somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে ইউনেস্কোর তথ্য শূন্যতা !!

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২১ ফেব্র“য়ারীকে আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস বলেই জেনে আসছে বিশ্ববাসি। ১৯৫২ সনে ভাষার জন্য যারা প্রান দিয়েছে তাদের প্রতি ইউনেস্কো সম্মান প্রদর্শন করে দিবসটিকে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমার কাছে এটি অন্যন্য সংবাদ। "মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওর্য়াল্ড" নামে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের যে সংগঠনটির প্রচেষ্টায় ২১ ফেব্রয়ারী দিবসটি ইউনেস্কোর কর্তাব্যক্তিদের নজরে আসে তার কৃতজ্ঞতাও ইউনেস্কোর অর্ন্তজালে গিয়ে আমি লিংকের পর লিংক আর তস্য লিংক খুঁজে কোথাও এর সুত্র পেলাম না !!! না আছে কোথাও বাঙালির কোন অবদানের কথা , না আছে কোন বাঙালি সংগঠনের প্রচেষ্টার কথা!! শুধু মাত্র একটা পেজে ফ্যাক্ট এন্ড ফিগারে চার লাইনে লিখা আছে ১৯৯৯ সনে ইউনেস্কার ৩০ তম অধিবেশনে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব ২১ ফেব্র“য়ারীকে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি জানানোর প্রস্তাব উত্থাপন করে এবং অপর ২৫ টিদেশের সদস্যরা সেটিকে অনুমোদন করে। ইন্টারনেট জুড়ে ২১ ফেব্র“য়ারী কেন মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশ সর্ম্পকেএই ই হলো তথ্য!

ঠিক কি কারনে আন্তজর্তিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ২১ ফেব্রুয়রী দিনটিকে নির্বাচন করা হলো সেই তথ্যও আর পাওয়া গেলোনা , নেই বলেই হয়তো পাইনি !! কিন্তু আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা বানীতে কোথাও ১৯৫২ সনের বাঙালির ভাষার সংগ্রামের কথা লিখা নাই। এই দিনটি যে বাঙালির ভাষার আত্ন ত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নির্ধারন করা হয়েছে এটি আমারা বাঙালিরা যতটা বিশ্বাস করি পৃথীবীর তাবৎ লোক কি তাই জানে, তাদের জন্য আসলে কি তথ্য দেয়া আছে ইন্টারনেটে ??


১৯৯৯ সন হতে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিগত বছরগুলোতে পালন হওয়া ইউনেস্কোর জাতীয় অনুষ্ঠানমালার সংবাদগুলোতেও কোথাও ভাষা শহীদের এই আত্নত্যাগের কথা লিখা নাই। আরো হতাশার কথা হলো ২০০৮ সনেও একই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এই প্রতিবেদন যখন লিখছিলাম তখনও পর্যন্ত ২০০৮ সনের সংবাদটি ইউনেস্কোর অন্তজালে ছিলো, ছিলো পোষ্টারটিও। কিন্তু লেখা শেষ করে দেখি সেই সংবাদটিও আর পাওয়া যাচ্ছেনা। ভাগ্যিস ছবিটা সেভ করে রেখেছিলাম!!

শুধু তাই নয় ইউনেস্কোর ডাইরেক্টর জেনারেলের শুভেচ্ছা বানীতেও ভাষা শহীদের প্রতি কোন কৃতজ্ঞতা কিংবা ভাষা সংগ্রামের নাম নাম গন্ধও পাওয়া যায়নি।
ধরে নিলাম দিবসটি ৮ বছর পুরোনো হয়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষটি হয়তো অনিচ্ছাকৃত ভাবে বাদ পড়েছে, না পাঠক ইউনেস্কো মহাসাচিবের বানীতেও প্রথমবারের মতো ১৯৯৯ সনে উদযাপিত আন্তজাতিক মার্তভাষা দিবসের বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের আত্ন ত্যাগের কথা উল্লেখ নাই !!

