[si]অবতরনিকা: বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বংশকারীদের (আমি নির্বংশই বলবো কারন প্রচলিত ধারায় বংশগতি পুরুষ উত্তরাধিকারীর ওপরেই বর্তায়) শাস্তি প্রদানের পর থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটার পর একটা পোষ্ট আসছে। যার প্রায় সবগুলোই (গুটি কয়েক ব্যতিক্রম ছাড়া) পক্ষপাত দুষ্ট। অনেক ভাবনা চিন্তা করে আমার নিজস্ব ক্ষতির কথা ভুলে/ এড়িয়ে আমি আমার একান্ত ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি, শিরোনামে উৎসর্গীকৃত ব্লগারদের জন্যে। ৩ বছরটা উল্লেখ করার কারন হ'ল যে মানুষের কোন স্মৃতি ৩ বছর বয়সের আগে থাকেনা, সাধারনত। এ পোস্টে আমার ব্যাক্তিগত ক্ষতি গুলোঃ
১। এটা প্রকাশিত হবার পর আমার পরিচয় গোপন থাকবেনা, যা আমি এতদিন সযতনে রক্ষা করেছি।
২। ব্যাক্তিগত ঘটনা বয়ান পাঠকদের কাছে মাঝে মধ্যে আত্মপ্রচার ও পারিবারিক প্রচারের মত লাগবে যা আসলেই অশোভন, অরুচিকর এবং বিরক্তিকর। এগুলোও আমি লুকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে এসেছি আজীবন।
৩। কোন পক্ষাবলম্বন না করে লেখাটা অত্যন্ত দুঃসাধ্য। আমার জন্যে আরো কঠিন। কারন যৌবন যখন সদ্য দেহ-মনে ভর করে আমার সমগ্র সত্তাকে ভীষনভাবে নাড়িয়ে দিচ্ছে, যা কিছুই সুন্দর তারই প্রেমে পড়ছি, ঠিক সে সময়ই বংগবন্ধুর সাথে আমার পরিচয়। নিরপেক্ষভাবে তাঁর ব্যাপারে লিখতে আমার খুবই কষ্ট হবে এবং আমাকে অসাধ্য সাধন করতে হবে।
৪। শুধুমাত্র স্মৃতি নির্ভর লেখার মূল সমস্যাটা হ'ল ভুল স্মৃতি মনের মধ্যে থাকা। যে কেউ যদি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার কোন বক্তব্যে দ্বিমত প্রকাশ করেন, তা'লে তাকে আমি অনুরোধ করবো মন্তব্যে তা তুলে ধরতে। আমার স্মৃতি ঘাটতে সাহায্য করার নেই কেউ আমার হাতের কাছে।
আমি আপ্রাণ চেষ্টা করবো-আমার যে একটা দায় আছে আমার পরের প্রজন্মগুলোর কাছে।
আমার এই দায় শোধ যদি এই প্রজন্মকে আমাদের গৌরবময় আর কলংকলেপিত অতীতকে নিরপেক্ষ ভাবে দেখতে শেখার পথে একপাও এগিয়ে নিয়ে যায়, তা'লেই আমি মনে করবো সেটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন এটা আমার একান্তই ব্যাক্তিগত সৃতিচারন। পারিবারিক ঘটনাবলীর চর্বণ। সমগ্র দেশের ব্যাপারটা কখনোই প্রধান্য বিস্তার করবেনা, সে সাধ্য বা যোগ্যতা আমার নেই।
পুরো সময়টার কিছু অনুল্লেখ যোগ্য অংশ বিষদ ভাবে আসবে আবার অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ পরবে, ব্যাক্তগত স্মৃতিচারনের এটা একটা বিরাট সমসয়া। অনুরোধ করি বিষয়টা মনে রেখে আমার এ লেখাটা পড়বেন ।
পুরোটা পড়ার পর অনেকের কাছেই এটাকে "পর্বতের মূষিক প্রসব" বলে মনে হ'তে পারে। তাদের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>
পর্ব-১পর্ব-২পর্ব-৩ পর্ব-৪
পর্ব৫পর্ব-৬পর্ব-৭ পর্ব-৮ পর্ব-৯ পর্ব-১০ পর্ব-১১ পর্ব-১২ পর্ব-১৩ পর্ব-১৪ পর্ব-১৫ পর্ব-১৬পর্ব-১৭ পর্ব-১৮পর্ব ১৯ পর্ব-২০
_____________________________________________
সহী রাজাকারনামা
