somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প_ পা

১৯ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পা

লাল বিন্ডিং ঘেষে দুটো কৃষ্ণচূড়া গাছ। গাছের নিচ দিয়ে লমআবা একটা পিচঢালা পথ। বসন্ত এলে পথের উপর কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি পড়ে থাকে। তখন লাল গালিচা মনে হয পথটাকে।
এ পথ দিযে হেঁটে যেতে যেতে জীবনের অনেক বসন্তের গল্প ভেবে নেয়া যায়। তুলে আনা যায স্মৃতির পাতা থেকে াসংখ্য মানুষের মুখ। চকচকে খুচরো পয়সার মতো স্মৃতির নস্টালজিয়ায় ভেসে বেড়ানো যায সহজেই। দর্ঘিশ্বাস বের হযে আসে। ভারী হযে ওঠে পথের বাতাস।
আজ বসন্ত নয়। কৃষ্ণচূড়াও ফুটে নেই গাছের মগডালে। বরং গাছের একপাশে ঝুলে আছে শুকনো একটা ডাল। সে ডালের উপর বসে আে একজোড়া শালিক। হারকা বাতাস এসে মাঝে মাঝেই দোল দিয়ে যাচ্ছে শালিকের শরীর। কিন্তু এই পিচঢারা পথ, শুকনো গাছের ডাল, কিংবা শান্ত শালিক কোনটাই ডা. শিমিকে ভাবিযে তোলেনি। বরং জীবনের গবরি এক রহস্য তাকে আঁকড়ে ধরেছে। এই পথ দিয়ে সে রোজই হেঁটে যায কিন্তু নিজেকে তার কখনো এতোটা াসহায মনে হয়নি।
পথের ঠিক মাঝামাঝি এসে দাঁড়ায ডা. শিমি। একটু শীত শীত লাগছে তার। চশমার কাঁচটাও ঘোলা হযে আসছে। চশমা খুরে হাতে নেয় সে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে। তাকায় লার বিল্ডিংটার দিকে। এই বিল্ডিংটার তিনতলায তাকে যেতে হবে। কিন্তু কেন জানি যেতে ইচ্ছে করছে না। পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে।
মাঝ পথে এসে দাঁড়িয়ে পরে শিমি। লাল বিল্ডিংয়ের তিনতলায় গিয়ে সে কি করবে? এ পৃথিবীর অনেক সত্য কথা মিথ্যে কথার চেয়েও ভয়াবহ। অনেক নিষ্দ্ধি ভালোবাসা শুদ্ধ ভালোবাসার চেয়েও শুদ্ধ। পবিত্র সুখ কখনো কখনো কষ্টের কারণ হযে দাঁড়ায়। তারপরও কি আজ ডা. শিমি ইবুর মুখোমুখি হতে পারবে? জীবন কি তবে এতটাই সহজ? মাত্র কয়েক মুহূর্তেই কি জীবন সমুদ্রের সব সারসর্ম লিখে ফেলা যায়?
ইব, সেই ইবু। নিসিান্ধরা গালস্ স্কুরের সামনে যার সাথে তার প্রথম পরিচয় হয়েছিল। নীল স্কুলের পোষাক পড়ে, বেনী দুলিয়ে ষোড়শি শিমি রাস্তা পার হচ্ছিল। মাঝপথে হঠাৎ ধপাস করে পড়ে যায় সে। রাস্তার পাশেই দাঁড়িযে ছিল তিন বন্ধু। তিনজনে মিলে সে কি হাসি!
শিমি খোঁড়াতে খে৭াড়াতে রাস্তা পার হয়। কাছে গিযে বলে, লজ্জা লাগে না আপনাদের?
দুজন হো হো করে হেসে উঠল। শুধু চুপ হযে গেল একজন। বলল, সরি। হঠাৎ হাসি পেয়েছিল তো তাই।
শিমি কোন কথা না বলে চলে আসে। এ ঘটনার বারো দিন পর আবারো তাদের সাথে দেখা হয় তার। একটা বিযে বাড়িতে। ক্যামেরাহাতে ইবু ছবি তুলছিল। হঠাৎ শিমিরি একটা ছবি তুলে ফেলে সে। বড় বড় চোখে তাকায শিমি। ভয পেয়ে প্রথম দিনের মতো সে বলে, সরি।
সবকিছু সরি দিয়ে শেষ হয় না। দিন, ক্যামেরা দিন।
ফিল্মটা শেস হযনি তো।
শিমি কিছু বলল না। হাত বাড়িযে তাকিযে আছে। লার শাড়ি পড়া উঠতি বযসের একটা মেযের এমন রাগ উপো করার মতো ক্সমতা ইবুর ছিল না। সে ক্যামেরাটা শিমির হাতে তুলে দিল। সে ফিল্মটা টেনে বের করে বলল, াার কখনো হুট করে কারো ছবি তুলবেন?
