মূল পোস্ট পড়ুন ওয়ার্ডপ্রেসে
সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা আমার বহুদিনের।
দু'দিন চলে ছাড়ার চেষ্টা। আর তৃতীয় দিনের মাথায় চেষ্টা ছাড়া। এই আবর্তে কেটে গেল কত বছর। ধুমপায়ীদের বিরূদ্ধে পৃথিবী বেশ জোড়েসোড়েই লেগেছে। তাও, দিনের শেষে নিজের বারান্দার নির্জনতায় বসে যখন একটা সিগারেট ধরাই তখনই মনটা কেমন উড়ুউড়ু হয়ে যা্য়। শুধুই হাত উঠানো, টানা, কিছু ধোঁয়া ছেড়ে বাকিটা গিলে ফেলা, হাত নামানো ..এসবের মধ্যে থিতে হয়ে আসে সারাদিনের গ্লানি। শহরের ধুলোময়লা, আর ফরমালিন-মেশানো তরকারীকে পেছনে ফেলে খুঁজে বেড়ায় বিশালতা কে। আর তখনই মনে ভীড় করে সব আকাশকুসুম প্রশ্ন।
ফটো: রয়টার্স
এইতো সেদিন - বারান্দায় বসে হঠাৎ খেয়াল হলো সাথে শুধুই এক জংধরা, পুরোনো লাইটার। জ্বলবে বলে ভরসা হয়না। তাও ঠুকলাম একবার। হলো না কিছুই। আরেকবার। নাহ্! কিচ্ছু না। নতুন লাইটার আছে পাশের ঘরের আলমারিতে। সেটা কি আনবো? নাহ্ ...যা আছে কপালে বলে আরো দশ-দশবার চালালাম চেষ্টা। মোট বারো বার। যাবো যাবো করে তেরবারের মত লাইটার ধরানোর চেষ্টা করতে গিয়েই পরলাম গভীর চিন্তায়।
হাতে পাওয়া তথ্য বলে, এ ধ্বজভঙ্গ লাইটার জ্বলবে না। তাও কেন আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি? নতুন লাইটারের উপর ভরসা না করে কেন আমি তেরতম বার চকমকি'র ধার ধারলাম? তাহলে কি আমার মনে এমন কোন ক্ষীণ বিশ্বার কাজ করেছে যে ভাগ্য আমার সাথে আছে? অথবা, অবশ্যই ভালো কিছু হবে?
মূল পোস্ট পড়ুন ওয়ার্ডপ্রেসে
আর না পড়তে চাইলে, শর্টকাট ঘটনা নিম্নরূপ: আমরা সবাই দৈনন্দিন বাধা বিপত্তি সত্বেও প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠি। লেখাপড়া করি। ইন্টারভিউ দি্ই। হাউমাউ টাইপের ভবিষ্যত-অন্ধকার প্রেমে পরি। কেন? প্রতিটি মানুষই বিশ্বাস করে তাঁর জীবনে ভালো কিছু আসবে। এই অটল বিশ্বাস থেকেই আমরা এই কাজগুলো করি। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, এই বিশ্বাস কিসের বা কাঁর উপর? প্রকৃতি, ঈশ্বর, মহাজাগতিক শক্তি ...যাই বলি না কেন, কিছু না কিছুর উপর বিশ্বাস রেখেই কিন্তু আমরা জীবন যাপন করছি।
ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরকে সম্পর্কে আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। এ গহ্বর চোখে দেখা যায় না - কেননা এটি এমনকি আলোকেও শুষে নেয়। যখন আশেপাশের গ্রহ, উপগ্রহ আর উল্কার গতিপথকে ব্ল্যাক হোলের মধ্যাকর্ষণ টেনে বাঁকিয়ে ফেলে - তখনই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন সেখানে একটি ব্ল্যাক হোল আছে। হয়তো ঈশ্বর / আল্লাহ্ / ভগবানের ব্যাপারটিও তেমনই। তাঁকে চোখে দেখা যায়না - কিন্তু অন্যের উপর তাঁর প্রভাব দেখে তাঁর অস্তিত্ব অনুধাবন করা যায়।
সংক্ষেপে, এই হলো আমার লাইটার খুঁজতে গিয়ে ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়ার গল্প।
ওহ আর সে লাইটার? তের বারের বার সে কিন্তু ঠিকই জ্বলে উঠেছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২১