ওপরে ও নীচে দাগ দেয়া এই জায়গাটুকুতে আমি যা বর্ণনা করবো তার বেশীর ভাগই শোনা। নিজের অভিজ্ঞতা বা প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নয়। এ পরিচ্ছদটি আমি বাদই দিতে চেয়েছিলাম। কারন আমার লেখার পরিসরের বাইরে এটা। কিন্তু একেবারে না উল্লেখ করলে আমার লেখাটি অপুর্ণ থেকে যায় বলেই লিখছি।তাছাড়াও অল্প কিছু ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতাও আছে।
ফকা চৌধুরী
রাজাকার আল বদর আল শমসের যত না কাহিনী শুনেছি তার চেয়ে ফকার কথাই একাত্তরে অনেক বেশী শোনা যেত।
ফকা ছিল নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান। তার বাড়ি গহিরায় তার তান্ডবের কথা আমরা শুনেছি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার অল্প কিছুদিন আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বাবার শিকারের সংগী হিসেবে রাউজান (গহিরা) এলাকায় গিয়েছিলাম। ওখানে হিন্দু প্রধান গ্রামগুলোতে পাখি বেশী পাওয়া যেত। তখন গহিরা শান্তির দ্বীপ বলে একটা জায়গা ছিল। বলা হত চিটাগাংএর আরেক গহিরার উন্নয়নের জন্যে বিদেশী অনুদান এসেছিল। উন্নয়ন শুরুর আগে বিদেশীরা এসেছিল সরেজমিনে এলাকাটা দেখতে।ফকা তাদেরকে নিজে অভ্যর্থনা করে নিয়ে যান আরেক গহিরায়- তার নিজের বাড়িতে। তো অনুদানের টাকা ফকার গহিরাতেই ব্যয় করা হয়েছিল।
কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের আসে পাশের এলাক ছিল ছায়া সুনিবিড়। ঘুঘু আর হরিয়ালে অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যাগ ভর্তি হয়ে যেত । আমি একবার একটা কানা কুড়কা (মন্জুরুল হকের ভাষায় কানা কুহক) মারলাম। গ্রামের ছেলেমেয়েরা আমাকে ক্ষ্যাপাতে লাগলো-কানা কুড়কা খায়না কেউই (মন্জুর খেয়েছিলেন)। একাধিকবারের এই সফরে যতটুকু বুঝেছিলাম তা হ'ল এলাকার হিন্দুরা তাকে সাক্ষাৎ অবতার মনে করতো। মুসলমানদের মধ্যে যারা হত দরিদ্র ছিল তারাও তাঁকে খুব শ্রদ্ধা করতো। তবে অবস্থাপন্ন লোকদের অনেকেরই তাঁর প্রতি ছিল প্রচ্ছন্ন হিংসা-তাঁর সম্পদ আর সুনামের জন্যে। ফকা চৌধুরীর বাড়ির প্রতিটি সদস্যকে সবাই ভয় করতো। নতুন সিংহকে একবার দেখেছি। কুন্ডেশ্বরীর মুল ভবনে ছাদের কোনায় ছিল কয়েকটি জালালী কবুতর । ঐ কবুতর মারতে আমরা ওখান পর্যন্ত যাই। খুব বুড়ো মতন একজন বাবার সাথে বেশ কিছুক্ষন কথা বলেন। বাবা কিছুক্ষন পর ফিরে আসেন-কবুতর না মেরে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হবার অল্প কিছুদিন পরই শুনতে পাই (এপ্রিল মাস হবে বোধ হয়) ফকা চৌধুরীর নেতৃত্বে এক দল পাকি নতুন বাবুর প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার হামলা চালায় এবং নতুন বাবুকে হত্যা করে (সাকার কথা পুরো '৭১ এ শুনিনি)। হিন্দু গ্রামগুলো (আমাদের পাখী শিকারের আড়ত) থেকে হিন্দুদের তাড়িয়ে দেয় এবং তাদের সম্পত্তি দখল করে।
ফকার (ফজলুল কাদের আংকেল) গুড হিলের বাড়িতে আমি '৭০এ গেছি। গিয়াস ভাই (গিকা, গিয়াস উদ্দন কাদের চৌধুরী) তখন আমাদের কলেজে ক্লাস ইলেভেনে পড়েন। তিনি সম্ভবত ৩০০ কেডেটের মধ্যে সবচেয়ে মোটা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে শুনতাম ফকার গুড হিলের বাসাটি একটি নির্যাতন কেন্দ্র। তার নিজস্ব কিছু লোক ছিল (নাম শুনতাম প্রায়ই, এখন একটাও মনে করতে পারছিনা) যারা নিরীহ লোকজন, ছাত্রদের ধরে আনতো এবং নির্যাতন শেষে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠিয়ে দিত। বাবা এই জেলে পাঠানোর কথাটা বিশ্বাস করতেন না। বলতেন জেলে ঢোকাতে হ'লে অনেক নিয়ম কানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ফকা যেহেতু প্রশাসন বা বিচারের সাথে যুক্ত নয় তাই তার পক্ষে কাউকে জেলে পাঠানো সম্ভব নয়।
তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে ঘৃন্য যে অভিযোগ শুনতাম তা হল সে পাকি সেনাদের বাংগালী মেয়ে সরবরাহ করতো। আমি তাঁর বাড়ীর সামনের (পাহাড়ের ওপর বাড়ি ছিল) ফটকের রাস্তার মাথায় (aproach road) পাকিদেরকে পাহারা দিতে দেখেছি সেপ্টেম্বর/অক্টোবরে। তারা খাকী পাকী ছিল। মুজাহিদ, রেন্জার বা অন্য কোন মিলিশিয়া নয়।
রাজাকার
রাজাকার গঠিত হয়েছিল গোয়া জমের তত্ত্বাবধানে। রাজাকারে সাধারন পাকি পা চাটা বাংগালী আর বিহারীরা ছিল। এই রাজাকারদের স্থানীয় শান্তি কমিটিগুলোর অধীনে কাজ করতে শুনেছি। পরে (সম্ভবত: জুলাই'৭১) তারা সরাসরি পাকিদের অধীনে চলে যায়। তারা প্রধানত বাংলাদেশ পন্থিদের খবর যোগাড়, বাংগালীদের ধরে বন্দী করা ও পাকিদের পাশাপাশি যুদ্ধ করার জন্য সজ্জিত ছিল। আমি মুকুল মামার (চিটাগাং শহরে অপারেশনরত মুক্তি যোদ্ধা) কাছে শুনেছি যে তাদেরকে খাকী-পাকীদের কায়দায় সংগঠিত করা হচ্ছিল।
আল বদর
গোয়ার নাম যত না শুনেছি তখন তার চেয়ে বেশী শুনেছি নিজামী, মুজাহিদ আর সবচেয়ে বেশী মীর কাশেমের। নিজামী-মুজাহিদের নাম পত্রিকায় আসতো (তারা তখন ইসলামী ছাত্র সংঘ করতো)। সম্ভবতঃ নভেম্বরের প্রথম দিকে তারা কি একটা দিবসও পালন করেছিল।মীর কাশেম ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘ (বর্তমানে শিবির) চিটাগাংএর সবচেয়ে বড় ছাত্র নেতা। স্বাধীনতার পর পরই শুনেছি ঢাকায় যেমন বুদ্ধিজীবি হত্যা করা হয় তেমনি চিটাগাংএও একটা তালিকা প্রস্তত হয়েছিল। যা কার্যকর শুরু করার কথা ছিল ১৭ই ডিসেম্বরে।এই তালিকার সাথে মীর কাশেমের নাম উচ্চারিত হ'ত।
আল বদর ছিল পাকি ঔরসে জামতে ইসলামীর গর্ভে জন্ম নেয়া জারজ। আল বদরের নামে আমাদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো।পাকিদের চেয়ে ওদের ঘৃনা করতাম বেশী। পাকিদের কাছ থেকে অনেককেই ফিরে আসতে শুনেছি, কিন্তু আল বদরেরা যাদেরকে ধরে নিয়ে যেত, তাদের কেউই ফিরে আসতোনা। রাজাকারদের চেয়ে তারা শিক্ষিতও ছিল।আল বদরের নেট ওয়ার্ক ছিল কলে কারখানায়, গ্রামে গন্জে, হাট বাজারে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। মীর কাশেম চিটাগাংএর আল বদর বাহিনীর প্রধান ছিল বলে শুনতাম।
আল শামস
আমার অতিশয় সীমিত আরবী জ্ঞানে (আল আদাবুল জাদিদ আর আল আদাবুল আসরী, আমাদের অবশ্য পাঠ্য ছিল। আরবীর খুবই অল্প কিছু মনে আছে, তবে মৌলবী স্যারের সীমাহীন দৈহিক ও মানসিক অত্যাচার স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে) নেজামে ইসলাম আর মুসলিম লীগের আরবী জ্ঞান আমার চেয়েও কম ছিল। ব্যাকরণগত ভাবে আল শামস নামটি ভুল হবার কথা। হওয়া উচিৎ ছিল আশ শামস (শুধরে দিয়েন ভুল হ'লে)। নেজামে ইসলামী আর মুসলিম লীগও বসে ছিলনা। জামাতের দেখাদেখি তারা আল শামস তৈরি করলো। যদিও আমি কোন আল শামস দেখিনি বা কেউ দেখেছে বলেও শুনিনি সে সময়। তাদের কোন কার্যকলাপও সে সময়ে কর্ণগোচর হয়নি।
