দৃশ্য ১
ঘটনা শুরু করি প্রথম থেকে। আমি বইসা বইসা আমার নাক চুলকাইতেছিলাম, এমন সময় শিবলী ভাই ফুনাইল। আমারে কইল যে, এক্ষণি সে রওনা দিতেছে। ত আমিও দিলাম রওনা। রাস্তায় এক দোস্ট আসাকাইল, কই যাস? আমি কইলাম, দোস্ত কইস না, বিশাল ব্লগীয় আড্ডা। দেশের সব নারী জাতি আসতেছে। আমি আড্ডা দিতে গেলাম। সেলফুনে তাকাই দেখি বাজে বিকাল ৫ টা।
দৃশ্য ২
স্টেডিয়াম গেইটের সামনে শিবলী ভাই খাঁড়ায়া আছে। হের পিছে এক পাঠক বাই (হেয় রেজিস্ট্রেশন করে নাই) সাথে আমি। এই হইল ঘটনা। মাঠ খালি। এলাকা খাঁ খাঁ। বৃত্তবন্দীর আগমন। আড্ডায় এখনও খাঁ খাঁ অবস্থা বিরাজমান। আমি বাদে সবডি হালকা পাতলা। সব মিলায়া এক আর আমি এক। এইটুকুই তখনও আড্ডার ওজন।
আমি মনে মনে আমার নতুন গল্পের প্লট ঠিক করে ফেলছি। সবাইকে বলা হবে যে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি সবাইকে চাইনিজ খাওয়াইছে। এর পর ঘরে এসে গুগল থেকে খাবারদাবারের ছবিসহ পোস্টায়া সবার আফসুসের মাত্রা বাড়ানো হবে। কীভাবে এই পোস্ট আরও বিশ্বাসযোগ্য করা যায়, সেটা নিয়ে গবেষণা শুরু করলাম।
ইতিহাসের সবচেয়ে ফ্লপ আড্ডা হয় কীনা, সেই ভয়ে আমরা তখন মূহ্যমান। সবাই ফুনে বলল অমুক কারণে আসবে না,। তমুক কারণে আসবে না। সামছা আকিদা জাহান এর ফুনও অফ। উনি ঢাকার বাইরে থেকে আসতেছেন বলেছেন, কিন্তু কুন খবরই নাই। আমি মনে মনে ভাবতাছি মান সম্মান কোন পকেটে রাখুম।
দৃশ্য ৩
কালপুরুষ আর শ্রাবণসন্ধ্যার আগমন। আমরা ত ভাবতাছি হেরা কী কইব যে, কেউ নাই এইখানে, উলটা চইলা যদি চইলা যায় !! তয়, আমাদের থেকেই একজন(নাম কমুনা, হেরটা হেয় কমেন্টাক) ভবিষ্যত বাণী করল, নাহ কালপুরুষদা যাবেন না। আর যেতে চাইলে বললেই হবে যে, ইফতারীর পরে কেউ একজন আসতেছে(বুইঝা লন)। ব্লগীয় আড্ডায় মজা জমা শুরু হল সবে। রেস্টুরেন্টে বসব আমরা, রওনা দেয়ার মুহূর্তে হাসান মাহবুব ভাইয়ের আগমন (ভাইজান বড়ই হালকা, জোরে বাতাস আসলে কী না কী হয়ে যায় ভেবে একটু টেনশনে পড়ে গেছিলাম)। সবাই মিলে ইফতারীতে গমন। এমন সময় সারপ্রাইজ, জানাপুর আগমন। পুরা আড্ডা জমে গেল তখন থেকে।
ইফতারী পুরাটাই কালপুরুষদার সৌজন্যে। এই ব্যাপারে বৃত্তবন্দীর মুখের হাসি ছিল দেখার মতন।
ইফতারীর প্লেট আলাদা আলাদা। তাই শিবলী ভাইয়ের ৩,৪,৫ ঘুটা দিয়া খাইতে হয় নাই। সুতরাং আমি খুশি।
শ্রাবণসন্ধ্যার ক্যামেরায় একগাদা ফটো তুলা। সবাই দাঁত বাইর কইরা হাসছিল।
জানাপু কার সাথে জানি মারপিট করে আসছে। থুতনীর নিচে ব্যান্ডেজ। পুরা খারাপ অবস্থা টাইপ না হলেও অর্ধেক খারাপ অবস্থা।
হাসান মাহবুব ভাইএর সাথে কারা যেন হকিস্টিক নিয়ে পিটাপিটি করছে, মতান্তরে কেউ ফুল স্পীডে ফ্যান ছাড়ছিল, হেয় উইড়া যাইয়া হাঁটুতে ব্যাথা পাইছে। যদিও শেষমেষ উনি কোনটাই স্বীকার করেন নাই।
বড়ই জমছে। আমরা সবাই মিলে অনেক মজা করছি। কালপুরুষদার বাসায় আরেকটা আড্ডা নিয়ে মোটামুটি কথা পাকা, সেইখানেও সব খানাপিনা উনার সৌজন্যেই হবে বলে উনি আশা দিয়েছেন (আসলে দেন নাই, আমরাই আশা করতেছি। উনি নাকি গেটে চাঁদা তোলার লোক বসাবেন!!)।
