সুশাসন ও উন্নত করপোরেট কালচার’ এর জন্য বিভিন্ন সময়ে সরকারিভাবে ‘গোল্ড মেডেল’ প্রাপ্ত বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) এর রাজস্ব ফাঁকির সত্যতা মিলেছে হাইকোর্টের সাম্প্রতিক এক রায়ে। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৯-১০ অর্থবছর হতে ২০১২-১৩ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মধ্যম মূল্যস্তরের পাইলট ব্রান্ড সিগারেটকে নি¤œ মূল্যস্তরে ঘোষণা দিয়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ প্রায় ৭৯৮ কোটি ২৪ লক্ষ ২৩ হাজার ৫শত ৯৩ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয় কোম্পানিটি। এই মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে প্রতি প্যাকেটে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ১৩ টাকা ৮৬ পয়সার বিপরীতে মাত্র ৪ টাকা ৭২ পয়সা রাজস্ব দিয়েছে বিএটিবি। বিষয়টি নজরে এলে ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর একটি দাবিনামায় উক্ত রাজস্ব পরিশোধের নির্দেশ দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিএটিবি উক্ত দাবিনামাকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫ সালে রিট পিটিশন দায়ের করে। সর্বশেষ মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক গত ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখের এক রায়ে বিএটিবি’র দাবিকৃত অংশটুকু বাদ দিয়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ মোট ৬৯৯ কোটি ৩৬ লাখ ৭৭ হাজার ৫শত ৬১টাকা সরকারি কোষাগারে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দিন থেকে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে জমা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্টের এই রায়ের মধ্য দিয়ে বহুজাতিক এই তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হলো, সত্যি হলো তামাক বিরোধীদের দীর্ঘদিনের আশংকা। উল্লেখ্য, তামাকবিরোধীরা দীর্ঘদিন যাবত সিগারেটে করারোপের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যমান ৪ স্তরবিশিষ্ট মূল্যস্তর প্রথা বাতিল করে একটি একক বা সমন্বিত সিগারেট করকাঠামো গ্রহণের দাবী জানিয়ে আসলেও এনবিআর/অর্থমন্ত্রণালয় বিষয়টি আমলে নিচ্ছেনা। বিদ্যমান মূল্যস্তর প্রথা উঠিয়ে দিলে বিএটিবি এই বিপুল রাজস্ব ফাঁকির সুযোগ পেত না। সামনে বাজেট আশা করি এনবিআর/অর্থমন্ত্রণালয় এবারের বাজেটে মূল্যস্তর প্রথা উঠিয়ে দিয়ে তামাক কোম্পনির রাজস্ব ফাঁকির পথ বন্ধ করবে। ‘সুশাসন ও উন্নত করপোরেট কালচার’ এর জন্য ভবিষতে ‘গোল্ড মেডেল’ প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো সতর্ক হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:১৭