_____________________________________________
কর্ণফুলীতে নৌ মুক্তিযোদ্ধার বিজয়
তারিখটা মনে আছে, কারন তার আগের দিন ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। পনেরোই আগস্ট যথারীতি আমরা ঘুমিয়ে যাই। খুব সকালে ঘুম ভেংগে যায় "ওছ ছুদানী......" সুলতান চাচার গলা। বাসার কেউ ওঠেনি।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই দেখি উনি ড্রইং রুমে। এক হাতে কোমরের বেল্টটা (চিটাগাংএর ধনী ব্যাবসায়ীরা তখন খুবই চওড়া এক ধরনের বেল্ট পরতেন লুংগীর গিঁটের ওপর, বেল্টের খোপে থাকতো তাদের ব্যাংক) ধরে রেখে আরেক হাতে লুংগীর কোনা ধরে এতই উঁচূ করে ধরে লাফাচ্ছেন যে আমি তার অন্তর্বাস দেখতে পাচ্ছিলাম। আমাকে দেখেই লাফানো থামিয়ে জিজ্ঞেস করলেন; "গেঁয়া র...... নঁ উডে (র.....ওঠে নি?)?" তার অবস্থা দেখে প্রথমেই ভেবেছিলাম নিশ্চয়ই খুব সাংঘাতিক কোন খারাপ খবর। কিন্তু তার চোখে মুখে অত্যন্ত আনন্দের ছটায় ভরসা পেলাম। বাবা সুলতান চাচার হাঁক ডাকে ততক্ষনে উঠে পড়েছেন। তাড়াতাড়ি নেমে এলেন। সুলতান চাচার বক্তব্যের সার হ'ল গত রাতে (১৫ই আগস্ট'৭১) নৌমু্ক্তি সেনারা কর্ণফুলী নদীতে নোংগর করা প্রায় সবক'টি নৌযান ঢুবিয়ে দিয়েছে তার মধ্যে পাকি নেভীর নৌযানও ছিল। সেদিন রোববার ছিল কিনা মনে নেই। তবে বাবা অফিস গেলেন না। মাকে বল্লেন ডিমের হালুয়া রাঁধতে। নিজে বসে গেলেন কাঁচা গরুর মাংস নিয়ে। বুড়ো বাবুর্চী ভাই ছুটলেন ইয়াসিন মোরগ আর পোলাউয়ের চাল আনতে। ২৬ শে মার্চের পর মাঝে মধ্যে মুক্তি বাহিনীর দু'য়েকটা সফল অপারেশন ছাড়া কোন ভাল খবরই পাইনি আমরা। সারাদিন উৎসবের মধ্যে আর খাওয়া দাওয়ার মধ্যে কেটে গেল। পাঁচ মাসের মধ্যে একমাত্র ভাল খাওয়া। পাঁচ মাসের মধ্যে প্রথম আশার আলো।
আল বদরের অভিযান
নভেম্বরের ঢাকায় আল বদরদের অনুষ্ঠানটির ৪/৫দিনের ভেতরই
চাকতাই এলাকায় আল বদরেরা একটি অভিযান চালায়। সে অভিযানে প্রায় অর্ধশত নিরিহ মানুষকে ধরে এবং অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। যথারীতি হতভাগ্যদের কেউই আর ফিরে আসেনি। খবরটি আমি পত্রিকায়ও পড়েছিলাম পরদিন।
ফয়েজ (ফঅ'স) লেক হত্যাকান্ড
যেদিন আল বদরেরা চাকতাইয়ে অভিযান চালায়, সেদিনই সকালে বুড়ো বাবুর্চী ভাই সকাল দশটার দিকে খালি হাতে বাজার থকে ফিরে আসেন-চোখে মুখে প্রচন্ড আতংকের ছাপ। কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে একটু শান্ত হয়ে তিনি বলেন যে সেদিন বাজার করার জন্যে তিনি পাহাড়তলী বাজারে যাচ্ছিলেন ( বিভিন্ন দিন বিভিন্ন বাজার থেকে বাজার করা তাঁর নেশা ছিল, তার এ স্বভাবটি আমিও রপ্ত করেছি)। বাজারে পৌছুবার আগেই রাস্তাতে বিহারীরা তাকে ধরে এবং আরও দশ বারোজন বাংগালীর সাথে রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে থাকে। বাবুর্চীভাই চোস্ত উর্দু বলতে পারতেন। তাঁর সেই উর্দু দিয়ে বিহারীদের তিনি বোঝাতে সমর্থ হন যে তাঁর আদি নিবাস কোলকাতা এবং তিনি অবাংগালী। তাকে ছেড়ে দেয়া হয় তখন।
সন্ধ্যা হ'তে না হ'তে চাকতাই এবং ফয়েজ লেকের ঘটনাআগুনের মত ছড়িয়ে পড়লো।
-চলবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৪