সামছা আকিদা জাহান এখনও নাই। আমরা মনে মন বড়ই বেচেইন। সবাই উনার জন্য অনেক আগ্রহে।
দৃশ্য ৪
রেস্টুরেন্ট থেকে নেমেই দেখি কৌশিক ভাইয়ের আগমন হেলমেট আর বাইক ছাড়াই। এতক্ষণে একজন শক্তপোক্ত মানুষের দেখা পাইলাম। সবাই আবার স্টেডিয়ামের দিকে রওনা দিলাম। এইবার কার পকেট থেকে চটপটি ফুচকা খাওয়া যায়, সেইটা নিয়া বৃত্তবন্দীকে বড়ই চিন্তিত মনে হইল।
অবশেষে জানাপু সকলের ইচ্ছা পূরণ করিলেন। কৌশিকভাই চটপটি আর বাকি সবাই ফুচকা খাইলাম। কৌশিক ভাই চা খাওয়াইছিল। ব্লগের উইঠার্নরে নিয়া ব্যাপক আলুচনা হইল। হেয় অনেক বড় টপিক আছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের আগমন। তিনি আমাদের সবাইকেই চেনেন। হাসান মাহবুবের বিশেষ ভক্ত বলেই মনে হল। মোটামুটি সবাই মিলে জমপেশ আড্ডা হল। আবার ফটোসেশন। আমি আবার সবগুলা দাঁত বের করে এত্তগুলা ছবি তুললাম(নিজের আর অপরের, তয় আমার দাঁত ঠিকই বাইরে ছিল)।
মিলটন ভাইয়ের সপরিবারে আগমন হল। সবাই মিলে চরম আড্ডা। পুরা জমজমাট।
জানাপু জানাইল যে, উনি ব্লগে পুরা মাত্রায় এডিক্টেড। সারাদিন নাকি ব্লগেই থাকেন, কিন্তুক আমি বুঝছি, আমার নিক উনি ঠিকমত চিনেন নাই। অথচ, আমি শততম পুস্ট দিয়া ফেললাম। আর, ড্রাফটেও একগাদা।
কালপুরুষদা আর শ্রাবণসন্ধ্যা ঠিক করলেন চলে যাবেন। জানাপুও উঠলেন, কৌশিকদাও উঠলেন। আমি ভাবলাম, তাইলে আমিও যাইগা। উনারা যাবার পর, কাল্পুরুষদা ঠিক করলেন সামছা আকিদা কে আরেকবার ফুন করে জানাবেন যে, আপনি ছাড়াও আড্ডাতে আরও মেয়ে আসছে কিন্তুক। এমন সময় শিবলী ভাইয়ের থাকা জানা গেল, উনি অল্প কিছুক্ষনের মাঝেই আসতেছেন।
কাল্পুরুষদা তখন বসে গেলেন। উনি তাইলে দেখেই যাবেন। সাথে আমিও।
শয়তানের আগমন(আমার মতই ওজনদার পাবলিক)। মনির হাসানও আসলেন(ইনিও শক্তপোক্ত মানুষ)। একটু পর সামছা আপা দুই মেয়ে সহ হাজির । এতক্ষণে উনার আগমন (উনি যে এত সিনিয়র আমি বুঝিই নাই। এতক্ষণে টের পাইলাম, আপচুশ। তয় কাল্পুরুষদার চাইতে ছুট)।
আমি ভাবছিলাম একটু পর পর ফুচকা না খাইলে ব্যাটারা বসতেই দিব না। কিন্তু আমরা এত মানুষ দেইখা আর মনে হয় আমারে আর শয়তান ভাইরে দেইখা হেরা কিছু কইল না। সবাই মিলে এবার জমজমাট আড্ডা। বৃত্তবন্দীর ব্যাগ থেকে লাখে লাখে সিগারেট বাইর হইতে লাগল।
কিছুক্ষণ পরে নয়টায় সবাই কাল্পুরুষদা আর শ্রাবণসন্ধ্যাকে আমি আর শিবলী ভাই এগিয়ে দিতে উঠলাম। অনেক ঘুরেটুরে মিটারে যাবে এমন সিএনজি পাওয়া গেল। সেখানে উনারা উঠলেন। শিবলী ভাই আড্ডায় ফেরত গেলেন। আমি টায়ার্ড হয়ে বাসায় ফেরত আসলাম।
ছবিটবি সব শ্রাবণসন্ধ্যার কাছে। উনি সুদূর উত্তরা থেকে শুধু আড্ডা মারতেই আসছেন। হেরে ধরেন। পুরা আড্ডা জমায় কাল্পুরুষদার অবদান আসলেই অনেক।
সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা আর যারা আসেন নাই, তাদের জন্য সমবেদনা।
ও হ্যা, এইটা আমার শততম পুস্ট।