ইবু হাসে। উত্তর দেয় না।আসলে উত্তর দেবার মতো কিছুই ছিল না।
পৃতিবীর সব প্রেম শুরু হয তুচ্ছ ঘটনা থেকে।তারপর হৃদয়ের কোথায় যেন স্মৃতি জমতে থাকে। অদৃশ্য টান শুরু হয়।
সামৃতি যত পুরোনো হয, তার দাগ হয তত গভীর। যদিও সব স্মৃতির জন্ম নিয়তির উপর কেরা করে। নিয়তিই কেবল পারে স্মৃতি নিযে খেলতে। যে খেলায প্রতিটি মানুষ দাবার গুটির মতো চলাচল করে। কেউ সৈন্য, কেউ নৌকা।
বিযে বাড়িতে ইবুর সাথে পরিচয়ের পর তার সাথে আর দেখা হযনি শিমির। একেবারে সহজ করে বললে বন্ধুত্বও হয়নি দুজনের। কিন্তু কারো কারো ভালোবাসা নিরবে বড় হতে থাকে। এক সময় সে ভালোবাসা আকাশ ছুতে চায়। কিন্তু বডড দেরি করে ফেলে শিমি। কলেজে উটে জানল, যে ইবুর জন্য তার হৃদয় তৃষিত, সে অনেক াাগেই অন্য কারো হযে গেছে।
ইবুর প্রিয় মানুষের নাম ছিল প্রিয়তা। সত্যি কথা বলতে প্রিয়তা সত্যিই সবার প্রিয় ছিল। শুকনা পাতরা গড়ন, লম্বা চুল, টানা টানা চোখÑ সব মিলিয়ে ছবির মতো সুন্দর। শিমি যে সুন্দরী ছিল না তা নয়। কিন্তু কোথায যেন একটা কমতি ছিল। তাছাড়া ইবু আর প্রিয়তার সম্পর্কটা এতই গভরি ছিল যে তাদের স্বপ্নীল ভূবনে শিমির কোন স্থান ছিল না। থাকলেও তা ছিল উপেতি।
নাহ! শিমি কোন প্রতিযোগিতায় যায়নি। ভালোবাসায় প্রতিযোগিতা চলে না। এটা কোন সাধারণ খেলা নয়। এ খেলার প্রতিপ অদৃশ্য, কিন্তু ভীষণ শক্তিশালী। কিন্তু এ কথা সত্য যে শিমি ইবুকে হারাতে চায়নি। শুধু এ কারণেই সে প্রিয়তার সাতে বন্দুত্ব গড়ে তোলে।
প্রিযতার এমন কোন কথা ছিল না যা শিমি জানত না। না জানার কোন কারণই নেই। বরং প্রিয়তার সাথে ইবুর আত্বিক সর্ম্পকের অনেকটাই গড়ে দেয় সে। সমযের আবর্তে ইবু তা বুজেছির হয়তো। কিন্তু কি াাসে যায তাতে?
