পশ্চিমবঙ্গের ডাইনীবুড়ি মমতাহীন-মমতার দৌরাত্ম্য!
সাইয়িদ রফিকুল হক
পশ্চিমবঙ্গে অতিসম্প্রতি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে মমতাহীন-মমতা ব্যানার্জী। তাকে দেখলে কোনো নেতা বা নেত্রী মনে হয় না। আর দেখে মনে হয় কী সাংঘাতিক চুপচাপ আর মমতাময়ী! আর তার একটা অভিনয় খুব ভালো জানা আছে—বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বা সমমর্যাদার কাউকে কাছে পেলে তার চোখে প্রায় জল এসে যায়। এক্ষেত্রে যেকোনো নাট্যাভিনেত্রী তার কাছে হার মানবে। কিন্তু মমতাহীন-মমতা বিনা গ্লিসারিনে কী সুন্দর চোখ ভিজিয়ে ফেলে বুঝিতে দিতে চায়, “আমি তোমাদের কত ভালোবাসি!” আসলে, এসবই তার ছলনা। আর রাজনৈতিক অপকৌশল মাত্র।
এশিয়ার অন্যতম আর ভারতবর্ষের একমাত্র জঙ্গীনেত্রী এই মমতাহীন-মমতা। একমাত্র পাকিস্তান ব্যতীত এশিয়ার কোনো দেশে নিজামী-কাদের মোল্লাগংদের রক্ষা করার জন্য কোথাও কোনো আন্দোলন হয়নি। মিছিল-মিটিং হয়নি। কিন্তু ভারতের অন্যতম একটি প্রদেশ-পশ্চিমবঙ্গে মমতার সমর্থনেই এগুলো হয়েছে। কাদের মোল্লার ফাঁসির পরে পশ্চিমবঙ্গে বিরাট প্রতিবাদসভা হয়েছে। আর মমতাহীন-মমতা ফাঁসিতে মৃত্যুবরণকারী তার বাবাতো ভাই কাদের মোল্লার জন্য তিস্তানদীর সমান চোখের জল ফেলেছে! সম্প্রতি নিজামীর ফাঁসির প্রতিবাদেও সেখানে বড়সড় প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এতে মমতা নিজে যোগদান করার সাহস না পেলেও তার চেলা-চামুণ্ডারা ঠিকই সেখানে সমবেদনা জানিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের এই ডাইনীবুড়ি মনে হয় বাংলাদেশের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়েনি। আর একাত্তরের পাকিস্তানীহায়েনাদের নৃশংসতা মনে হয় তার জানাও হয়নি। ইদানীং তার রাজ্যে ও তার দলের ভিতরে অনেকের সঙ্গে জঙ্গীসম্পৃক্ততা বাড়ছে। শোনা যায়: মমতাহীন-মমতার পশ্চিমবঙ্গ নাকি বাংলাদেশবিরোধী-জঙ্গীদের ঘাঁটি। তারা মমতার আশ্রয়েপ্রশ্রয়ে থেকে মমতার সেবা করছে। আর বাংলাদেশের সর্বনাশ করার জন্য সেখানে বসে-বসে নিয়মিত ছক কষছে। আর তাই দেখে মনের সুখে ফুর্তিতে আঙ্গুল চুষছে একজন মমতাহীন-মমতা।
মমতাহীন-মমতাকে আগে বলা হতো তৃণমূল-কংগ্রেস-নেত্রী। আর এখন অভিজ্ঞজনেরা তাকে বলছেন জঙ্গীবান্ধব-নেত্রী। মমতাহীন-মমতা এখন আর নেত্রী নেই। তার বর্তমান পরিচয় একজন গডফাদারের আদলে গডমাদার মাত্র। আর মাঝে-মাঝে তার লোকদেখানো কিছু ভালোমানুষির নমুনা হলো তার ভবিষ্যৎশয়তানী-পরিকল্পনা-বাস্তবায়নের কৌশল মাত্র। মমতার সখ্যতা বাড়ছে ভারতীয় ও বাংলাদেশী জঙ্গীদের সঙ্গে। এইরকম কিছু জঙ্গীকে তার দলেও ভেড়ানো হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তার এখন জঙ্গী প্রয়োজন।
আরও অনেক বিশিষ্টজনেরা বলছেন, শেখ হাসিনাকে হত্যা ও তাঁর সরকারকে উৎখাত করার জন্য যে-সব স্বাধীনতাবিরোধীঅপশক্তি দীর্ঘদিন যাবৎপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে—তারা এখনও একজন মমতাহীন-মমতার আশ্রয়েপ্রশ্রয়ে পশ্চিমবঙ্গেই বসে আছে।
অতিসম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে মমতাহীন-মমতা বড় ব্যবধানে জয়লাভ করায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল-বিশাল ইলিশমাছসহ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু তাতেও এই ডাইনীবুড়ির মন গলবে না। প্রয়োজনে সে কুম্ভীরাশ্রু ঝরাবে। আর তার মায়াকান্নাদেখানো চোখের জলে বাংলাদেশের মাটি ভিজিয়ে দিবে, তবুও সে আমাদের ন্যায্য-হিসসা তিস্তার পানি দিবে না। আর সে তিস্তাচুক্তিতেও সম্মতি দিবে না।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সবসময় আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বসুলভ আচরণপ্রকাশ করে চলেছে—আর তারা তিস্তাচুক্তিসম্পাদন করে তিস্তার পানি দিতে একপায়ে খাড়া। কিন্তু আমাদের ন্যায্য-হিসসা-আদায়ে আজ সবচেয়ে বড় বাধা একজন মমতাহীন-মমতা।
তাই ভাবছি: পশ্চিমবঙ্গের ডাইনীবুড়ি মমতাহীন-মমতার দৌরাত্ম্য কমবে কবে?
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৭/০৫/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৩০