হঠাৎ মাথায় এলো বাংলা নববর্ষে পান্তাভাত ইলিশ নাম দিয়ে বাঙ্গাল খাবার তো খাই, এই নববর্ষে আজ সব নন বেঙ্গল খাবার খাব। আরো ভাল হয় আননোউন হলে।
শর্মা হাউজের চেহারা দেখেই আবার রাস্তায় বের হয়ে এলাম। বাইরে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে, ভিতরের জায়গা কিছু খালি হলে তারা ঢুকবে। অথচ তার পাশেই একটা দোকান হয়েছে নতুন, দারোয়ানটা ইনভাইট করছে তাদের খাবার টেস্ট করার জন্য, মানুষ তাকাচ্ছেও না। মজা লাগলো... পাশাপাশি দুটা দোকান -- একটার কাস্টমার লাইন ধরে, আর একটা কাস্টমারের জন্য লাইন ধরে। একটা থিওরী আছে অবশ্য এই ব্যাপারে, নতুন দোকানটা নাকি জানেই না তাদের কোথায় স্পেশালিটি -- হাসানের এই প্রশ্নের কাছে তারা ফেল মারছে

বিগ বাইটে গেলাম। তাদের chicken nugget বিএফসির মতই হবে ধরে নিয়ে অর্ডার দেওয়া হল। কিন্তু দেখলাম বড় রকমের ধরা খাইছি। এরা যেটা আনলো ওটা আসলে আলুর চপ। দেখে মনে হয় আলু কাটার সময় এক্সিডেন্টালি একটু চিকেন মেশ এর সাথে মিশে গেছে।
যাই হোক, বসুন্ধরার ফুড কোর্টে তাও জায়গা পাওয়া গেল। দক্ষিন ভারতীয় কিছু খাবার দিয়ে শুরু হল। দোসা আর দই ফুচকা। দই-ফুচকা-চানাচুর এগুলো একসাথে করলে স্বাদ কেমন হয় আগে এক্সপেরিমেন্ট করতে ইচ্ছা হয়নি। ইনকম্প্যাটিবল লাগে আমার কাছে।
বসুন্ধরা সিটিতে সমস্যা একটাই -- খাবার এর মান এর চেয়ে দাম বেশি। খালি কাপলদের জন্য সাইট এরেঞ্জ আর করলেই তো হয়না -- আমজনতার জন্য হলেও তো খাবার এর স্ট্যান্ডার্ড ঠিক রাখা উচিত। জিনিসপত্রের দাম যতটুকু বাড়ছে তারচেয়ে বেশি বাড়ছে ফাস্টফুড এর দাম। আগের চেয়ে ১০ টাকা বেশি প্রত্যেকটাই। অথচ ওগুলো বানাতে ম্যাটেরিয়াল কস্ট সেভাবে বাড়েনি।
বার আমরা খাব আইসক্রিম, ইমন খাবে কফি। সেই "দি আদি ন্যাসকাফ" কফি

আর কি খাওয়া যায় চিন্তা করছি -- হাসানের আইসক্রিম অলরেডি শেষ -- সে কফি খাবার ধান্দা করছে । ইয়ামিনদা বললেন হাসান আইসক্রিম খায় বার্গারের মত। কথাটা মনে হয় মিথ্যা না। হঠাতই প্রসংগ এলো নাচোস খাওয়ার ব্যাপারে।
নাচোস নিয়ে গত টার্মে প্রচুর কাজ করেছি। মানে অপারেটিং সিস্টেম নাচোস নিয়ে আরকি। তখন উইকিপিডিয়াতে ঘেটে দেখি নাচোস হল একটা মেক্সিকান খাবার। কম্পিউটার সায়েন্সের "রসহীন" (?) বিষয়ের সাথে একটু রস লাগানোর জন্যই বোধহয় uc-berkely এর প্রজেক্ট নাচোস এর নাম দেওয়া হয়েছে এই মেক্সিকান খাবার এর নামে। যদিও সেখানে NACHOS এর মানে বের করা হয়েছে Not Another Completely Heuristic Operating System. stanford আবার এই কাজের জন্য নিজস্ব সিস্টেম তৈরী করেছে, সেটার নাম Pintos. nachos এর মত pintos ও একটা মেক্সিকান খাবার।
প্রজেক্ট করার সময় থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল নাচোস টেস্ট করা দরকার। তবে বসুন্ধরা সিটিতে নাচোস পাওয়া যায় -- এটা জানতাম না। নাচোস নর্থ আমেরিকায় খুব একটা দামি খাবার না। তবে এখানে বিদেশি খাবার কিনা - ভাবই আলাদা

অর্ডার দেওয়া হল নাচোস। টেস্টি খাবার শুনে এসেছিলাম। মুখে দিয়ে দেখি এটা কি খাচ্ছি ? উপরে এত রসুন সস ? দেখে মনে হয় ম্যায়োনেজ - বাট ম্যায়োনেজ না। উইকিপিডিয়াতে নাচোস এর ইনগ্রেডিয়েন্ট দেখেছিলাম -- অনেক কিছু থাকার কথা, বাট সেগুলোর টেস্ট তো দুরের কথা এটা তো খাওয়ারই উপায় নেই। এরা আসলে বানাতেই পারেনি খাবারটা। দোকানের লোকটার দিকে বিরক্ত ভরে চাইলাম -- কিছু বলার ইচ্ছা হল না -- কেন হল না সেটা নিয়ে অন্য পোস্ট আসবে।
photo courtesy: wikipedia
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৩:৪৬