আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিএনপি’র অংশ নেওয়া নানেওয়া নিয়ে ইতোমধ্যেই জাতীয়তাবাদী অনলাইন এক্টিভিষ্ট/ সমর্থকদের মধ্যে দ্বিধা বিভক্তি লক্ষ করা যাচ্ছে-যা একটি বৃহত দলের কর্মী সমর্থকদের জন্য স্বাভাবিক প্রকৃয়া হলেও দলের কোনো পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে কোনো প্রকাশ দ্বিধাবিভক্তি প্রকাশ হয়নি।
যারা এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিরুদ্ধে তাঁদের অন্যতম যুক্তি-(১)এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভব নয়,(২)নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং নাই,(৩)এই নির্বাচনের ফলাফল পূর্ব নির্ধারিত-যা প্রহসনের নির্বাচনের শামিল,(৪)পূর্ববর্তী নির্বাচনে বিএনপি সমর্থীত সকল বিজয়ী প্রার্থীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে মেয়র/কাউন্সিলর পদ কেড়ে নিয়ে জেল বন্দী করা হয়েছে।এই অভিযোগগুলো সবই সত্য। আরো সত্য হচ্ছে-স্বৈরাচার সরকার শুধু নির্বাচীত মেয়র কাউন্সিলরদেরকেই মিথ্যা মামলায় জেলবন্দী করছেনা। মামলাবাজ সরকার বিএনপি’র ১০ লক্ষাধিক নেতা কর্মী, সমর্থকদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলবন্দী করে রেখেছে, হুলিয়া জারিকরে হয়রানী করছে।সেক্ষেত্রে কোনো অপরাধ নাকরেই যদি হামলা মামলায় জর্জরিত হতে হয়, গুম খুন হতে হয় তাহলে নির্বাচনে অংশ নিয়েই একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে কারানির্যাতন,গুম হত্যা বরণ করে নেওয়া শ্রেয়।
কাজেই আমি মনে করি-শতভাগ প্রতিকূল রাজনৈতিক প্রতিবেশের আবর্তে থাকা বিএনপির সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এনে দিয়েছে পৌর নির্বাচন। তাদের মেয়র প্রার্থীদের ভাগ্যে জয়-পরাজয় যাই থাকুক ধানের শীষের প্রচার, আন্দোলনের প্রস্তুতি, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির ‘প্লাটফরম’ হিসাবে এই নির্বাচন। ক্ষমতাসীনদের জুলুমে দলের নেতা-কর্মীরা দৌড়ের ওপর আছেন। না পারছেন মাঠে নামতে, না পারছেন ঘরে থাকতে। মামলা-হুলিয়া-গ্রেফতারে ছত্রভঙ্গ দশা। এমন পরিস্থিতিতে পৌর নির্বাচন শাপেবর হয়ে এসেছে।
ধানের শীষ বিএনপির প্রতীক- একথা তরুণ প্রজন্ম জেনেছে, দেখেছে খুব কম। এবার ধানের শীষের প্রচার আর শ্লোগানে গলা মেলাবে প্রবীণদের সঙ্গে তরুণরা যা এই নির্বাচনে বিএনপি’র প্রাথমিক অর্জন হবে। এই নির্বাচনে দল চাঙ্গা হবে। মনোবল ফিরে পাবে। মাঠ নেতারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পাবেন। এই নির্বাচনও আন্দোলনের অংশ।বরাবরের মতই সরকার যদি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মত বিএনপি’র জয় ছিনিয়ে নেয় তবে তাও বিএনপির জন্য নেতিবাচক হবেনা।যেমনটি হয়নি এর আগেও। ফলে সরকারের সকল অপকর্মের সুদুর প্রসারি পরিণতি সরকারকেই ভোগ করতে হবে।
সরকার একদলীয় নির্বাচনের চেষ্টা করছে-বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকারের প্রাথমিক অপচেষ্টায় বাঁধা দিচ্ছে। পৌরনির্বাচনে অংশ নেওয়াটাও আন্দোলনের অংশ। এর মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে যারা ভবিষ্যতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবির আন্দোলনকে আরো জোরদারে ভূমিকা রাখবে। পৌর নির্বাচন তৃণমূল বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখবে। মাঠ নেতারা বৃহত্ আন্দোলনের জন্য মাঠ প্রস্তুত করার সুযোগ পাবেন। এটা দলের ঘুরে দাঁড়ানোর একটা স্পেস। এই নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হবে না। গণতন্ত্রও রক্ষা হবে ন অথচ দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহল আবারও সরকারের অবস্থানটা দেখতে পারবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের দলের মাঠ পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা নতুন করে জেগে উঠবেন। তারা পলায়নপর অবস্থা থেকে প্রকাশ্যে এসে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে পারবেন। বিএনপির বড় সাফল্য হবে এই নির্বাচনে মাঠ নেতারা ধানের শীষের পক্ষে মাঠে নামবেন, বিএনপি’র পক্ষে আর বেশী জনমত সৃষ্টি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:০৭