somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অগ্নি | মুভি রিভিউ

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যেহেতু ভ্যালেন্টাইনস ডে, তাই শঙ্কা ছিল সিনেমা হলে অধিকাংশই জোড়ায় জোড়ায় থাকবে । তাই বন্ধুকে বোরকা পরিয়ে হলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। বন্ধুকে এই অফার টা দিতেই দিলো একটা থাবড়া। তাই তাকে বোরকা পরানোর প্ল্যান থেকে পিছু হটলাম। কিন্তু হলে ঢুকেই চোখ ছানাবড়া। সবাই দেখি জোড়ায় জোড়ায়! :-/ এতগুলো জোড়ার ভিতর আমরা দুই নাদান অসহায় :-/ এই অসহায়ত্ব নিয়েই দেখা শুরু করলাম ইফতেখার চৌধুরীর সিনেমা অগ্নি। পাশে বসে থাকা জোড়ার ছেলেটা বলে উঠলো, "উফ মাহি! আমার জান"। সে হয়তো ভুলে গিয়েছিল গার্লফ্রেন্ডের সাথে এসেছে। গার্লফ্রেন্ডের হাতে বাড়ি খাওয়ার পর চুপ হয়ে গেল। যাক গার্লফ্রেন্ড ছাড়া আসার একটা সুবিধা উপলব্ধি করলাম। অগ্নি সিনেমা টা মুক্তির আগে থেকেই আলোচনায় ছিল। সেই সুবাদে হয়ত হল ছিল হাউজফুল।

কাহিনী সংক্ষেপ:

তানিশা (মাহিয়া মাহী) তার বাবা মা হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য কামালের আস্তানায় ঢুকে তাকে হত্যা করে। কিন্তু বাকি হত্যাকারীদের খুজে পেতে তাকি পাড়ি জমাতে হয় থাইল্যান্ডে। থাইল্যান্ডে গিয়েই তানিশা ছদ্মবেশ ধারন করে। এদিকে কামালের মৃত্যূর খবর গুলজার (আলীরাজ) এর কানে যায়। গুলজারই তানিশার বাবার মূল হত্যাকারী। গুলজার তানিশা কে মারার জন্য ড্রাগন(আরেফিন শুভ) কে পাঠায়। কিন্তু ড্রাগনের চোখ কে ফাকি দিয়েই তানিশা ডন কে ছুরিকাঘাত করে। তানিশা ড্রাগনের মামা কাবিলার বাসা ভাড়া নেয়। ড্রাগন তানিশার প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু ড্রাগন জানতো না তানিশা ছদ্মবেশি কিলার এবং তাদেরই কিলার যাদের ড্রাগন নিরাপত্তা দেয়। ড্রাগনের সেফ হাউজ থেকেই তানিশা ডন কে মেরে ফেলে। ডন কে মারার পর তানিশার পরবর্তী টার্গেট হয় শিবা সানু। শিবা সানু কে মারার পরপরই ড্রাগন টের পেয়ে যায় তানিশা ছদ্মবেশি কিলার্। এদিকে হায়দার(মিশা সওদাগর) ও গুলজার জেনে যায় তানিশাই ছদ্মবেশি কিলার এবং সে ড্রাগনের প্রেমিকা। হায়দার লোক পাঠায় ড্রাগন কে মারার জন্য। কিন্তু তারা ড্রাগন কে না মারতে পেরে তার মামা মামিকে মেরে ফেলে। শেষদিকে তানিশা এবং ড্রাগন এক হয়ে গুলজার ও হায়দার কে হত্যা করে।

যা ভালো লেগেছে:

সিনেমার সবচেয়ে ভালো দিক এর এ্যাকশন দৃশ্যগুলো। কামাল কে মারার দৃশ্যটুকু, আরেফিন শুভর সাথে মাহীর স্পীডবোট চেজিং, গুলজার ও হায়দার কে মারার এ্যাকশন দৃশ্য ইত্যাদি প্রতিটি এ্যাকশন দৃশ্যই দর্শকের ভালো লাগবে। সিনেমার কাহিনীতেও গতি ছিল বলা যায়। সিনেমার চিত্রায়ন, উপস্থাপন, এ্যাকশন এবং কাহিনী মিলিয়ে ভিন্ন স্বাদ পাওয়া যাবে এটা নিশ্চিত। শুভর সাথে মাহীর রোমান্টিক কমেডি গুলো যথেষ্ট উপভোগ্য ছিল। শুভ যতবারই পিস্তল বের করছিল ততবারই মাহির সামনে চলে আসা এবং চিতকার দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে। ফুলের বদলে পিস্তল নিয়ে মাহির পেছনে ছোটা, লিফটে মামা তেলাপোকা কম দিল কিনা সংবলিত দৃশ্যগুলো ভালো ছিল। শিশুশিল্পী পূজার অভিনয় বেশ সাবলীল ছিল। পূজা তানিশার ছোটবেলার সাহসী চরিত্রটি বেশ ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। শুভ এবং মাহীর অভিনয় ভালো ছিল। প্রতিটা গানই শ্রুতিমধুর ছিল। ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড, ঝকঝকে কালার, লোকেশন সবকিছু মিলিয়ে এটাকে ভালো সিনেমা বলাই যায়।

