ব্লগ কি ? কিভাবে লিখতে হয় ? একটা ব্লগ কিভাবে কালোত্তির্ণ হতে পারে ? এ সকল প্রশ্নের উত্তর একজন মাত্র ব্লগারের ব্লগ পড়ে উত্তর দেয়া সম্ভব ছিল ।। কী ছিলনা তার ব্লগে ? সাহিত্য,ইতিহাস, মানচিত্র,অর্থনীতি, খেলা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ইস্যু পর্যন্ত তার ব্লগে ঠাই পেত। এই ব্লগে আমার ব্লগীন জীবন প্রায় পাচ বছর হলো,খুব নিয়মিত লিখতে পারিনি কখনোই।। তবে পড়ে গেছি সকল সময়। নিরন্তর পড়ার জন্য এই ব্লগের প্রতি আমার যে আকর্ষণ তার একটি বড় কারণ ছিল----ইমন যুবায়ের। এ শুধু আমার কথা নয় বোধ করি এ ব্লগের হাজারো পাঠক এই একই কথা বলবেন।। প্রকৃত পক্ষে ইমন যুবায়ের একটি সমুদ্রের নাম যার পানিতে স্নাত করে আমরা ধন্য হতাম। এ কথা বলতে আমার মোটেও দ্বিধা নেই যে, চলমান অনেক জনপ্রিয় লেখকের থেকে যে কোন অংশে কম ছিলেন না ---ইমন জুবায়ের। বড় অসময়ে ৩রা জানুয়ারী ২০১৩ -তে এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন আধূনিক ঘরানার এই কলম যাদুকর। ছোট গল্প লিখে গেছেন নিজের ষ্টাইলে, নিজের মত করে। ব্লগের গল্প যে এতটা উচ্চমানের সুখ পাঠ্য হতে পারে তা উনার লেখা না পড়লে বোঝা যাবে না ।
প্রতিযোগীতার এই যুগে নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মানুষ খুব কম-ই পাওয়া যায়। ব্লগে যারা লিখে থাকেন তারা ১০০% মনের তাগিদেই লিখে থাকেন। ইমন ভাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন সময় অনেক পরিশ্রমী পোষ্ট দিয়ে গেছেন যেগুলির সাহিত্যমান বা উপযোগীতা অনেক বেশী। নিজে ইতিহাসের ছাত্র ছিলেন বলে কিনা জানিনা ইতিহাস মূলক লেখায় ইমন ভায়ের অসাধারণ দক্ষতা ছিল। কালের গর্ভ থেকে ইতিহাস কে ব্লগের ফরম্যাটে তুলে আনতে পারতেন অবলীলায়। শুধু ইতিহাস কেন যখন তিনি ক্রিকেট নিয়ে লিখেছেন তখন উনাকে পুরাদস্তর ক্রিকেট বোদ্ধা বলেই মনে হয়েছে। আসলে ইমন ভাই ছিলেন--এই সময়ের একজন উন্নত সব্যসাচী লেখক।
আমার একান্ত একটা ব্যক্তিগত অনুভুতির কথা বলি----হুমায়ূন আহমেদ যেদিন মারা যায় সেদিন যখন আমার বুকে হাহাকার হয়েছিল- আমি এখন কার গল্প পড়ে আনন্দ পাবো??? সেদিন সত্যি যার নাম প্রথম মনে করে আমার এ মন স্বান্তনা পেয়েছিল সে এই ইমন যুবায়ের আমাদের খুব কাছের ইমন ভাই!!!!!!! আজ ইমন ভাই-ও নেই ! বাংলা ভাষার পাঠক কূল -এর জন্য এক ক্রান্তি কাল বৈকি ।
লেখার ইচ্ছে ছিল অনেক কিছুই, কিন্তু আমার সমস্ত ভাবনা স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে ইমন ভায়ের অস্তিত্বে।
সবশেষে উনার আত্বার শান্তি কামনা করি।।।।