পুষ্পের নাক দিয়ে ফোঁস ফোঁস করে গরম বাতাস বের হচ্ছে। ভাইরাস-সহকারে যে তীব্র জলীয় ও বাষ্পীয় নির্গমন, সেটা সহ্য করা মুশকিল। ঠোঁটের উপর এর তীব্রতা টের পাওয়া যাচ্ছে বেশ ভাল করে। পিঠ পুরো ঘামে ভিজে গেছে। কেমন যেন চপচপ করছে। শীত শীতও করছে। জেকে জ্বর আসার পূর্ব লক্ষণ। চোখের শিরাগুলোতেও রক্তের আভা দেখা যাচ্ছে। চারদিক কেমন যেন লালচে হলুদদাভা হয়ে আছে। তার কালো চাদরটা দিয়ে শরীর ঢেকে আছে। হাত গুটিসুটি মেরে অল্পবিস্তর কাঁপছেও চাদরের ভিতরে। এর মধ্যে নাকের উপর আবার ঘাম জমেছে। দেখে মনে হচ্ছে, নাকের উপর কিছু মুক্তা জমে আছে। হাত বের করে সেই মুক্তার মত ঘামগুলো মুছতে ইচ্ছা করছে না।
পুষ্পের নানীরও নাক ঘামতো। নানী তাকে সব সময় বলে "যেই সব মেয়ের নাক ঘেমে ওঠে, তাদের সহজে পোষ মানানো যায় না"। পুষ্পের নানী কত অদ্ভুত কথা বলে। মানুষ কী পশু পাখি নাকি। পোষ মানানোর কী আছে। পুষ্প ক্লাসে বসে বসে স্যারের লেকচার বাদ দিয়ে নানীর কথা চিন্তা করছে ঝিম মেরে। স্যারের কোন কথাই মাথায় ঢুকছে না। কী সব ভ্যজর ভ্যজর করছে।
অণুচক্রিকা, লোহিত কনিকা, শ্বেতরক্ত কনিকা। শরীরে যখন এলার্জি জাতীয় ভাইরাস বা অন্য কোন প্রকার রোগ আক্রমণ করে তখন রক্তের উপাদান শ্বেত রক্তকনিকা/WBC/ওয়াইট ব্লাড সেল সেই সব ভাইরাসের সাথে ফাইট করে। যেন ভাইরাসগুলোর মৃত্যু হয় এবং সেই মানুষটি যার শরীরে এই রক্তকনিকা বাস, তাকে জান প্রান দিয়ে তাকে ভাল রাখার চেষ্টা করে। কিছু কিছু খাবার শ্বেত রক্তকণিকা কে শক্তিশালী হয়? সবচেয়ে ভাল হল শাক সবজি, কমলা, বাদাম, ডিম, মাছ, রসুন, মাশরুম, দুধ গ্রীন টি, গাজর ইত্যাদি। স্যারের বক বক শুনে মনে হচ্ছে শরীরের শ্বেত রক্তকনিকাগুলোকে আরও শক্তিশালী করার দায়িত্ব যেন তাকে পৈত্রিক সূত্রে দেওয়া হয়েছে। তবে এই বকবকানিতে মনে হয় কাজ হয়েছে। শরীর থেকে শীত লাগা ভাবটি চলে যেতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। শাক সবজির কথা শুনেই যদি রোগ ভাল হয় তবে খাওয়া শুরু করলে না জানি কী হবে। সব মিলিয়ে আবার আগের মতোই লাগছে “ফিট! একদম ফিট!”