somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ন্যাচারাল ডিজাইন

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের এই পৃথিবী যদি গোলকার বা গোলের মত আকৃতি না হত তাহলে কেমন হত ? ধারণা মতে, জিওমেট্রিক্যাল যে কয়টা বেসিক শেপ দিয়ে আমরা সব সময় কাজ করি বা দেখা যাবে পরীক্ষা করলে এইগুলোর আলোকে করা প্রাকৃতিক ডিজাইনকে স্টেবল ধরা যেতে পারে।

আমরা কিন্তু বিশ্লেষণ পরে করেছি, এই প্রক্রিয়ায় প্রকৃতি আগে থেকেই চলে আসছে। প্রাকৃতিক কাজ থেকেই অনেক গাণিতিক সূত্র বা স্ট্রাকচারাল ভিউ বা সবচেয়ে কম ইনারজিতে তৈরি পারফেক্ট ডিজাইন কনসেপ্ট আমরা সহজে পেয়ে যাই। তার মানে প্রকৃতি আমাদের একধরণের আইডিয়া বা শিক্ষা দিচ্ছে প্রতিনিয়ত, আমাদের কীভাবে কাজ করা দরকার বা চিন্তা করা দরকার ইত্যাদি। একটা ঊদাহরণ দেই, জাপানে প্রথম "মস" শৈবালের উপর গবেষণা করে সিটি প্ল্যান করা হয়েছে, যা একেবারে নিখুঁত। মস আসলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বংশ বিস্তারের সময় মূল ও অসংখ্য উপশাখার তৈরি করে থাকে। এরপর আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডে একইভাবে সেই কনসেপ্ট কাজে লাগিয়ে একটি প্রধান শাখা থেকে অন্যান্য দিকে সবচেয়ে ভালো এবং তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেন রাস্তার উপায় বের করেছিল। এরকম বহু কাজ হচ্ছে প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ করে। নাসার জন্য অনেকগুলো রোবটের পায়ের ডিজাইন নেয়া হয়েছিল বহু পা বিশিষ্ট কীট পতঙ্গ থেকে।

এই “সিমফনিই” বা এর অন্তঃনিহিত সুশৃঙ্খল গোপন অনুপাত আমাদের গাণিতিক সব হিসাবের শুরুতে চিন্তা করতে শিখায় এবং একে বাস্তব জীবনের সকল সমস্যার সমাধানের এক অণুলিপি বলা যেতে পারে।

আমরা সবকিছুতে একটা শৃঙ্খল পরিয়ে দিতে চাই, একটা সিমিলারিটি চাই। আর ব্যতিক্রম আমাদের দ্বিধায় ফেলে দেয়। ঠিক যেমনটি সংখ্যা গুনতে থাকলে ৫ এরপর ২৩ দেখলে অনেকেই বলবে, ওইখানে ৬ হবে। ইতিহাস বিবেচনা করলে দেখা যাবে, দিনদিন মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিস হিসাবের দরকার হতে থাকে। হাজার বছর ধরে চলে আসা প্রকৃতি এবং মানুষের হিসাবের প্রয়োজন আমাদেরকে একটি নিয়মে বাঁধতে চায় আর সেটাই ভাবা হয় জগতের অন্তঃনিহিত ভাষা, যাকে আমরা গণিত বলি। কিন্তু আসলেই কী প্রকৃতিতে সকল জীব হিসেব কষে কাজ করে বা ধরলাম মসের মত হিসেব কষে ক্ষুদ্রতম পথে শাখা বিছানোর একটা সুন্দর বিদ্যা আত্মস্থ করে, না তাদের জেনেটিক কোডে সংখ্যার আইডিয়া আগেই রাখা হয়েছে। আর এইখানেই রয়েছে জগতের স্রষ্টার মহান ভূমিকা।

