somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈভ টিজিং ; অধরা প্রেম

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের মানুষের কাছে সাধারণ তথ্য যতো দ্রুত পৌঁছে যায় ততো দ্রুত এমন আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে থাকা দেশ গুলোর মানুষের কাছে দেশ বা মানুষ সম্পর্কিত তথ্য পৌঁছায় না । এমনটা হওয়ার প্রধান কারণ হলো প্রায় পুরো দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটের সমতা এবং ঐতিহ্য গত সাদৃশ্য, এ ছাড়াও আছে বিস্তৃত সমভূমির ভূ-প্রকৃ্তি এবং মুঠো ফোনের সহজ লভ্যতা ।

যা হোক এ তথ্য প্রযুক্তির যুগে ঈভ টিজিং শব্দটির সাথে সবাই বেশি মাত্রায় পরিচিত যদিও তার সীমা , আওতা আর যৌক্তক সংজ্ঞা আমার কাছে পরিস্কার নয়। বাংলাদেশে সাধারন ছেলে মেয়েদের মধ্যে কৈশোরে বা তারুন্যে যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তার শুরুটা অনেকটা বর্তমানে সংজ্ঞায়িত ঈভ টিজিং এর মতো ঘটনা দিয়ে আরম্ভ হয়। জানা নেই শোনা নেই বা অল্প জানা শোনা কোন ছেলে যখন একটা মেয়েকে প্রেম নিবেদন করে তখন সে নিবেদনের ধরণ বা প্রকাশ ভঙ্গি একটা মেয়ের কাছে পছন্দের নাও হতে পারে, আবার এটাও সত্য যে প্রথমবার বললেই যে ছেলেটার প্রতি মেয়েটা আগ্রহী হয়ে পড়বে এমন তো নয় । যেখানে সাফল্য পাবার জন্য শত বার চেষ্টা করবার কথা বলা হয়েছে সেখানে যে মেয়ে তার জীবনের সব কিছুর অংশ হয়ে যেতে পারে তার জন্য দু চার বার চেষ্টা কোন ভাবেই অযৌক্তিক হতে পারেনা।

প্রেমের বহিঃপ্রকাশ কি ঈভটিজিং হিসেবে গন্য হবে ? নিবেদনের কি কোন মাপকাঠি থাকতে পারতো না ? নারীর প্রতি পথে ঘাটে অফিস আদালতে অগ্রহণ যোগ্য কর্ম কান্ড বা অশালীন অপ্রয়োজনীয় শব্দ উচ্চারণ অবশ্যই ঈভ টিজিং তবে প্রেম নিবেদনের মতো পবিত্র আর জীবনের অনিবার্য আকুতির ব্যপারটাকে ঠিক কি চোখে দেখবো বুঝতে পারছিনা। যদি কোন ত্বন্বি তরুণী একই ছেলের কাছে একাধিকবার প্রেমের প্রস্তাব পায় এবং গ্রহন করে তখন তা হয়ে যায় প্রেম, সনদ প্রাপ্ত প্রেমই বলা ভাল। আর সনদ লাভে ব্যর্থ হওয়া প্রস্তাব হয়ে যায় ঈভ টিজিং !! তাহলে এক জন মেয়েই ঠিক করবে কোনটা প্রেমের উদ্বাত্ত আহবান আর কোনটা হাড় জ্বালানো ঈভ টিজিং । বস্ত্র হরণ করেও কৃষ্ণই রাধার প্রেমিক আর স্কুল বাসে করে যাওয়া নীলাঞ্জনাকে দু বার সাহস করে " ভালোবাসি" বলাটা ঈভ টিজিং ।

দেশে গিয়ে জানলাম মেয়েদের স্কুলের সামনে সাদা পোষাকে কালো মনের মামাদের ঈভটিজার ধরতে বসানো হয়েছে । ভালোই হলো ডিউটি পোষাকে মামারা ইয়াসমীন আর সীমাকে নিয়ে খুব ঝামেলায় পড়েছিল এবার অন্তত সাদা পোষাকে হাজার হাজার সীমা ইয়াসমীন কে পেয়ে যাবে । ফুল ডিউটি আওয়ার জুড়ে চালাও ঈভ টিজিং আর প্রকৃ্ত অমানুষের পরীক্ষায় পাশ করে যাও। আবার, নিরীহ ও স্বচ্ছল পরিবারের ছেলেদের থানায় ধরে এনে ফাঁসিয়ে দাও ঈভ টিজিং এর গোলক ধাঁধাঁয় আর কামিয়ে নাও দু মুঠি ভরে । যোগ হলো নারায়ণের নতুন উৎস !!!!