যা ভালো লাগেনি:

সিনেমাটিতে ভালো না লাগার মত অংশ খুব কম ছিল। সাধারন দর্শকের দৃষ্টিতে ত্রুটি ধরা নাও পড়তে পারে। বোঝা যাচ্ছিল সবাইকে মারার পরই সিনেমা শেষ হয়ে যাবে। এর ভেতরে আরেকটু বৈচিত্র আনলে ভালো হত। প্রথমদিকে কামালের অতিমাত্রায় খসখসে গলা ভালো লাগার মত ছিল না। যেহেতু এ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা, তাই শেষ দিকের মারামারি আরেকটু চমকপ্রদ করা উচিত ছিল। কিছু জায়গায় আরেফিন শুভকে কাঁদো কাঁদো ভাবে উপস্থাপন করাটা বেমানান লেগেছে।


পরিচালক- ইফতেখার চৌধুরী
প্রযোজক- শিষ মনোয়ার
রচয়িতা- এ যে বাবু
অভিনয়- মাহিয়া মাহী,
আরেফিন শুভ, আলিরাজ, মিশা সওদাগর, কাবিলা, ডন, শিবা সানু, ড্যানি সিডাক, ইফতেখার চৌধুরী।
সম্পাদক- তৌহিদ হোসেইন
চৌধুরী
স্টুডিও- জাজ মাল্টিমিডিয়া
বণ্টনকারী- জাজ মাল্টিমিডিয়া
মুক্তি- ফেব্রুয়ারি ১৪ , ২০১৪

অগ্নি বাংলা সিনেমার জন্য আশাজাগানিয়া একটি সিনেমা। বাংলা সিনেমার সুদিনের বার্তা বহন করে। এই ধরনের কিংবা এর চাইতে ভালো সিনেমা তৈরি হলেই সিনেমা শিল্প চাঙ্গা হয়ে উঠবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৪ সকাল ৮:১৬
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাশ্মীরে বন্ধুকধারীদের হামলায় ২৬ জনকে হত্যা; নেপথ্যে উগ্রবাদী মোদীর বিতর্কিত কাশ্মীর নীতি!

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:২২

কাশ্মীরে বন্ধুকধারীদের হামলায় ২৬ জনকে হত্যা; নেপথ্যে উগ্রবাদী মোদীর বিতর্কিত কাশ্মীর নীতি!

পেহেলগাম, ছবি গুগল থেকে প্রাপ্ত।

কাশ্মীরে অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। বিশ্লেষকদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসর্জনের ছাই

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৯




একদিন দগ্ধ ঘাসে ভালোবাসা পুড়িয়ে দেব।
সর্বাংগে ওর ছাই মেখে আমি বৈরাগ্য নেব।
রগড়ে রগড়ে ধুয়ে ফেলব শ্রবন মেঘের জলে।
কায়াটা কে শুকতে দেব তোমার বাড়ির উঠনে।

পায়ের নখে গজিয়ে উঠবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু আশা, কিছু হতাশা, কিছু বাস্তবতা

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:০৯



বাংলাদেশ যেন একটা রোলার কোষ্টারে সওয়ার হয়ে চলছে এখন। প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে; একটা সংযোজন-বিয়োজনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। আমরা সরকারের কর্মকান্ডে আশান্বিত যেমন হচ্ছি, তেমনি হতাশায়ও নিমজ্জিত হচ্ছি;... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:১২


এই উষ্ণতায় ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই নদীতে সমুদ্দুরে
বালুচরে হেঁটে বেড়াই,
ঢেউয়ে থাকি বসে, জল এসে ছুঁয়ে দিক আমায়,
হিম হাওয়া এসে ভাসিয়ে নিয়ে যাক সুখের সপ্ত আসমানে।

এই বৈশাখে ইচ্ছে করে পুকুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি শেষ কবে একটি বই পড়েছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২


আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ্ব বই দিবস। অনেকেই একে বলেন ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’। ইউনেসকোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে বই, লেখক এবং কপিরাইট রক্ষার বার্তা নিয়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×