আর যদি তাই হয় তাহলে আসল ঘটনায় আসি, আজকে আসছিলাম ট্রেনে। অনেক্ষণ পরে দেখলাম ছোট একটা মেয়ে তার বাবকে নিয়ে উঠেছে। কিভাবে যেন তারা ঠিক আমার পাশে এসে বসলো। আমি তখনো জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে। এক সময় দেখলাম বাচ্চাটিকে তার বাবা শান্ত রাখার জন্য ব্যাগ থেকে একটা খেলানা বের করে দিলেন। খেলনাটা এরকম যে একটা স্বচ্ছ বৃত্তাকার প্লাসটিকের মধ্যে একটা হাঁস পানিতে ভাসছে এবং সাথে কিছু খুব ছোট বিভিন্ন রঙের বল। ব্যাপার হচ্ছে , যেভাবেই এটাকে ঘুরানো হোক না কেন প্লাস্টিকের হাঁস সব সময়ই সোজা থাকছে সব দিক থেকেই একে সমান দেখাচ্ছে। আমার মাথায় তখন কেন যেন একটা জিনিসই ঘুরছিল সেটা হল, প্রকৃতি যদি নিয়ম মোতাবেক সবচাইতে স্টেবল ডিজাইন করতে চেষ্টা করে তাহলে এই বিশ্বভ্রমান্ডের ডিজাইন অন্যভাবে করা সম্ভব হোত না। অন্য ডিজাইনে কোনভাবেই আমরা ভারসাম্য রাখতে পারবো না। চারকোণা গ্রহ কি হতে পারতো না এই ভাবে কেউ কি ভেবে দেখেছি ?? সবকিছুতেই কেন গোলাকার বা বৃত্তের প্রভাব বেশী ? ন্যাচারাল ডিজাইন অ্যানালাইসিস করলে দেখা যাবে এটাই সৌরজগতের জন্য পারফেক্ট। আমাদের সৌরজগতের ঠিক সেন্টারে গ্যাস বলয় নিয়ে নিজের অক্ষে ঘুরে চলেছে বাকী সব গ্রহ ও নক্ষত্রপুঞ্জ। যদি শুধু পৃথিবীর কথা চিন্তা করি, সেখানে আমাদের মহাদেশগুলো প্লেটের মত সরে যাচ্ছে সবসময়ই কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না। যেমনটি সেই বাচ্চা মেয়েটি যখন বলটি ঘুরাচ্ছে.. বলের সাথে তুলনা করলে আমাদের নীল আকাশও পরিবর্তনের মত মেয়েটির বলের উপরের সারফেস বদলাচ্ছে কিন্তু খেলনা হাঁস সব ক্ষেত্রেই একটা ভারসাম্যে রাখছে, যেমনটি আমরা সবাই।


প্রতিনিয়ত আমি ভাবী কত অসাধারণ এক মায়াবী সংখ্যার খেলা আমাদের ঘিরে রেখেছে। আমরা কেউ এই সাংকেতিক কোড ধরতে পারছি কেউ না। ব্যতিক্রম আমাদের দ্বিধায় ফেলে না বরং চিন্তার নতুন দিক খুলে দেয়। আমি বিমুগ্ধতায় হারাতে থাকি !! বলে উঠি , "আহা কি অসাধারণ"।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ, চীন ও ভারত: বিনিয়োগ, কূটনীতি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:১০


প্রতিকী ছবি

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সমীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদৃশ্য দোলনায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮



ভোরের রোদ্র এসে ঘাসের শিশিরে মেঘের দেশে চলে যেতে বলে
শিশির মেঘের দেশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঘাসের মাঝে ফিরে আসে-
বৃষ্টি হাসে শিশিরের কথায়। তাহলে আমরা দু’জন কেন প্রিয়?
এক জুটিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। শনিবার (২৯ মার্চ) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনুস: এক নতুন স্টেটসম্যানের উত্থান

লিখেছেন মুনতাসির রাসেল, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ড. মুহাম্মদ ইউনুস ধীরে ধীরে রাজনীতির এক নতুন স্তরে পদার্পণ করছেন—একজন স্টেটসম্যান হিসেবে। তার রাজনৈতিক যাত্রা হয়তো এখনও পূর্ণতা পায়নি, তবে গতিপথ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে মেপে নেয়া,... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর কেমন হলো ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৮


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এখনো চীন সফরে রয়েছেন। চীন সফর কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাইপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাসেক্সফুল সফর আর কোনো দলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×