মুক্তিযুদ্ধকালে দেশদ্রোহিতার অপরাধে নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া ৪২ রাজাকার আলবদররা এখন কে কোথায় ? বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নেয়ায় অন্যদের পাশাপাশি এদের নিয়েও আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে । ৭১ মুক্তিকামী মানুষ দেশকে পাকহায়েনাদের হাত থেকে মুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে । এ সময় এই ৪২ ব্যাক্তিসহ অনেকেই পাকবাহিনির সহযোগী হিসেবে ভুমিকা রাখে । মুক্তিযুদ্ধের ন,মাস শেষে ১৬ই ডিসেম্বর পাকবাহিনির আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মুক্ত হলেও ওরা বসে চিল না ।এই সব অপরাধীরা বিদেশের মাটিতে পাকিস্তান পুনরুদ্ধার আন্দোলনের নামে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে । ১৯৭৩ সালের ১৮ই এপ্রিল
দালালি এবং স্বাধীনাতাবিরোধী কার্যকলাপের অবিযোগে ৪২ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। নাগরিকত্ব বাতিল হওয়াদের মধ্যে ছিল
১। গোলাম আজম
২। হুমায়ুন খাঁন পন্নি ( খালেদা সরকারের প্রথম মেয়াদের ডেপটি স্পিকার )
৩। রংপুরের কাজী কাদের
৪। ইকবাল ইদ্রিস (চট্রগ্রাম )
৫। রাঙ্গা মাটির রাজা ত্রিদিপ রায় চাকমা ।
৬। অধ্যাপক আব্দুল খালেক (টাঙ্গাইল )
৭। অধ্যাপক হারুনার রশিদ মোল্যা (খুলনা)
৮। অধ্যাপক এম এ হক (কুমিল্লা )
৯। এস এ শুক্কুর (কুমিল্লা )
১০। মওলানা আশরাফ আলি (কুমিল্লা )
১১। একিউএম শফিকুর রহমান (কুমিল্লা )
১২। মওলানা আব্দুর রহিম ( বরিশাল-৭৯ আইডিএল এর এমপি )
১৩। মওলানা তমিজউদ্দিন আহমদ (বরিশাল )
১৪। এ্যাডভোকেঠ জুলমত আলি খান (ময়ময়নসিংহ )
১৫। হামিদুল হক চৌধরী (ফেনী)
১৬। এটি সাদী (বগুড়া - জিয়ার মন্ত্রী )
১৭। আব্দুল জব্বার খদ্দর (নোয়াখালী )
১৮। শফিউল্লাহ বিএইচ বিটি (নোয়াখালী )
১৯। মহিউদ্দিন চৌধরী (নোয়াখালী )
২০। সায়েদুল হক (নোয়াখালী )
২১। নুরুল আমিন (কিশোরগন্জ-পাকিস্হানের যুদ্ধ কালিন প্রধান মন্ত্রী )
২২। অধ্যাপক ইউছুফ আলী (কিশোরগন্জ)
২৩। মাহমুদ আলী (কিশোরগন্জ )
২৪। মিসেস সৈয়েদা ফাতেমা সাদেক ( কিশোরগন্জ বিএনপির
সাবেক এমপি )
২৫। মিসেস শামীম হুসাইন (কিশোরগন্জ )
২৬। আবু তাহের আবদুল্লাহ (কিশোরগন্জ )
২৭। সৈয়েদ কামাল হোসেন রিজভী (কিশোরগন্জ )
২৮। সামছুউদ্দিন আহমেদ (কিশোরগন্জ )
২৯। এম এ লস্কর (কুমিল্লা )
৩০ । শেখ আনসার আলি (খুলনা -জামায়াতের সাবেক এমপি)
৩১ । ব্যারিষ্টার কোরবান আলি (পাবনা )
৩২ । সৈয়েদ আজগর হোসেন জায়েদী (পাবনা )
৩৩ । আক্কাস আলি (পাবনা )
৩৪ । রওশন আলী (পাবনা )
৩৫ । মওলানা ফজলুর রহমান (বরিশাল )
৩৬ । শাহজাহান চৌধরী (বরিশাল )
৩৭ । ফজলে রব চৌধরী (বরিশাল )
৩৮ । ওয়হিদুজ্জামান ( ফরিদপুর )
৩৯ । শামছুর রহমান (ফরিদপুর)
৪০ । গোলাম ওহেদ চৌধরী (ফরিদপুর)
৪১ । অধ্যাপক আব্দুল খালেক (ফরিদপুর )
৪২ । অধ্যাপক আব্দুল হাকিম (ফরিদপুর )
নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া সবার স্হাবর- অস্হাবর সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয় । ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে খোন্দকার মোশতাক ক্ষমতা দখল করার পর ৪২ ব্যাক্তির মধ্যে ১১ জনের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয় । সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক অধিকারও ফিরে পান । এ দালালদের কেউ কেউ মারা গেছে, কেউ কেউ বিদেশে পালিয়ে আছে আবার কেঊ কেঊ জামাতশিবির বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ।
সুত্র : বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকা, সমকাল পত্রিকা এবং ৭১ এর দালালেরা কে কোথায় নামক গ্রন্হ।