অথবানেভালে
গিয়ে মদ গিলে কিছুক্ষণ টালহয়ে থাকে।
বেশ কিছুদিন আর্কের 'এতো কষ্ট কেনো
ভালোবাসা' অথবা ট্র্যাপের 'চলে যদি
যাবি দূরে স্বার্থপর' টাইপের গান শোনে....
জগতের সমস্ত কষ্ট'ই আস্তে আস্তে হীল
হয়... এই কষ্ট'ও কমে। ছেলেটা একদিনটুপ
করে অন্যকারো প্রেমে পড়ে যায়...অথবা
প্রেমের প্রতি বিষাক্ত ধারণা নিয়ে
পড়ালেখায় মন দেয়।
আমাদের দেশের ছেলেদের 'সেটেলড'
হিসেবে ধরে নেওয়া হয়... যখন তারএকটি
ভালো ডিগ্রী আছে... সেই ভালো ডিগ্রীর
সুবাদে একটিসিকিউরড চাকরী আছে...
আবারসেই চাকরীর সুবাদে বেশ ভালো
একটিব্যাংক ব্যালেন্স আছে... এবং সেই
ভালো ব্যাংক ব্যালেন্সের কারণে সুন্দর
একটিফিউচার হবে।
আর সেটেলড হতে গিয়ে জগতের সমস্ত
পরীক্ষা, সেশন জট, হরতাল,অবরোধ,
ব্যাকলগ, থিসিস পেপার নিয়ে দৌড়াদৌড়ি
শেষে ছেলেটার বয়স হয়ে যায়সাতাশ
থেকে আটাশ....এরপর আবারচাকরী'র
জন্যে যুদ্ধ শুরু.... ভালো চাকরী পেতে
গেলে এক্সপেরিয়েন্সের জন্যে যুদ্ধ,
এক্সপেরিয়েন্স হলে প্রমোশনের জন্যে
যুদ্ধ... সবকিছু শেষ করে সেটেলড ট্যাগটা
যখন গায়ে লাগে... তখন ছেলেটার বয়স হয়ে
গেছে প্রায় পয়ত্রিশের কাছাকাছি।
এই দীর্ঘ সময়ে পূর্ব প্রেমিকার ঘরে দুই-
তিনটি সন্তান চলে এসেছে... এরমধ্যে
হয়তো একজন প্রাইমারীপাঠ'ওশেষ করে
ফেলেছে।
ছেলেটা এদিক-সেদিক খোঁজাখুঁজি করে
অল্পবয়সী একটিমেয়েকে বিয়ে করে
ফেলে.... সেই মেয়েটি আবারঅন্য ছেলের
প্রেমিকা। এক কথায়ছেলেটি বিয়ে করে
অন্য একটিছেলেকে ঠিকতারপূর্বজীবনের
অবস্থায় ফেলে। নতুন বিবাহিত মেয়েটির
বয়স অল্প... সে জগতের ছোট-বড় সমস্ত
কিছুতেই মুগ্ধ হয়... আর ছেলেটি জগতের
সত্যিকারের কুৎসিতরূপ অলরেডি দেখে
ফেলেছে। তার জীবনভর্তি বিরক্তিতে...
ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একটি
কমিউনিকেশন গ্যাপ সৃষ্টি হয়...
ভালোবাসা'র স্থান হয় নাসেই গ্যাপে।
কিন্তু বাংলাদেশ বলে কথা... ভালোবাসা
থাকুকআর নাথাকুক, সংসার করে যেতে
হবে।
অথচ ২২-২৩ বছর বয়সে সেই প্রেমিক-
প্রেমিকা বিয়ে করতে পারলে তাঁরা
একসাথে হাতহাতরেখে নীলগিরিতে
মেঘের খেলা দেখে মুগ্ধ হতে পারতো...
রিকশার হুড নামিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে
পারতো মেডিক্যাল রোডে। বারবার
খিলখিল করে হাসতে পারতো পুরোনো
কোন কথামনে করে।
খুব অদ্ভূত একটা অবস্থায় আছিআমরা....
প্রেমিক-প্রেমিকার কেউ একজন ডাক্তার
হলে অন্যজনকে অন্তত পাল্লা দিয়ে
ইঞ্জিনিয়ার হতে হয়। নয়তো বাইরের কোন
ডাক্তার বাইঞ্জিনিয়ার ঈগলের মতো এসে
ছোঁ মেরে ভালোবাসাকে উড়িয়ে নিয়ে jai...
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৫