গল্পের শেষেও গল্প শুরু হয়। শেষের গল্পটুকু একই সাথে হয়ে উঠতে পারে ভয়ঙ্কর এবং আনন্দময়। জয়তির সাথে এতোদিন পর আবারো যে দেখা হবে ভাবিনি কোনদিন। আমরা্ দুজনেই পুরানো গল্প মলাটে বন্দি করে বেশ তো ছিলাম। যার যার বৃত্তে, যার যার সংসারে। শুনেছিলাম বিয়ের পরে লন্ডনে সে থিতু হয়েছে।। ইকোনিমক্সে পিএইচডি করে পড়াচ্ছে কোন এক ইউনিভার্সটিতে। এই গ্লোবালাইজড বিশ্বে ইচ্ছে করলেই আমরা দুজনে দুজনকে খুঁজে পেতে পারতাম। কিন্তু দুজনের কেউই এতোটুকু চেষ্টা করিনি এতোদিন। হয়তো বা পাথরচাপা দিয়ে রেখেছিলাম আমাদের গোপন অনুভুতি।
ভাগ্যের ফের। যুক্তরাজ্যের ব্রিষ্টল ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে রিচার্সের সুযোগ পেয়ে গেলাম হঠাৎ করে। ছোট্ট ছিমছাম শহর। কাজের অবসরে ঘুরে বেড়াই শহরময়। সিটি সেন্টারের নিরিবিলি কফিশপটি আমার পছন্দের জায়গা।একদিন বসে বসে কফি খাচ্ছি, হঠাৎ চোখ পড়ে গেল উল্টোদিকের টেবিলটায়। মাঝবয়সি এক মহিলা একাকী বসে আছে। পরনে জিন্স ও সামার কোটে টি-সার্ট। দেখে ইন্ডিয়ান মনে হচ্ছে। হঠাৎ স্মৃতি উসকে দ্যায় আমাকে। সময়ের চাবুকে খানিকটা বদলে দিলেও চিনতে অসুবিধা হয় না। এ তো সেই। হঠাৎ দেখার খুশীতে এগিয়ে গেলাম। চমকে উঠে সে -
- তুমি?
-হ্যা, আমি। বেশ কিছুদিন হলো ব্রিস্টলে আছি। ইউনিভার্সিটির ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে রিচার্সে আছি। আর তুমি?
- তাই? আমি তো ওখানে ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের রীডার। কতোদিন পরে দেখা! একযুগ হয়ে গেছে। তা তুমি কিন্তু সেই আগের মতোই আছো। স্টিল ইয়াং ...
শুরু হতে থাকে গল্পের শেষে গল্প। কে বলে শুধু প্রথম যৌবনের প্রেমই দূর্বার! মধ্যবয়সেই তো জমে উঠে প্রেম, হয়ে যায় সর্বগ্রাসী। বুঝতে পারি আমাদের পাথরচাপা অনুভূতি মুক্তি পেয়েছে এবার। ক্রমশঃ আমরা পা বাড়াচ্ছি ভয়ঙ্কর এবং আনন্দের দিকে....
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৬
১. ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৩ ০