প্রিয়তার সাথে প্রায়ই ইবুর তুমুল ঝগড়া হতো। কারণে অকারণে। তারপর চলত অভিমান। প্রিযতা প্রতিবার ঝগড়ার পর কান ধরে কসম কাটত এ জনমে সে াার ইবুর সাথে কথা বলবে না। তার কথা শুনে শিমি হাসত। পরণেই ভাবত প্রিয়তার অভিমানটা কতটাই না স্বচ্ছ। একবিংশ শতাব্দীর এই যান্ত্রিক সময়ে এমন স্বচ্ছতা ঠিক মানায় না।
পৃথিবীর সব সব ভারোবাসা কোথাও না কোথাও অসম্পুর্ণ থাকে। প্রিয়তার েেত্রও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অনার্স ফাইনাল পরীার আগে হঠাৎ তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। ছেলে পাইলট। আকাশে উড়ে বেড়ায়। এমন পাত্র হাতছাড়া করার সাহস তার বাবা-মা’র ছিল না।
বিয়ের খবর শুনে ইবু চুপ থাকে। যেন কোন ভাবনাই তার মাথায আসে না। শিমির ইবুকে পাবার বাসনা ছির ঠিকই। সে ভালোবাসত একেবারে হৃদযের বিশুদ্ধতম উচ্চারণ থেকে। তারপরও কোথায যেন তার আত্মা কেঁপে উঠল। ইবুর জন্য মন খারাপ লাগল তার।
এ সময়টাতে মানুষ অদ্ভূত ধরণের ভুল করে। এসব ভুল মাঝে মাঝে শুদ্ধ হযে যায়। তবে অধিকাংশই মহাভুলে পরিনত হয়। ইবুর েেত ভুল ছির কিনা শিমি তা জানে না। তবে রাতের অন্ধকারে প্রিয়তাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি সে।
ইবুর কাছে শিমির কোন দাবী ছিল না। কোন ভালোবাসার অধিকার ছিল না। শুধু জানল তারা বেশ ভারোই আছে। শিমিও বাস্তবতার বেড়াজালে নিজেকে বন্দী করে ফেলল।
ডাক্তারী পাশ করার পর শিমির বিযে ঠিক হযে গেল এক সাংবাদিকের সাথে। সাংবাদিকদের কোন সময়ই শিমি পছন্দ করেনি। তাছাড়া তার জীবনের সবটুকু জুড়ে ছিল ইবুর স্মৃতি। কোন কোন মানুষ এসব স্মৃতি নিয়েই সারাজীবন পার করে দিতে চায়।
ডা. শিমিও তাই করেছিল। সে পালিয়ে গিয়েছিল সবার কাছ থেকে। তাই আর বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি। এ নিয়ে তার কোন আফসোসও ছিল না। সবার জীবনে সব কিছু হয় না।
ইবু আর প্রিয়তার সংসার বেশ ভালোই চলছিল। মাঝে মাঝে তাদের খোঁজ খবর নিত শিমি। প্রিয়তা মাঝে মাঝেই অভিমান করত। শিমি গিয়ে বুঝিয়ে আসত তাকে।
এক চাঁদনী রাতে প্রিয়তা আর ইবু ছাদে বসে ছিল। গল্প করছিল দুজন। নানা কথার ভীড়ে কখন যেন দুজনের মন বদলে যায়। প্রিয়তা রেগে ওঠে ইবুর ওপর। ঘটনা সামান্যই, কিন্তু ইবুও রেগে যায সেদিন। রাগ করে পা দিয়ে লাথি দেয় প্রিয়তাকে। কিন্তু এটা যে কত বড় সর্বনাশ ডেকে আনবে তা সে জানত না।
প্রিয়তা তার সামলাতে না পেরে উল্টে পরে যায় ছাদ থেকে। ইবু শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। কিছুণের জন্য হয়তো তার পৃথিবি থেমে গিয়েছিল। এটাকে সে ঘটনা বলবে না দূর্ঘটনা বলবে ছিক বুঝতে পারে না। সে দৌড়ে নিচে নেমে আসে। প্রিয়তা তখনো নিঃশ্বাস নিচ্ছে। ইবু পাগলের মতো করে তাকে জড়িয়ে ধরে। চৎকার করে কাঁদতে থাকে। একসময প্রিয়তা হাসতে থাকে। হাসিমুখেই সে ইবুর বুকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
ইবু চিৎকার করে প্রিয়তা প্রিয়তা ডাকতে থাকে। কিন্তু তার বহু াাগেই সে নিঃশব্দের দেশে চলে যায়। সে প্রিযতার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে না। মূহুর্তে এলাকার লোক জমে যায়। সবাই বলতে থাকে, খুনী, খুনী। দুহাত দিযে কান চেঁপে ধরে ইবু। দৌড়ে আসে বাসায়। তখনো তার কানে খুনী শব্দটা ঝুলে থাকে।