সাম্প্রতিক সময়ে পত্র পত্রিকায় প্রথম পাতা থেকে শেষ পাতা পর্যন্ত কোথাও না কোথাও ঈভ টিজিং আছেই । এটা সচেতনতা বৃ্দ্ধিতে যতো টুকু অবদান রাখছে তার থেকেও বেশি আড়াল করছে সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতির সাথে রাজনৈতিক ভাবে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির বিস্তর ফারাককে । সংস্থা ভিত্তিক দুর্নীতি, ব্যক্তি পর্যায়ে দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রতি হিংসা, যুব/ছাত্র লীগ/দলের দলবাজি, দলীয় আযানে লুটপাটের মহড়া, দেশ খুবলে খাওয়া নেতাদের দেশ প্রেমের আস্ফালন, অকার্যকর সংসদ সব কিছুকে আড়াল করতে অত্যন্ত কৌশলে ঈভটিজিং এর মতো একটা বিষয়কে সামাজিক সমস্যা থেকে জাতীয় সমস্যায় রূপান্তরের প্রচেষ্টা হয়েছে । এ থেকে মূলে পানি পড়েছে, ঈভটিজারদের দৌরাত্য বেড়েছে, এসেছে বৈচিত্রময় কুৎসিত উপায়। সারা সিনেমা জুড়ে মারা-মারি, খুন, হত্যা, লুট-তরাজ দেখিয়ে শেষে পুলিশের দু মিনিট রাখলে মানুষ যেমন আগে ঐ দু মিনিট ভুলে যায় ঠিক তেমনটা ঘটছে ঈভটিজারদের ক্ষেত্রে।

সামাজিক ও পারিবারিক শিক্ষা বিস্তার, মানবিক গুনাবলীর সাথে শিশুর পরিচয়, মানব মূল্য অনুধাবন, পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা বিস্তার, পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করণ, সামাজিক অস্থিরতা দূর, কর্মের নিশ্চয়তা প্রদান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, মনণশীল মানব সম্পদ গঠনে সরকার ও রাজনৈতিক ব্যক্তি বর্গের ভূমিকা দেশে এখনও প্রশ্ন বিদ্ধ । এ গুলোর ব্যবহারিক প্রয়োগ ও পরিচর্যা না করলে ঈভ টিজিং দূর করা সম্ভব নয়। আইন, সভা, মানব বন্ধন সাময়িক ব্যবস্থা মাত্র কোন টেকসই সমাধান নয় । কয়টা সাধারণ ছেলে ঈভটিজিং করতে পারে ? লীগ/দলের ছত্রছায়ায় বাস করা নেকড়ে গুলোই তো পেশী শক্তি আর ধারালো নখরে ক্ষত বিক্ষত করে চলেছে সমাজকে ।

নারীর প্রেম পারে সমাজকে শান্তি দিতে, ফিরিয়ে আনতে পারে পুরুষের আত্নবিশ্বাস, আদর্শহীন রাজনীতির যুবা গোলামকে মুক্ত করে খুলে দিতে পারে তার জন্য দিগন্ত মুখি সাফল্যের দরজা, ড্রাগ ও অস্ত্র থেকে হাত কেড়ে নিয়ে শক্ত করে ধরতে পারে একত্রে মিশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে । অথচ আজ সেই নারীর প্রেম অধরা------------------
যদি ঈভটিজিং হয়ে যায় !!!!!!!!!!!!!!!!
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=একটু সৃজনশীল হও=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৬


খেয়ে দেয়ে আরামসে ঘুম, এ জীবন বুঝি
খাও দাও ঘুমাও এ কর্ম রোজই,
টিকটকে ভিডিও, ফেসবুকের রিল,
তাতেই করছো সুখ ফিল?

সাজুগুজু, প্রাশ্চাত্যের ড্রেসাপ, হাই হিলে হাঁটা
ব্যস! এমন অহমে পূর্ণ জীবনে ঝাঁটা
নেই সংসার গুছানোতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকার কি পদক্ষেপ নিবে ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:২৭


আওয়ামী লীগের মিছিলের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ঢাকার ডেমরা-উত্তরা- বাড্ডা - মিরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল করছে। প্রায় তিনমাস ধরে রাস্তায় মিছিল নামানোর প্রস্তুতি ছিলো। মিছিলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবেনাকো তুমি- যেদেশে হাসির জন্যও প্রাণ দিতে হয়!

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:৩৩

কয়েক দিন আগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম হবু চন্দের আইন কবিতা নিয়ে, যেখানে কান্নার বিরুদ্ধে রাজা আইন জাড়ি করেছিলেন.....আজ লিখতে হচ্ছে- হাসির জন্য প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ঘটনা নিয়ে। আমরা সবাই ইতোমধ্যেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু কিছু মানুষ জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও তা কাজে লাগাতে পারে না

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:৪৯


নারীর বাড়ি দিনাজপুর। স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। পারিবারিক কলহের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ ছিল কয়েকদিন। এরমধ্যে ফেসবুকে রংপুরের কাউনিয়ার যুবক শামীমের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই নারীর। পরে মোবাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

৭১ না দেখেও কেবল ইতিহাস পড়ে যদি আপনি ৫৩ বছর পরে এসেও পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে পারেন। তাহলে নিজ চোখে ভারতের আগ্রাসন দেখেও চুপ কেন?

লিখেছেন তারেক সালমান জাবেদ, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৪:৩৭

প্রথমেই শুরু করতে চাই সীমান্ত হত্যা নিয়েঃ -
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী দ্বারা ২০০০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ সাধারণ ও বেসামরিক বাংলাদেশি হত্যা করা হয়েছে। ভারত সরকারের বাংলাদেশের সীমান্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×