বিষয়টি কি এমন যে,একটি দিনকে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে বানাতে হবে তাই বানিয়ে দেয়া, নাকি অন্যকিছু?? শুধু মাত্র ভাষার জন্য একটি দেশের মানুষ এভাবে আত্নাহুতি দিয়েছে সেই দৃষ্টি ভঙ্গির প্রতি সম্মান রেখে,৫২ ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যদি এই দিবসের স্বীকৃতি আসে তবে তাদের সেই সম্মান দিতে বাঁধা কোথায় ?? এটি কি ইউনেস্কোর অজ্ঞতা নাকি তথ্য গোপনের চেষ্টা ?? বিচক্ষণ কারো মনে কি এই প্রশ্ন জেগেছে? বাংলাদেশের বাইরে আর্ন্তজতিক ভাবে আয়োজিত সেমিনার ও অনুষ্ঠানমালায় কি বাংলাদেশের নামটি কিংবা ইতিহাস সঠিকভাবে উচ্চারিত হচ্ছে?? নতুন প্রজন্ম ও অবাঙালিরা কি জানতে পারছে কেন ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তজর্তিক মাতৃভাষা দিবস করা হলো ? আমরা বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় যেভাবে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা হিসাবে দিবসটিকে তুলে ধরছি আন্তজার্তিক গনমাধ্যম গুলোতে কি ঠিক সেইভাবে সংবাদগুলো প্রতিফলিত হচ্ছে ??

বিগত বছর গুলোতে আন্তজার্তিক ভাবে পালিত ইউনেস্কোর পোষ্টার লিফলেট কিংবা নিউজ লেটারে কোথাও বাংলাদেশের ১৯৫২ সনের এই আত্মত্যাগের সংবাদটি আমার চোখে পড়েনি।

শুধুমাত্র উইকিপিডিয়াতে এর খানিকটা ব্যতিক্রম। এখানে ভাষা শহীদের প্রতি কিছুটা হলেও সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। কারন উইকির সংকলনটাতে রাগিব ভাইয়ের সহযোগিতা রয়েছে।

ইউনেস্কোর ২০০৪ সনের পোষ্টার


২০০০ সন থেকে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে উপলক্ষে কয়েকটি পোষ্টার আমার নজরে এসেছে এর কোন একটাতেও ১৯৫২ সনের একুশে ফেব্র“য়ারী কিংবা ভাষার জন্য লড়াইয়ের কোন নাম গন্ধ পেলামনা। আমি না হয় শিল্পী নই, শিল্পের মুল্য বুঝিনা ইতিপূর্বে ছাপা হওয়া পোষ্টারগুলো পর্যবেক্ষণ করে পাঠক আপনারাই বলুন এই পোষ্টারগুলোর শিল্পমান উপলব্দি করতে পারছেন ?? এই পোষ্টারগুলোর সাথে ’৫২ ভাষা সংগ্রামের কোন গন্ধকি খুঁজে পেয়েছেন কেউ ?? পোষ্টারের কোন একটাতেও কি বাংলাদেশের শহীদ মিনারের প্রতিকৃতি আঁকা যেতোনা ??


২০০৬ সনের পোষ্টার


এই বিষয়গুলো নিয়ে আসলে প্রতিবাদের চেয়ে বেশী প্রয়োজন আলোচনা । যুক্তি তর্কের চেয়ে বড় বেশী জরুরী সমাধানের পথ খোঁজা। ইউনেস্কোর যদি অজ্ঞতা থেকে থাকে তবে তাদেও অজ্ঞতা দূর করতে সহায়তা করা।

২০০৭ সনের পোষ্টার


আসলে আমাদের চাওয়া পাওয়া খুব সীমিত, এত সহনশীল জাতি পৃথীবীতে দ্বীতিয়টি আছে বলে আমার জানা নেই....অল্পতেই আমরা তুষ্ট থাকি। তাই আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসটি ফেব্রুয়ারীর ২১ তারিখে পালিত হচ্ছে দেখেই আমরা অবিভূত !!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:৪৩
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ, চীন ও ভারত: বিনিয়োগ, কূটনীতি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৫:১০


প্রতিকী ছবি

বাংলাদেশের বর্তমান আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সমীকরণ নতুন মাত্রা পেয়েছে। চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ ও আর্থিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফিরছেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদৃশ্য দোলনায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮



ভোরের রোদ্র এসে ঘাসের শিশিরে মেঘের দেশে চলে যেতে বলে
শিশির মেঘের দেশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঘাসের মাঝে ফিরে আসে-
বৃষ্টি হাসে শিশিরের কথায়। তাহলে আমরা দু’জন কেন প্রিয়?
এক জুটিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। শনিবার (২৯ মার্চ) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনুস: এক নতুন স্টেটসম্যানের উত্থান

লিখেছেন মুনতাসির রাসেল, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ড. মুহাম্মদ ইউনুস ধীরে ধীরে রাজনীতির এক নতুন স্তরে পদার্পণ করছেন—একজন স্টেটসম্যান হিসেবে। তার রাজনৈতিক যাত্রা হয়তো এখনও পূর্ণতা পায়নি, তবে গতিপথ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে মেপে নেয়া,... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর কেমন হলো ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৮


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এখনো চীন সফরে রয়েছেন। চীন সফর কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাইপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাসেক্সফুল সফর আর কোনো দলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×