আল্লাহ্ পাকের বিধান অনুযায়ী নারীদের কর্মক্ষেত্র বা কর্তব্য ক্ষেত্রে দু’টি এক পিত্রালয় দুই শশুরালয় এই দুই ক্ষেত্রে তার অবস্থা তিন রূপে কন্যা, বধু ও মাতা এ সব অবস্থায় তার দায়িত্বে ও কর্তব্যের সীমানা বিস্তুত। একটিতে (কন্যা সন্তানের অবস্থায়) গঠনমূলক এবং অপর দু’টি (বধু ও মাতা) অবস্থায় সেবা মূলক বিকাশ সাধন ও অপরটিতে কর্তব্যের মাপকাঠিতে স্থায়ী যোগ্যতার প্রমাণ প্রদান করতে হয়। একটি সেবার মনকে গঠিত করা এবং অপরটিতে সেবা প্রদান, প্রীতি হওয়া কর্তব্য। দুই অবস্থাতেই একটি নারীকে সফলতা অর্জন করতে হবে। তা না হলে সে আদর্শ মা হতে পারবে না আর আদর্শ মা ছাড়া আদর্শ সন্তান গঠিত হবে না। আদর্শ সন্তান গঠন না করলে আদর্শ পরিবার গঠিত হতে পারে না। অনুরূপভাবে আদর্শ পারবার ছাড়া আদর্শ সমাজও আদর্শ রাষ্ট্র গঠিত হবে না। বিশ্ব গঠন সমাজে একটি প্রচলিত আছে “বিবাহের জন্ ” এই বাক্যটিকে বিশ্লেষন করলে দেখা যাবে নারীদের অতীত হচ্ছে কন্যা অবস্থার এবং পুরুষদের ভবিষ্যৎ হচ্ছে স্বামী ও পিতার অবস্থায়। নারীদের অতীত দেখার পেছনে কারণ এই যে, বধু ও মাতা হিসাবে সে কতটা যোগ্য আর অতীতকে বিশ্লেষনের মাধ্যমেই তা জানা যাবে। অতীত দ্বারা বর্তমান ও ভবিষ্যতের সরূপ অনেকাংশে উম্মেচিত হয়। বিবাহের পর থেকে যে মূল্যায়ন শুরু হয় সে মুল্যায়নে উত্তির্ণ হওয়ার জন্য কন্যাবস্থায় গঠিত হতে হবে প্রত্যেক মেয়েকে। তা না হলে শশুরালয়ে সে অবমুল্যায়ন হবে। প্রত্যেক নারীরেই দোষ-গুন মেধা বিকশিত হয় পিত্রালয়ে, এখানে একটি নারীর আদব আখলাক পরিষ্পুরিত হয়। আর আচার ব্যবহারে মাধুর্যতার প্রতিপলন ঘটে। অপরদিকে পারিবারিক কাঠামো সুবিন্যাস্ত করা পারস্পরিক সোহার্দ্য বজায় রাখা এবং মার্জিত আচারন দ্বারা পত্যেকের সাথে সম্পৃতির যোগসুত্র স্থাপন করার ক্ষেত্রে একটি নারীর কৌশলী মনের পরিচয় পাওয়া যায়। শশুরালয়ে তার যোগ্যতা ও নৈতিকতার দ্বারায় স্মরণ রাখা উচিত মেয়েরা নিজে গঠিত না হলে তার গোটা পরিবারেই অপগঠিত থেকে যাবে। তাই কন্যা সন্তান হিসাবে পরিবারের যে সব বিষয়ের প্রতি একটি নারীর লক্ষ্য রাখা উচিত তার মধ্যে কথিপয় হচ্ছে-
০১। পিতা মাতার চাওয়া পাওয়ার প্রতি নজর রাখা। যেমন তাদের সঙ্গে সদাচরন ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। তাদের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের রক্ষণাবেক্ষন করা। তাদের শারিরীক ও মানুসিক অবস্থার পর্যাবেক্ষন করা। তাদের কাজ কর্মে সহযোগীতা করা। তাদের মনতুষ্টি অর্জন করা। খাদ্য গ্রহণের সময় তাদের তদারকি করা ইত্যাদি।
০২। সংসারের আয় ব্যায়সহ খুটিনাটি বিষয়ের খোঁজ খবর নেওয়াও সন্তান হিসাবে কন্যার কর্তব্য।
০৩। পিতা-মাতার যে কোন হুকুম তরিৎ গতিতে সুচারুরূপে
সম্পূর্ণ
করা।
০৪। দ্বীন ইসলামের বিধান অনুযায়ী জীবন গড়ে তোলা।
০৫। ছোট ভাইবোনদের প্রতি নৈতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তাদের মনতুষ্টি অর্জন করা।
০৬। পরিবারের অভাব অনটন বা অসচ্ছলতার জন্য পিতা কিংবা মাতা কাউকে দায়ী না করা বরং এ ক্ষেত্রে ধৈর্য্যশীলতা ও বুদ্ধি মত্তা দ্বারায় পরিবারের শান্তি বজায় রাখার জন্য চেষ্টা করা এবং মহান রাব্বুল আল আমিনের সাহয্য কামনা করা।
০৭। সংসারের গোপন কথা যে বলুক তা নিজের কাছে গোপন রাখা তবে তা যদি প্রকাশ করা কল্যাণমুলক হয় তাহলে অপরের কাছে তা ব্যাক্ত করা যাবে।
০৮। কোন কাজে পিতা-মাতা বা অভিভাবকের কোন মতামত জানতে চাহিলে বুঝে শুনে অতি আদবের সাথে মতামত দেওয়া।
০৯। কোন দোষ ত্রুটি জন্য পিতা-মাতা গালি গালাজ করলে তার সাথে কখনোই তর্ক না করা। যদিও তাদের বচন অতিরিক্ত হয়। সে ক্ষেত্রে কন্যার রুচি স্বীয় দোষত্রুটি সংশোধনে সচেষ্ট হওয়া।
১০। বাড়ী থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যাই অভিভাবকের অনুমতি নেওয়া এবং পর্দপুশিদার কোন মাহরামের সাথে যাওয়া।
১১। দূরে কোথাও গমন করলে তাদের সাথে সালাম প্রদান ও দোয়া গ্রহণ করা। এবং ফিরে এসে সালাম প্রদান করতঃ তাদের কৌশলাদী জিজ্ঞাসা করা।
১২। পিতা মাতা কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যের প্রয়োজনার্থে নিজের স্বার্থে জলাঞ্জলি দেওয়া।
১৩। পরিবারের কোন সদস্যের ভূলের জন্য তার সাথে তুচ্ছ তাচ্ছিলতা প্রদর্শন না করা। তবেই না বধু হবে, সে হবে সম্মানি।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