যারা শ্যামল কান্তিকে নিয়ে কয়দিন খুব রাজনীতি করলেন তাদের এখন কী হবে?
সাইয়িদ রফিকুল হক
দেশের ভিতরে কতরকমের পাগল! একটা স্বঘোষিত নাস্তিক! আবার আরেকটা সমকামী! আবার আরও-কয়টা সমকামিতাকে বৈধ-ঘোষণা করার জন্য মাঠে-ময়দানে চিৎকার ও চেঁচামেচি করছে! আর মনে হয়: এরা সমকামিতাকে বৈধ-ঘোষণার জন্য আন্দোলন করবে কিংবা আদালতে যাবে! এদের ভাবখানা এমনই কুরুচিপূর্ণ।
দেশে পাগল বাড়ছে। আরও বাড়বে। কিন্তু এইসব পাগল মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। কয়দিন আগে দেখলাম নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে নিয়ে কত তোড়জোড়। আর কত আন্দোলনের প্রস্তুতি। এসব কিন্তু তাদের শ্যামল কান্তির প্রতি ভালোবাসা থেকে নয়—এসব হলো একটা সুযোগ পেয়ে তা সরকারবিরোধী-অপকর্মে ব্যবহার করা। দেশের ভিতরে সুযোগসন্ধানীরা সবসময় এভাবে ওঁতপেতে থাকে। আর ভাবে: কখন কোন সুযোগ আসে! এদের কেউই মানবিক-দৃষ্টিকোণ থেকে শ্যামল কান্তির বিষয়টি মূল্যায়ন করেনি। এরা একটা সুযোগ হাতের কাছে পেয়ে অমনি তা নিয়ে আদাজল খেয়ে একেবারে কাছা দিয়ে মাঠে নেমে পড়েছিলো। আর ভেবেছিলো: এইবার বুঝি তাদের ফাঁসিতে মৃত্যুবরণকারী একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী-বাপজানদের আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। কারণ, তারা তাদের বাপজানদের রক্ষা করার চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেনি। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে তারা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’ পর্যন্ত পাকি-তুর্কী হ্যাকারদের যোগসাজশে হ্যাক করেছে। তবুও কিছুতেই কিছু হয় নাই। তাই, এবার শ্যামল কান্তিকে দিয়ে যদি সরকারের কিছু-একটা করা যায় কিনা। আর তাই, এরা একজোট হয়ে ফেসবুকে-ব্লগে শ্যামল কান্তিকে নিয়ে একেবারে ঝড় তুলে ফেললো। আর তারা মনে করেছিলো: তাদের এই কাগুজে-ঝড়ে বুঝি শক্ত-ফাউন্ডেশন দেওয়া শক্তিশালী-সরকার একনিমিষে কাত হয়ে যাবে! পাগল আর কাকে বলে!
শ্যামল কান্তিকে নিয়ে কথা বলাটা দোষের কিছু নয়। আর তার পক্ষে বললেও দোষ নাই। প্রত্যেকে যার-যার অবস্থান থেকে কথা বললেও দোষ নাই। কারণ, দেশে প্রত্যেকেরই ব্যক্তিস্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু তাকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী-কুৎসারটনা অবশ্যই দোষের। এমনকি একজন শ্যামল কান্তির জন্য অনেক পাষণ্ড রাষ্ট্রবিরোধী-বক্তব্য পর্যন্ত দিয়েছে! এগুলো কীসের জন্য? কীসের স্বার্থে? জামায়াতীদের প্রচুর টাকা আছে। আর সেই টাকায় বুঝি অনেকের শরীর এখন খুব গরম। তাই, দেশের ভিতরে কোনোকিছু ঘটলেই অমনি শুরু হয়ে যায় সরকারবিরোধী-নাশকতাসৃষ্টিকারী-বক্তব্য।
আপনারা এতো রাজনীতি বোঝেন, তবে কেন রাজনীতির মাঠে যান না! আপনারা পল্টনে যান। আর আপনারা নয়াপল্টনে যান। এমনকি আপনারা মগবাজারেও যান। এতে কোনো দোষ নাই। কিন্তু ঘরে বসে কাগজ ছিঁড়ে যুদ্ধ করবেন তা তো হয় না।
শ্যামল কান্তি ভক্ত’র বিরুদ্ধে আমাদের ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ নাই। আর আমরা শ্যামল কান্তি ভক্তসহ যেকোনো শিক্ষকের কানধরে উঠবস করানোর বিরুদ্ধে। কিন্তু শ্যামল কান্তির দুঃখজনক ঘটনাকে পুঁজি করে একটি শ্রেণীর ফায়দা-লোটার বিরুদ্ধে। বাংলাদেশরাষ্ট্রের স্বার্থে আমরা যেকোনো নাশকতার বিরুদ্ধে। আর একটি ঘটনাকে নাশকতার দিকে ঠেলে দেওয়াটা দেশবিরোধী-চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। আসুন, আমরা দেশকে ভালোবাসি। আর দেশের বিরুদ্ধে নাশকতাসৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলি।
জয়-বাংলা।
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২১/০৫/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৬