ইবু এক দৃষ্টিতে অবাক হযে আযনায় তাকে দেখে। সে কি সত্যিই খুনী নাকি এটা একটা এক্সিডেন্ট। হঠাৎ আয়নায় সে তার ডান পা দেখতে পায়। হ্যাঁ, এই সেই পা। যে পা দিযে সে লাথি দিযেছিল প্রিয়তাকে। নিছক দুষ্টামীর ছলেই দিয়ে ছিল। কিন্তু সে দুষ্টামী এখন াার দুষ্টামী নেই। এখন তা জীবনের সবচে বড় কলঙ্কে পরিনত হয়েছে।
ডান াপ ধরে চিৎকার কতরে ইবু। খুনী াামি না। খুনী হচ্ছে এই পা। এই পা আমার সাথে প্রতারণা করেছে। এই পায়ের কোন দরকার নেই।
ইবু দৌড়ে যায় রান্নাঘরে। বটি দিয়ে সে কোপ বসায় পায়ে। ত বিত হয় তার পা। রক্তে ভরে যায পুরোটা ঘর।
ইবুকে পুশিশ উদ্ধার করে অজ্ঞান অবস্থায়। প্রিয়তার বাবা তার নামে খুনের কেস ঠুকে দেয়। কিন্তু জ্ঞান ফেরার পর জানা গেল ইবু াার সেই আগের ইবু নেই। তার পাটা কেটে ফেরতে হযেছে। অত্যাধিক রক্তক্সরণ আর মানসিক চাপে সে পাগর হযে গেছে।
প্রিয়তার বাবার কেস চলতে থাকে। খুনের দায়ে ইবুর ফাঁসির াাদেশ হয়। কিন্তু পাগল আসামীকে তো আর ফাসী দেয়া যায় না। তাই তাকে পাঠানো হলো মানসিক হাসপাতালে।
এরপর চারবছর কেটে গেছে। শিমি ইচ্ছে করেই ইবুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে। এই চার বছর ইবু কোন কথা বলেনি। মাঝে মাঝে গভীর রাতে শুধু চিৎকার করে উঠত সে। তারপর সারাদিন চুপচাপ। কোন কথা নেই। একটা পাথর মানুষ হযে গেছে সে।
ইবু কি সত্যিই দোষী? মাঝে মাঝে এসব নিযে ভাবত ডা. শিমি। জীবনকে সে যত সহজ করে দেখত আসলে এত সহজ নয়।
গত তিন বছর ডা.শিমি ইবুর চিকিৎসা করাচ্ছে। তার মানসিক ভারসাম্য একবারেই নেই। ইবু তার সমন্ত সত্বা জুড়ে কেবর প্রিযতাকে রেখেছে। তাই কোনভাবেই তার ঘুমিয়ে পড়া স্মৃতি সহজে জাগানো সম্ভব না।
মাঝে মাঝে ডা. শিমির মনে হতো এত কিছু পড়ে সে কি এমন ডাক্তার হয়েছে? যে বিদ্যা তাকে একজন মানুষকে সুস্থ করে তুলতে পারে না। চিন্তাটা মাথায আসার পর পরই হেসেছে সে। কতটা দূর্বল হযে পড়েছে সে। কতটা অসহায় সে নিযতির কাছে।
আজ এই পিচঢালা পথের মাঝে দাঁড়িযে সব হিসেব নিকেশ শেষ করতে ইচ্ছে করে শিমির। তিনতলায় গেলেই ানেক সত্যের মুখোমুখি হতে হবে তার। সে কি পারবে সে সত্যকে মেনে নিতে?
ধরি পায়ে পথটা চলতে শুরু করে ডা. শিমি। শালিক দুটো এখন াার গাছের ডালে বসে নেই। তারও হয়তো ছটেছে কোন শিকার ধরতে। শুধু ভাঙ্গা শুকনো ডালটা ঝুলে আছে গাছটায়।
মিমি পথটা মেস করে। যেন হাজার বছরের কান্তি জরানো পথটা শেস হলো তার। অনেক গল্পের পরি সমাপ্তি গটল এইমাত্র। কোন কিছুই াার অবশিষ্ট নেই। সে দ্রুত পায়ে সিঁড়ি বেযে তিনতলায় উঠে যায়।
একটা হলুদ শাড়ি পড়েছে সে। শাড়ির সাথে মিলিয়ে দিয়েছে হলুদ টিপ। কেবিনে ঢুকতেই তার উপর চোখ পড়র ইবুর। ডা. শিমি কিছু বলল না। এগিয়ে গিয়ে বসল ইবুর সামনে। ইবু আগের মতোই স্তব্ধ হযে াাছে। শিমি বলল, ইবু, াামি জানি তুমি শুনতে পাও।
ইবু একটুও নড়ল না।
ডা. শিমি াাবারো বলল, াামি জানি তুমি সব শুনতে পাও। আমার জানা মতে তুমি মাসখানেক আগেই তোমার স্মৃতি শক্তি ফিরে পেয়েছ। কিন্তু এখনো কেন পাগল হযে আছো বুঝতে পারছি না। তুমি কি মৃত্যুকে ভয় পাও?
