শুক্রবার প্রায় অনেকটা সময় সজীব ভাই আমাদের এলাকায় ছিলেন, কথাবার্তা-আড্ডার ফাঁকে ফাঁকে কখনযে বিকেল চারটা থেকে রাত সাড়ে নয়টা বেজে গেছে সেটা বলতেই পারবোনা! সজীব ভাইয়ের বাসায় যেতে হবে তাই আমাদের আড্ডাস্থল ঝিলমদের বাসা থেকে বেরিয়ে হাটতে শুরু করলাম, কথা ছিল আমি মর্গ্যান স্কুল পর্যন্ত যাবো তারপর আমি আমার বাসায় আর সজীব ভাই তার বাসায়! কিন্তু কেন জানি তাকে বিদায় দিতে ইচ্ছে করছিল না, তাই হয়তোবা দুজনে হাটতে হাটতে আর কথা বলতে বলতে একদম ডি,আই,টির শেষ মাথায় চলে এসেছিলাম, অবশ্য হাটার একটা কারনও আছে, সজীব ভাইয়ের একটা ব্লাইন্ড সিডির প্রয়োজন ছিল যদিও তা পাইনি!
সজীব ভাইয়ের সাথে শেষবারের মত করমর্দন করে যখন ফিরছিলাম তখন কেন জানি হাটতে ইচ্ছে করছিল না! তাই রিক্সায় উঠার জন্য রিক্সা খুজছিলাম রাস্তায় অনেক খালি রিক্সা তারপরেও কেন এই রিক্সাটা বেছে নিয়েছিলাম তা আমি নিজেও জানি না!
রিক্সাওলাটা দেখতে অনেকটা অদ্ভুত ভয়ংকর টাইপের! এক চোখ উপড়ানো (লাল ক্ষত চিহ্নটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল), থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পরা আর মুখে খোঁচ খোঁচা দাড়ি! রিক্সা থেকে নামার পর যখন ভালোভাবে খেয়াল করলাম কিছুটা ভয়ই পেয়েছিলাম।
ভাড়া দিতে দিতে জানতে চাইলাম, মামা তোমার চোখে কি হইসে? প্রত্যুত্তরে সে বললো "মামা কেউ যদি অপরাধ না করে তাহলে সে কিন্তু সাজা পায়না! অবশ্যই আমিও অপরাধ করেছি, তাই তার শাস্তি পেয়েছি! লোকটার বাচনভঙ্গি এতোটাই শুদ্ধ আর পরিষ্কার যাকিনা আমরা সাধারণত কোন সৌজন্যতা মূলক কথাবার্তায় বলে থাকি! তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, মামা তোমার দেশের বাড়ী কই? সে বললো, মামা আমার বাড়ী নাটোর।
এই কথা বললতে সে চলে গেল আর আমি বাসায় ঢুকতে ঢুকতে চিন্তা করছিলাম, সাধারণত আমরা একটা ভুল করলেই তা স্বীকারই করতে চাইনা কিন্তু এই লোকটা অপরাধ করে শাস্তিও পেয়েছে আর সেটা কত সহজেই স্বীকারও করছে এতটুকু ইতস্তত বোধ ছাড়াই!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২২