ব্লগে জনৈক সালাম ঢাকা- সাহেব একটা পোস্ট করেছেন "জামাত হটাও" শিরোনামে। মতামত দেয়ার জন্য সালাম সাহেবকে ধন্যবাদ। কিন্তু কিছু কথা না বললেই নয়। সে জন্যই এই পোস্টের অবতারণা।
জনাব সালাম সাহেব লিখেছেন- "আর পাঁচ বছর জামাত ক্ষমতায় থাকলে দেশ জঙ্গীবাদে ভরে যাবে।"
জনাব সালাম সাহেব, আপনি কি করে এটা অনুধাবন করতে পারলেন? আপনি কি জামাতের কোন নেতা কিংবা দায়িত্বশীল। আপনার কথা শুনে মনে হয়, আপনি তেমনি কেউ হবেন। আর না হলে জামাত ক্ষমতায় থাকলে দেশ জঙ্গীবাদে ভরে এই তথ্য আপনি দিলেন কি করে?
আপনি তো জামাতের অনেককে চেনেন, তাই না। তারা আপনার আশেপাশেই আছেন। আচ্ছা আপনি কি বলতে পারেন, আপনার পরিচিত একজন জামাতের কর্মী বা রুকন জঙ্গীবাদের বা জঙ্গী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত? পারবেন না। পারবেন শুধু কতিপয় পত্রিকার গাঁজাখুরী রিপোর্টের কথা বলতে। সারাদেশ ব্যাপী জঙ্গীবাদের যে ভয়াবহ চেহারা আমরা বিগত কয়েক মাসে দেখেছি, এর সাথে কি জামাতের নূ্যনতম সম্পর্ক আছে? অনেকেই তো ধরা পড়েছেন, তাদের কেউ কি জামাতের কর্মী বা রুকন? বা কোন পর্যায়ের নেতা? তা নয়। বরং পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ এর বিপরীত।
গতকাল পত্রিকায় দেখলাম, বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, সরকার নাকি গ্রেফতারকৃত জঙ্গী নেতাদের মুখ দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার কথা বের করতে চেষ্টা করছেন। এর পরিণতি যে ভালো হবে না তাও তিনি বললেন। কথা হলো, জঙ্গী নেতারা কি বললেন না বললেন তা কিন্তুআমরা কেউ জানি না। পত্রিকায়ও এ ব্যাপারে কোন রিপোর্ট ছাপা হয় নি। তাহলে শেখ হাসিনা কি করে আগেভাগেই বলতে পারছেন, তার দলীয় নেতাকর্মীদের জড়ানোর চেষ্টা চলছে। নাকি সত্যি সত্যি তার দলীয় নেতাকর্মীরাই এর সাথে জড়িত। এখন নাম প্রকাশ হয়ে যাবে এই ভয়েই তিনি আগেভাগে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করছেন! বিষয়টা অস্বাভাবিক কিছুনয়, ঐ যে প্রবাদ আছে না- "ঠাকুর ঘরে কে রে?" তার উত্তরে ভেতর থেকে জবাব আসে - "আমি কলা খাই না"। এখন বুঝুন ঠ্যালা। কলা খায় কি না, এ কথা কেউ জিজ্ঞেস করে নি, কিন্তু খাদক নিজেই বলছেন- কলা খাই না। তার মানে হলো - এতক্ষণ তো খাচ্ছিলামই, কিন্তু এখন খাই না। আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রীর অবস্থা এখন ঠিক তেমনই।
অতএব, জনাব সালাম সাহেব, জামাত আরও পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলে দেশ জঙ্গীবাদে ভরে যাবে, আপনার এই বক্তব্য একেবারেই ভুল এবং একপেশে। বরং একটা সত্যি এবং আপনার জন্য অপ্রিয় কথা বলি- এই দেশের ভবিষ্যৎ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এখন নির্ভর করছে জামাতের হাতে। সাধারণ জনগণ তাই জামাতের কাতারে শামিল হচ্ছে দলে দলে। আর আপনারা দিন দিন রসাতলে যাচ্ছেন। আর একটা কথা, জামাতের জনশক্তির সাথে যদি আপনাদের মোকাবিলা করতে হয়, তাহলে তা করতে হবে আদর্শিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে। এইভাবে আবোল-তাবোল কথা বলে আপনারা নিজেদেরকে নিজেরাই অর্থহীন এবং হাস্যকর করে তুলবেন সবার কাছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০