ইবু একটুও নড়র না। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
শিমি চিৎকার করে উঠল, আমি ডাক্তার আমি জানি তুমি সুস্থ। তুমি জানো তুমি সুস্থ হযে উঠলে তোমার ফাসী হযে যাবে। তাই তুমি এখন অসুস্ততার ভান করছ। কিন্তু যেভাবেই হোক তুমি খুনী। তুমি শুধু প্রিয়তাকে থুন করনি আমাকেও খনি করেছ।
ইবুর চোখ বেয়ে অশ্র“ গড়িয়ে পড়ে। সে কোন কথা বলে না।
ডা. শিমি তখনো উত্তেজিত। সে বলেই চরছে, অপরাধি হয়ে তুমি পালিয়ে থাকছ। কেন? কেন তুমি এমন করবে? কেন তুমি আমাকেও কাঁদাবে?
ডা. শিমি বেড়িয়ে যায়। অভিমান হয তার। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে আসে। কেন জানি তার সারা জীবনের কষ্টগুলো বেড়িয়ে আসতে থাকে। নিজেকে কিছুতেই সামলাতে পারে না সে।
সারটা বিকেল শিমি একা একা হাঁটে। সে সব সমযই একা ছিল। তার পাশে হাঁটার মতো কেউ নেই। সন্ধ্যার একটু াাগে হাটতে হাটতে সে এসে দাঁড়ায় পিচঢালা পথটার মাঝে। সকারে এখানে দাঁড়িযে সে জবিনের ানেক র্গপ ভেবে নিযেছে। কি রাভ এসব ভেবে? নিযতিকে তো আর বদলে দেয়া সম্ভব না।
ডা. শিমি জানে সারা জীবন সে নিযতি বদরাতে পারেনি। াাজো পারবে না। যে ইবুকে সে াপরাধী বলছে সে ইচ্ছে করে প্রিয়তাকে মেরে ফেলেনি। তার ইবুকে সে চেনে। সে এতটা নিচ না।
ইবু যদি তার পাপের প্রায়শ্চিত্ব করতে নিরবে বেঁচে থাকতে চায় তবে কেন সে তাকে বেঁচে থাকার সুযোগ দেবে না? কেন সে তাকে খুনী বলবে?
কেন জানি সকালের আচরণের জন্য ডা. শিমির বিরক্ত লাগল। মনে হলো ্টবিুর কাছে তার মা চাওয়া উচিত। ভালোবাসার মানুষের কাছে পরাজয় মেনে নিতে সে একটুও লজ্জাবোধ করছে না।
শিমি পিচঢালা পথ ধরে এগিযে যাচ্ছে। কৃষ্ণচূড়া গাছের দিকে আবারো তাকাল সে। মরা ডালের উপর একটা শালিক ঝিম মেরে বসে আছে। এই সন্দ্যাতেও তার যেন কোন তাড়া নেই।
তিনতলা পৌঁছাতেই তার পা অবশ হয়ে এলো। একটু আগেই ঘটনাটা ঘটেছে। ইবু জানালার কাঁচ ভেঙ্গে তার বাঁ পা ত বিত করেছে। রক্তরণে জ্ঞান হারিযে ফেলেছে সে।
পাগলের মতো চিৎকার করতে করতে দৌড়ে ওটিতে যায ডা. শিমি। ইবুর শ্বাস তখনো চলছে। ডা. শামসুদ্দিন সফল অস্ত্রপাচার করেছেন তার। ওটি থেকে বের হযে শুধু বললেন, আপনার সব সাধনা বিফলে গেল। এ রোগীর আর কোনদিন মানসিক ভারসাম্য ফিরে আসবে না।
শিমি এক দৃষ্টিতে জানালার দিকে তাকিয়ে। তার চোখটা ঝাপসা হয়ে আসছে। বাইরে রাত নেমে গেছে। অন্ধকার ছেয়ে নিচ্ছে পুরোটা আকাশ। ইবুর শ্বাস তখনো চলছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:২১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×