ব্লগে ফেসবুকে অনেকেই বলছেন বিএনপি এবার জামাতের পক্ষে মাঠে নামলো, মুক্তিযোদ্ধা প্রতিস্টাতার দল মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের কর্মকান্ডর প্রচ্ছন্য সাফাই গাইলো, কিংবা জামাতের তান্ডব এ এক প্রকার সমর্থন দিলো।
কথা সত্য। কিন্তু এই অবস্থানে বিএনপি নিজে গেলো না তাকে যেতে বাধ্য করা হলো?
আওয়ামী লীগের কুট কৌশল ও শাহাবাগের অবস্থান করা আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বের হঠকারিতা ও অপরিনত রাজনৈতিক বিবেচনা বোধের কারনেই তারা বিএনপির সমর্থন নিজেদের পক্ষে আনতে ব্যার্থ হলেন?
স্ট্রেইট ফরোয়ার্ড একটা কথা বলি, শাহাবাগে যারা আন্দোলন করছেন (এরমধ্যে আমি নিজেও আছি) তারা ভুলে গেছেন বিএনপি দেশের অন্যতম বড় দল।
যারা নিজেদের সবচেয়ে বিপর্যয়ের নির্বাচনেও প্রায় ৩৮% ভোট পায়।বিশাল নরব সমর্থকগোস্টি আছে বিএনপির পেছনে। এই দলটি এনিয়ে ৩ বার বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলো। তাই বাংলাদেশে জাতীয় গুরুত্বপুর্ন ও মহৎ কোন অর্জন বিএনপিকে বাদ দিয়ে করতে চাওয়াটা শ্রেফ বোকামি ও রাজনৈতিক ছেলেমানুষির পরিচায়ক। শাহাবাগের নেতারা সেই ছেলে মানুষিই করে আসছেন গত ৩ সপ্তা ধরে।
ক্ষমতার রাজনীতিতে ক্ষমতায় যাওয়া অনেক বড় একটা ব্যাপার। বিএনপি ও তার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের মতই ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করে। এখন সুস্ট ভাবে ক্ষমতার হস্তান্তরের একমাত্র পথ তত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ বাতিল করে দেয়ার বিএনপির মতে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভবনা শেষ হয়ে গেছে।
শাহবাগের আন্দোলনের শুরুর দিকে বিএনপি জামাতের সংস্পর্ষ থেকে বেশ দূরে দূরে ছিলো।জামাত পুলিশ যখন লড়াই হয় তখন বিএনপি কোন পক্ষাবলম্বন করে নি।
কিন্তু সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে শাহাবাগ আন্দোলনের নেতৃত্ব কোন না কোন ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকার কারনে বিএনপি ও এর সমর্থকদের একরকম অস্পৃষ্য ভাবা হয়। মঞ্চে বিএনপির বিরুদ্ধে বিষাদাগার করার বদলে যদি জাতীয় ঐক্যের লক্ষে সহজেই খালেদা জিয়ার কাছে শাহবাগ থেকে একটা টিম পাঠিয়ে তার সমর্থন নেয়ার চেস্টা করা যেত অন্তত দাবি উত্থাপন করা যেত। আন্দোলনে বিএনপির সমর্থনের বদলে অন্যতম জাতীয় ও জন গুরুত্বপুর্ন ইস্যু "তত্বাসধায়ক সরকার" এর দাবিও আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করা যেত ।
কিন্তু এর বদলে ইমরান এইচ সরকার থেকে শুরু করে অন্যরা মঞ্চে বিএনপির বিষাদাগার করেই গেছেন অনবরত। তাদের কাছে জাতীয় ঐক্য হয়তো গুরুত্বপুর্ন ছিলো না কিংবা সম্ভবত "জাতীয় ঐক্য" কথাটা বোঝার মত পলেটিক্যাল ম্যাচিওরিটি এদের নাই। আর ক্ষমতার নিরবিচ্ছিন্ন হস্তান্তর অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় বিএনপি বাধ্য হলো একটা সহিংসতাকে প্রত্যক্ষ সমর্থন দিতে।
সত্যি বললে পুলিশের গুলি ও হতাহতের বিরুদ্ধে বিএনপির ডাকা মঙ্গলবারের হরতাল নিশ্চিত ভাবেই জামাত শিবিরকে উৎসাহ যোগাবে আরো ব্যাপক সহিংসতার দিকে যাওয়ার জন্য। বিএনপির এই হরতাল বাংলাদেশে যারা সত্যিকার অর্থেই রাজাকারদের বিচার চায় তাদের জন্য হার্ট ব্রেকিং একটা খবর। কিন্তু পরিস্থিতির এ অবস্থায় যাওয়ার জন্য যারা রসদ যুগিয়েছে, যাদের অবিবেচক,অপরিনত নাক উচু মনোভাবের কারনে জাতি বিভক্ত হলো ইতিহাসের বিচারে তারাও দায় মুক্তি পাবে না।